Sunday, October 26, 2025
spot_img
More

    সর্বশেষ

    ক্রিকেট বিশ্বকাপ: দুঃখ-সুখের জামদানি

    কাব্য করার এই অবেলায় গোধূলি নেমেছে সুরের বারান্দায়। মনখারাপের মেঘ তাই কয়েক প্রজন্মের আকাশ জুড়ে। সমস্যার সাগরে ডুবে থাকা বাঙালির নাকের ওপর আক্ষরিক অর্থেই নয় হাত পানি। আপাদমস্তক হতাশায় মোড়া বাঙালির জীবনে যেটুকু আলো আসে সেটা ক্রিকেটের জানালা গলেই। বাঙালির একান্ত সেই যায়গাতেও‌ এখন বিভক্তির সুর। ফুটবল বিশ্বকাপে বাঙালি সমর্থকরা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে পড়ে— সেটা মানা গেলেও ক্রিকেট বিশ্বকাপে বাঙালি সমর্থকরা এমনভাবে বিভক্ত হয়ে যাবে সেটা কখনোই কাম্য ছিল না।

    স্বার্থপরতার সাঁকো বেয়ে আমরা এমন এক পৃথিবীতে এসে পৌঁছেছি যেখানে অন্যকে দমিয়ে রেখে নিজেকে সেরা প্রমাণ করাই যেন একমাত্র লক্ষ্য হয়ে উঠেছে। প্রতিযোগিতার সাপলুডো মানুষকে জড়িয়ে ধরেছে আপাদমস্তক। অর্জন এবং আরও অর্জনের তাগিদে সম্পর্কের বৃত্তগুলো ক্রমশ ছোট হয়ে এসেছে। মানুষ ছেড়ে দিয়েছে মানুষের হাত। মানুষ চায় না আর মানবিক হতে। যে কারণে জেন্টেলম্যান গেম ক্রিকেটও যেন ধরা দেয় দানবীয় রূপে! কবির ভাষায় ‘অনেক দধীচি হাড় দিল ভাই, দানব দৈত্য তবু মরে নাই।’ দানবকে আমরা মারতে পারিনি, কিন্তু নতুন নতুন দানব সৃষ্টির প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করছি প্রতি মুহূর্তে। আর সেসব দানবরা সমাজকে জোকারে পরিণত করছে প্রতি মুহূর্তে।

    বাঙালির হৃদয় ক্রিকেটের সপ্তসুরে বাধা পরে ১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফি জয়ের মাধ্যমে। যেই প্রজন্ম আমাদেরকে হাত ধরে নিয়ে এলো ক্রিকেটের দুনিয়ায়। সেই প্রজন্মের কেউ কেউ বর্তমানে দেশের ক্রিকেটের নীতিনির্ধারণী জায়গায় থাকলেও দেশের ক্রিকেট যেন আর সামনে এগুতে পারছে না। থেমে আছে প্রথম স্টেশনেই। অনেক সহযোগী দেশ যখন নিজেদের উঠে আসার গল্প লিখছে তখন উলটো দিকে যেন আলাদা এক পৃথিবী হয়ে থেকে যায় বাংলাদেশের ক্রিকেট। যে পৃথিবীতে বসন্ত নামে অচেনা কোনও রঙে।

    বাংলাদেশ ক্রিকেটে অনেক আনন্দ ও বেদনার দিন আছে। কিন্তু আমার কাছে সবচেয়ে বেশি আনন্দের দিনটি ছিল ১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফিতে যেদিন চ্যাম্পিয়ন হয়ে বাংলাদেশ ১৯৯৯ বিশ্বকাপ খেলার যোগ্যতা অর্জন করলো। ২০২৩ সালে এসে বাংলাদেশ দাড়িয়ে আরেকটি ক্রিকেট বিশ্বকাপের মঞ্চে। ১৯৯৯ পর প্রতিটি বিশ্বকাপ খেলা বাংলাদেশ এবার খেলছে তাদের সপ্তম বিশ্বকাপ। অতীতে খেলা বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সাফল্য ও ব্যর্থতাগুলো ছিল—

