কবিতা

জুয়েল কলিন্দ-এর একগুচ্ছ কবিতা

নিরাপদ দূরত্ব এতোটা কাছে এসো না ভালোবাসার তাপেও পুড়ে যাবার ভয় আছে। অতটা দূরে যেও না মহাকর্ষের টানও কভু ছিন্ন হয়ে যায় পাছে। থাকো নিরাপদ দুরত্বে বাঁচো প্রয়োজনীয় গুরুত্বে।   বোধের প্রলয় আমার মস্তিষ্কের উদর ভর্তি কিলবিলে কীটেরা যদি হয় তোমার সু-খাদ্য, অভিজ্ঞান, তবে তাতে মিশিয়ে দেব প্রেমিকার সর্পিল চোখের বিষ। পৃথিবীর সব নিভৃত কোটরে ওঁৎ পেতে….

এনাম রাজুর একগুচ্ছ কবিতা

পুনরায় হোঁচট বন্যহাতির আঘাতের মতো তছনছ করো সুখের পোয়াতি ক্ষেত আমার মনের জমিন চৌচির, স্বস্তি হারিয়ে অস্থির, দুঃখগুলো— জমাট হয়ে আঘাতে আঘাতে জীবনের করে অপচয়। নিঃশব্দ ধ্যানের উপযোগী গুহার মতো মন, মাঝরাতে কেঁপে উঠা স্বামীহীন যুবতীর মতো নি:সঙ্গ চাঁদ মেঘের দাপট আমি একা বসে অবসরপ্রাপ্ত উড়োজান আর লোহার কঙ্কাল! আঁধারের চাদরে ঢাকা তোমার স্বাস্থ্যবতী দেহ….

পূর্ণিয়া সামিয়া’র একগুচ্ছ কবিতা

ক্যাপিচিনো সন্ধ্যা ভাষা কি শুধু কথাতেই থাকে ভাষা থাকে মুহুর্ত জুড়ে এপার ওপারে ক্যাপিচিনো আর সিগারেটের ধোঁয়ায় ঝড় কেবল মেঘ করলেই হয়না ওই পাঁচ মিনিটের আবদারেও ভেঙে চূড়ে ঝড় আসে কে বলেছে টাকার ব্যাগ আর সোনা দানাই কেবল ছিনতাই হয়! চুমুর কৌটোও ছিনতাই করে নেয় আবছায়ে কেউ….   জলের ভুল চুমু খেও ঠোঁট ফুলে গেলে….

ব্যক্তিগত অবহেলা

ক. তারপর তুমি চলে যাবে ময়মনসিংহ আমি যাব জামালপুর পথের ধুলো পথ পেরিয়ে যাবে পাখিদের ফেরা হবে না বাড়ি নদী যেন স্রোত তুলে ভাঙবে না ঢেউ আমাদের প্রাপ্তি বলে কিছুই যখন থাকবে না তখন মৃত্যুই হবে শেষ সমাধান, শেষ প্রাপ্তি। মাটির সাথে মিশে যাবার আনন্দের কথা লিখে যাব শুকনো কলাপাতায় তোমার কথা আমি আর বলব….

রোমেল রহমানের তিনটি কবিতা

মধ্যাহ্নে দুপুর হেঁটে চলে যাচ্ছে, আমি তাকে থামাতে পারছি না। আমি ভাত মেখে বসে আছি না খাওয়ার বাহানা মাথায়! হাত মুছে পালাব আমি?! গাছের পাতারা হলুদ হচ্ছে, আমার অশ্রুরা তাদের সবুজ ফেরাতে পারছে না। আকাশ ভেঙে পড়ছে একাকী কান্নায়। আম্মা শিশু হয়ে যাচ্ছেন আর আমি বুড়ো! (কি আশ্চর্য মধুর আমাদের মধ্যকার হাহাকার।) ছাদে দাঁড়ালে একটা….

