কবিতা

শতাব্দী জাহিদের তিনটি কবিতা

চিরপূণ্যের বৃষ্টির আয়োজন অগ্রহায়ণের ঠান্ডা মেঘের ছন্দে নেমে আসা শীতের বৃষ্টি তোমার চোখের ফ্রেমে চলে যাচ্ছে— ফলের দোকানে ঝুলে থাকা কলার কাঁদি। আবাসিক হোটেলের মুছে যাওয়া নাম, অসামাজিক কার্যকলাপ মুক্ত পরিবেশ, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত জুম্মায় বিপ্লবী মুসলীমদের হুংকার নেমে এসেছে— বিরিয়ানী, গোস্তের ঘ্রাণে বাড়ি ফেরার আয়োজন। বাংলাবাজারের ভিজে থাকা আকাশটা আমরা মাথায় তুলে নিয়ে তোমার গোলাপি….

গাজী গিয়াস উদ্দিনের একগুচ্ছ কবিতা

বীভৎস খেলা নগরে বাতাসে মথিত জনস্রোতের কোলাহলে শুনতে পেয়েছি সারিগান গঞ্জের হাটে আকাঙ্খার গভীরে মন্দ্রিত অভিন্ন প্রাণ নীরব দর্শক ছিলাম ব্যর্থতার করুণ গান ফেরার মহড়ায় বঞ্চিত কুঁড়েঘরে সরাইখানার- শুঁড়িখানার মাছিরাও নেশায় বুদ্বুদ প্রকম্পিত কান্নার পর একদিন হাসির তিলকরেখা বিচ্ছুরিত শৈশবের ক্ষুধার্ত চিৎকার ক্রর হাসি চেপে মৃত্যু পরোয়ানা ঝুলে ভাগ্য প্রহসনে যুদ্ধের ব্যগ্র দামামা থেমে গেলো-….

তোফায়েল তফাজ্জলের একগুচ্ছ কবিতা

উপায় অবলম্বন কাঁটা থেকে,  সুচালো কাঁকর থেকে পা রাখিও দূরে, জায়গা না পাক চলন-বাঁকা চেতনায় উড়ে এসে বসতে জুড়ে; এসবে খরগোশ কানে থাকবে রাতে, পড়ন্ত বেলায়, দ্বিপ্রহরে, পূর্বাহ্নে বা কাক ডাকা ভোরে। দুর্গন্ধ ছড়ানো  মুখ ও পায়ের তৎপরতা থেকে গ্রীষ্ম থেকে সমস্ত ঋতুতে একে একে নেবে মুখটা ফিরিয়ে তিলার্ধকালও না জিরিয়ে। কেননা, এদের চরিত্রের শাখা-প্রশাখায়….

আহমেদ ফরিদের একগুচ্ছ কবিতা

তোমার সাথে দেখা হওয়া জরুরী নয় সেদিন তুমি আমাকের ডেকে বললে, ”আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টি ঝরছে এসো চা খেয়ে যাও ঝাল মুড়ি, পেঁয়াজ ভেজে দেবো সঙ্গে কাঁচালংকাও থাকবে। দুজনে চা খাব, মুড়ি খাব, আর গল্প করবো।’ আমি বললাম, ’না, আমি যাবো না । আমি আমার জানালায় বসে আকাশ দেখছি, বৃষ্টি দেখছি, আকাশের কান্না দেখছি, গাছেদের নুয়ে….

নিকোলাই রুবৎসভের কবিতা

নিকোলাই মিখাইলোভিচ রুবৎসভ (৩ জানুয়ারি ১৯৩৬ – ১৯ জানুয়ারি ১৯৭১) মাত্র পঁয়ত্রিশ বছরের জীবন পেয়েছেন রুশ কবি নিকোলাই রুবৎসভ। দুর্ভাগ্য তাঁকে তাড়া করেছে সারাজীবন। শৈশবে মায়ের মৃত্যু ও পিতার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ করার জন্য তাঁর স্থান হয় শিশু আশ্রমে। পড়াশোনা শেষ করার আগেই জীবিকার তাগিদে তাকে খনিতে, জাহাজে কাজ করতে হয়। সৈন্য বাহিনীতে যোগ দেওয়ার….

