Author Picture

ঘুড়ির উৎপত্তি, আবিষ্কার ও ক্রমবিকাশ

আকেল হায়দার

উড্ডয়নের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় হাওয়া ভর্তি বেলুন কিংবা ইঞ্জিনচালিত বিমানের ইতিহাস খুবই অল্পদিনের— ঘুড়ির আবিষ্কার কিংবা বিবর্তনের ইতিহাসের বিবেচনায়। ঘুড়ি কবে কোথায় প্রথম আবিষ্কৃত হয়েছিল কিংবা বিশ্বের কোন অঞ্চলের আকাশে প্রথম উড়েছিল তার সঠিক তথ্য পাওয়া যায়না। তবে ধারনা করা হয় আজ থেকে প্রায় দুই হাজার বছর আগে চীনের আকাশে প্রথম ঘুড়ি উড়েছিল। জনশ্রুতি আছে এক চীনা কৃষক মাঠে কাজ করছিলেন আর প্রচণ্ড বাতাসে তার হ্যাটটি বার বার উড়ে যাচ্ছিল। তখন তিনি হ্যাটটির একপ্রান্ত দড়ি দিয়ে সংযুক্ত করে একটি খুঁটির সাথে বেঁধে রাখেন যাতে বাতাস ওটাকে উড়িয়ে নিতে না পারে। তিনি যে উদ্দেশ্যে হ্যাটটি খুঁটির সাথে বেঁধে রেখেছিলেন বস্তুতপক্ষে তার ফলাফল হলো তার উল্টো। তিনি দেখলেন হ্যাটটি খুব সুন্দরভাবে ডানে বামে হেলে দুলে বাতাসে উড়ছে। যতই বাতাসের বেগ বাড়ছে ততই ঘুড়িটা শূন্যের দিকে উড়ছে এবং দেখতেও নান্দনিক লাগছে। এই দৃশ্যে কৃষক বেশ পুলকিত বোধ করলেন এবং আশেপাশের আরো অনেককে বিষয়টি দেখালেন। ধারনা করা হয় এই ঘটনার সূত্র ধরেই ঘুড়ির উৎপত্তি বা বিন্যাস। ধীরে ধীরে সংস্কার ও পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে ঘুড়ি বর্তমান অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে।
ইতিহাসবিদরা ঘুড়ির ইতিহাস ঘাঁটতে যেয়ে একটি লিখিত বর্ণনার খোঁজ পান। যেখানে বলা হয় খ্রিস্টপূর্ব দুইশ বছর আগে চীনা হান রাজবংশের জেনারেল হান হাসিন সেই শহরের আকাশে প্রথম ঘুড়ি উড়িয়েছিলেন। যার লক্ষ্য ছিল তাদের সেনাবাহিনীকে সুরক্ষার দেয়ার জন্য কতদূর পর্যন্ত টানেল নির্মাণের প্রয়োজন তার পরিমাপ নেয়া। এর মাধ্যমে তারা শত্রুপক্ষের সীমানা ও অবস্থান সম্পর্কে সম্যক ধারনা পায় এবং ফলশ্রুতিতে খুব সহজেই প্রতিপক্ষের শহরের অভ্যন্তরে পৌঁছে শত্রুদের অতর্কিত আক্রমন করে সহজ বিজয় লাভ করে।
ক্রমান্বয়ে ঘুড়ি ব্যবসায়ীদের হাত ধরে চীন থেকে কোরিয়া এবং ভারতবর্ষ হয়ে পুরো এশিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। তারপর নানা সংস্কার ও সংযোজনের মাধ্যমে অঞ্চলভেদে ঘুড়ি বিভিন্ন আকার, প্রকৃতি ও ধরণে বিস্তৃত হতে থাকে। একই সাথে ঘুড়ি ওড়ানোর নানা কৌশল, উপলক্ষ্য ও সাংস্কৃতিক উদ্দেশ্যের সৃষ্টি হয়।

