পায়ে কার্তিকের রোদ
বিকেল এসে গড়াগড়ি খাচ্ছে পায়ে,
আমি শিকল নিয়েছি মনে।
জ্বলে উঠছে সন্ধ্যামালতী, জেগে উঠছে মশার গান;
আমি থমকে দিয়েছি ডানা মেলা।
সমস্ত ফেরার রাস্তা বন্ধ করে, এখানে গেঁথেছি সঙ্ঘরাম,
কে আমাকে ডাকছে বাইরে?
আমি তো খুলবো না রুদ্ধ দুয়ার।
বিষাদ ফুটেছে তোমার বনে, তার গন্ধ আটকানো যাচ্ছে না;
হৃদয়ের পিপাসাকে অভিশাপ দিচ্ছি ভীষণ — পৃথিবীর সব যুদ্ধ শেষ হলে সে যেন আত্মহত্যা করে নিমফুলে ছয়লাপ গাছের ছায়ায়।
তবু কেন
. জোড়ভাঙা পাখির আর্তি হাওয়ার মধ্যে ফিরে ফিরে আসছে তুমুল।?
সিংহাসনের কোলে বসে
রাত্রি স্তব্ধ পাথরের মতো আজ
জানালার বাইরে কার্তিকের ঘুমন্ত পাড়া
ছাতিমের উন্মাদ গন্ধে বেহাল দুনিয়াদারি
নিঃস্ব গ্লাসে ভরে আছে মাতোয়ালা মৌনতা আমার
টের পাচ্ছি বাহাদুর শাহ জাফরের অসহায় চাহনির মতো
আমার সাম্রাজ্য হারা এই ফকিরি এখনো তোমার জিকিরে নৃত্য করে
অথচ কী অসহায় আমি, নিজেকে উজাড় করে কবিতায় মকবরা সাজাচ্ছি
জাফর
. আপনার হৃদয়ের হাল সিংহাসন জানবে না
রিক্ত আমি ঘুমাতে পারছি না আপনার বিপন্ন চোখের মতো
ফিলিস্তিন
এখানে হত্যার জীবন্ত প্রদর্শনী হয়।
আহা, কী নান্দনিকভাবে নরহত্যা দেখার সুযোগ।
সভ্যতার অদ্ভুত নিরবতা থেকে টের পাই —
এ এক সম্মিলিত নরমেধযজ্ঞ।
(তবু এরই মধ্যে পাথর হাতে দাঁড়িয়ে থাকা কিশোর কিশোরীরা জেনে গেছে, মৃত্যুর বদলে মাতৃভূমিই এক টুকরো রুটির নিশ্চিত তৃপ্ত সম্ভাবনা।)
জলপাই গাছেরা এখানে কবরে ছায়া দেবার জন্য জন্মায়।
প্রতিটা মায়ের স্তন থেকে নেমে যায় একেকজন শহীদ।