সোহরাব পাশা’র একগুচ্ছ কবিতা

নিদ্রিত ঘ্রাণের শব্দ দীর্ঘ যায় আশালতা ফিরে আসে বিষণ্ণ গোধূলি ফিরে আসে দুঃখিত সকাল, ক্ষয়ে যাওয়া এক দূরের উপনিবেশ পাখির চেয়ে মানুষের কোলাহল বেশি কোনো মৃত্যু মানুষকে অপরাধী করে না নিঃশ্বাসের রোদে আবছায়া নিদ্রিত মেঘ স্মৃতির অসুখ বাড়ে; দূরে নির্জন আধাঁরে জেগে ছিলো মানুষের কথা পুরনো সে বাড়ি সেই ছায়াপথ মায়াপথ জুড়ে কতো ভুল মানুষের….

কামরুল আলম সিদ্দিকী’র একগুচ্ছ কবিতা

সেরিব্রালে হারানপাড়া সেরিব্রালে হারানপাড়া, রাত জমেছে ঊষে; হুঁশ ফিরেছে মনের চুলোয় ধিকিধিকি তুষে! তুষের জ্বালে হাড়ের ব্যথায় ওঠছে কথা ভালের— টের পেয়েছি পিঁড়ায় তোমার নড়ছে নূপুর কালের! একটু ধরো, জ্বালাই কুপি— ঠুলিমুসি খুঁজি, ঠুলি তোমার ভাঙছে বেড়াল, মনটা খারাপ বুঝি? মুখটা তোল চোখটা দেখি, কোন বিড়ালী নাচে; কোন সরালি ডুব দিয়েছে পরের গাঙ্গের মাছে! একটু….

কুমকুম দত্তের একগুচ্ছ কবিতা

দেবীর মুখ শরত কাশফুল দুলে বাতাসে শেষ প্রহর সূর্যাস্তে নিবিড় সহমরণ সুখের বুকের নদী স্বচ্ছ গভীর জলধারা হাতছানি কাগজের নৌকা নির্মাণে জীবন পারাপার পরিশীলিত কালের কলস যৌথ যাপন দেবীর মুখ আনন্দে আত্মহারা শঙ্খধ্বনি বেজে ওঠে দিনশেষে মেঘের পালক ঝরে পড়ে রাত্রি আঁধার করুণ লোহার গারদে   আকাশে মৃত চাঁদ কামনার বিশুদ্ধ আঁধারে খুনসুটি বালিশে মাথা….

মাহমুদ দারবিশের কবিতা

ভূমিকা ও পরিচিতি মাহমুদ দারবিশ তার প্রজন্মের পথিকৃত হিসাবে বিবেচিত। তিনি অন্য যে কোনো আধুনিক আরবি কবির চেয়ে বেশি অনুদিত। তিনি ব্রিটিশ ম্যান্ডেটের অধীনে ফিলিস্তিনি গ্রাম আল-বিরওয়াতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন কিন্তু ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে হাজার হাজার আরবকে বাস্তুচ্যুত করায় তিনি সেখান থেকে পালিয়ে যান। তিনি তার বেশিরভাগ কবিতার মধ্যে আরবি ছন্দের সাথে আধুনিক কবিতা মিশ্রিত করেছেন।….

জমির হোসেনের তিনটি কবিতা

সর্বনাশী তুমি অনেক বড় সর্বনাশী বুঝতে হল অনেক দেরি ভেবে তাই মরি আমি জীবনটা করলে পরবাসী। কথা ছিল সঙ্গী হবে সুন্দর একটা ঘর সাজাবে জনম জনম কাছে রবে কখনও দিবেনা দূরে ঠেলে সুখের তরী বাইবো দুজন কষ্ট ভুলে বলবো ভালোবাসি। আধাঁর বলে তুমি আলো মানেনি মন তখনও কালো শেষ হল সব স্বপ্ন মনকে ঘিরে শুধু….

error: Content is protected !!