চীনের ঐতিহ্যবাহি ঘুড়ি

ছয়শো বছর ধরে শাসনে থাকা কোরিয়ার সিলা রাজবংশের জেনারেল জিম ইউ সিন একসময় বিদ্রোহের ডাক দিয়েছিলেন। কিন্তু সৈন্যরা সংশ্লিষ্ট যুদ্ধে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। তারা লক্ষ্য করলো আকাশ থেকে একটি বিশালকার তারকা মাটিতে খসে পড়ছে। তাদের কাছে এই লক্ষণটা অশুভ মনে হয়েছিল। এতে সৈন্যরা মনোবলহীন হয়ে পড়ে। নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে জেনারেল একটি বিশালাকার ঘুড়িতে আগুনের কুণ্ডলী করে আকাশে উড়িয়ে দেন। সৈন্যরা লক্ষ্য করলো তারকাটি ফের আকাশের দিকে ফিরে যাচ্ছে। তাদের বিশ্বাস অনুযায়ী তারকাটি ফের স্বর্গে ফিরে যাচ্ছে। যা ছিল তাদের কাছে শুভ লক্ষ্মণ যা আত্মবিশ্বাসের প্রতীক হিসেবে কাজ করেছিল। অতঃপর তারা সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয় এবং জয়লাভ করে।
সপ্তম শতাব্দীতে বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের মাধ্যমে জাপানে ঘুড়ির প্রচলন ঘটে। তারা ফসলকে অশুভ দৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য ও সমৃদ্ধ ফসল প্রাপ্তির প্রতীকরূপে ঘুড়ি ব্যবহার করত। ইডো যুগে (১৬০৩-১৮৬৮) জাপানে ঘুড়ি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। প্রথমবারের মতো জাপানের সামুরাই ব্যতিত অন্যান্য সকল শ্রেণীর মানুষ ঘুড়ি উড়ানোর অনুমতি লাভ করে। সেই সময়ে ঘুড়ি ওড়ানোর হিড়িক পড়ে যায় এবং একসাথে অনেকেই ঘুড়ি উড়ানোর প্রতি মনযোগী হয়ে পড়ে। তাই ইডো (বর্তমান টোকিও) সরকার এই ঘুড়ি সংস্কৃতিকে নিরুৎসাহিত করার উদ্যোগ নেয়। যদিও ঘুড়ি নিয়ে জনগনের প্রবল আগ্রহ থাকার কারণে সে প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।

তারা পরস্পরকে ভালবাসতো। ঘটনা জানাজানি হলে স্বাভাবিক নিয়মেই তাদের অভিভাবকরা এই সম্পর্ক মেনে নিতে অস্বীকার করে, এবং মেয়েপক্ষের অভিভাবকরা মেয়েকে অবরুদ্ধ করে রাখে। দুজনার ভেতর তখন আকাশ সমান বিরহ। দেখা নেই, কথা নেই, কারো কোন সংবাদ নেই। এই যাতনা কি প্রাণে সয়! তরুণ প্রেমিক তখন অনেক ভাবনা চিন্তা করে দক্ষতার সাথে একটি ঘুড়ি বানায় এবং সেই ঘুড়িকে ব্যবহার করে অবরুদ্ধ অবস্থায় থাকা তার প্রেয়সীর কাছে চিঠি পাঠিয়ে নিজের কুশল জানায়

