কবিতা

আহমেদ ফরিদের একগুচ্ছ কবিতা

তোমার সাথে দেখা হওয়া জরুরী নয় সেদিন তুমি আমাকের ডেকে বললে, ”আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টি ঝরছে এসো চা খেয়ে যাও ঝাল মুড়ি, পেঁয়াজ ভেজে দেবো সঙ্গে কাঁচালংকাও থাকবে। দুজনে চা খাব, মুড়ি খাব, আর গল্প করবো।’ আমি বললাম, ’না, আমি যাবো না । আমি আমার জানালায় বসে আকাশ দেখছি, বৃষ্টি দেখছি, আকাশের কান্না দেখছি, গাছেদের নুয়ে….

নিকোলাই রুবৎসভের কবিতা

নিকোলাই মিখাইলোভিচ রুবৎসভ (৩ জানুয়ারি ১৯৩৬ – ১৯ জানুয়ারি ১৯৭১) মাত্র পঁয়ত্রিশ বছরের জীবন পেয়েছেন রুশ কবি নিকোলাই রুবৎসভ। দুর্ভাগ্য তাঁকে তাড়া করেছে সারাজীবন। শৈশবে মায়ের মৃত্যু ও পিতার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ করার জন্য তাঁর স্থান হয় শিশু আশ্রমে। পড়াশোনা শেষ করার আগেই জীবিকার তাগিদে তাকে খনিতে, জাহাজে কাজ করতে হয়। সৈন্য বাহিনীতে যোগ দেওয়ার….

সোহরাব পাশা’র একগুচ্ছ কবিতা

নিদ্রিত ঘ্রাণের শব্দ দীর্ঘ যায় আশালতা ফিরে আসে বিষণ্ণ গোধূলি ফিরে আসে দুঃখিত সকাল, ক্ষয়ে যাওয়া এক দূরের উপনিবেশ পাখির চেয়ে মানুষের কোলাহল বেশি কোনো মৃত্যু মানুষকে অপরাধী করে না নিঃশ্বাসের রোদে আবছায়া নিদ্রিত মেঘ স্মৃতির অসুখ বাড়ে; দূরে নির্জন আধাঁরে জেগে ছিলো মানুষের কথা পুরনো সে বাড়ি সেই ছায়াপথ মায়াপথ জুড়ে কতো ভুল মানুষের….

কামরুল আলম সিদ্দিকী’র একগুচ্ছ কবিতা

সেরিব্রালে হারানপাড়া সেরিব্রালে হারানপাড়া, রাত জমেছে ঊষে; হুঁশ ফিরেছে মনের চুলোয় ধিকিধিকি তুষে! তুষের জ্বালে হাড়ের ব্যথায় ওঠছে কথা ভালের— টের পেয়েছি পিঁড়ায় তোমার নড়ছে নূপুর কালের! একটু ধরো, জ্বালাই কুপি— ঠুলিমুসি খুঁজি, ঠুলি তোমার ভাঙছে বেড়াল, মনটা খারাপ বুঝি? মুখটা তোল চোখটা দেখি, কোন বিড়ালী নাচে; কোন সরালি ডুব দিয়েছে পরের গাঙ্গের মাছে! একটু….

কুমকুম দত্তের একগুচ্ছ কবিতা

দেবীর মুখ শরত কাশফুল দুলে বাতাসে শেষ প্রহর সূর্যাস্তে নিবিড় সহমরণ সুখের বুকের নদী স্বচ্ছ গভীর জলধারা হাতছানি কাগজের নৌকা নির্মাণে জীবন পারাপার পরিশীলিত কালের কলস যৌথ যাপন দেবীর মুখ আনন্দে আত্মহারা শঙ্খধ্বনি বেজে ওঠে দিনশেষে মেঘের পালক ঝরে পড়ে রাত্রি আঁধার করুণ লোহার গারদে   আকাশে মৃত চাঁদ কামনার বিশুদ্ধ আঁধারে খুনসুটি বালিশে মাথা….

