Author Picture

নীলুর প্রেমের দিন রাত্রি (পর্ব: ২)

অনুপ মোস্তফা

পড়ুন— নীলুর প্রেমের দিন রাত্রি (পর্ব: ১)

৩.

— নীলু পরীক্ষা তো শেষ, বাড়ি যাবা নাকি?

— যাব। কিছুদিন সৃজাকে পড়াতে হবে। পরীক্ষার জন্য অনেক দিন পড়ানো হয়নি। একটানা কিছুদিন পড়াব। তুমি কোথাও যাবা ঘুরতে?

— ঠিক নেই। দেখি, যেতেও পারি।

নীলুর মনে হলো এই প্রথম ময়ীর চশমার পিছনের চোখে মায়া। নিলুর জন্য মায়া। কিছু বলবে ভাবছিল। ভাবছিল বলে দেয়, ময়ী তোমাকে আমার ভালো লাগে। বলা হয় না, ময়ীর গাড়ি চলে আসে। গাড়িতে ময়ীর মা বসে আছে।

সৃজাকে পড়ানো শেষ। নীলু বাড়ি যাওয়ার প্ল্যান করছিল। একদিন দুপুরে ময়ীর ড্রাইভার এসে খবর দিয়ে গেল ময়ী সন্ধ্যায় যেতে বলেছে সাথে একটা চিঠি।

নীলু,
তোমাকে মিস করছি ভীষণ। দেখতে ইচ্ছে করছে। সন্ধ্যায় আমি অপেক্ষা করবো। তুমি চলে এসো। ড্রাইভার তোমাকে গিয়ে নিয়ে আসবে।

ময়ী

ময়ীর চিঠি পেয়ে নীলু অনেক্ষণ চুপ করে বসে রইল। এই চিঠির ভাষায় কি আছে! প্রেম? আহবান? বন্ধুত্ব? ময়ীকে দেখে তো কোনো দিন মনে হয়নি নীলুর প্রতি তার ভালোলাগা আছে। নাকি নীলুর ভালোলাগা ময়ী বুঝতে পেরেছে।

ময়ীদের দারোয়ান বলল, ‘আপামনি ছাদে আছে। আপনারে যেতে বলছে।’

বেশ সাজানো বাড়ি। প্রায় সারা বাড়িই অন্ধকার। পায়ে পায়ে ছাদে উঠলো নীলু। কাউকেই চোখে পড়লো না। ময়ীর বাবা ব্যবসায়ী। মা ডাক্তার। গাইনোকোলোজিস্ট। প্রাচুর্যের ছাপ প্রতিটি কোণায়। ছাদ ভর্তি সুগন্ধি ফুলের গাছ। একপাশে একটা সুন্দর করে সাজানো ঘর।

— নীলু এই দিকে। আমি এখানে।

ছাদের এক কোণায় একটা অ্যালামন্ডা গাছের কাছে ময়ী বসে আছে। সারা গাছ জুড়ে অ্যালামন্ডা ফুল ফুটে আছে। ময়ীকে চেনা যাচ্ছে না ঠিক। এইভাবে কখনো দেখিনি। দেখব আশাও করিনি। হাফ হাতা গেঞ্জি আর জিন্সের শর্টস পড়া। ফর্সা পায়ের প্রায় পুরোটাই দৃশ্যমান। নীলু একবার তাকিয়ে চোখ নামিয়ে নিল। ময়ী বুঝতে পারল নীলু লজ্জা পাচ্ছে। তার লজ্জা দূর করার জন্য ময়ী বলে উঠল, ‘লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই। আমি বাসায় ফ্রি পোশাক পরি। বলো কি খাবে?’

— চিঠি লিখলে? মিস করছো? এরকম তো হয়নি এই কয়েক মাসে। হঠাৎ কি হলো?

