Author Picture

মহামায়া (পর্ব-১)

অনুপ মোস্তফা

১.
সূর্য উঠতে এখনো অনেকটা দেরি। আকাশে কোনো তারা নেই। পুরোটা আকাশ মেঘে ঢাকা। রাতের অন্ধকারটা আজকে আরও বেশি চোখে লাগছে। বাতাস হচ্ছে। মাঝে মাঝে মেঘের আলোতে দেবীপুর গ্রামটা দেখা যাচ্ছে। মুহুর্তের জন্য অন্ধকার সরে আলোয় ভেসে যাচ্ছে। রাধাশঙ্করের ভিটাবাড়ি, ধান ক্ষেত, বাঁশঝাড় হাইস্কুল আলোয় ভেসে যাচ্ছে মুহূর্তের জন্য।

মহামায়া আর মনিশঙ্করের ঘরে হারিকেন জ্বলছে। রাধাশঙ্কর গত দুই দিন ধরে বাড়ি ফিরে নাই। দেবীপুর হাইস্কুলের গণিতের শিক্ষক রাধাশঙ্কর। দীর্ঘ দেহী, গৌরবর্ণ। সাধুপুরুষের মতো। বাজখাই গলার আড়ালে সকলের জন্য বিশেষ করে ছাত্রদের জন্য স্নেহের একটা ঝঙ্কার প্রতিফলিত হয়। সেই স্নেহ সবাই বুঝতে পারে। কিন্তু খুব একটা কাছে ঘেঁষে না। দুর থেকে ভালোবাসে, সম্মান করে।

মহামায়া দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। বিয়ের পর হতে আজ অব্দি এইরকম হয় নাই। মানুষটা এক রাতের জন্যও বাইরে থাকে নাই। গ্রামের আর সবাই বলাবলি করছে, হারুন রাজাকার ধরে নিয়ে গেছে। কিন্তু সঠিক কেউ বলতে পারে না। মানুষটা গেল কই। বুকের ভিতর থেকে থেকে কু ডাক দেয়। খারাপ কিছু হইল নাতো? ঠাকুর রক্ষা করো। কাউরে কোনোদিন কোনো ক্ষতি করে নাই। ঠাকুর তুমি দেইখো।

ভিটার পশ্চিম অংশে পূর্ব দিকে মুখ করা দুটো টিনের ঘর। লাগোয়া রান্না ঘর। রান্না ঘরের ওপরে টিনের চাল। তিন দিকে বেড়া হারিকেনের শিখা বাতাসে দুলছে। শিখার সাথে সাথে মহামায়ার ছায়াও টিনের দেয়ালে দুলছে। বাতাস বেশি হলে প্রায় নিভে যাচ্ছে। মহামায়া দুইহাত চিমনীর দুইপাশে ধরছে যাতে নিভে না যায়। ফাঁকে ফাঁকে শেষবারের মতো দেখে নিচ্ছে। জরুরি জিনিস নেওয়া হয়েছে কিনা। একান্ত প্রয়োজনের ব্যবহারের কাপড়। একটা টিন ভর্তি চিড়া-গুড়। ভিটা আর জমির দলিল একট কাপড়ে জড়িয়ে নিয়েছে। শিশু কাঠের একটা পালঙ্ক, একটা আলমিরা, মনুষটার শখের কারুকার্য্য করা কাঠের ফ্রেম দেওয়া একটা আয়না, লেখার টেবিল, চেয়ার সব পরে রইল কালের হিংস্র অন্ধকারে হারিয়ে যাওয়ার জন্য। পুড়ে যাওয়ার জন্য।

মনিশঙ্কর তাড়া দিল। মা দেরি করিস না আর। অন্ধকার থাকতে থাকতে বাইর হওন লাগব। মনি, রাধাশঙ্কর আর মহামায়ার বড় ছেলে। লেখাপড়া বিশেষ করেনি। ক্লাস এইট পর্যন্ত পার করেছে খুব কষ্ট করে। রাধাশঙ্কর চেষ্টার কম করেন নাই। কিন্তু ছেলেটার পড়ালেখার মাথা নাই। কিন্তু বড় ভালো ছেলে। মাটির মতো। গেল বছর বিয়ে করেছে। মনির কাছে পিতা দেবতা তুল্য।

