Author Picture

ভালোবাসা কেবলই একটি শব্দ নয়!

তাসনুভা রাইসা

পাওলো কোয়েলহো হাল না ছেড়ে বরং মনে রাখতে বলেছেন, ‘ভালোবাসা সব সময়ই চাবি রিংয়ের সেই শেষ চাবি, যা দরজাটি খুলে দেয়।

‘এই খেদ আমার মনে—ভালোবেসে মিটল না সাধ, কুলাল না এ জীবনে। হায় জীবন এত ছোট কেনে? এ ভুবনে?’

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কবি’ উপন্যাসে কবি নিতাইচরণের এই হাহাকার দেখা দেয় একই সঙ্গে তার ভালোবাসার মানুষ বসন ও ঠাকুরঝির মৃত্যুর পর। পরপর দুই মৃত্যুতে পাথর হয়ে যায় সে, হৃদয়ের অবিরল রক্তক্ষরণ যেন অবশেষে তাকে গ্রাম্য কবিয়াল থেকে কবির পর্যায়ে উন্নীত করে। তখনই সে গেয়ে চলে, ‘ভালোবেসে মিটল না সাধ, কুলাল না এ জীবনে’।

‘খুব গুরুত্বপূর্ণ কথাগুলো বাক্সবন্দী করে রাখার জন্য জীবনটা আসলেও ছোট। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, আমি তোমাকে ভালোবাসি—এই কথা আমরা অনেকেই হৃদয়ে তালাবদ্ধ করে রেখে দেই।’

ওপরের চমৎকার কথাগুলো যিনি বলেছেন, তিনি ব্রাজিলিয়ান ঔপন্যাসিক, লেখক ও গীতিকার পাওলো কোয়েলহো। তিনিই পৃথিবীর একমাত্র জীবিত লেখক, যিনি বই বিক্রির সর্বোচ্চ রেকর্ড গড়ে স্থান করে নিয়েছেন গিনেস ওয়ার্ল্ড বুকে।

‘Love is only a word’ এই শিরোনামে  তার ব্লগ ‘30 Second Reading’-এ বুঝিয়েছেন ভালোবাসার শক্তিকে কাজে লাগাতে হলে তার অন্তর্নিহিত গভীরতা অনুভব করতে হবে।

কোয়েলহোর মতে, কাউকে ‘ভালোবাসি’ বলার পর প্রত্যুত্তরে ঠিক একই রকম সাড়া পাওয়া যাবে—এটি সব সময় নাও হতে পারে। কিন্তু তাই বলে আশাহত হওয়া যাবে না।

‘We love because we need to love.’ না হলে ভালোবাসা তার সত্যিকারের অর্থ হারাবে এবং সূর্যও আলো ছড়ানো থেকে বিরত থাকবে। বাগানের গোলাপ ফুল স্বপ্ন দেখে মৌমাছি গুঞ্জন ছড়াবে তার চারপাশে, কিন্তু দেখা গেল কোথাও কেউ নেই। তখন সূর্য জানতে চায়, ‘গোলাপ অপেক্ষা করে ক্লান্ত কি না।’

এমনকি ভালোবাসা দৃশ্যমান না হলেও আমরা উন্মুখ হয়ে থাকি এই ভাবনায়, যদি সে আসে! জীবনে মাঝে মাঝে একাকিত্ব যখন সবকিছু দুমড়ে-মুচড়ে ফেলতে উপদ্রুত হয়, তখন একমাত্র প্রতিরোধ ভালোবাসার ওপর বেঁচে থাকা।

উত্তরে গোলাপ ক্লান্তি স্বীকার করে বলে, ‘যদি মৌমাছি আসবে না জেনে সে পাপড়ি মেলা বন্ধ করে দেয়, তাহলে সে ধীরে ধীরে শুকিয়ে যাবে এবং একদিন তার মৃত্যু ঘটবে।’ ভালোবাসা পাওয়ার যে আকুতি, যে ব্যাকুলতা, সেটাই তাকে বাঁচিয়ে রাখে, কোমল রাখে।

এমনকি ভালোবাসা দৃশ্যমান না হলেও আমরা উন্মুখ হয়ে থাকি এই ভাবনায়, যদি সে আসে! জীবনে মাঝে মাঝে একাকিত্ব যখন সবকিছু দুমড়ে-মুচড়ে ফেলতে উপদ্রুত হয়, তখন একমাত্র প্রতিরোধ ভালোবাসার ওপর বেঁচে থাকা।