— ডোন্ট বি সো হেস্টি ডিয়ার। নাইট ইস স্টিল ইয়াং। ইন ফ্যক্ট ইট ইস জাস্ট দ্য বিগিনিং অফ দ্য ডার্কনেস।

তুমি ড্রিংক করবে? লাইট আছে। পুরো বোতল খেলেও মাতাল হবা না।

— পাগল হয়েছো? আমি ড্রিংক করব? এই একটা বোতলের দাম আমার পুরো মাসের মাইনে। তুমি করো।

— এখন তো তোমাকে এর দাম দিতে হচ্ছে না। আর সব কিছুকে নিজের অবস্থান দিয়ে মাপতে হয় না। আমার তোমার নিজস্ব সীমানা আছে, সীমাবদ্ধতা আছে। এর বাইরেও সীমানা আছে। যেমন ধরো— এই বাড়ি, বাড়ির বাইরে শহর, শহরের বাইরে আকাশ, আকাশের বাইরে মহাশূন্য। নিজেকে সব অবস্থায় তুলনা করতে নেই। ছোট ভাবতে নেই। আমাকে দেখে অবাক হচ্ছো? মানুষের অনেক মুখ থাকে। চরিত্রের অনেক দিক থাকে। কলেজের ময়ী, লাইব্রেরীর ময়ী আর এই সন্ধ্যার ময়ীর মধ্যে অনেক পার্থক্য। তোমারও এমন অনেক মুখ আছে। পরিবেশের ভিন্নতায় মুখ বদলে যায়। তুমি নিজেও জানো না হয়তো এখনো। পরিবেশ বদলে গেলে জানতে পারবে। প্রথমে নিজের ওই মুখ দেখে লজ্জা হতে পারে। ভয় হতে পারে, ঘৃণা হতে পারে, অথবা গর্বও হতে পারে। তারপর এক সময় সয়ে যায়।

শরীরের মাঝখানের দেয়াল রইলো না আর। অবাধ্য রাত্রি প্রেমের নতুন দিগন্ত চেনালো নীলুকে। খুঁতহীন ঠোঁট থেকে পায়ের আঙুল, চোখের মনি থেকে নাভির গভীরতা অপার্থিব কোনো ভাস্করের সৃষ্টি। তার কি সাধ্য এই অপরুপাকে হেলায় ফেলে চলে যায়

নীলু খুব অবাক হয়ে ভাবছিল, এই ময়ী কোন ময়ী? এই ময়ীকে সে চেনে না। কোনোদিন দেখেনি। এ ময়ী অন্যরকম। কত সব অদ্ভুত কথা বলছে। ঘোরলাগা ময়ী। যে ময়ীর ঠোঁট আর চিবুকের ওপর পড়া রোদকে নীলু ভালোবেসেছিল, এই ময়ী সে নয়। যাকে একবার শুধু ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছে করেছিল এ সে নয়। তবুও আজ ময়ীকে নীলু সব বলবে।

— ময়ী, তোমাকে আমার কিছু কথা বলার ছিলো।

— জানি কি বলবে… আমাকে তোমার ভালো লাগে। আমি অনেক আগেই বুঝেছি।

— তোমার?

— সব কিছু সবসময় সরল সমীকরণের মতো হয় না। কিছু অংক মেলাতে হয় অনেক ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে। বইয়ের সব অংক মিললেও জীবনের অনেক অংক মেলে না। তুমি চাইলেও মিলবে না।

— আমি সোজাটাই জানতে চাই। আমার সরল জীবন। সরল অংক। আমার অংক মেলাতেই আনন্দ।

— তাহলে জেনে রাখো, যেদিন মিলবে না, সেদিন সামলাতে পারবে না। এখন আমার কাছে সহজ উত্তরটা নেই। তবে উত্তর তুমি পাবে। চলো রুমে নাস্তা দিয়ে গেছে। খিদে লেগেছে। সেই কখন থেকে বসে আছি তোমার জন্য।

রুমটা খুব সুন্দর করে সাজানো। দুটো বড় জানালা, মেঝে অবধি। পুরো আকাশ দেখা যায়। আকাশে এখন অল্প কয়েকটি তারা উঠেছে। জানালার বাইরে হাস্নাহেনার ঝোপ। অনেক বড় টবে লাগানো। ফুল ভর্তি হাস্নাহেনার ডাল জানালার গ্রীলের ফাঁক গলে ঘরের মধ্যে নুয়ে আছে। হাস্নাহেনার গন্ধে ঘর মম করছে। ময়ীকে ঘরের চোখ ধাঁধানো আলোয় একবার নীলু দেখলো। এই ময়ী ঘোরলাগা ময়ী। স্বাভাবিক নয়।

— ময়ী তুমি ঠিক আছো?

— ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। আমি ঠিক আছি। খেতে খেতে ময়ী বলল, জানো নীলু আজকে আমি ভেবেছিলাম শাড়ি পরবো। খুব সাজবো। কিন্তু আমি শাড়ি সামলাতে পারি না। আর ইউ নো দিস আউটফিট ইস মোর এলিউরিং এন্ড ইসি টু রিমুভ।’ ময়ী নীলুর চোখের দিকে তাকিয়ে রইলো। আজ চশমা নেই। অসম্ভব সুন্দর চোখ ময়ীর। ‘নীলু দ্য থিংস দ্যাট ইউ ওয়ান্ট টু হিয়ার ফ্রম মি নাউ, আই ওয়ান্ট টু টেল ইউ, বাট আই নিড ইউ নাউ। ডোন্ট ডিনাই, ডোন্ট রিফিউজ, ডোন্ট গো এওয়ে। কাম, প্লিজ হোল্ড মি নীলু। লেট মি হাগ ইউ, হাগ মি টাইট। হাগ মি ওয়ান্স। আই এম ডিভাস্টেটেড, ক্রাশড। রেস্টলেস। আই নিড ইউ নীলু।’

নীলু যে ভালবাসার কথা শুনতে চেয়েছিল ময়ীর মুখে, সে এইসব শব্দ সেই সব অপেক্ষার মধুর শব্দ নয়। এই সব শব্দ মনে হলো অনেক দূর থেকে আসছে। তার জন্য নয়। ‘ময়ী তুমি শান্ত হও। আমি কিছুক্ষণ আছি।তারপর যাবো।’

— নো। টুনাইট ইউ উইল স্টে হিয়ার। এন্ড হাগ মি হোল নাইট।

— ময়ী…।

— নীলু তুমি লাইট অফ করো। আমি টপস খুলবো।

— ময়ী, তুমি নিজের মধ্যে ফিরে আসো।

— আমি আমার মধ্যেই আছি। প্লিজ আমাকে আর অপেক্ষা করিও না। আমাকে তুমি ভালবাসো আমি জানি। ভালবাসো তো? তাহলে আসো। আমাকে নাও।

শরীরের মাঝখানের দেয়াল রইলো না আর। অবাধ্য রাত্রি প্রেমের নতুন দিগন্ত চেনালো নীলুকে। খুঁতহীন ঠোঁট থেকে পায়ের আঙুল, চোখের মনি থেকে নাভির গভীরতা অপার্থিব কোনো ভাস্করের সৃষ্টি। তার কি সাধ্য এই অপরুপাকে হেলায় ফেলে চলে যায়।

ধীরে ধীরে তারায় তারায় আকাশ ভরে গেল। হাস্নাহেনার গন্ধ আরো তীব্রতর মনে হল। পৃথিবীর সব প্রেমিক যুগলের ঘর আজ হাস্নাহেনার মাতাল করা গন্ধে ভরে গেছে। ক্লান্ত, শান্ত স্নিগ্ধ ময়ী বলল, ‘চাইলে লাইট জ্বালাতে পারো।’

— না ময়ী, পর্দাটা সরিয়ে দাও। তারায় ভরা আকাশটা ঘরে আসুক। আমি আকাশের বিশালতায় ডুবতে চাই। ময়ী কেন এমন করলে? আমি এইভাবে তোমাকে চাইনি ময়ী।

নীলু বুঝেনি ময়ী কাদঁছিলো।

— তুমি কি চেয়েছিলে? মন থেকে শরীরে আসতে তো?

— না, তা নয়। তবে এইভাবে পেতে চাইনি। যার চোখে আমার জন্য প্রেম নেই, তাকে আমি এইভাবে পেতে চাইনি।

— কি চেয়েছিলে? প্রেম করবে। হাত ধরে ঘুরবে, ফুচকা খাবে, বৃষ্টিতে ভিজবে, জ্যোৎস্না দেখবে… এইসব? এইসবের সফল পরিণতি কি? বিয়ে। তাই নয় কি? তারপর? তারপর তো সেই শরীরের ওপরই হামলে পরবে। এইসব ন্যাকা ন্যাকা প্রেম আমার কাছে হিপোক্রেসি মনে হয়। সবাইকে একই পথে চলতে হবে এমন কোনো দিব্যি আছে?