লুব্ধক মাহবুবের একগুচ্ছ কবিতা

বাবার সোনার কলম বাবার কবরের পাশে, মাঝে ও ঠিক ওপরে কি রঙিন ফুলের সমাহার! মা’র কবরে রঙিন পাতা বাহার। বোন ও চুনিদার কবরে শান্ত সমাহিত ঘাস ফুল গুল্ম রাজি হারিয়ে গেছিলাম কোথায় কে জানে? স্কুল শেষ করে ভাল কলেজে ওঠার পুরস্কার, বাবার সেই সোনার নিবের পার্কার পেন। আহা! কি সে অনুভূতি! আজ, বেগম পাড়ার বাবারা….

সিদ্ধার্থ হকের পাঁচটি অপ্রেম

১. .                      প্রতিবার শিখতে হয়, কেননা সে প্রতিবারই নতুন; পূর্বের অভিজ্ঞতা, অনভিজ্ঞতা, ব্যর্থতা, সার্থকতা, ভুল, শুদ্ধতা, ধ্যান, অস্থিরতা .                                  বেদনা, কোন কাজেই আসেনা; অদ্ভুত অনিশ্চয়তা পুনরায় ফিরে আসে সমস্ত অস্তিত্বে; .  ….

আরণ্যক শামছ-এর শ্রাবণের কবিতা

এবার শ্রাবণে কবিতার হাঁটুজলে আষাঢ়ের গান থইথই করে ভাসে, আসমানীদের ভাঙ্গা ভাতের থালায় পুঁজিবাজার খলখলিয়ে হাসে। এবার শ্রাবণে পাহাড়ি বানের জলে মহেশের গৃহে অভাবের আনাগোনা, আদালত পাড়ায় সমকাল উল্লাসে মুক্ত বয়ান আগুনে পুড়ে সোনা। এবার শ্রাবণে কমলা রোদের তাপে গণতন্ত্র হয় দাবানলে পুড়ে খাক, শান্তি মিশন মার খায় ডুবাজলে মানুষ খুঁজে সাম্যবাদের ফাঁক। এবার শ্রাবণে….

মুজাহিদ আহমদের একগুচ্ছ কবিতা

বৃষ্টি-সজ্জিত ঘাস মাথার ওপর থেকে মেঘের পাহাড় সরাও— খণ্ড খণ্ড ঘৃণা ভাসিয়ে দাও বৃষ্টি— সজ্জিত ঘাস-মাটির টিলায়। যাবতীয় তরুলতায় এতোক্ষণে মিশে গেছে কেশ— ঘ্রাণ। ঠিক পিঠের দিকটায় যে বৃক্ষটি দাঁড়িয়ে-তার লজ্জায় আমিও লজ্জিত প্রায়। আগুন লেগেছে বনে— এই আগুন তোমারই পোষা। এখন যতোই আগুন লাগুক বনে— বিস্তীর্ণ জলাশয়ে-মুছে ফেলো। অবাঞ্চিত ঘোষণা করো জেগে ওঠা ক্ষোভ।….

বাবুল আহমদ-এর একগুচ্ছ কবিতা

আরেক ফাল্গুণে এ কেমন বর্বরতা! হিটলার যদি গোলাপ চাষীও হয়ে যায় অথবা বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু চার্চের পুরোহিত তাহলেও বরফ গলবে এন্টারকটিকায় পাতা ঝরবে শরতের বনে পাপড়িহীন বৃন্তে লাল পিঁপড়া যাবে বিষের সন্ধানে। এ কেমন বে-নজীর মাতুব্বরি! স্বর্গের পাখি এলবাট্রোস্ শরবিদ্ধ আজ তার নামে শোকগাঁথা হলে নরকের সিঁড়ি ভাঙতেই পারে কেউ যদি মহররমের মর্সিয়ায় রক্তাক্ত করে নিজের….

error: Content is protected !!