আমাকে বিজয়ী করো
আমাকে বিজয়ী করো
নক্ষত্র জুড়ে আমি তোমার ভিতরেই আছি
নেশাগ্রস্তের মতো ভয়ানক হয়ে
আমার বুকে একটা ভালোবাসার লাটিম
উন্মত্ত ঘূর্ণিতে বিলিয়ে দিচ্ছে কাপুরুষতা!
কাপুরুষ বনাম ভালোবাসা
আমাকে বিজয়ী করো এ যুদ্ধে
নির্মূল করো অবিশ্বাসীর মদ্যপ দেয়াল
দূর করো সভ্যতার নির্লিপ্ত কাপুরুষতা
আমি তোমার নিঃশ্বাসের সুগন্ধি হবো
তোমার গানের মহড়ায় নীলকণ্ঠে সুর মিলাবো
ভালোবাসবো আকাশআঁতুড় তুমিময় হয়ে!
আমাকে বিজয়ী করো!
সে তোমাকে ভালোবাসে
গলির মোড়ের নিম গাছটার নিচে দাঁড়ালে
সোজা তিন তলায় তোমার বাসার বারান্দা দেখা যায়
যে ছেলেটা তোমাকে ভালোবাসে
সে চায় কখনো কখনো ফড়িং হয়ে একটু যায়
তোমার বারান্দা থেকে তোমাকে একটু দেখে আসে!
কখনো চায় তুমি একটু বারান্দায় আসো
সে একবার অন্তত তোমাকে দেখে
নিমের নরম হাওয়াকে বলতো
সে তোমাকে ভালোবাসে!
আমি আছি এইতো
আমি আছি এইতো
ঐ নীলে, তোমার আকাশের অথৈ নীলে
তোমার ঘুম ভাঙানো আলোয় মিশে আছি আমি
আমাকে খুঁজে দেখো তোমার কোমল হাসিতে
তোমার নখের নিচে আমি সহজেই ঘুমিয়ে আছি দেখো
তোমার চুলোর আগুনে—
চুল পড়া ভাতে আমি নিশাচর হয়ে বসে আছি
তুমি কাঁদছো কেন?
এইতো আমি আছি!
প্রায়শ্চিত্ত ০২
এখানে নির্জন রেললাইনে
পাথরের ফাঁকে রেখে গেছে কেউ একটা অচেনা জবা
স্টেশনের ঘড়ি, কোচম্যান কেউ তাকে চেনে না
শুধু পরিচয় তার একটা লাল টকটকে জবা
হয়তো এক উদাসীন বৃদ্ধ
এই রাতেই অনায়াসে মাড়িয়ে দিয়ে যাবে তাকে
ফুল হত্যার বিচার হবে না!
দু’ফোঁটা শিশির তাকে আগলে রেখেছে শুধু
শিশিরের বিদায় হলে ফুলটাও মরে যাবে!
কমদামী বিষণ্ণতা
যে পথ ধরে হেঁটে গেলে
পাহাড়ের ক্রোধ আর সাদা দুঃখ রাস্তায় নেমে আসে
অন্ধকারে একটা ম্যাগনোলিয়া ফুল
বিষণ্ণতার হাটে চাঁদের আলো বিক্রি করে
আমি সে হাটে বিষণ্ণতা বিক্রি করি
কে আছো?
আমি বিক্রি করছি পৃথিবীর সবচেয়ে কমদামী বিষণ্ণতা!
কতখানি লাগবে কার?
প্রায়শ্চিত্ত ০১
ফুল থেকে ফুলে
উড়ে বেড়াচ্ছি সেই জুরাসিক থেকে
সুগন্ধি আমাকে ছুঁয়ে দেখে না
হয়তো ফুলের সাথে দ্রোহ, হয়তো সুগন্ধির সাথে!
তোমরা প্রেমিকের দেয়া উপহারগুলো কি করো
তোমরা প্রেমিকের দেয়া উপহারগুলো কি করো?
যখন তোমরা তাঁকে ছেড়ে চলে আসো?
স্নিগ্ধ-লাল গোলাপের শুকিয়ে যাওয়া পাপড়িগুলো..
ফেলে দাও?
উদ্বেগ আর ভালোবাসা মিশ্রিত কবিতাগুলো
লাল-নীল কাগজ
মোটা খামের ভিতরের কবিতাগুলো কি করো?
আয়না-লিপস্টিক-চুড়ি-কানের দুলগুলো
কোথায় রাখো?
তোমরা কি পরে সেগুলো বের করে আবার দেখ?
কতবার দেখ? কেন দেখ?
তোমাকে না পেলে
এই যে তোমাকে পাবো না
তোমাকে না পেলে কি-ই বা হবে আর
এইসব যন্ত্রণা রেখে দিবো আমার মস্তিষ্কে ও গ্রীবায়!
একসময় যন্ত্রণার বয়স হবে
বয়সের ভারে নতজানু এ যন্ত্রণা
আর আমাকে পীড়া দেবে না!
এই যে তোমাকে পাবো না
তোমাকে না পেলে কি-ই বা হবে আর
এইসব যন্ত্রণা একদিন আমাকে আর পীড়া দেবে না!
প্রণয়িনী
ঐদিনের তন্দ্রাঘোর থেকে উঠে দেখলাম
পৃথিবীতে হঠাৎ ভূমিকম্প হয়েছে
কি উত্তেজনা—
কি অসহ্য তাণ্ডব মানুষের!
মানুষ কি মরে গেছে সব?
হ্যালো! তুমি ঠিক আছো? কোথায় তুমি?
—বেঁচে আছি। আমি তো তোমার মনের কুঠিরে!
পরামিতা
তাকিয়ে দেখ পরামিতা
রৌদ্রজ্জ্বল পৃথিবী কতটা বিমর্ষ হয়ে কুচকে গেছে।
মানুষের স্বজাতিক স্নেহগুণ
কত যান্ত্রিক সড়যানের মতো বদলে গেছে
তাকিয়ে দেখ পরামিতা তুমি
আমার সহজ স্বপ্নের বায়নাগুলো আজ
ছুঁড়ে ফেলা অপছন্দ কবিতার মতো
সংশয়ে পড়ে আছে একপাশে !
পরামিতা তুমি দেখ
বিষাদের মেঘ কেমন অন্ধকার করেছে আমাকে
একা করে আমায় চলে গেছো মহাশূন্যে তুমি
সব সন্ধির কি বিচ্ছেদ হতেই হয়?