Author Picture

গোলাপের রাজতোরণ (পর্ব-৪)

বুলবুল সরওয়ার

ডান দিকে শিলা দেবীর মন্দির দেখিয়ে বললাম: দুলাভাই, ওখানেই আছে সুবে বাঙলার হারানো সম্পদ মহারাজা প্রতাপাদিত্যকে হারিয়ে রাজা মানসিং যা লুটে এনেছিলেন—তাই।
চলো, তুলে নিয়ে যাই। দুলাভাই তার স্বভাবসুলভ রসিকতায় হাঁটা দিলেন মন্দিরের দিকে। আমি তো মুক্তিযোদ্ধা!
আমিও ছুট লাগালাম।

ঝরোকা দিয়ে দেখি—কালো কষ্টি-পাথরের দুর্গা-মূর্তি—যার গায়ে খোদাই করে প্রাচীনলিপি।
না-হে, শালাবাবু—এত ছোট-মা দিয়ে আমার চলবে না। চলো, এবারকার মত মানসিংকে মাফ করে দেই?
আচ্ছা, চলুন। আমিও মজা করে বলি: সিটি প্যালেস থেকে যখন মানসিংয়ের সেই ভাঙা তলোয়ারই নেইনি—কালো-মাকেও না নেই।
চলো-চলো, দেখি—শিশ মহলে কোন মধুবালাকে পাই কিনা।
নিজেকে কি এখনো শাহযাদা সেলিম মনে হয়, দুলাভাই?
কোন্ পুরুষের মনে হয় না, শালা বাবু? তোমরা ডাক্তাররা না বড্ড বেরসিক। কত করে বললাম: সি.এম.সি থেকে একটা ‘পরী’ তুলে নাওনিলে না। এখান থেকে এই ভোজপূরী হস্তিনীদের নিলে তো ওজনের মারা পড়বে—হা: হা: হা:।
আচ্ছা, চলুন—ভেতরে ঢুকি।

প্রথমেই এসে দাঁড়ালাম প্রাসাদ চত্বরে। একদিকে সার সার কলামের উপর সমতল ছাদের কুলুঙ্গী—যেখানে বসে অন্দরের নারীরা সামনের চত্বরের প্যারেড ও কুচকাওয়াজ বা রাজাদের মহা-দরবার দেখতেন। এর নাম দিওয়ানী আম। প্রতিটি খুঁটি কারুকার্যময়। ছবি তোলার দারুণ জায়গা—মেঝেতে আশ্চর্য সুন্দর পাথরের আলপনা।
চত্বর পেরুলেই মূল প্রাসাদ। হলদে সোনালী রঙের পোজ তার সারা গায়ে। শুনেছি এটা আটটা প্রাসাদের সমন্বিত বিল্ডিং। একদিকের চারটে দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত—বাকীগুলো ক্লোজ্ড।
সরু-সরু সিঁড়ি এবং ছোট-ছোট খোপ ও বাঁক পেরিয়ে দোতলায় উঠেই সামনে পড়লো মনোরম কারুকাজ করা বারান্দা, রেলিংয়ের ঘর এবং দূরে ঝিকমিক করা কাঁচের অসংখ্য-টুকরোর সাজানো শীশ মহলে—যার চারদিকে দড়ির বেস্টনী।

দুলাভাই এতক্ষণে আপাকে দেখতে পেলেন। প্রায় দৌড় গিয়ে ধরলেন তাকে—চলো-চলো শীশমহলের ছবি তুলবো। শালা বাবু, ক্যামেরা রেডি করো।
এফএক্সটু এস,এল,আর ক্যামেরা—ফিল্ম-ভরে রেডিই রেখেছি। তবুও কায়দা করে সেট করলাম স্ট্যান্ডের উপর। আশেপাশের সবাই ভীড় করে দাড়ালো চারপাশে। আপাকে নিয়ে দুলাভাই নানা-পোজে ছবি তুললেন। সবুজ সাথী হেসেই অস্থির। বাবা, মা’কে যা লাগছেনা—পুরো হিন্দী ফিল্মের স্টারদের মত।