মহামায়া করুণ শুকনো চোখে চারিদিকে দেখতে লাগল। কাল রাত থেকে কাঁদতে কাঁদতে চোখের জল শুকিয়েছে। সেই কত বছর আগে রাধাশঙ্করের সাথে বিয়ে হওয়ার পর এই বাড়িতে এসেছে। বিয়ের বছর রান্না ঘরের পিছনে শ্বশুরমশাই আম গাছটা লাগিয়েছিলেন। কত বড় হয়েছে গাছটা। খুব মিষ্টি আম ধরে। দেখতে দেখতে কখন শুকনো জ্বালাধরা চোখে জলের স্রোত এসে গাল অব্দি ভেসে গেলো, মহামায়া বুঝতে পারল না। অন্ধকার রাত্রি মহামায়ার সব দুখের ওপর কালো চাদর বিছিয়ে দিয়েছিল। মহামায়া রাজনীতি বোঝে না, ক্ষমতা বোঝে না, ধর্ম বোঝে না, দেশ বোঝে না। শুধু মাকে বোঝে, নিজের মাটিকে বোঝে। মহামায়ার কাছে এই ভিটা এই মাটি নিজের মায়ের মতো মনে হয়।

মনি তাড়া দেয়। মা দেরি করোস ক্যান। ফর্সা হওয়ার আগে দেবীপুরের সীমানা পার হওয়ন লাগব। সুরমায়া, রানা আর মনির স্ত্রী বারান্দার এক কোণায় বসে মায়ের জন্য অপেক্ষা করতে লাগল। সুর মনির ছোট। গত বছর মাধ্যমিক পাশ করেছে। প্রথম বিভাগ, দুই বিষয়ে লেটার। দুই চোখের ভিতর কত বিস্ময় আর মায়া আছে তা সুরকে দেখলে উপলব্দি করা যায়। বাড়াবাড়ি রকমের চুল কোমর অব্দি পৌঁছে বাঁক নিয়েছে। বাবা অন্তপ্রাণ। এমনিতে কথা কমই বলে। বাবাকে রেখে চলে যাচ্ছে। কোথায় যাচ্ছে, জানে না। বাকরুদ্ধ হয়ে আম গাছের ওপর অন্ধকারের দিকে একমনে তাকিয়ে কি ভাবতে লাগল। রানা ছোট ছেলে। ক্লাস ফাইভে পরে। সে বউদির পাশে বসে বউদির কোলে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছে।

মহামায়া করুণ শুকনো চোখে চারিদিকে দেখতে লাগল। কাল রাত থেকে কাঁদতে কাঁদতে চোখের জল শুকিয়েছে। সেই কত বছর আগে রাধাশঙ্করের সাথে বিয়ে হওয়ার পর এই বাড়িতে এসেছে। বিয়ের বছর রান্না ঘরের পিছনে শ্বশুরমশাই আম গাছটা লাগিয়েছিলেন। কত বড় হয়েছে গাছটা

— বাইরে ঘন ঘন বানজিলকি দিতাছে। আইজ ঝুম বৃষ্টি অইব। সব ভাসায়ে দিবে। একটা পোয়াতি বউ, ছোড পোলা, আর জোয়ান মাইয়া লইয়া এত দূর যাইতে পারুম বাপ?

— পারবি মা। পারবি। না পারলে এইহানে মরন লাগব।

— দূরে গিয়া মরনের চেয়ে এইহানে মরি বাপ।

— প্যাঁচাল পারিস না মা। ল বাইর হই।

— তোর বাপ তো আইল না অহনও। মানুষটারে ফালায়া যামু? মনটা সায় দেয় না।

— মা বুঝস না, বাবায় আর আইব না।

— বালাই শাট। খারাপ কথা কয় না বাপধন। মানুষটা আইয়া আমাগো না পাইয়া কি করব?