জীবনের আকস্মিকতার মুহূর্তের যে রহস্যময়তা, তার মধ্যে ডুব দেয়াই আমাদের সত্যিকারের লক্ষ্য হওয়া উচিত। এর মাঝেই আমরা উন্মোচন করতে সমর্থ হই, ঘরে আমাদের জন্য যিনি অপেক্ষা করেন, তিনিও ঠিক একই রকমভাবে সবকিছু নিয়ে আমার মতো আশঙ্কা নিয়ে অপেক্ষা করে আছেন।

কোয়েলহো রূপক অর্থে বলেছেন, ‘ভালোবাসা জলের মতো, যা মেঘে রূপান্তরিত হয়। এটি আকাশে আরোহণ করে, যেখানে নির্দিষ্ট দূরত্ব থেকে সবকিছু দেখা যায়। কারণ মেঘ জানে, একদিন পৃথিবীতে ফিরে আসতে হবে।

ভালোবাসা সেই প্রিয়তমা মেঘের মতো, যা বৃষ্টিতে রূপান্তরিত হয়। এটি বৃষ্টিকে পৃথিবীতে টেনে আনে, যেখানে সে শস্যক্ষেতে সেচ প্রদান করে।

ভালোবাসা কেবলই একটি শব্দ, যতক্ষণ না আমরা সমস্ত শক্তি দিয়ে আমাদের দখল করার সুযোগ দেই।

ভালোবাসা কেবলই একটি শব্দ, যতক্ষণ না পর্যন্ত  কেউ এসে তার অর্থ উপলব্ধি করায়।’

পাওলো কোয়েলহো হাল না ছেড়ে বরং মনে রাখতে বলেছেন, ‘ভালোবাসা সবসময়ই চাবি রিংয়ের সেই শেষ চাবি, যা দরজাটি খুলে দেয়।’

কবি, লেখক, প্রাবন্ধিক এবং অধ্যাপক জীবনাননন্দ দাশ ও বলে গেছেন, ‘সকল শক্তির আগে প্রেম তুমি’

‘সকল ক্ষুধার আগে তোমার ক্ষুধায় ভরে মন!

সকল শক্তির আগে প্রেম তুমি, তোমার আসন

সকল স্থলের ’পরে, সকল জলের ’পরে আছে!

যেইখানে কিছু নাই সেখানেও ছায়া পড়িয়াছে

হে প্রেম তোমার! যেইখানে শব্দ নাই তুমি আলোাড়ন

তুলিয়াছ! অঙ্কুরের মতো তুমি, যাহা ঝরিয়াছে

আবার ফুটাও তারে! তুমি ঢেউ, হাওয়ার মতন!

আগুনের মতো তুমি আসিয়াছ অন্তরের কাছে!

আশার ঠোঁটের মতো নিরাশার ভিজে চোখ চুমি

আমার বুকের পরে মুখ রেখে ঘুমায়েছ তুমি!’

আর পাওলোর কাছে ভালোবাসা সব সময়ই সময়কে অতিক্রম করে গেছে। পাওলো কোয়েলহো তার ‘বাই দ্য রিভার পেদ্রা, আই স্যাট ডাউন অ্যান্ড উইপ্ট’ উপন্যাসে বলেছেন, ‘The moment we begin to seek love, love begins to seek us. And to save us.’

কাউকে ভালবেসে তার কৃপা করা হয়েছে আর বিনিময়ে ভালোবাসা প্রাপ্ত ব্যক্তিটি সারাজীবন  অনুগত হয়ে থাকবে, এমনটি ঘটে থাকলে সেখানে ভালোবাসা ব্যাপার টাই অনুপস্থিত। কারণ ভালোবাসার আদান প্রদান হচ্ছে পারস্পারিক এক আলাপন যেখানে  অনুভুতি টাই  ঐশ্বরিক। আর ঐশ্বরিক অনুভুতি ধারণ করে সে অনুভূতি টুকুর পরিচর্যাও  করতে হয়।