আরেকটি ঘটনা থেকে জানা যায়, তিনশ বছর আগে এক চোর বিশালাকার একটি ঘুড়ি বানিয়েছিল— জাপানের নাগোয়া দুর্গ থেকে সোনার মূর্তি চুরি করে মূর্তিসহ নিজেকে সেই ঘুড়িতে উড়িয়ে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য। সেই চোর তার পরিকল্পনায় মোটামুটি সফল হলেও কাজটি সম্পন্ন করে শেষ মুহূর্তে পালিয়ে যাওয়ার সময় ধরা পড়ে এবং দণ্ডপ্রাপ্ত হয়।
পনেরশো শতকের দিকে মোগলদের আঁকা ছবি থেকে সে সময়ে ভারতবর্ষে ঘুড়ির ওড়ানো ও ঘুড়ির প্রচলন সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। এই অঞ্চলে ঘুড়ি বিষয়ক একটি দারুণ মিথ প্রচলিত আছে। ঘটনাটি একজোড়া তরুণ প্রেমিক যুগলকে নিয়ে। তারা পরস্পরকে ভালবাসতো। ঘটনা জানাজানি হলে স্বাভাবিক নিয়মেই তাদের অভিভাবকরা এই সম্পর্ক মেনে নিতে অস্বীকার করে, এবং মেয়েপক্ষের অভিভাবকরা মেয়েকে অবরুদ্ধ করে রাখে। দুজনার ভেতর তখন আকাশ সমান বিরহ। দেখা নেই, কথা নেই, কারো কোন সংবাদ নেই। এই যাতনা কি প্রাণে সয়! তরুণ প্রেমিক তখন অনেক ভাবনা চিন্তা করে দক্ষতার সাথে একটি ঘুড়ি বানায় এবং সেই ঘুড়িকে ব্যবহার করে অবরুদ্ধ অবস্থায় থাকা তার প্রেয়সীর কাছে চিঠি পাঠিয়ে নিজের কুশল জানায়।
মাইক্রোনেশিয়ার লোকেরা পাতার ঘুড়ি ব্যবহার করে খাবারের মাধ্যমে কীভাবে মাছ ধরার টোপ দিত— সে বিষয়ে অনেক গল্প প্রচলিত আছে। পলিনেশিয়ায় দুই ভাইকে নিয়ে একটি মিথ প্রচলিত আছে যে, দেবদেবীর মাধ্যমে তারা ঘুড়ি উড়ানোর কৌশলটি জেনেছিল। দুই ভাইয়ের মধ্যে ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা হয়েছিল এবং এক ভাই তার ঘুড়ি আকাশের অনেক উঁচুতে নিয়ে গিয়েছিল। ধারনা করা হয় এতে দেবদেবীরা সন্তুষ্ট হয়ে তাদের আশীর্বাদ দিত।এখনো সেই দ্বীপগুলোতে ঘুড়ি উড়ানোর প্রতিযোগিতা হয় এবং সর্বোচ্চ উঁচুতে ওড়া ঘুড়িটি দেবতার নামে উৎসর্গ করা হয়।

কোরিয়ার ঐতিহ্যবাহি ঘুড়ি

মার্কো পোলোর বর্ণনা অনুযায়ী ত্রয়োদশ শতকের শেষের দিকে ইউরোপে ঘুড়ির প্রচলন সম্পর্কে বর্ণনা পাওয়া যায়। এই সময়ে ইউরোপের বিভিন্ন চিত্রকলায় ও সামরিক ব্যানারে উড়ন্ত ড্রাগন-ঘুড়ির নিদর্শন পাওয়া যায়। ষোলশো ও সতেরশো শতকের দিকে নাবিকেরা জাপান ও মালয়েশিয়া থেকে ঘুড়ি কিনে নিয়ে যেত। ইউরোপে শুরুর দিকে ঘুড়ি কৌতুহলের বিষয় হিসেবে লক্ষণীয় হলেও পরবর্তীতে ঘুড়ি তাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিতে তেমন একটা প্রভাব বিস্তার করেনি।

বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন এবং আলেকজান্ডার উইলসনের মতো দার্শনিকরা তাদের জ্ঞানের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে ঘুড়িকে ব্যবহার করে বাতাস ও আবহাওয়া সম্পর্কে ধারণা নিয়েছিলেন। স্যার জর্জ ক্যালি, সামুলেল ল্যাংলি, লরেন্স হারগ্রেভ, অ্যালেকজান্ডার গ্রাহামবেল এবং রাইট ভ্রাতৃদ্বয় প্রত্যেকেই ঘুড়ি নিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছিলেন। বিমান আবিস্কারের সূত্র ও বিমান উন্নয়নের কৌশল অবলম্বনের পেছনে ঘুড়ি ওড়ার কৌশল ও কার্যকারণের বিষয়গুলো নিহিত আছে বলে জানা যায়