    বিশ্বকাপ ১৯৯৯

    আয়োজক: ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, ওয়েলস ও নেদারল্যান্ডস। আমিনুল ইসলাম বুলবুলের নেতৃত্বে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ খেলতে যায় বাংলাদেশ। ১২ দলের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের গ্রুপে ছিল- স্কটল্যান্ড, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও নিউজিল্যান্ড। গ্রুপপর্বের তৃতীয় ম্যাচে স্কটল্যান্ডকে ২২ রানে হারিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বকাপে প্রথম জয়টি তুলে নেয়। এরপর ৩১মে ইংল্যান্ডের নর্দাম্পটন কাউন্টি গ্রাউন্ডে গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ মুখোমুখি হয় পাকিস্তানের। প্রথমে ব্যাট করে ৫০ ওভার খেলে ৯ উইকেটের বিনিময়ে সংগ্রহ হয় ২২৩ রান। ২২৪ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে বাংলাদেশি বোলারদের তোপের মুখে পড়ে পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানরা। পাকিস্তান অলআউট হয় ১৬১ রানে, ৬২ রানের এক অসাধারণ জয় পায় বাংলাদেশ। ঐতিহাসিক সেই জয়ের ফলে দেশে ফেরার পর বাংলাদেশকে দেওয়া হয় বীরোচিত সংবর্ধনা।

    বিশ্বকাপ: ২০০৩

    আয়োজক: সাউথ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে ও কেনিয়া। ২০০৩ বিশ্বকাপ ছিলো হতাশার অপর নাম, বাংলাদেশ হেরেছিলো কানাডা ও কেনিয়ার বিপক্ষেও। খালেদ মাসুদ পাইলটের নেতৃত্বে ১৪ দলের বিশ্বকাপে পুল বি-তে বাংলাদেশের গ্রুপে ছিল শ্রীলঙ্কা, নিউজিল্যান্ড, সাউথ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, কেনিয়া ও কানাডা। অন্য দলগুলোর সাথে হারার সাথে সাথে বাংলাদেশ এমন কি কানাডা ও কেনিয়ার সাথেও হেরেছিল। একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হলেও বাকি পাঁচটি ম্যাচ হেরে গ্রুপের একেবারে তলানির দল হিসেবে টাইগাররা বিদায় নেয় গ্রুপপর্ব থেকেই।

    প্রতিযোগিতার সাপলুডো মানুষকে জড়িয়ে ধরেছে আপাদমস্তক। অর্জন এবং আরও অর্জনের তাগিদে সম্পর্কের বৃত্তগুলো ক্রমশ ছোট হয়ে এসেছে। মানুষ ছেড়ে দিয়েছে মানুষের হাত। মানুষ চায় না আর মানবিক হতে। যে কারণে জেন্টেলম্যান গেম ক্রিকেটও যেন ধরা দেয় দানবীয় রূপে!

    বিশ্বকাপ: ২০০৭

    আয়োজক: ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অজি কোচ ডেভ হোয়াটমোর অধীনে, হাবিবুল বাশারের নেতৃত্বে ক্যারিবিয়ান দীপপুঞ্জে খেলতে যায় বাংলাদেশ। ১৬ দলের সেই বিশ্বকাপে বাংলাদেশ বি গ্রুপে পড়ে ভারত, শ্রীলঙ্কা ও নবাগত বারমুডার সাথে। ভারতের বিপক্ষে অসাধারণ বোলিং করে মাশরাফি প্রায় একাই গুঁড়িয়ে দেন ভারতের বিখ্যাত ব্যাটিং লাইনআপ। পোর্ট অফ স্পেনে অনুষ্ঠিত ম্যাচে আগে ব্যাট করা ভারতকে টাইগার বোলাররা মাত্র ১৯১ রানে অলআউট করে দেয়। নবাগত সাকিব, তামিম, মুশফিকের দারুণ ব্যাটিংয়ে সেই রান পাঁচ উইকেট হাতে রেখেই পেরিয়ে যান ব্যাটসম্যানরা। এরপর শ্রীলঙ্কার সাথে হারলেও বারমুডাকে হারিয়ে, ভারতকে বিদায় করে দিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের সুপার এইটে ওঠে বাংলাদেশ।