কোয়েলহো তার ‘বাই দ্য রিভার পেদ্রা, আই স্যাট ডাউন অ্যান্ড উইপ্ট’ উপন্যাসে নানা ভাবেই ‘ভালবাসার শক্তি, ভালবাসাকে উপলব্ধির কথা বলেছেন, জীবনের চলার পথে ভালোবাসাই যে অণুপ্রেরণা সেটা বার বার বিভিন্ন প্রসংগে এসেছে এবংপাওলো ‘ভালোবাসার’ এই বহুল ব্যবহৃত শব্দটিকে নানা অপব্যাখ্যা থেকে মুক্ত করতে চেয়েছেন। কাউকে ভালবেসে তার কৃপা করা হয়েছে আর বিনিময়ে ভালোবাসা প্রাপ্ত ব্যক্তিটি সারাজীবন  অনুগত হয়ে থাকবে, এমনটি ঘটে থাকলে সেখানে ভালোবাসা ব্যাপার টাই অনুপস্থিত। কারণ ভালোবাসার আদান প্রদান হচ্ছে পারস্পারিক এক আলাপন যেখানে  অনুভুতি টাই  ঐশ্বরিক। আর ঐশ্বরিক অনুভুতি ধারণ করে সে অনুভূতি টুকুর পরিচর্যাও  করতে হয়। ঠিক বাঁধ এর মত, প্রবল স্রোত বা দুর্যোগের ঘনঘটা থেকে রক্ষা করে যে বাঁধ, সেখানে একবার ছোট্ট কোন ফাটল দেখা দিলে পানি ঢুকতে শুরু করে এক সময় পুরো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকেই দুর্বল করে দেয় ফলে সেটি আর কোন শক্তিশালী স্রোতকে ঠেকাতে সক্ষম হয় না। তাই জীবনের সম্পর্কগুলোকে ঘিরে ভালোবাসার এক প্রতিরক্ষা ব্যুহ তৈরি করতে হবে যেন প্রবল ঝড় ঝাপটাতে টিকে থাকতে পারে। ভালোবাসা এক উদ্দীপনা, কোয়েলহো দিয়েছেন চমৎকার এক উপমা ‘Love is a trap. When it appears, we see only its light, not its shadows’সেই আলোর স্রোতে পাল তুলে প্রজাপতি মন নানা স্বপ্ন দেখে সেই অনুপ্রেরণায় জীবন কে এগিয়ে নেয়।

ভালোবাসার কাছে পৌঁছানোর জন্য কোয়েলহোর নায়কেরা  সব সময়ই যুদ্ধ করতে প্রস্তুত, যারা মনে করে জীবনে আছে এমন কিছু জিনিস যার জন্য শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ করাটা সাজে । এইদিকে কোয়েলহো যেমন ভালোবাসা টুকু সাথে নিয়ে জীবনে চলার জন্য সদা প্রস্তুত অপরদিকে ১৯ শতকের ফরাসী উপন্যাসিক জর্জ স্যান্ড এর বিখ্যাত উক্তিটিওবিশেষভাবে প্রণিধানযোগ্য ‘There is only one happiness in this life, to love and be loved.’ স্যান্ড এর বিশ্বাস, জীবনের একমাত্র সার্থকতা ও সুখ ভালবাসায় এবং ভালোবাসারপ্রাপ্তিতেই নিহিত।তিনি তাঁর ইন্ডিয়ানা উপন্যাসেও কোন এক জায়গায় বলেছেন-‘তোমরা  বিশ্বাস করবে না  কিন্তু আমার জন্ম হয়েছে ভালবাসতেই…’

জর্জ স্যান্ড এর  সেই বিখ্যাত উক্তির অণুরণন জনপ্রিয় রোমান্টিক কাহিনী নির্ভর চলচ্চিত্র মুল্যা রুঁঝ(Moulin Rougue) এ’ও পাওয়া যায়-

‘The greatest thing you’ll ever learn is just to love and be loved in return’-সেটি এক মুহুর্তের জন্য হলেও হতে পারে এক জীবনে পাওয়া শ্রেষ্ঠ অনুভূতি বা অণুপ্রেরণা।প্রেমহীন হাজার বছরের চেয়ে একদিন ভালবেসে মরে যাওয়াও অনেক মানব মানবীর আকুতি… এমনইএক আশ্চর্য ব্যাপার এই ভালোবাসা।

নোবেল জয়ী চিলিয়ান কবি পাবলো নেরুদার কবিতার মূল অনুষংগ বা উপজীব্য বিষয় ‘প্রেম বা ভালোবাসা’ । কবি প্রেমিকাকে ভালবেসেছেন কারণ তার আর কোন উপায়ই নেই…ন্যায় অন্যায় জানার দরকার নাই, ভালোবাসা কি পীড়াদায়ক নাকি গর্বের বিষয় সেই ব্যাখা তিনি জানেন না বা জানতেও চান না, তিনি শুধু জানেন ভালোবাসা ছাড়া তাঁর গত্যন্তর নেই…

“I love you without knowing how, or when, or from where,
I love you simply, without problems or pride:
I love you in this way because I don’t know any other way of loving.”