আঠারশো ও উনিশশো শতকে ঘুড়ি বৈজ্ঞানিক সরঞ্জাম ও গবেষণার কাজে ব্যবহার করা হতো।
বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন এবং আলেকজান্ডার উইলসনের মতো দার্শনিকরা তাদের জ্ঞানের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে ঘুড়িকে ব্যবহার করে বাতাস ও আবহাওয়া সম্পর্কে ধারণা নিয়েছিলেন। স্যার জর্জ ক্যালি, সামুলেল ল্যাংলি, লরেন্স হারগ্রেভ, অ্যালেকজান্ডার গ্রাহামবেল এবং রাইট ভ্রাতৃদ্বয় প্রত্যেকেই ঘুড়ি নিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছিলেন। বিমান আবিস্কারের সূত্র ও বিমান উন্নয়নের কৌশল অবলম্বনের পেছনে ঘুড়ি ওড়ার কৌশল ও কার্যকারণের বিষয়গুলো নিহিত আছে বলে জানা যায়। তৎকালীন মার্কিন আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিসেবা ও ক্যামেরা বানাতে উইলিয়াম এডি ও লরেন্স হারগ্রেভ ঘুড়ির ডিজাইন অনুসরণ করেছিলেন।
ঘুড়ি শক্তির এক অদ্ভুত ব্যবহার করেছিলেন অ্যামেরিকান স্কুলশিক্ষক জর্জ পোকক। ১৮২২ সালে তিনি এক জোড়া ঘুড়ির সাহায্যে ঘণ্টায় বিশ মাইল গতিতে গাড়ি চালাতে সক্ষম হন। তার কয়েকটি ঘুড়ি একশ মাইলেরও বেশী ওড়ার রেকর্ড আছে। সেই সময়েও রাস্তায় চলাচলের জন্য রোড ট্যাক্সের প্রচলন ছিল এবং চালককে রোড ট্যাক্স পরিশোধ করতে হতো। তবে জর্জ পোককের তৈরি ঘুড়ি বাহনকে সবরকম করের আওতামুক্ত রাখা হয়েছিল।

জাপানের ঐতিহ্যবাহি ঘুড়ি

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ, ফ্রান্স, ইটালি ও রাশিয়ান সৈন্যরা শত্রুদের গতিবিধি অনুসরণ করার কাজে ঘুড়ির সমুহ ব্যবহার করেছিলেন। ঘুড়ির সাহায্যে তারা নিজেদের মধ্যে বিভিন্ন রকম সংকেত আদান প্রদান করতেন। তবে উড়োজাহাজ আবিষ্কারের পর খুব অল্প সময়েই এই পদ্ধতি বিলুপ্ত হয়ে যায়। জার্মান সৈন্যরা হাতে পরিচালিত বক্স ঘুড়ি শত্রুপক্ষের সাবমেরিনের গতিবিধি লক্ষ্য করার কাজে ব্যবহার করত।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মার্কিন সৈন্যরা রণকৌশলের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ঘুড়ির ব্যবহার করেছিল। হ্যারি শৌলের ব্যারেজ ঘুড়িগুলো উড়োজাহাজগুলোকে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম উড়তে বাঁধা দিতো। সমুদ্রের কাছে হারিয়ে যাওয়া পাইলটরা গিবসন গার্ল বক্সের ঘুড়ি উদ্ভাবন করেছিল যাতে সহজে তাদের সন্ধান পাওয়া যায়। পল গারবারস টার্গেট কাইট নামক ঘুড়িতে বৃহৎ একটি হীরক খণ্ড ব্যবহার করা হয়েছিল যার মাধ্যমে লক্ষ্যবস্তু নির্ণয় ও সমুদ্রের উপর উড্ডয়নরত উড়োজাহাজের অবস্থান সম্পর্কে ধারনা পাওয়া যেত। উড়োজাহাজের আবিষ্কার ও ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে সামরিক কাজে ও বৈজ্ঞানিক গবেষণায় ঘুড়ির ব্যবহার হ্রাস পেতে থাকে। এভাবেই উদ্ভাবন ও গবেষণার গণ্ডি থেকে ছিটকে গিয়ে ঘুড়ি ধীরে ধীরে কেবল বিনোদনের উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হতে থাকে।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ, ফ্রান্স, ইটালি ও রাশিয়ান সৈন্যরা শত্রুদের গতিবিধি অনুসরণ করার কাজে ঘুড়ির সমুহ ব্যবহার করেছিলেন। ঘুড়ির সাহায্যে তারা নিজেদের মধ্যে বিভিন্ন রকম সংকেত আদান প্রদান করতেন। তবে উড়োজাহাজ আবিষ্কারের পর খুব অল্প সময়েই এই পদ্ধতি বিলুপ্ত হয়ে যায়। জার্মান সৈন্যরা হাতে পরিচালিত বক্স ঘুড়ি শত্রুপক্ষের সাবমেরিনের গতিবিধি লক্ষ্য করার কাজে ব্যবহার করত

