Author Picture

বুলবুল সরওয়ার

গোলাপের রাজতোরণ (পর্ব-৬)

একটি মন্দিরও আছে এক পাশে—নাম কাল-ভৈরব। আশ্চর্য এই দেবতা—হিন্দু, বৌদ্ধ এবং জৈন—তিন ধর্মের দ্বারাই পূজিত। তার মূর্তিটাও বেশ ব্যক্তিক্রমী—পুরুষের পুরো জননযন্ত্র সবিস্তারে খোদিত। দেখেই আপা ঝট করে কাপড়ে মুখ ঢেকে সাথীকে সরিয়ে নিয়ে গেলেন অন্যদিকে। আর প্রতিক্রিয়ায় যা ঘটলো—তাতে আমি বিস্ময়ে হতভম্ব। সবুজ আকস্মিকভাবে প্রশ্ন করে বসে: মামা, এত ছোট পুরুষাঙ্গ দিয়ে এসব দেবতারা কিভাবে….

গোলাপের রাজতোরণ (পর্ব-৫)

জয়গর ফোর্টে আমি আগে যাইনি। দুলাভাইর পিড়াপিড়িতে নিমরাজি হয়ে টেক্সি নিলাম। আমের ফোর্ট থেকে বেশ পশ্চিমে—অনেক উঁচুতে এই দুর্গ ফটোগ্রাফারদের স্বর্গ। এটিও আরাবেল্লী পাহাড়ে মাথায় অবস্থিত এবং জয়পুর ও আমেরকে সুরক্ষার জন্য নির্মিত—তবে বেশি খ্যাত এর যুদ্ধ সরঞ্জাম, বারুদ-বুলেট এবং স্পেয়ারের জন্য। রাজপুত, মোঘল, ইংরেজ—সব আমলেই জয়গর একই ভূমিকায় নিয়োজিত ছিল। লাল পাথরে গড়া এই….

গোলাপের রাজতোরণ (পর্ব-৪)

ডান দিকে শিলা দেবীর মন্দির দেখিয়ে বললাম: দুলাভাই, ওখানেই আছে সুবে বাঙলার হারানো সম্পদ মহারাজা প্রতাপাদিত্যকে হারিয়ে রাজা মানসিং যা লুটে এনেছিলেন—তাই। চলো, তুলে নিয়ে যাই। দুলাভাই তার স্বভাবসুলভ রসিকতায় হাঁটা দিলেন মন্দিরের দিকে। আমি তো মুক্তিযোদ্ধা! আমিও ছুট লাগালাম। ঝরোকা দিয়ে দেখি—কালো কষ্টি-পাথরের দুর্গা-মূর্তি—যার গায়ে খোদাই করে প্রাচীনলিপি। না-হে, শালাবাবু—এত ছোট-মা দিয়ে আমার চলবে….

গোলাপের রাজতোরণ (পর্ব-৩)

এরপর গেলাম আয়না-ঘরে। এটিও আসলে পুরানো তেতলাহাভেলীর আয়না-ছাওয়া দেয়ালের যাদু!সবগুলো দরোজা-জানালায় বহির্মুখী আয়না লাগানো। বেশ মজা লাগলো আয়না ঘুরিয়ে ফিরিয়ে পুরো জয়পুরের প্রতিবিম্ব দেখতে। দূরের আমের ফোর্ট এবং নাহারগড় ফোর্ট দেখা গেল কবুতরের বাসার মত। সবুজ হেসে উঠে বললো—ঐটুকুন বাড়ি, ওর আবার এত নাম? আমি তার চুল ধরে টান দেই: শয়তান ছেলে, তুই জানিস, আম্বর….

গোলাপের রাজতোরণ (পর্ব-২)

কাজলকে দেখে প্রথম নাক সিঁটকালেন দুলাভাই। মা-তনুজা বা খালা-নূতন এখনও দুর্দান্ত রূপসীআর মেয়েটা এমন নিগ্রো-নিগ্রো কেন? আপা ঝামটা মারলেন: অভিনয় দেখ, মেয়েদের রূপটাই বড় হলো? তোমার প্রিয়-ছবি ‘মেঘে ঢাকা তারা’র সুপ্রিয়া তো এরচেয়ে কালো; তার বেলা? আরে সেটা বুঝাইনি আমি—আমার বউয়ের পাশে তো আমাকে রাজ্জাক না-হলেও চলে; কিন্তু কাজলকে তো শাহরুখের সাথে মানাচ্ছে না—তাই বলছি!….

গোলাপের রাজতোরণ (পর্ব-১)

জয়পুর-এয়ারপোর্ট শহর থেকে বেশ বাইরে-দক্ষিণে—খাঁ-খাঁ মুরুভূমির মাঝে। সবুজ সাথীকে নিয়ে নেমে দাঁড়ালাম টারমাকে। প্রচন্ড গরমের ভাপ আগুনের হল্কার মত এসে লাগছে চোখে মুখে। মরুভূমির রুক্ষতা ছুঁলেই আমার মনে পড়ে উটের কথা—প্রকৃতির এই বিভৎস অথচ দারুণ দরকারী-প্রাণীটির কথা; ওরা কি আশ্চর্যভাবে মানিয়ে নেয় এই বালু আর গলা-শুকিয়ে-আসার সাথে! কুরবান সাঈদ বলেছেন: জীবনের রুক্ষতা, হৃদয়ের উষ্ণতা এবং….

error: Content is protected !!