Monday, October 27, 2025
spot_img
More

    সর্বশেষ

    ত্বহা হুসাইনের দিনগুলি

                                                                              আট.

    জবাবে আমাদের শিক্ষক বলেন, ‘তাহলে তোমার হাত দাও।’ বলেই তিনি তার হাত ধরেন। তখন আমাদের বন্ধুটি অদ্ভুৎ কিছু তার হাতে অনুভব করে এবং সে ভীত হয়। যেন ইতিপূর্বে কখনও তার এমন অনুভব হয়নি। এমনকিছু যা তার হাতের তালুতে অস্থির দুলছিল এবং তার আঙ্গুলগুলো যার মাঝে দেবে গিয়েছিল

     

    পরদিন আমাদের শিক্ষক আনন্দিত ও হাস্যোজ্জ্বল মুখে মকতবে আসেন। মন থেকেই তিনি এবার বালককে ‘শায়খ’ সম্বোধন করে বলেন, ‘আজ প্রকৃতই তুমি শায়খ বলে সম্বোধিত হওয়ার উপযুক্ত। তুমি আমার মাথা উঁচু করেছ, আমার মুখ উজ্জ্বল করেছ এবং আমার দাড়ির সম্মান রক্ষা করেছ। সেইসাথে তোমার বাবাকে বাধ্য করেছ আমাকে জোব্বা দিতে। গতকাল তুমি এভাবে তেলওয়াত করেছ, যেন স্বর্ণের প্রবাহ বয়ে যাচ্ছিল। যখন আমি নিজেই প্রবল ভীত ছিলাম এবং আশঙ্কা হচ্ছিল, কোথাও না আবার ভুল পড় বা বেঁধে যাও। যাহোক, তাই আজ আমি তোমাকে পাঠ থেকে বিরত থাকার অনুমতি দিচ্ছি ঠিক কিন্তু তোমার থেকে একটা প্রতিজ্ঞা নিতে চাচ্ছি। ওয়াদা দাও তুমি তা পূর্ণ করবে।’
    আমাদের বন্ধুটি তখন নম্রভাবে জানায়, ‘নিশ্চয় করব হুজুর।’
    জবাবে আমাদের শিক্ষক বলেন, ‘তাহলে তোমার হাত দাও।’ বলেই তিনি তার হাত ধরেন। তখন আমাদের বন্ধুটি অদ্ভুৎ কিছু তার হাতে অনুভব করে এবং সে ভীত হয়। যেন ইতিপূর্বে কখনও তার এমন অনুভব হয়নি। এমনকিছু যা তার হাতের তালুতে অস্থির দুলছিল এবং তার আঙ্গুলগুলো যার মাঝে দেবে গিয়েছিল।
    মূলত তা ছিল আমাদের শিক্ষকের দাড়ি। যা তিনি আমাদের বন্ধুটির হাতে দিয়ে তাকে বলেন, ‘এই হচ্ছে আমার দাড়ি; যা দ্বারা আমি তোমাকে শপথ করাচ্ছি। এবং আশা করি কখনও তুমি এর অবজ্ঞা করবে না। সুতরাং তিনবার আল্লাহর নাম ও পবিত্র কুরানের কসম খেয়ে বলো, কখনোই এ শপথ ভঙ্গ করবে না।’
    জবাবে আমাদের বন্ধুটি তাই করে, যা আমাদের শিক্ষক চেয়েছেন। এরপর যখন সে তার এই শপথপাঠ শেষ করে তখন আমাদের শিক্ষক তাকে জিজ্ঞেস করেন, ‘সপ্তাহে কয় দিন তুমি মকতবে আসো?’
    ‘পাঁচ’
    ‘যদি প্রতি সপ্তাহে একবার পুরো কোরান পড়তে চাও, তাহলে কয় ভাগ পড়তে হবে?’
    বালক কিছুক্ষণ চিন্তা করে বলে,‘ছয় ভাগ।’
    ‘তাহলে এবার কসম করে বলো যে, মকতবে এসে প্রতিদিন তুমি আরিফের কাছে এই ছয়ভাগ পড়ে শোনাবে। রোজ সকালে যত দ্রুত আসবে তখন থেকেই পড়া শুরু করবে। এরপর যখন তুমি তোমার দৈনন্দিন নির্ধারিত অংশটুকু পড়ে শেষ করবে, তখন যা ইচ্ছে কর আমি তোমাকে কিছু বলব না। তবে অবশ্যই অন্য ছাত্রদের পড়াশোনায় ব্যঘাত ঘটাতে পারবে না।’
    এরপর বালক যখন এভাবে তার শপথ পূর্ণ করে আমাদের শিক্ষক তখন আরিফকে ডাকে এবং তার থেকেও অনুরূপ শপথ গ্রহণ করে যে, দৈনিক আমাদের এই বালকের কাছ থেকে কোরানের ছয়ভাগের একভাগ শুনবে। অধিকন্তু তিনি তার কাছে তার সম্মান, তার দাড়ির প্রতি শ্রদ্ধাবোধ ও পুরো শহরে এই মকতবের সুনামের দায়িত্বও অর্পন করেছিলেন। অতএব দৃশ্যটি এখানেই সমাপ্ত হয়। মকতবের সকল ছাত্ররা যা আশ্চর্য হয়ে দেখছিল।

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    Latest Posts

    spot_imgspot_img

    সর্বাধিক পঠিত

    Stay in touch

    To be updated with all the latest news, offers and special announcements.