আপা এই প্রথমবার রাগারাগি না করেই দুলাভাইকে সঙ্গ দিলেন। আমরা তিনতলায় উঠলাম। ছোট ছোট কুলুঙ্গী দিয়ে নিচের জল-বাগান দেখে মোহিত হলাম—যেন পানির মধ্যে বসানো হয়েছে খোপ-খোপ চার বাগ।
এই ভীড় আর আধো অন্ধকারের মধ্যেই যুবক যুবতীরা পরস্পরকে কাছে টানছে, জড়িয়ে ধরছে, চুমু খাচ্ছে; স্তনে হাত দিচ্ছে। কেউ কেউ ছিটকে সরছে; কেউ আবার আহ্লাদী গলায় বলছে—ছি: ছি:, ছাড়ো। প্লিজ—লোকজন দেখছে তো!

তার বিচিত্র অভিজ্ঞতা মাঝে মাঝেই সে শোনায় আমাকে—শোনেন, বুলবুল ভাই! আমার কাছে গুলশানের এক ভদ্রমহিলা এসেছেন, তার ছাব্বিশ বছর-বয়সী কাজের বুয়া নরপ্ল্যান্ট নেবে না—তাকে থেরাপী দেবার বুঝ দিতে হবে। তিনি কি বিবাহিত? আমি জানতে চাই। ছিল—গত পাঁচ বছর স্বামী নেই। তাহলে নরপ্ল্যান্ট কেন, ম্যাডাম? আরে আমার ঘরে পুরুষ মানুষ আছে না? দারোয়ান, বাবুর্চী, মশালচী—কত লোক। কে কি করে বসে—আমি তার দায় নেব কেন? আমি জানতে চাই: আসল সন্দেহ কার উপর? আপনার স্বামী ও ছেলে; নাকি কর্মচারীরা? আপনি কেমন ডাক্তার—এসব জিজ্ঞাসা করতে হয় না—জানেন না, বুঝি? বুঝেই জানতে চাইছি: এভাবেই কি আপনি সংসার করেন? উপায় কি, ডাক্তার? সবাই তাই-ই করে!

আমার মনে পড়ে মেডিকেলের রুমমেট ডা. আবদুল্লাহ আল মামুনের মুখটা। ঢাকা মেডিকেল কলেজের মানসিক-রোগ বিভাগের প্রধান সে। তার বিচিত্র অভিজ্ঞতা মাঝে মাঝেই সে শোনায় আমাকে—শোনেন, বুলবুল ভাই! আমার কাছে গুলশানের এক ভদ্রমহিলা এসেছেন, তার ছাব্বিশ বছর-বয়সী কাজের বুয়া নরপ্ল্যান্ট নেবে না—তাকে থেরাপী দেবার বুঝ দিতে হবে। তিনি কি বিবাহিত? আমি জানতে চাই। ছিল—গত পাঁচ বছর স্বামী নেই। তাহলে নরপ্ল্যান্ট কেন, ম্যাডাম? আরে আমার ঘরে পুরুষ মানুষ আছে না? দারোয়ান, বাবুর্চী, মশালচী—কত লোক। কে কি করে বসে—আমি তার দায় নেব কেন? আমি জানতে চাই: আসল সন্দেহ কার উপর? আপনার স্বামী ও ছেলে; নাকি কর্মচারীরা? আপনি কেমন ডাক্তার—এসব জিজ্ঞাসা করতে হয় না—জানেন না, বুঝি? বুঝেই জানতে চাইছি: এভাবেই কি আপনি সংসার করেন? উপায় কি, ডাক্তার? সবাই তাই-ই করে!