    বিশ্বকাপ: ২০১১

    উপমহাদেশে বিশ্বকাপ, প্রথমবারের মতো সহআয়োজক বাংলাদেশ। ১৪ দলের বিশ্বকাপে টাইগাররা সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে খেলতে নামে। যেখানে গ্রুপ বি-তে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিলো সাউথ আফ্রিকা, ভারত, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ইংল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস ও আয়ারল্যান্ড। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের দেখা পায় বাংলাদেশ। চট্টগ্রামে শক্তিশালী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দুই উইকেটের রুদ্ধশ্বাস জয় ও নেদারল্যান্ডসকে সহজে হারিয়ে সুপার এইটে ওঠার সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলে। কিন্তু সাউথ আফ্রিকার সাথে শেষ ম্যাচে মাত্র ৭৮ রানে অলআউট হওয়ায় নেট রানরেটে পিছিয়ে থেকে সুপার এইটে উঠতে ব্যর্থ হয় বাংলাদেশ।

    বিশ্বকাপ: ২০১৫

    আয়োজক: অস্ট্রেলিয়া-নিউ জিল্যান্ড। ১৪ দলের বিশ্বকাপে মাশরাফির নেতৃত্বে তাসমান সাগর পাড়ের দেশ অস্ট্রেলিয়া-নিউ জিল্যান্ডে যায় টাইগাররা। যেখানে পুল এ-তে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিলো অস্ট্রেলিয়া, নিউ জিল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড ও আফগানিস্তান। প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১০৫ রানের বড় জয়। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বৃষ্টির কারণে খেলা পরিত্যক্ত হয়, পয়েন্ট ভাগাভাগি করে দু’দল। এরপর স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ৩১৮ রান তাড়া করে ৬ উইকেটের বড় জয় পায় বাংলাদেশ।

    অ্যাডিলেড ওভালে ইংলিশদের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করে মাহমুদুল্লাহর দারুণ সেঞ্চুরিতে ২৭৫ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর দাঁড় করায় বাংলাদেশ। বাংলাদেশের পক্ষে বিশ্বকাপে সেটাই ছিলো টাইগারদের প্রথম সেঞ্চুরি। ২৭৬ রানের জবাবে ভালোই খেলছিলো ইংলিশরা। কিন্তু জয় থেকে যখন ১৬ রান দূরে, হাতে দুই উইকেট, তখনই রুবেল হোসেন যাদুকরী এক স্পেলে শেষ দুই ইংলিশ ব্যাটসম্যানের স্ট্যাম্প উপড়ে ফেললে টাইগাররা প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের নকআউটে পৌঁছে যায়। এরপর কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে বিতর্কিত ম্যাচে হেরে বাংলাদেশ শেষ করে ২০১৫ বিশ্বকাপ মিশন।

    বিশ্বকাপ: ২০১৯

    আয়োজক: ইংল্যান্ড এবং ওয়েলস। দশ দলের লড়াইয়ের ২০১৯ বিশ্বকাপে তিন জয়, পাঁচ হার, একটি পরিত্যক্ত ম্যাচের মাধ্যমে বাংলাদেশ ১০ দলের মধ্যে অষ্টম হয়েছিলো। মোটা দাগে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশন তাই ব্যর্থই। কিন্তু বিশ্বকাপ সাকিব আল হাসান ৮ ইনিংসে ৮৬.৫৭ গড়ে ৬০৬ রান, ৩৬.২৭ গড়ে ১১ উইকেট নিয়ে ছিলেন বাংলাদেশের সেরা পারফর্মার।

    যেই সিস্টেমের সব কিছুই ভুল, সেখানে খেলাটা সঠিক হবে এই আশা করাও ভুল। যখন বাংলাদেশ নিজেদের খেলাটা মাঠে খেলার চেয়ে মাঠের বাহিরেই বেশি খেলে।

    ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসির চোখে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সেরা পাঁচটি মুহূর্তের প্রথমটি ’৯৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারানো। দুর্দান্ত সব খেলোয়াড় নিয়ে সাজানো পাকিস্তানকে ৬২ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছিল প্রথমবার বিশ্বকাপে খেলতে নামা বাংলাদেশ।