বিগত পঞ্চাশ বছরে ঘুড়ির নানারকম সংস্করণ ও সংযোজন লক্ষ্য করা গেছে। অনেক নতুন নতুন উপকরণ যেমন রিপস্টপ নাইলন, ফাইবার গ্লাস, কার্বন গ্রাফাইটের ব্যবহার ঘুড়িকে করেছে বর্ণিল, হালকা, মজবুত ও টেকসই। ঘুড়ির কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার যেমন ফ্রান্সিস রগোলার ফ্লেক্সি উইং ও ডমিনা জালবার্টস প্যারাফয়েল কাইটস আধুনিক হ্যাং গ্লাইডার ও প্যারাস্যুটের বিকাশে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
১৯৭২ সালে পিটার পাওয়েল দ্বৈত লাইনের একটি খেলনা চালু করেছিলেন যা জনসাধারণের মাঝে মজা দেখানোর সাথে সাথে খেলাধুলার কাজেও ব্যবহার করা হয়েছিল। উৎসাহিরা নতুন ডিজাইন নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছিলেন যা সুনির্দিষ্ট কৌশলে দ্রুততার সাথে উড়তে পারত এবং জটিল সব কাজ সম্পাদন করতে পারত। ঘুড়ি উড়ানোর প্রতিযোগিতায় ঘুড়ির উড্ডয়নের সাথে সাথে সঙ্গীতের ব্যবহারও বেশ জনপ্রিয় ছিল।
সবচেয়ে বৃহৎ ও শক্তিশালী ঘুড়িটি ডিজাইন করা হয়েছিল ১৯৮০ সালে। নিউজিল্যান্ডের পিটার লিন নামক এক নাগরিক বগি চালিত স্টেইনলেস স্টিলের ঘুড়ির প্রবর্তন করেন। ১৯৯০ সালে চাকার মাধ্যমে পানির ওপরে ও বরফের ওপরে ঘুড়ির ব্যবহার বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠে। ১৯৯৯ সালে একদল যাত্রী উত্তর মেরুতে স্লেড টানতে ঘুড়ির শক্তি ব্যবহার করেছিলেন।


তথ্যসূত্র:
Main source: https://www.gombergkites.com/nkm/hist1.html
https://en.wikipedia.org/wiki/Kite
https://www.my-best-kite.com/history-of-kites.html

আরো পড়তে পারেন

একাত্তরের গণহত্যা প্রতিহত করা কি সম্ভব ছিল?

২৫ মার্চ কালরাতে বাঙালি জাতির স্বাধিকারের দাবিকে চিরতরে মুছে দিতে পাকিস্তানি নরঘাতকেরা যে নৃশংস হত্যাকান্ড চালিয়েছিল, তা বিশ্ব ইতিহাসে চিরকাল কলঙ্কময় অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। ওই এক রাতেই শুধুমাত্র ঢাকা শহরেই ৭ হাজারেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়। গ্রেফতার করা হয় প্রায় তিন হাজার। এর আগে ওই দিন সন্ধ্যায়, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সমঝোতা আলোচনা একতরফাভাবে….

ভাষা আন্দোলনে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী চেতনা

আগের পর্বে পড়ুন— চূড়ান্ত পর্যায় (১৯৫৩-১৯৫৬ সাল) ভাষা আন্দোলন পাকিস্তানের সাম্রাজ্যবাদী আচরণের বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিবাদ ও একটি সার্থক গণআন্দোলন। এই গণআন্দোলনের মূল চেতনা বাঙালী জাতীয়তাবাদ। জাতীয়তাবাদ হলো দেশপ্রেম থেকে জাত সেই অনুভূতি, যার একটি রাজনৈতিক প্রকাশ রয়েছে। আর, বাঙালি জাতিসত্তাবোধের প্রথম রাজনৈতিক প্রকাশ বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের ফলে দুই হাজার মাইল দূরত্বের….

চূড়ান্ত পর্যায় (১৯৫৩-১৯৫৬ সাল)

আগের পর্বে পড়ুন— বায়ান্নর ঘটনা প্রবাহ একুশের আবেগ সংহত থাকে ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দেও। সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক আতাউর রহমান খান এক বিবৃতিতে ২১ শে ফেব্রুয়ারিকে শহিদ দিবস হিসেবে পালনের ঘোষণা দেন। আওয়ামি লীগের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমানও ২১ শে ফেব্রুয়ারিকে শহিদ দিবস হিসেবে পালনের আহ্বান জানান। ১৮ ফেব্রুয়ারি সংগ্রাম কমিটির সদস্য যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র….

error: Content is protected !!