আমার মনে পড়ে মামুনের আরও অনেক গল্প। সব গল্পেই অবদমন আর যৌনতাকে অস্বীকার করার কাহিনী। এই হচ্ছে মহাভারতের সবচেয়ে বড় কুসংস্কার। যা এখনো আমাদের সবচেয়ে বিশাল পশ্চাতপদতা। না ইসলাম না আধুনিকতা—কেউই এ-পর্দাকে ঠেলে সরায়নি বলেই দেখবেন মেলার ভিড়ে, বিয়ে বাড়িতে বা যে কোন জনসমাবেশেই পুরুষ নারীর গায়ে হাত দিচ্ছে। এটা কিন্তু সুযোগ নেয়া নয়, বুলবুল ভাই—সুযোগ না পাওয়ার বিস্ফোরণ!

পুরো ভারত এই অবদমনে রুদ্ধ। বহু বিবাহ করা যাবে না, স্ত্রীকে তালাক দেয়া যাবে না, কর্মস্থলে প্রতিষ্ঠিত না হয়ে বিয়ে করা যাবে না এবং সর্বোপরি পারিবারিক অসমতা, ধর্মের শ্রেণীবৈষম্য এবং যৌতুক নামের ভয়ংকর পশুত্ব। কত বছর এই ‘জিঞ্জির’ যৌবনকে আটকে রাখবে—কে জানে!
আমি বলি: মামুন—আমার মা’র ছ-সাত বছর বয়সে বিয়ে হয়েছিল। সংসার করেছিলেন ন-দশ বছর থেকে। সন্তান জন্ম দিয়েছেন ১৩টি। আমি সবার ছোট । চার ভাই-বোন মারা গেছে শৈশবে বা জন্মের পরপরই।
আপনার মায়ের নামতো আয়েশা, তাই না, বুলবুল ভাই?
হ্যাঁ।
পুরোপুরিই আয়েশা দেখছি! মামুন হাসে—শুধু একজনের সন্তান ছিল না—আরেকজন সুজলা-সুফলা স্বর্ণভূমি!
মামুনের রসিকতায় সবাই হেসে উঠি। এক সময়কার ছাত্র ইউনিয়নের শীর্ষ বুদ্ধিজীবী আজকাল নামাজ তো পড়েই—পৃথিবী ও সৃষ্টির কলাকৌশল নিয়েও ভাবে।
আজ আমের-প্যালেসের আধো-অন্ধকার ছায়া-প্রচ্ছায়ায় আর ফিসফিসানীতে আমার মামুনকেই বারবার মনে পড়ছে—হায়রে মহাভারতীয় অবদমন!

শিশ মহল। ছবি: KEITH MACGREGOR PHOTOGRAPHY

মামা, তিন তলায় চলো। আব্বু-আম্মু সব আগে আগে দেখে নিলো যে—বলে সাথী।
চল্ব—লেই আমি ঘুরে বলি: সবুজ কই?
ওখানেই তো ছিল। —ভাইয়া? সাথী জোর গলায় চিৎকার দেয়: সবুজ ভাইয়া—।
প্রাসাদের নির্মাণ কৌশলের কারণে সে আওয়াজ বার বার ইকো হয়ে গমগম করে। দৌড়ে আসে সিকিউরিটি—! আপা-দুলাভাইর তো মুখ সাদা হয়ে গেছে ভয়ে। কিন্তু ক-মুহূর্ত পরেই সবুজও উঁকি দেয়।
কেয়া হয় বেটি, কুছ গড়বড়—? পাপী কৌন, হ্যায়? ডরাও মাত।
সাথী হয়ে কেঁদে ফেলে—ভাইয়াকে পাচ্ছি না। হারিয়ে গেছে।
ভীড় ঠেলে সামনে এসে দাঁড়ায় সবুজ—আরে, এইতো আমি! আপা ঠাঁশ করে চড় বসান ছেলের গালে। বদমাশ!—কোথায় পালিয়েছিলি—বল শিগগির।
আপার আবার তোলা হাত আমি ধরে ফেলি। ছাড়–ন তো এসব পাগলামী। চলুন—উপরে যেয়ে মন্দিরটা দেখি ভালো করে।
মন্দির খালি হ্যায়, বাবুজী! এক গার্ড জবাব দিলো।
কিউ ভাইয়া?
দেবীকো ধোবী কি পাছ লে গ্যায়া। কাল আয়েঙ্গে।