বাবা যদি আয়, বলে মনি একটু থামল তারপর অস্ফুট স্বরে বিরবির করে বলল— বাবা যদি আয় তাইলে বুঝব। আমি বাহাররে কইয়া আইছি। একটা চিঠি দিয়া আইছি। বলতে গিয়ে মনির গলা কেঁপে উঠল। পুরো পৃথিবী টলে উঠল। চোখ ঝাপসা হয়ে গেল। বুকের ভিতর থেকে তীব্র একটা কষ্ট গলা পর্যন্ত উঠে আটকে রইল। মহামায়া হু হু করে কাঁদতে লাগল।

— মা কান্দিস না। মন শক্ত কর।

অবশেষে ঠাকুরের নাম স্মরণ করে মহামায়া তার স্বামীকে ভগবানের কাছে রেখে দুই পুত্র, সন্তানসম্ভবা পুত্রবধু, আর মেয়েকে নিয়ে অনিশ্চয়তার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করল। পিছনে পড়ে রইলো মায়া। নিজ মা, মাটি। নিজের ভিটা বাড়ি। পিছনে পড়ে রইলো কোকিলের দেশ। নিজের দেশ।

উঠান পার হয়ে পাশের ধানক্ষেতের আল পর্যন্ত পৌঁছাতে পৌঁছাতে পা কাঁদায় মাখামাখি। থকথকে কাঁদায় পা ডুবে যাচ্ছে। হাঁটতে কষ্ট হচ্ছে। গত দুইদিন রোদ উঠে নাই। মাটি শুকানোর সময় পায়নি। মহামায়ার মনে হলো মাটি পা কামড়ে ধরে রেখেছে। যেতে দিতে চায় না। মহামায়া থেকে যাওয়ার শেষ চেষ্টা করলো।

— মনি, বাপধন, আইজ না গিয়া কাইল গেলে হয় না? আরেকটা দিন দেহি। দেখ কেমুন মেঘ করছে। অহনি বৃষ্টি হইব। বানজিলকি দিতাছে। এর মইধ্যে তোর বাবায় যদি ফিরা আসে। খুউব তেজ বৃষ্টি হইব দেহিস।

অবুঝ বালিকার মত মহামায়া তার ছেলের কাছে আবদার করতে লাগলো। যেন পিতার কাছে ছোট মেয়ে বায়না করছে।

— মনি মুখ খুললো এইবার। মা পাও চালা। ম্যলা কথা কস। আগুনে পুইড়া মরার চেয়ে বিষ্টিত ভিজ্জা ঠাণ্ডা লাগন অনেক ভালো। গঞ্জে পাকিস্তানি ঢুকছে।

মহামায়া সকল আবদার ভুলে থেকে যাওয়ার ক্ষীণ আশা ছেড়ে ছলছল চোখে ছেলের পিছন পিছন হাঁটতে লাগলো।

বৃষ্টি আর বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে পারলো না। ধান ক্ষেত পার হয়ে ফাঁকা জায়গা, তারপর শ্মশান বায়ে রেখে প্রকান্ড শিরিষ গাছ আসতে আসতে বড় বড় ফোঁটায় বৃষ্টি পরতে লাগল। মহামায়ার সিঁথির সিদুর ভিজে কপালে লেপ্টে গাল পর্যন্ত ছড়িয়ে গেলো। কাঁচা সড়কে ওঠার আগেই মুষলধারে বৃষ্টি পড়তে লাগলো। সিঁদুরের লাল রঙ ধীরে ধীরে ধুয়ে যেতে লাগলো। শেষে সিঁথি থেকে সিঁদুরের শেষ চিহ্নটুকুও মুছে গেলো।

 

২.
গত দুই দিন ধরে রাধাশঙ্কর স্কুলের একটা ঘরে বন্দী। পিছমোড়া করে হাত বাঁধা। মুখ এবং পা-ও বাঁধা। পেটে নেই কোনো খাবার। নিজ শরীরে বর্জ্যের ওপর পড়ে আছে। রাধার শুচি আছে। পরিষ্কারের শুচি। এইরকম অপরিষ্কার থাকে নাই কোনোদিন। অভুক্ত আছেন, তাতে খুব একটা কষ্ট হচ্ছেনা। ময়লার মধ্যে পড়ে আছেন, গা ঘিনঘিন করছে, কষ্ট হচ্ছে।

যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে স্কুল বন্ধই থাকে। এই স্কুল রাধাশঙ্করের প্রপিতামহ দেবিশঙ্কর করেছিলেন। তখন পাঠশালা ছিল। রাধাশঙ্ককরের পিতা হরিশঙ্করের সময় হাইস্কুল পর্যন্ত হয়েছে।
বন্ধ থাকলেও রাধাশঙ্কর প্রতিদিন একবার স্কুলে আসেন। ফাঁকা ক্লাসগুলোতে যান। ডাস্টার দিয়ে কালো ব্ল্যকবোর্ড মোছেন। ময়লা নেই। তাও মোছেন। টেবিল চেয়ার আর মেঝের ধুলো পরিস্কার করেন। জানালাগুলো খুলে দেন। দূরের বাঁশঝাড় আর বটগাছের দিকে, দেবিপুর গ্রামের দিকে, হেটে যাওয়া ক্লান্ত মানুষের দিকে তাকিয়ে থাকেন। তারপর সব বন্ধ কর বাড়ির দিকে ফিরে যান।

টিনের চালে বৃষ্টির রিম ঝিম শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। মনে হচ্ছে গভীর রাত্রি। চোখ লেগে এসেছিল। দরজা খোলার আওয়াজে ঘুম ভাঙলো। পায়ের বাঁধন খুলে অনেকটা পথ বৃষ্টিতে হাটিয়ে রাধা শঙ্করকে বাঁশঝাড়ের কাছে টিলার ওপর নিয়ে আসা হয়েছে। চোখ বাঁধা। কতজন আছে বোঝা যাচ্ছে না। তবে গলার স্বর শুনে কয়েকজনকে চেনা যাচ্ছে

পরশু দিন সকালের দিকে টেনের ক্লাস রুমে বসে ছিলেন। হারুন গোটা পাঁচেক লোক নিয়ে এসেছিল। সকলেই চেনা।

— মাস্টার কি করেন? কাম কাজ নাই? এইহানেই দেহি বইয়া থাহেন।

— স্কুল বন্ধ, তাই একবার আসি।

— আপনারে একটা কথা কইছিলাম। ভুইলা গেছেন মনে হয়।

— ভুলি নাই। কিন্তু আমি কেন যাব। কোথায় যাব? এটা আমার পিতৃভূমি। আমার গ্রাম। আমার দেশ। আমি কেন যাব। মরতে হলে এইখানেই মরব।

— তাইলে মরেন।

তারপর রাধাশঙ্করকে বেঁধে রেখে চলে গিয়েছে। বাইরে দুই তিনজন পালা করে পাহাড়া দেয়, রাধাশঙ্কর বুঝতে পারেন।

গতকাল মনি স্কুলে এসেছিল বাবার খোঁজে। হারুনের লোকেরা ছিল।

— কি মিয়া এইহানে কি চাও?

— বাবা কাইল থেইকা বাড়ি যায় নাই। স্কুলে আইছিল। আর ফিরে নাই।

— কই দেহি নাই তো। সব ঘরই তালা দেওয়া। কই গেছে খোঁজ কর, বয়স হইছে মাথার ঠিক নাই।

রাধাশঙ্কর বুঝতে পারছে না। এরা কি করবে তার সাথে। এরা সবাই নিজের মানুষ। সন্তানের মত। ছাত্র ছিল। কি অপরাধ হলো, রাধাশঙ্কর বুঝতে পারছে না।
প্রায় দুইদিন চোখ বাঁধা। দিন রাত্রির হিসাব ঠিক মেলে না। সন্ধ্যা হলে বোঝা যায়। শিয়াল ডাকে। ঝিঁ ঝিঁ পোকা ডাকে। পাখির ডাকে ভোর হয়েছে বোঝা যায়।
টিনের চালে বৃষ্টির রিম ঝিম শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। মনে হচ্ছে গভীর রাত্রি। চোখ লেগে এসেছিল। দরজা খোলার আওয়াজে ঘুম ভাঙলো। পায়ের বাঁধন খুলে অনেকটা পথ বৃষ্টিতে হাটিয়ে রাধা শঙ্করকে বাঁশঝাড়ের কাছে টিলার ওপর নিয়ে আসা হয়েছে। চোখ বাঁধা। কতজন আছে বোঝা যাচ্ছে না। তবে গলার স্বর শুনে কয়েকজনকে চেনা যাচ্ছে।