Pablo Neruda, 100 Love Sonnets

যে হৃদয় একবার ভালবেসেছে, প্রেমে মজেছে, সে-ই অফুরান শক্তির সন্ধান পেয়েছে…আর তাই পাবলো নেরুদা বলেছেন

To feel the love of people whom we love is a fire that feeds our life.” 

“আমরা যে লোকেদের ভালোবাসি তাদের ভালোবাসার অনুভূতি হল আমাদের জীবনের জন্য জ্বালানি যা আমাদের জীবনকে বাঁচিয়ে রাখে…’’

কবিগুরু ‘অনন্ত প্রেম’ কবিতায়…সেই  ভালোবাসা বাপ্রেমের কথাই বলেছেন যে প্রেম তিমির রাতেও সবচেয়ে বেশি উজ্জ্বলভাবে দৃশ্যমান চিরস্থায়ী ধ্রুব তারকার বেশে। তাই তো যুগে যুগে প্রেম বা ভালোবাসাই নিত্য নতুন রূপে কালের সীমানা ছাড়িয়ে জীবন থেকে জীবনে ছড়িয়ে দেয় ‘নিখিলের সুখ, নিখিলের দুখ’…চিরায়ত এক ঝংকার…

এমনকি পাবলো নেরুদা তার হারানো ভালোবাসার স্মৃতিকে মনে করার জন্য হলেও কলম তুলে নেন, লিখেন দুঃখতম পংক্তিগুলো, কি অবিশ্বাস্য শক্তি সে ভালোবাসার…একবার হলে এক মূহুর্ত হলেও তো কেউ ভালবেসেছিল…যেটা সৃজনীশক্তির  চরম অনুপ্রেরণা দেয়।

Tonight I can write the saddest lines.
I loved her, and sometimes she loved me too.
……………………………………………………..
My sight searches for her as though to go to her.
My heart looks for her, and she is not with me.
………………………………………………………

I no longer love her, that’s certain, but how I loved her.
My voice tried to find the wind to touch her hearing…

Pablo Neruda, Twenty Love Poems and a Song of Despair

যেন নেরুদা বলছেন ‘ধন্যবাদ হে ভালোবাসা, ধন্যবাদ হে দুঃখ দেওয়া!’

ভালোবাসা যে কেবলই শব্দ নয়, হতে পারে এটিএকটি সংগীত অথবা  ছোট গল্প কিংবা কবিতা উপন্যাস অথবা শুধুই প্রার্থনা আর এই সামগ্রিকতা কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চেয়ে গভীর ভাবে কেউ প্রকাশ করতে পেরেছেন…এমন নাম তো সহজে মনে আসে না। কবিগুরু ‘অনন্ত প্রেম’ কবিতায়…সেই  ভালোবাসা বাপ্রেমের কথাই বলেছেন যে প্রেম তিমির রাতেও সবচেয়ে বেশি উজ্জ্বলভাবে দৃশ্যমান চিরস্থায়ী ধ্রুব তারকার বেশে। তাই তো যুগে যুগে প্রেম বা ভালোবাসাই নিত্য নতুন রূপে কালের সীমানা ছাড়িয়ে জীবন থেকে জীবনে ছড়িয়ে দেয় ‘নিখিলের সুখ, নিখিলের দুখ’…চিরায়ত এক ঝংকার…

ভালোবাসা তো তাই কেবলই শব্দ নয় ! নয় শুধু স্বপ্ন…রবি ঠাকুরের শেষের কবিতার পংক্তি ধরে বলতেই হয়,

‘তবু সে তো স্বপ্ন নয়,

সব চেয়ে সত্য মোর, সেই মৃত্যুঞ্জয়,

সে আমার প্রেম…’

তাহলে প্রেমের বাসনা কি হওয়া উচিত?