আমরা নিচে নামি—সুখ-মন্দিরের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলি। গঠনে এই নির্মাণ প্রায় আগ্রা ফোর্টের অন্দরমহলের মতই। শুধু ছাদের কার্নিশে যা একটু পার্থক্য—সূর্যের রেখার মত বিচ্ছুরণ সেখানে।
অত্যন্ত দামী হাতির দাঁতের সাথে চন্দন-কাঠে নির্মিত সুখমন্দির পাথুরে কাঠামোর উপর বসানো। আমি অবাক হলাম পুরো দূর্গের পানি-সঞ্চালন ব্যবস্থা দেখে। এই প্রচ- গরমেও নালা দিয়ে পাহাড়ী-ঝর্ণার তীব্র বেগে পানি ছুটছে এবং তা যথেষ্ট ঠান্ডা। এর নাম মন্দির হলেও এটি উপাসনালয় নয়—রাজা-রানীর আরামের জায়গা। সত্যিকার অনুবাদ হলে এর নাম লেখা হতো- ‘প্রমোদ ভবন’।

দুলাভাই হঠাৎ বললেন: ভাইরে, সুখ কাকে বলে—রাজা মানসিং, সোয়া-জয়সিংরা করে দেখিয়ে গেছেন। আরমা দুনিয়ার কিছুই পেলাম না।
কেন, পাওনি বাবা, জানো? সবুজ হঠাৎ ফস করে ওঠে; কারণ তোমরা তাদের মত সুদূর বাংলা বা ডেকান পর্যন্ত যুদ্ধ করতে যাও নি। জীবন মৃত্যুর সংগ্রামে নিজেকে উৎসর্গ করো নি।
কি বললি—ফিচকে? টকটকে লাল হয়ে বললেন তিনি: মুক্তিযুদ্ধকে কে করেছিল—তোর এই বাপ না, রে বুদ্ধু?

তুমিই করেছিলে আব্বু। কিন্তু ষোলো শতকের সেই যুগে এই মরুর দেশের মানুষের কাঁদা-মাটি ছাওয়া বাংলা পর্যন্ত যেয়ে বারো-ভূঁইয়াদের পরাজিত করা আর তোমাদের দু-চারটে ফাটুশ-ফুটুশ এক কথা নয়। দুনিয়ার নিয়ম হচ্ছে—যার যতটুকু পরিশ্রম, আল্লাহ তাকে ততটুকুই দেন।
এবার ঘটলো উল্টো। দুলাভাই মারতে উঠলেন ছেলেকে—আর আপা সবুজকে কোলের মধ্যে আড়াল করলেন: সাবাশ বেটা, এভাবেই সত্যের উপর থাকবি—ঠিক আছে? আমি আছি তোর পাশে।
তাহলে কথা দাও—আব্বুর সাথে আর রাগরাগি করবা না?