রাধাশঙ্করের খুব ইচ্ছা করছে একবার স্কুলটা দেখে। বৃষ্টি দেখে। মহামায়ার কথা মনে পড়লো। বিয়ের দিনের চন্দন দেয়া লজ্জায় অবনত মুখ। মনির ভয়ে আড়ষ্ট নুয়ে থাকা মুখের কথা মনে পড়লো। কোনদিন চোখের দিকে তাকাতে পারেনি মনি। ছেলেটাকে আদর করে কাছে ডাকা হয়নি কোনোদিন। কাছে কোথাও বজ্রপাতে চিন্তায় ছেদ পড়লো। লম্বা ছুড়ির ফলা পুরোটাই পেটের বামদিকে ঢূকে গেল।
শরীর শুন্য হওয়ার আগে রাধাশঙ্করের মনে হল তার আবার এই দেশে জন্ম হবে। স্বাধীন দেশের স্বাধীন মাটিতে।

পুরোপুরি নিস্তেজ হয়ে যাওয়ার পর হারুন ডান চোখটা তুলে নিল। কত রকম পশু আছে পৃথিবীতে। এইসব পশুদের মনের খবর স্বয়ং বিধাতাও জানেনা। রাধাশঙ্করের মৃত শরীর গড়িয়ে টিলার নিচে পরলো। বৃষ্টি পরেই চলছে। বৃষ্টি সকল রক্তের দাগ ধুয়ে দিলো। ফজরের আযান হয়েছে। অন্ধকার কাটেনি। মহামায়া ততক্ষণে কাঁচা সড়কে উঠে পরেছে।

 

পড়ুন—  মহামায়া (পর্ব-২)

আরো পড়তে পারেন

মহামায়া (পর্ব-২)

পড়ুন—  মহামায়া (পর্ব-১) ৩. কাঁচা রাস্তায় উঠতে উঠতে কাপড় ভিজে গায়ের সাথে লেপ্টে গেছে। পায়ের সাথে কাপড় জড়িয়ে যাচ্ছে। হাঁটতে কষ্ট হচ্ছে। সবার আগে মনিশঙ্কর হাঁটছে। তার হাতে মাথায় খাবারের টিন। একটা কাপড়ের ট্রাঙ্ক। সকলের হাতেই কাপড়ের পুটুলি। এতটুকু আসতেই হাপিয়ে উঠেছে। আরো অনেকটা দূর যেতে হবে হেঁটে। তারপর নৌকায় সীমানার কাছাকাছি কোনো একটা জায়গায়।….

স্বর্ণবোয়াল

মোবারক তার কন্যার পাতে তরকারি তুলে দেয় আর বলে, আইজ কয় পদের মাছ খাইতেছ সেইটা খাবা আর বলবা মা! দেখি তুমি কেমুন মাছ চিনো! ময়না তার গোলগাল তামাটে মুখে একটা মধুর হাসি ফুটিয়ে উল্লসিত হয়ে ওঠে এই প্রতিযোগিতায় নামার জন্য। যদিও পুরষ্কার ফুরষ্কারের কোন তোয়াক্কা নাই। খাবার সময় বাপবেটির এইসব ফুড়ুৎ-ফাড়ুৎ খেলা আজকাল নিয়মিত কারবার।….

প্রতিদান

‘আমাকে আপনার মনে নেই। থাকার কথাও নয়। সে জন্য দোষও দেব না। এত ব্যস্ত মানুষ আপনি, আমার মত কত জনের সঙ্গেই হঠাৎ চেনা-জানা। কেনইবা মনে রাখবেন তাদের সবাইকে?’ বেশ শান্ত গলায় বললেন মিসেস অঙ্কিতা। টেবিল থেকে কি যেন একটা নিলেন তিনি। পিটপিট করে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করলো সাফরাব। একটা ইনজেকশন, একটা ছোট টেস্টটিউবের মতো ভায়াল,….

error: Content is protected !!