মনে হয়েছিলো ময়ী ওর ভালোবাসাকে পায়ে দলে চলে গেলো। সেই দিনের সেই হলুদ রঙে মাখামাখি বিকেল বড় বিষণ্ণ লাগছিলো। সেই বিকেলটা নীলুর পুরো জীবন বদলে দিবে নীলু ভাবেনি। যদি জানতো তাহলে সেই বিকেলে ময়ীকে আসতে বলতো না

নীলু চুপ করে শুনছিলো। এখন কোনো কিছু বোঝালে বুঝবে না, ওর যুক্তিই দিবে। ‘ময়ী তুমি রায়হানকে ভালোবাসো। আমি জিজ্ঞেস করিনি কখনো। আজ আমাকে বলো সব। আমি শুনবো।’

— হ্যা, বাসি। আমাদের ব্রেক আপ হয়েছে। আমি মেনে নিতে পারছি না। আমার সহ্য হচ্ছে না। আমাকে সময় দাও। তুমি যেভাবে চাইছিলে সেই পথে না হেটে উলটো পথে তোমাকে মেনে নিতে পারি কিনা? তোমার কাছে আসতে পারি কিনা? যদি পারি তবে তোমার উত্তর তুমি পাবে। জেনে রাখো, আজ আমাকে যেমন ভাবছো, আমি এমন নই।

— তুমি রায়হানকে ভুলতে আমাকে আকড়ে ধরতে চাচ্ছ তো? পারবে না।

— নীলু আজ আমার কাছে কিছু জানতে চেয়ো না। আমাকে সময় দাও। তুমি রাতের খাবার খেয়ে যেও।

— না, ময়ী, আমার মনের মধ্যে ঝড় বইছে। আমি এর জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। তুমি গুছিয়ে নাও। শান্ত হও, আমি বরং যাই।

ছুটির পর ক্লাস শুরু হলো। ময়ী একটু বদলেছিল। ময়ীর চারপাশের সুগন্দির যে দেয়াল ছিল, তা ভেঙ্গে গিয়েছিল। পড়ার বাইরে ওদের একটা আলাদা গল্পের ভুবন তৈরি হয়েছিলো। প্রেমপূর্ণ হয়ে ধরা না দিলেও ময়ীর চোখে নীলুর জন্য মায়ার জন্ম হচ্ছিলো। একদিন ময়ী বলেছিল ‘সন্ধ্যাটা থাকো।’ ওদের দুপুরগুলো স্নিগ্ধ হয়েছিলো। ওরা হেটেছিলো নির্জন রাস্তায়। কিন্তু কোথাও মনের একটা দূরত্ব রয়েই গিয়েছিলো। সেই দূরত্ব নীলু অতিক্রম করতে পারছিলো না।

ময়ী দুই একবার এসেছিলো তারপর নীলুর রুমে। রুমটা সুন্দর করে গুছিয়ে দিয়ে গেছে। কিন্তু আর অবাধ্য হয়নি। আর কোনো দিনই সীমানা অতিক্রম করেনি।

— ময়ী কি ভাবছো?

— কি নিয়ে?

— আমাদের সম্পর্ক, আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই।

— আমি প্রস্তুত নই। আর সামনে পরীক্ষা।

— আমি এখনি বলছি না। পরীক্ষার পরই বলছি।

— গ্যারান্টি চাচ্ছো?