আরবী ভাষার বিশ্বখ্যাত কবি, দার্শনিক, চিত্রশিল্পী কাহলিল জিবরান এর শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ ‘দ্য প্রফেট’ এর ‘ভালবাসা’ অধ্যায়ে তাঁর দর্শন বর্ণনা করেছেন, আর বাংলাভাষায় কবীর চৌধুরীর প্রাঞ্জলঅনুবাদ থেকে বুঝতে পারি কাহলিল জিবরান পাউলো কোয়েলহো এর বহু আগেই বলে গেছেন ‘ভালোবাসা যখন তোমাকে হাতছানি দিয়ে ডাকে তখন তাকে অনুসরণ করো, যদিও তার পথ রুক্ষ এবং কঠিন’ । তাঁর দর্শন মতে, যদি কেউ ভালবাসে এবং বাসনার প্রয়োজন খুবই বোধ করে তাহলে অন্তরের বাসনায় অত্যধিক মমতার যন্ত্রণাকে উপলব্ধি করে স্বেচ্ছায় ও সানন্দে রক্তক্ষরণকে প্রশ্রয় দিতে হবে। সকালে ভালোবাসার আর একটি দিনের জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে ধন্যবাদ দিয়ে দিনটি শুরু করে মধ্যাহ্নে বিশ্রামের পাশাপাশি প্রেমের আনন্দের কথা ভেবে তন্ময়তা, সন্ধ্যায় কৃতজ্ঞচিত্তে ঘরে ফিরে তারপর প্রিয় মানুষটির জন্য বুকে একটা প্রার্থনা এবং ঠোঁটে একটি বন্দনা গীত নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ার  বাসনাই প্রেমের যোগ্য করে পথ ঠিক করে দেবে এবং ভালোবাসা এমন সবকিছু করবে যেন অন্তরের গোপন খবরের সন্ধান পেয়ে মানুষ হয়ে উঠতে পারে জীবনেরই এক অংশ।

আরো পড়তে পারেন

বাংলাদেশে চার্টার্ড সেক্রেটারী পেশার উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ

কিছুটা বিলম্ব হলেও বাংলাদেশে চার্টার্ড সেক্রেটারী পেশার প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব সৃষ্টি হয়েছে। দেশের কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান সমূহে দক্ষ চার্টার্ড সেক্রেটারী তৈরিতে দেশে এই পেশার নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড সেক্রেটারীজ অব বাংলাদেশ (আইসিএসবি)’ অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। ২০১০ সালে জাতীয় সংসদে চার্টার্ড সেক্রেটারী আইন প্রণয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশে এই পেশার অগ্রযাত্রা শুরু হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন তিনটি….

একাত্তরের গণহত্যা প্রতিহত করা কি সম্ভব ছিল?

২৫ মার্চ কালরাতে বাঙালি জাতির স্বাধিকারের দাবিকে চিরতরে মুছে দিতে পাকিস্তানি নরঘাতকেরা যে নৃশংস হত্যাকান্ড চালিয়েছিল, তা বিশ্ব ইতিহাসে চিরকাল কলঙ্কময় অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। ওই এক রাতেই শুধুমাত্র ঢাকা শহরেই ৭ হাজারেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়। গ্রেফতার করা হয় প্রায় তিন হাজার। এর আগে ওই দিন সন্ধ্যায়, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সমঝোতা আলোচনা একতরফাভাবে….

ভাষা আন্দোলনে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী চেতনা

আগের পর্বে পড়ুন— চূড়ান্ত পর্যায় (১৯৫৩-১৯৫৬ সাল) ভাষা আন্দোলন পাকিস্তানের সাম্রাজ্যবাদী আচরণের বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিবাদ ও একটি সার্থক গণআন্দোলন। এই গণআন্দোলনের মূল চেতনা বাঙালী জাতীয়তাবাদ। জাতীয়তাবাদ হলো দেশপ্রেম থেকে জাত সেই অনুভূতি, যার একটি রাজনৈতিক প্রকাশ রয়েছে। আর, বাঙালি জাতিসত্তাবোধের প্রথম রাজনৈতিক প্রকাশ বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের ফলে দুই হাজার মাইল দূরত্বের….

error: Content is protected !!