যদি দেখা হয়
আমাদের যদি দেখা হয়
ঠিক সেই সময়
শেষ বিকেলের আলোটুকু
নিভে যেতে যেতে
সমুদ্রের ঘোলা জলে
মিলিয়ে যাবে
বাঁশপাতার রংয়ের বিষণ্ন সন্ধ্যা।
চোখের পাপড়ির ঝিরি ঝিরি
অস্ফুট কম্পনে
কেটে যাবে অমাবস্যা কিংবা
জ্যোৎস্নাপ্লাবিত ক্লান্ত রাত্রি।
নির্বাক নিস্তব্ধতা
শুধু আমাদের।
একটা মিষ্টি বেলিফুল
আমি তোমাকে স্নিগ্ধ মায়ায় জড়াতে পারব না
আমি শুধু কোন এক স্নিগ্ধ সকালে
তোমার সাথে হাঁটতে পারব কিছুক্ষণ।
বৃষ্টি ভেজা শুভ্র কামিনী
তোমার খোঁপায় গুঁজে দিতে পারব না,
তোমার দু হাতে রাখতে পারব না আমার দুহাত।
আশ্বিনের বিকেলে হাঁটতে হাঁটতে,
গোধূলির নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া
পাকা পুঁই ফলের রংয়ের বিষণ্ন সন্ধ্যায়,
পৃথিবীর বিবর্তনের গল্পগুলো শোনাতে পারি; তোমাকে শুধু
কিংবা দেখাতে পারি মধ্যরাতের কালপুরুষদের।
কিংবা দুজন মিলে কখনো কখনো
মেহেদী ফুলের সুবাস নিতে পারি আকুল হয়ে।
ঠিক বহুদূরের শৈশবের সেই পুরনো গন্ধের মতো।
শুধু নিঃশব্দের ভেতর শব্দ হয়েছ
তোমার পাশে থাকব, কিংবা
বৈশাখের প্রথম ঝড়ের মতো
হঠাৎ আসব তোমার অজান্তে
কিন্তু তোমাকে আটকাব না বাহুবন্ধনীতে
জড়াব না কোনো স্নিগ্ধ মায়ায়…
শুধু তোমার বইয়ের ভাঁজে
রেখে দেব একটা মিষ্টি বেলী ফুল।
ক্ষুধার্ত দুপুরে
গন্ধটা ভীষণ গাঢ়
যেন অমাবস্যার রাত
শুধুই তলিয়ে যেতে ইচ্ছে করে।
ভালোবাসার গন্ধ, প্রেমের গন্ধ, সব গন্ধ মুছে যায়
কিন্তু ওই গন্ধটা ঝাঁঝালো
ভীষণ প্রিয়,
সুস্বাদু ঝোলের মতো ফিরে ফিরে নাকে লাগে
সময় অসময়ে ক্ষুধার্ত দুপুরে।
গন্ধটা খুঁজে ফিরি
সেই গন্ধটা
যা একবারই পাওয়া যায়
চুপিচুপি।
তুমি একটা পাখি হবে
আমার খুব ইচ্ছে করে গাছ হতে
মাথাভর্তি সবুজ পাতাওয়ালা একটা বটগাছ।
আচ্ছা তুমি কি হবে?
তুমি কি পরগাছা লতা হবে!
আমার শরীর বেয়ে
বেড়ে উঠবে
হবে না, নিশ্চয়ই?
আমি জানি তুমি একটা পাখি হবে
কখনো সখনো বসবে
হয়তো আমার ডালে
তারপর ঘুরে বেড়াবে
এগাছ এগাছ ওগাছে
দিগন্ত হতে দিগন্তে…
হলুদ ক্যাকটাস
আলু নুন তেল পেঁয়াজের মতো নয়,
খুন্তি কড়াই হাতে ঠনঠন ঝনঝন
প্রাচীন কোনো মল্লযুদ্ধ না
ভীষণ যত্ন করে বেড়ে
ওঠা হলুদ ক্যাকটাসও নয়
লাল গোলাপ থেকে ছড়িয়ে পড়া
পাপড়িগুলো
বইয়ের ভাঁজে ভাঁজে রাখা
সঙ্গোপন ভালোবাসাও নয়
শুধু একটা অবিরাম নীল আকাশ
আর চারিধারে অবারিত শুন্যতা
একটা ডানাহীন চিল
টলটলে পানির গভীর সমুদ্র।