Author Picture

আজাদুর রহমানের তিনটি কবিতা

আজাদুর রহমান

দূরত্ব একটা ধারণা

আমাদের মধ্যে কোন দূরত্ব নেই।
তুমি যেভাবেই থাকো,
শুয়ে-বসে-দাঁড়িয়ে
সামনে-পিছনে-ডাইনে-বায়ে
তোমার যেভাবে মন চায়
এমনকি পরস্পর
গভীর আলিঙ্গনেও।
তুমি যেখানেই থাকো
ঢাকা বগুড়া চট্রগ্রাম
আমেরিকা কোস্টারিকা কিংবা
পৃথিবীর যে কোণাতেই,
আমাদের মধ্যে এতটুকু দূরত্ব নেই।
দূরত্ব বলে আসলে কিছুই নেই
এই যে ছায়াপথের পর সুদূরে
জ্বলছে যে তারা
সেখানে কেউ কারও দূরে নয়।
দূরত্ব একটা ধারণা,
একটা মিথ্যা শব্দের শুভংকর
যা দিয়ে আমরা শুধু
শত্রু-শত্রু খেলতে পারি।
অথচ আমরা নিকটে
ঈশ্বরের মতো দূরত্বহীন
অতি নিকটে।

 

আবহমান

তুমি মারা গেলে
তোমার নামে
মিনার বা মাজার হবে না—
হলেও তোমার কিছু যায় আসে না ।
গভীর ঘুমে তলিয়ে
যেতে যেতে
তুমি যা ভাবছো তা ঠিক নয়
অনেকেই বরং বিরক্ত তোমার প্রতি
তাছাড়া তুমি যাদের উপর জেদ করে
বড় হতে চাও,
তারা কেউ তোমাকে ভালোবাসে না।
মনে রেখো, আনন্দ এক ধ্যানমগ্ন পিদিম
তার কাছে যাও, চুপচাপ-স্রেফ একা
বিখ্যাত হলেই তুমি ধরা পড়বে
পা থেকে পথ সরে যাবে
যতদিন বঞ্চিত আছো
মধ্যবিত্ত মন আছে
তুমি সুন্দর
ততদিন তুমি আবহমান।

 

বেঁচে থাকো

যে যেখানে আছো
বেঁচে থাকো
মনে করো,
তোমার চারপাশে যা আছে
মানে, যতদুর তুমি যেতে পারো
— সেইটুকুই পুরো পৃথিবী
এর মধ্যেই ইউরোপ আমেরিকা
— বাইরে আর কোন মহাদেশ নেই।
দ্বিধা-দ্বন্দ্বের মধ্যে থেকো না
অমীমাংসিত রয়ে যাবে
মুক্তি হবে না,
তোমার এই একটাই পৃথিবী
একবারই এসেছ,
আর আসা হবে না।
তোমার চারপাশে যা আছে
মানে যতদুর তুমি যেতে পারো
— সেইটুকুই পুরো পৃথিবী
বিশ্বাস করো
— এর বাইরে আর কোন মহাদেশ নেই,
কত কিছুই তো তুমি না দেখে
বিশ্বাস করো।

আরো পড়তে পারেন

বিপিন বিশ্বাসের একগুচ্ছ কবিতা

শূন্যতায় বাজে প্রণবধ্বনি শূন্যতায় বাজে প্রণবধ্বনি আড়ালে যার মহাজাগতিক রশ্মির চারণভূমি প্রতিবন্ধকতাকে পাশকাটিয়ে নিমগ্ন বিশ্বের স্বরূপ দেখি ধ্যানের স্তরে। মায়ার কায়া ঝেড়ে ফেলে সত্যকে চিনি আপন করে জ্যোতির্ময় জেগে আছে দীপ্ত শিখার আপন জলে । মূল্যবোধের সলতে টাকে মারতে চাই না দিন-দুপুরে অন্ধকারে আলোক রেখা সদাই খোঁজি হৃদ মাঝারে।   জীবনের ধর্ম এই জীবন মা….

চৌধুরী রওশন ইসলামের একগুচ্ছ কবিতা

দ্বিধা দ্বিধার পাথারে পড়ে থাকি আজীবন, যেদিকে তাকাই থইথই দ্বিধারাশি। কূলহারা দরিয়ায় দ্বিধার চুম্বন কোন পার হতে কোন পারে লয় ভাসি? কত কী দেখিতে পাই, দেখি না কতই, দেখা-না-দেখার দ্বিধা-বুদবুদ এসে, মনের অতলে ভীড় করে সে স্বতই; কেবলি সংশয়ে দ্বিধা-স্রোতে যাই ভেসে। হবে কি হবে না, কিছু দেবে কি না দেবে, লাভ না কি ক্ষতি,….

সুলতানা নাছিরা হীরার একগুচ্ছ কবিতা

বিরুদ্ধ সময় একেকটা দিন কী বীভৎস হয়েই না আসে! বীভৎস সময়, বীভৎস মন, বীভৎস মানুষ, বীভৎস সভ্যতা! মধ্যাহ্নের প্রাখর্যকে কম্পমান পর্দা বানিয়ে ভয়ার্ত রাজহাঁসের মতো চিৎকার করতে করতে ছুটে গেল একটা অ্যাম্বুলেন্স। এই গাড়িটার ভেতর আপাতত আশ্রয় পেলে বেঁচে যেতাম। ভীষণ বিরুদ্ধ সময়! এই বিরুদ্ধতার কথা জানে ঘরের চার দেয়াল, শূন্য বারান্দা, জীর্ণ দেয়াল ঘড়ি,….

error: Content is protected !!