— এইভাবে বলছো কেন? আমার মনে হচ্ছে তুমি এখনো ঘোরের মধ্যেই আছ। আমি তোমাকে ভালবেসে ফেলেছি। আমি এখান থেকে ফেরত যেতে পারবো না।

— তোমাকে তো আমি কথা দিইনি। আমাকে সময় দাও। আমি এখনো স্ট্যবল হতে পারিনি। রায়হান ফিরে আসতে চাচ্ছে। বারবার ক্ষমা চাচ্ছে। বাসায় ওর বাবাকে দিয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছে। তুমি জানো ওর বাবা আর আমার মা মেডিক্যাল কলেজ থেকেই ভাল বন্ধু। মা আমাকে তাগাদা দিচ্ছে। আমাকে সময় দাও। আমাদের বিষয়ে মা জেনেছে।

— তুমি বলো, আমাদের কথা তোমার মাকে। চাইলে আমি দেখা করবো।

— তুমি জানো না মাকে। তোমাকে ঢুকতেই দিবে না।

— আমি এত কিছু বুঝি না। তুমি আজই বেছে নাও। সময় তোমাকে সাহায্য করবে না। অনেক সময় গেছে। আমরা অনেকটা সময় কাটিয়েছি। তুমি আসলে আমাকে আকড়ে ধরতে চেয়েছিলে রায়হানকে ভুলতে।পারোনি। পারছো না।

— নীলু, অনেক হয়েছে। আর শুনবো না। তুমি আমাকে বুঝলে না। বুঝতে চাইলে না।

ময়ী রাগ করে চলে গিয়েছিলো। নীলুর দারুণ অভিমান হয়েছিলো। মনে হচ্ছিলো ময়ী ওকে ঠকালো। ব্যবহার করলো। মনে হয়েছিলো ময়ী ওর ভালোবাসাকে পায়ে দলে চলে গেলো। সেই দিনের সেই হলুদ রঙে মাখামাখি বিকেল বড় বিষণ্ণ লাগছিলো। সেই বিকেলটা নীলুর পুরো জীবন বদলে দিবে নীলু ভাবেনি। যদি জানতো তাহলে সেই বিকেলে ময়ীকে আসতে বলতো না। ময়ীর সাথে কখনো পড়তে রাজি হতো না।

বিশ বছর পর আজ নয়তলার জানালার পাশে দাঁড়িয়ে নীলু ভাবছিল এমন বিকেল কেন এসেছিলো?

 

পড়ুন— নীলুর প্রেমের দিন রাত্রি (পর্ব: ৩)

আরো পড়তে পারেন

নীলুর প্রেমের দিন রাত্রি (শেষ পর্ব)

পড়ুন— নীলুর প্রেমের দিন রাত্রি (পর্ব: ৩) ৫. — ময়ী, দোষ আমারও ছিল। আমি একটু সাহসী হতে পারতাম। কি হতো? কত দিন আর আটকে রাখতো? আমিও তো সাহস করে তোমাকে বলতে পারতাম চলো পালিয়ে যাই। ময়ী হো হো করে হেসে উঠলো। ‘তা পারতে। কিন্তু তা হলে এতো নামি সার্জন হতে পারতে?’ — না হতাম। কি….

নীলুর প্রেমের দিন রাত্রি (পর্ব: ৩)

পড়ুন— নীলুর প্রেমের দিন রাত্রি (পর্ব: ২) ৪. আজ বিশ বছর পর দেখা হলো। অনেক অভিমান, অনেক কথা জমে জমে পাহাড় হয়েছে। নিভৃতচারী নীলুর সব কথা অনেক অপেক্ষার পর ক্লান্ত। কথা বলতে পারবে কিনা জানে না। যা জানার ইচ্ছা ছিল তা এখন আর জানতে ইচ্ছা করছে না। একবার মনে হচ্ছে দেখা না হলেই ভাল হতো।….

নীলুর প্রেমের দিন রাত্রি (পর্ব: ১)

১.  — হ্যালো নীলু বলছো?? — হুম.. — কে ময়ী?? ফোনের ঐপাশে এক মুহুর্ত নিরবতা। মনে হল একটু আশ্চর্য হয়েছে। —হুম। চিনে ফেল্লে?? একবার গলা শুনেই চিনে ফেললে। অনেক বছর তো হলো। বিশ বছরের বেশি হবে। আর তোমার সাথে ফোনে কোনদিনই কথা হয়নি। — হ্যাঁ, তা হবে। মাঝখানে একবার তোমার ভাই ফোন করেছিল। তোমার মায়ের….

error: Content is protected !!