    ২০০৭ বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে জয়:

    ২০০৭ বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে পাওয়া ঐতিহাসিক জয়টি দ্বিতীয় সেরা মুহূর্ত। মাশরাফির দুর্দান্ত বোলিং আর তামিম-সাকিব-মুশফিকের হাফসেঞ্চুরিতে ভারতকে ৫ উইকেটে হারিয়ে দিয়েছিল টাইগাররা।

    ২০১৫ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়:

    আইসিসির সেরা মুহূর্তের তিন নম্বরে আছে ২০১৫ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়। মাহমুদউল্লাহ প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন ওই ম্যাচে। রুবেল হোসেন বল হাতে আগুন ঝরিয়ে পেয়েছিলেন ৪ উইকেট। সব মিলিয়ে দলগত নৈপুণ্যে অ্যাডিলেডে দুর্দান্ত বাংলাদেশ ১৫ রানে জিতেছিল। তাতে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপ থেকে ইংলিশদের বিদায় করে কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করে বাংলাদেশ।

    ২০১৯ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয়:

    আইসিসির তালিকার চতুর্থ স্থানে রয়েছে ২০১৯ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে পাওয়া জয়টি। দ্য ওভালে আগে ব্যাট করে সাকিব ও মুশফিকের হাফসেঞ্চুরিতে ৬ উইকেটে ৩৩০ রান তোলে বাংলাদেশ। এরপর মাশরাফিদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ৮ উইকেটে ৩০৯ রান করে প্রোটিয়ারা। আসে ২১ রানের জয়।

    ২০১১ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়:

    ২০১১ বিশ্বকাপে চট্টগ্রামে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয় পায় বাংলাদেশ। ওই ম্যাচের শেষ দিকে শফিউলের চমৎকার ব্যাটিং ও মাহমুদউল্লাহর দায়িত্বশীল ইনিংসে স্বাগতিকরা জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে। এই জয়কে আইসিসি পঞ্চম স্থানে রেখেছে।

    রাজনীতি, শিক্ষা, জীবন যাপন, খাদ্যাভাস-সব যায়গাতেই ভুলের চর্চা। তাই ভুলের উপরে উঠতে পারে না দেশের ক্রিকেটও। শিক্ষা জীবনে আমাদের এক অংকের শিক্ষক ছিলেন, তিনি বলতেন ভুল অংকেরও উত্তর হয়। আমরা তখন ভাবতাম সেটা কিভাবে সম্ভব; যেখানে অংকটাই ভুল। পরে তিনিই বলে দিলেন, ভুল অংকের উত্তরও হবে ভুল। এখন দেখছি আসলেই তাই, যেই সিস্টেমের সব কিছুই ভুল, সেখানে খেলাটা সঠিক হবে এই আশা করাও ভুল। যখন বাংলাদেশ নিজেদের খেলাটা মাঠে খেলার চেয়ে মাঠের বাহিরেই বেশি খেলে। গতবার মাশরাফি মর্তুজা হয়েছিলেন বলির পাঠা, এবার হয়তো মাহমুদুল্লাহ হতে যাচ্ছেন। তামিম ইকবালকে বিশ্বকাপ দলে নেওয়া হয়নি— তামিম হয়তো বেঁচেই গেলেন, কারণ এত কিছু মাথায় নিয়ে পারফরম্যান্স করাটা অনেক অনেক কঠিন।

    দশহাত প্রেমপত্রের এক লাইনে উত্তর। অনুভুতির গলা চেপে ধারা এমন প্রেমের প্রেমিক হয়েও বাঙালি কাটিয়ে দিতে পারে একটা জনম। তাইতো শত মন খারাপ শত অভিযোগ সরিয়ে রেখে অন্তর্জাল জুড়ে চলে প্রিয় দলের জন্য প্রার্থনা।

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    Latest Posts

    spot_imgspot_img

    সর্বাধিক পঠিত

    Stay in touch

    To be updated with all the latest news, offers and special announcements.