Author Picture

খন্দকার রেজাউল করিম

শিক্ষক, গবেষক, লেখক। তাঁর শিক্ষকতা জীবনের শুরু ১৯৭৫ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৭৮ সালে উচ্চশিক্ষার জন্য আমেরিকা যান। ১৯৮৩ সালে ইউনিভার্সিটি অব অরিগন থেকে পদার্থবিদ্যায় ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপরে ৩০ বছর কাটিয়েছেন আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষনা ও শিক্ষকতার কাজে। বর্তমানে তিনি আমেরিকার ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির ইমিরেটাস প্রফেসর।
ড. করিম গবেষনার কাজে জড়িত ছিলেন নাসা, মার্কিন জাতীয় বিজ্ঞান সংস্থা, মার্কিন এনার্জি সংস্থা, ন্যাটো, টোকোমাক ফিউশন টেস্ট রিয়্যাক্টর এবং আরও অনেক প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞান প্রকল্পে। তাঁর ৮০টি গবেষনা-প্রবন্ধ রয়েছে। এর বাইরে লিখেছেন দুটি বই- Quantum Nursery Rhymes ও কোয়ান্টাম রাজ্যে ডালিম কুমার।

আলো আমার আলো

ভ্যান গ (Vincent Van Gogh, ১৮৫৩-১৮৯০): আমি একজন পোস্ট-ইম্প্রেশনিস্ট (post-impressionist) শিল্পী। আমার আঁকা ‘নক্ষত্র-খচিত রাত্রি (Starry Night)’ পৃথিবীর শিল্পানুরাগীদের ঘরে ঘরে টাঙানো থাকে। আমার তোলপাড় মনের দশা প্রকাশ করেছি রঙের বেহিসেবি ছড়াছড়িতে।  আমার সবচেয়ে প্রিয় রং ছিল হলুদ। আমি এঁকেছি ‘ফুলদানিতে হলুদ সূর্যমুখী ফুল,’ কখনো বারোটা ফুল, কখনো বা চোদ্দটা। আমার তুলিতে ভোরের এবং সাঁঝের….

তুমি ঢেউ, আমি কণা

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর: ‘তোমরা দেখিয়া চুপি চুপি কথা কও, সখীতে সখীতে হাসিয়া অধীর হও, বসন-আঁচল বুকেতে টানিয়া লয়ে, হেসে চলে যাও আশার অতীত হয়ে। তোমরা কোথায় আমরা কোথায় আছি, কোনো সুলগনে হবো না কি কাছাকাছি।’ লেখক : মেয়ে যদি হয় ঢেউ, পুরুষ হবে কণা! রবি ঠাকুর, তুমি কোয়ান্টাম রাজ্যে চলে এসো। এখানে অদ্ভুত সব কান্ড ঘটে।….

আবার পরমাণু

খ্রীষ্টান পাদ্রীর দল (৪৫০-১৫০০): গ্রিক দার্শনিক ডেমোক্রিটাস যীশুর জন্মের চার’শ বছর আগে পরমাণুর যে সব গালগল্প শুনিয়েছে সেগুলো সব মিথ্যে। নিশ্ছিদ্র, কঠিন, গোলাকার পরমাণু; দেখা যায় না, ভাঙা যায় না, পরিবর্তন করা যায় না! তাই যদি হবে তবে রুটি এবং মদ থেকে যীশুর রক্ত তৈরী (Eucharist) হলো কেমন করে? নাস্তিক কবি এপিকিউরাস এবং লুক্রেটিয়াস পরমাণু….

ঈশ্বর, মানুষ, ছায়া কণিকা, এবং প্রতিসমতা

আমার বাড়ির পাশে আরশি নগর, সেথায় এক পড়শী বসত করে, আমি একদিনও হায়, না দেখিলাম তারে। পড়শী যদি আমায় ছুঁতো, আমার জম-যাতনা যেত দূরে, সে আর লালন একখানে রয়, তবু লক্ষ যোজন ফাঁক রে। লালন (Lalon Fakir, ১৭৭২-১৮৯০) কেপলার: ‘যুদ্ধের দেবতারা খেঁকী কুকুরের মতো ঘেউ ঘেউ করছে, দামামা বাজছে, চারদিকে হ্রেষাধ্বনি। এই বিভিৎস চিৎকারকে ছাপিয়ে….