মন্দির মানে গৃহ। শব্দটি খুব সুমধুর এবং আধ্যাতিকতার সাথে জড়িত বলে প্রাচীনকালে এমন নাম রাখার বেশি প্রচলন ছিল। আসল ঘটনা হলো—রাজা যখনই যুদ্ধ জয় করে ফিরে আসতেন—ঐ যে লেকের ওপাড়ে যে রাস্তা দেখছিস—ঐ পথে—তখন এখানে বসেই অন্দরের নারীরা শাখ বাজিয়ে, উলুধ্বনি দিয়ে, বিজয়ানন্দ আনন্দ প্রকাশ করতেন। তাই এর ঐ নাম।

আপা এক ঝটকায় ছেলেকে সরিয়ে দিলেন। যা-যা, মামার কাছে যা। তোদের ভালোবেসে কোনো লাভ নেই।
আমি দু’ভাই বোনকে টেনে নিয়ে গেলাম পূর্ব প্রান্তের ঘুলঘুলিতে। নিচে মাওট-লেকের মধ্যে বিস্ময়কর সেই চারবাগে একসময় নাকি জাফরানেরও চাষ হতো। রাজা-রানী সেই সৌন্দর্য উপভোগ করতে কখনো চন্দ্রালোকিত বাগানে নেমে যেতেন, কখনো বেরিয়ে পড়তেন বজরায়। বৃষ্টির মধ্যে এই জানালায় বসেই দেখতেন ফুল ও বৃষ্টির সঙ্গম।
এ-জায়গাটার নাম কি, মামা? সাথী জানতে চায়।
কোন জায়গাটা?
যেখানে আমরা বসে দেখছি।
জয় মন্দির।
সব কিছুর নাম মন্দির কেন, মামা?

মন্দির মানে গৃহ। শব্দটি খুব সুমধুর এবং আধ্যাতিকতার সাথে জড়িত বলে প্রাচীনকালে এমন নাম রাখার বেশি প্রচলন ছিল। আসল ঘটনা হলো—রাজা যখনই যুদ্ধ জয় করে ফিরে আসতেন—ঐ যে লেকের ওপাড়ে যে রাস্তা দেখছিস—ঐ পথে—তখন এখানে বসেই অন্দরের নারীরা শাখ বাজিয়ে, উলুধ্বনি দিয়ে, বিজয়ানন্দ আনন্দ প্রকাশ করতেন। তাই এর ঐ নাম।
তুমি কত বার এখানে এসেছো, মামা? সবুজ প্রশ্ন করে।
এই নিয়ে তৃতীয় বা চতুর্থ বার।
একা, নাকি বন্ধুদের সাথে?
দুটোই—। তবে বন্ধু মানে, বাংলাদেশী কেউ না।
তো—?
লেখকদের বন্ধু রাস্তাতেই জুটে যায়, মামা। দেখলি না, প্লেনে এক বোরকাওয়ালী এসে পাশে বসলো—তারপর ‘বন্ধু’ হয়ে গেল।
ওসেই ভদ্রমহিলা—যার জন্য প্লেন দেরী করছিল? কে সে, মামা?
নাম বলা নিষেধ। মা গলা টিপে মারবে।
মা-তো এখানে নেই, মামা—বলো, প্লিজ—বলো। সবুজ আমাকে জড়িয়ে ধরে।
কাউকে বলবি না-তো?
না, এই তোমাকে ছুঁয়ে বলছি। কসম—কাউকে বলব না।
বোম্বের এক চিত্রনায়ীকা।

