গল্প

শেষ বিকেলের অতিথি

আজ চন্দ্রার কথা মনে পড়তেই ছল ছল চোখে অশ্রুবিন্দু ঝড়ছে। তার অভিমানের শেষ আকুতি মনের মধ্যে বারবার ধাক্কা দেয়। তার প্রস্থান শেষ পর্যন্ত এতো কঠিন হবে বুঝতে পারিনি। আগেও চন্দ্রার সাথে হয়েছে অভিমানের খুনসুটি। নিজেকে মেঘের আড়ালে ঢাকতে চেয়েছে, কিন্তু সে মানাভিমান ক্ষণিকেই ইতি ঘটে গেছে। জোছনা হয়ে সে ধরা দিয়েছে। খুব ছোট্ট বিষয় নিয়ে….

স্মৃতি এখন কী করবে

জেলখানা থেকে বেরিয়ে স্মৃতি বাসে চড়ে বসে। সঙ্গে ওর মেয়ে ফাতেমা। বেশিক্ষণ কথা বলতে পারেনি হায়দারের সঙ্গে। শুধুই চোখ বেয়ে পানি পড়েছে। ফাতেমাও ওর বাবাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদেছে। আর হয়তো দেখা হবে না বাবার সঙ্গে। হায়দারের চোখও ভেজা ছিল। আজই হয়তো ওদের শেষ দেখা। হায়দার বারবার স্মৃতির হাত ধরে অনুরোধ করেছে ওকে ক্ষমা করে দিতে।….

ইন্টারভিউ

কত দিন পর দেখা হলো রূপার সঙ্গে। তা মনে করতে পারছি না। চোখে চোখ পড়তেই কিছুটা থমকে গেলাম। চিন চিন করে উঠল বুকের ভেতর। ভেতর-বাইর শুরু হলো জ্বলন-পোড়ন। কথা বলব কি-না তা বুঝে ওঠার আগেই সে এলো এগিয়ে। আমাকে বলল, সায়েম তুমি এখানে? আমার ইন্টারভিউ আজ। তোমারও কি তাই? হ্যাঁ। আমারও তাই। কেমন আছ তুমি?….

শূন্য থেকে শূন্য

আমার আসল নাম কি আমি কোনো দিনই জানলাম না। ছোটবেলায় মা বাবলু বলে ডাকত তারপর আরও অনেকে অনেক নাম দিয়েছে। নাম নিয়ে আমি অত চিন্তা করি না, আমার মতো মানুষের নাম থাকলেই বা কি আর না থাকলেই বা কি? যে লোক নিজের বাপের নামই জানে না সে নিজের নাম না জানলে তাতে কি বা আসে….

ভায়োলিন

আকাশের শরীর জুড়ে কালো মেঘের আহাজারি। দুঃখ গলে থোকায় থোকায় ঝরে পড়া অশ্রুর মতো প্রবল ধারায় বৃষ্টি হচ্ছে। আলোর ঝলকানি মুহূর্তে মুহূর্তে আঁধারের বুকে আলো দিয়ে যাচ্ছে। দুইটি বৈদ্যুতিক খুঁটির মাঝামাঝি দুরত্বে তারের ওপর একটি পাখি বসে আছে। মেঘের গর্জন হতেই কেঁপে কেঁপে উঠছে। সঙ্গে ছাতা নেই, চায়ের দোকানে বসে আছি। বৃষ্টি থামার অপেক্ষা। ফুলবাড়ি….

পুতুলের সংসার

মোড়ে খোকার পান দোকানে গিয়ে পুতুল আবদারী সুরে বললো, ‘ও দা! একটু পান খাওয়াবা না?’ খোকা মাথা নিচু করে পান বানিয়ে যাচ্ছে। মাথাটা উঁচু করে দেখে বলে, ‘দাড়াও দিচ্ছি।’ পাশে দাঁড়ানো মাছওয়ালা সুশান্ত, পুতুলের গায়ের সাথে গা ঘেষে দাঁড়াতে গেলে, পান খাওয়া দাত বের করে পুতুল খেঁকিয়ে উঠে বলে, ‘এ বুড়ো চোদা মরণডা দূরে সইরে….

একটি কথার দ্বিধা থরথর চূড়ে

টাউনহল মঞ্চে মাইকের সামনে দাঁড়িয়ে উজ্জ্বল আলোর নিচে চোখ সয়ে এলে দর্শক সাড়িতে কে বসে আছে বুঝা যায়। প্রথম সাড়িতে সোজা চোখ পড়তেই তার বুকের ভিতরে ধক্ করে যে আওয়াজ হলো, তা শুনতে পেলো ইয়ামিন। শোনা তো অনেক সময় শরীরে মনে ক্রিয়া করে না। কিন্তু তার সামনে যে বসে আছে তাকে এখানে দেখা এবং তার….

সলমন খানের পরিবার

অনেক রাত। ক’টা বাজে অবশ্য বোঝা যাচ্ছে না। জানার উপায়ও নেই ওদের চারজনের। চারজন মানে সলমন খান, হ্যাঁ ফিল্মস্টার সলমন খান। যাকে আসমুদ্র হিমাচল একনামে চেনে। সল্লুভাই। বলিউডের ঝক্কাস নায়ক, ইয়া বডি যার। ম্যায়নে পেয়ার কিয়া থেকে চুলবুল পান্ডে বিলকুল হিট। সেই সলমন, চনা, পাখি আর একবছর তিন মাস বয়সের ওদের ছেলে। চনা এবং পাখির….

মশা, ভূত ও সুরবালা

আমার বাথরুমে একটি লোনলি মশা আছে। বুঝলেন মশাই, এরকম বুদ্ধিমান মশক আমি জীবনে আর দেখিনি। ধূর্ত, ফিজিক্যালি ফিট এবং ক্যারাটে বা কুংফুর ওস্তাদের মতো কুটকৌশলী। গত পনেরো দিনের চেষ্টায় আমি তাকে মারতে পারিনি। অথচ মশা মারায় আমার বেশ হাতযশ আছে। ওই একটা ব্যাপারে অবশ্য আমি খুবই কাঁচা। কত চড়-চাপড় দিয়েও এ-যাবৎ যে-কয়টি মশা মারতে পেরেছি….

প্রায়শ্চিত্ত

বাইরে ঝাঁঝাঁ রোদ, ডাইনিংএ খেয়ে এসে রূপা ভাবল একটু গড়িয়ে নিবে, বিকেলে ডিশেক্সন ক্লাস, সেকেন্ড প্রুফ পরীক্ষা সামনে, সকালে গোছল সেরে গেছে, এখন আর ঐ ঝামেলা নেই। গাইনি বইটা নিয়ে বিছানায় শুয়েছে মাত্র, দারোয়ান এসে খবর দিল ‘ আফা আপনের ভিজিটর’ অবাক হল রূপা। এই সময় আবার কে? এই দুপুরে? আশ্চর্য তো? তাড়াতাড়ি আয়নায় মাথাটা….

error: Content is protected !!