সত্যেন্দ্রনাথ বসুর আবিষ্কার

সত্যেন্দ্রনাথ বসু (১৮৯৪-১৯৭৪) : আমি কোলকাতার ছেলে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছি দীর্ঘদিন। ওখানকার পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে আমার সম্মানে বসু-কেদারা (Bose-chair) প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ভারত সরকার আমাকে দিয়েছে পদ্মবিভূষণ সন্মান। লেখক : তোমাকে নিয়ে আমাদের গর্বের শেষ নেই। মহাবিশ্বের কণাদের দুই ভাগে ভাগ করা হয় : বোসন এবং ফার্মিয়ন। পদার্থবিদ ডিরাক এই বোসন নামটি তোমার সম্মানে জুড়ে….

কৃত্তিম উপগ্রহ এবং চাঁদ

ইউরি গ্যাগারিন (Yuri Gagarin, ১৯৩৪-১৯৬৮) : আমি পৃথিবীর প্রথম মহাশূন্যচারী পথিক। ভস্টক রকেটে চড়ে ১৯৬১ সালে মহাকাশ থেকে পৃথিবীর চারদিকে পাক খেয়েছি। প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দূর থেকে পৃথিবীর চারদিকে একবার ঘুরে আসতে লেগেছিলো দেড় ঘন্টা। মহাকাশ থেকে এই সময়টুকুর মধ্যে একবার দেখলাম রাতের পৃথিবী, তারপরে আবার পেলাম দিন। মেঘের পরে মেঘ, সমুদ্র, বন, ওদের আড়ালে….

চুম্বুক, বিদ্যুৎ, এবং মাইকেল ফ্যারাডে

মাইকেল ফ্যারাডে (Michael Faraday, ১৭৯১-১৮৬৭): মুচির ছেলে আমি। যে বিদ্যুৎ ছাড়া তোমাদের এক দন্ড চলেনা তা আমিই আবিষ্কার করেছিলাম। সেই বিদ্যুৎ দিয়ে কেমন করে চাকা ঘোরানো যায়, কলকারখানা চালানো যায় তাও আমার আবিষ্কার। আইনস্টাইন বলেছিলেন যে বিজ্ঞানের জগতে আমি এক বিপ্লব সৃষ্টি করেছি, আমি নাকি শেক্সপিয়ার, নিউটন, এবং গ্যাটের (Goethe) সমতুল্য প্রতিভা। আমার শৈশব কেটেছে….

ক্যালকুলাস

আমি: আমাদের সারাজীবনের দুঃখ-আনন্দের সমষ্টি কত? এখানে দুঃখকে আনন্দের উল্টো বা বিয়োগাত্মক আনন্দ বলে ধরে নেয়া যেতে পারে! অংকের কোন শাখা থেকে এই প্রশ্নের হিসাব মিলবে? আর্কিমিডিস (Archimedes, খ্রিস্টপূর্ব ২৮৭-২১২) : এটি হবে একটি ক্ষেত্রফল (area) মাপার সমস্যা, জ্যামিতি দিয়ে চেষ্টা করা যেতে পারে। একদিকে আনন্দ-দুঃখ, আরেকদিকে সময়। মানুষের জীবনে আনন্দ-দুঃখ সময়ের সাথে কেমন করে….

বরফ রাজা

অস্কার ওয়াইল্ড (Oscar Wilde, ১৮৫৪-১৯০০): ‘Tread lightly, she is near under the snow, Speak gently, she can hear the daisies grow.’ ‘And alien tears will fill for him Pity’s long-broken urn, For his mourners will be outcast men, And outcasts always mourn.’ লেখক : বরফ কি মৃত্যুর প্রতীক? চাপ চাপ বরফের নিচে চিরনিদ্রায় শুয়ে আছেন….

প্রথম ধাক্কা

(একটি কাল্পনিক বিতর্ক। যাঁরা অংশগ্রহণ করেছেন, তাঁদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি : দেকার্ত (Rene Descartes, ১৫৯৬-১৬৫০): ফরাসি দার্শনিক, বিজ্ঞানী, এবং গণিতবিদ। আল হেথাম (Ibn al-Haytham, ৯৬৫-১০৪০): গণিতবিদ, দার্শনিক, জ্যোর্তিবিদ। সে আমলের প্রখ্যাত মুসলিম পন্ডিত। তাঁর লেখা বইগুলো ইউরোপিয়ান দার্শনিকদের উপরে যথেষ্ট প্রভাব ফেলেছিলো। গ্যালিলিও (Galileo Galilei, ১৫৬৪-১৬৪২): ইতালির বিজ্ঞানী এবং জ্যোতিবিজ্ঞানী। তিনি প্রথম দূরবীন দিয়ে গ্রহ-নক্ষত্রের অবস্থান….

error: Content is protected !!