মাহমুদ দারবিশের কবিতা

ভূমিকা ও পরিচিতি মাহমুদ দারবিশ তার প্রজন্মের পথিকৃত হিসাবে বিবেচিত। তিনি অন্য যে কোনো আধুনিক আরবি কবির চেয়ে বেশি অনুদিত। তিনি ব্রিটিশ ম্যান্ডেটের অধীনে ফিলিস্তিনি গ্রাম আল-বিরওয়াতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন কিন্তু ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে হাজার হাজার আরবকে বাস্তুচ্যুত করায় তিনি সেখান থেকে পালিয়ে যান। তিনি তার বেশিরভাগ কবিতার মধ্যে আরবি ছন্দের সাথে আধুনিক কবিতা মিশ্রিত করেছেন।….

জমির হোসেনের তিনটি কবিতা

সর্বনাশী তুমি অনেক বড় সর্বনাশী বুঝতে হল অনেক দেরি ভেবে তাই মরি আমি জীবনটা করলে পরবাসী। কথা ছিল সঙ্গী হবে সুন্দর একটা ঘর সাজাবে জনম জনম কাছে রবে কখনও দিবেনা দূরে ঠেলে সুখের তরী বাইবো দুজন কষ্ট ভুলে বলবো ভালোবাসি। আধাঁর বলে তুমি আলো মানেনি মন তখনও কালো শেষ হল সব স্বপ্ন মনকে ঘিরে শুধু….

পাবলো নেরুদা’র কবিতা

৫০তম মৃত্যুবর্ষিকীতে পাবলো নেরুদাকে স্মরণ নেরুদার মিউজ মাতিলদে উরুটিয়া উঠে আসেন তার কবিতায়: সারারাত আমি তোমার সঙ্গে ঘুমাব এই দ্বীপে সমুদ্রের কাছে আনন্দ ও ঘুমের মাঝখানে তুমি বুনো ও মিষ্টি আগুন ও পানির মাঝখানে। ১১ সেপ্টেম্বর ১৯৭৩ জেনারেল অগাস্তো পিনোশে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট সালভাদর আয়েন্দের সরকারকে উৎখাত করলেন। প্রেসিডেন্টের প্রাসাদে আগুন জ্বলল,….

জুয়েল কলিন্দ-এর একগুচ্ছ কবিতা

নিরাপদ দূরত্ব এতোটা কাছে এসো না ভালোবাসার তাপেও পুড়ে যাবার ভয় আছে। অতটা দূরে যেও না মহাকর্ষের টানও কভু ছিন্ন হয়ে যায় পাছে। থাকো নিরাপদ দুরত্বে বাঁচো প্রয়োজনীয় গুরুত্বে।   বোধের প্রলয় আমার মস্তিষ্কের উদর ভর্তি কিলবিলে কীটেরা যদি হয় তোমার সু-খাদ্য, অভিজ্ঞান, তবে তাতে মিশিয়ে দেব প্রেমিকার সর্পিল চোখের বিষ। পৃথিবীর সব নিভৃত কোটরে ওঁৎ পেতে….

এনাম রাজুর একগুচ্ছ কবিতা

পুনরায় হোঁচট বন্যহাতির আঘাতের মতো তছনছ করো সুখের পোয়াতি ক্ষেত আমার মনের জমিন চৌচির, স্বস্তি হারিয়ে অস্থির, দুঃখগুলো— জমাট হয়ে আঘাতে আঘাতে জীবনের করে অপচয়। নিঃশব্দ ধ্যানের উপযোগী গুহার মতো মন, মাঝরাতে কেঁপে উঠা স্বামীহীন যুবতীর মতো নি:সঙ্গ চাঁদ মেঘের দাপট আমি একা বসে অবসরপ্রাপ্ত উড়োজান আর লোহার কঙ্কাল! আঁধারের চাদরে ঢাকা তোমার স্বাস্থ্যবতী দেহ….

error: Content is protected !!