রেখা-রেখা—আমি ঠিকই তার চোখ দেখেছি, মামা। অমন ধারালো চোখ আর কারোই হতে পারে না। ঠিক বলেছি না—মামা?
আমি থ’ হয়ে সবুজকে দেখি। বয়:সন্ধিকালটা মানুষের জীবনে পরমাশ্চর্য সময়। অস্বাভাবিক বহু ঘটনা ঘটে তখন। কারো স্রাব শুরু হয়, কারো বীর্যপাত, কেউ হেলে পড়ে বিদ্যায়, কেউ ঢুকে পড়ে আবর্জনায়। হরমোনের প্রভাবে নানা বিষয়ের কৌতূহল খেলা করে মনে। যথাযথ নার্সিং না পেলে বিপর্যয় ঘটে এ-সময়েই। যৌন শিক্ষা না থাকায় হস্তমৈথুন ও ভয়ারিজমে আসক্ত হয়ে যায় ছেলেরা; মেয়েরা আক্রান্ত হয় প্রেমরোগে। সালমান-শাহরুখ ঋতিক-আমীরদের নিয়ে শুরু হয় মনে-মনে ফ্যান্টাসী। নাহলে—আমি অবাক হয়ে ভাবি—সবুজের মত ছেলে কিভাবে শুধু চোখ দেখেই শ্রীমতী ভানু রেখা গণেশনকে চিনে ফেরলো—যা তার মধ্যবয়স্ক বাবা-মাও ঠাওর করতে পারে নি?
মামা, আমিও টমক্রুজকে চিনি—পিচ্চি সাথী জয়ী হতে চায় ভাইয়ের উপর; তুমি চেন তাকে, হলিউডের নায়ক?
আমি হেসে বুড়িটাকে কাছে টেনে নেই। বাচ্চারা আসলেই এক একটা কম্পিউটার—তাদের মগজে সবসময় হাই ভোল্টেজ সিংক্রোনাইজেশন চলে।

 

চলবে…

আরো পড়তে পারেন

আগ্নেয়গিরি থেকে পায়ে হেঁটে বেস-ক্যাম্পে ফেরা

ইথিওপিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলে আছে ‘অ্যারতে-আলে’ নামে লাভা উৎক্ষেপণে প্রজ্বলিত একটি আগ্নেয়গিরি। আমরা বেশ কয়েকজন পর্যটক আজ জোট বেঁধে, একটি ট্যুর কোম্পানির গাইডের তত্ত্বাবধানে ওই আগ্নেয়গিরির পাশের একটি লাভা-হ্রদের পাড়ে ক্যাম্পিং করার উদ্যোগ নিয়েছি। ওখানে যেতে হলে প্রথমে একটি বেস-ক্যাম্পে এসে প্রস্তুতি নিয়ে ট্র্যাক করতে হয় ঘণ্টাকয়েক। বেস-ক্যাম্পে পৌঁছানোও ঝকমারি বিশেষ, আমরা ঘণ্টাকয়েক ল্যান্ডরাবারে প্রায়-দুর্গম এক….

মনে করি আসাম যাব

আফ্রিকার মাসাইমারা সাফারিতে যাওয়ার পর আর কোনো বড় সাফারিতে যাওয়ার সুযোগ হয়নি। অপর্না সেনের ‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস আইয়ার’ সিনেমাতে ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফার চরিত্রে রাহুল বোসের মুখে কাজিরাঙার কথা শোনার পর এ রিজার্ভ ফরেস্টে সাফারি করার ইচ্ছা জেগেছিল। মনে হচ্ছিল বাড়ির খুব কাছের এ জায়গাটাতে যে কোনো সময়েই যাওয়া যায়, আমাদের উত্তর পূর্ব সীমান্ত পেরিয়ে আর….

শিল্পের দেশে সৌন্দর্যের দেশে

অপার সৌন্দর্যের লীলাভূমি ভেনিসে পা রেখেছিলাম এক রৌদ্রোজ্জ্বল গ্রীষ্মের দুপুরে। যাত্রীবোঝাই পাবলিক বাসে চেপে যাত্রা করলাম সেন্ট মার্কোসের উদ্দেশে। সেন্ট মার্কোসে অবস্থিত বিখ্যাত স্থাপত্য ক্যাথেড্রাল। ক্যাথেড্রালের চারদিকের দেয়াল সুসজ্জিত কারুকার্যে খচিত। চিত্রকর্ম ও অক্ষরে লিপিবদ্ধ বিভিন্ন কাহিনি মুগ্ধতা তৈরি করে। এখানেই ভেনিসের প্রাণভোমরা, সেই বিখ্যাত গ্র্যান্ড ক্যানেল যা যুক্ত করেছে শতাধিক জলরাশিকে। বিশাল খাল ভেনিসকে….

error: Content is protected !!