অনুভূতির উল্টোরথ
ছোট্ট এক ছবি, তার শরীর জুড়ে আঁকা যতো বিষাদ লেখা,
বিলীন হতে হতে রয়ে যায় তবু কিছু চিহ্ন—
নীরব নদী, ধূসর মাঠ, কোথাও বিস্তীর্ণ ছায়ার রেখা।
অচেনা পথের শহর, চেনা মনের মেঠো পথ,
তারই জমিন জুড়ে চলে অনুভূতির উল্টোরথ।
ছোট্ট ঘর জুড়ে আড়াল টানে বন্ধু নামের যাযাবর,
আস্তিনে গোটানো অভিমান ছোড়ে চেনা-অচেনা মানুষ বারবার।
মনের গহীনে ক্ষরণের গান শুনি,
কোটির ভিড়ে একা, লক্ষ লক্ষ একা—হাজারো শঙ্কা গুনি।
আর কতবার? আরো কতোবার?
স্বপ্নের একূল ওকূল ভেঙে এ জীবন শীর্ণ থেকে শীর্ণকায় হবে,
উচ্ছলতা হারিয়ে অবিরাম ছুটে চলা ভুলে যাবে?
তবুও কেন জানি, তুমি নামক আবেগে
ভুলে যাই সব হিসেব, সব সীমারেখা।
তোমার চোখে আঁকি নতুন প্রতিচ্ছবি,
যেখানে আছে ভালোবাসা আর বিশ্বাস
নেই কোনো আড়াল, নেই কোনো বিচ্ছেদের দাগ,
শুধু আছে দুজনার স্পর্শে লেখা এক নতুন গল্প।
আষাঢ়ের গল্প
একটু গল্প হোক…
সন্ধ্যার খামে মেঘের ভেলায় শ্রাবণ নামে
মল্লার রাগে মন কি আর সাজে?
জাদুর বাক্সে নব্য নট-নটীরা ভেলকি নাচে
মিথ্যে কথার ফুলঝুরি ভাজে।
বর্ষা রাতের খোলা খাতায় অভিযোগের ধারা নামে
শহর জুড়ে জঞ্জাল আর মিথ্যাচারের খাম জমে।
শ্রাবণ দিনে আষাঢ়ে গল্পের পসরা সাজে
ওরাই বলে, ওরাই শোনে
ধর্ম গুরুর ক্যানভাসে শুধু ক্ষত আর রক্ত ঝরে
জীবিতের মাঝখানে—
ওরা কেবল মৃত্যুর মিছিল গোনে।
এক নীরস কুটিরে, জীবিত ও মৃতের মাঝখানে-
ওরা উল্লাসের হাসি হাসে,
নিরুপায়- ভাঙাচোরা কঞ্চির জঙ্গলে,
জলের মতো অর্ধমৃতরা ভাসে।
আমি বা আমরা!
অগণিত ভাঙা, স্থবির কঞ্চির ভিড়ে,
যেন ভাসছি এক শব—
কোনো ভালোবাসা নেই, আষাঢ়ে গল্পের পসরায়
বিলীন সব।
তবু ভ্রম-বিভ্রমের ঘূর্ণিপাকে
শ্রাবণ আমার আজন্ম ভালোবাসা,
দেয় আমায় পূর্ণতা, হারিয়ে যাওয়া ক্ষণ
ফিরে পাবার আশা।
আহা… আহা..
হতাম যদি শ্রাবণ দিনের মেয়ে
বৃষ্টির ফোঁটায় চোখের জল নিতাম ধুয়ে।
ফেরারি
শূন্যতায় ডানা ঝাপটায় এক পাখি
মনে রাখেনি আকাশের ঠিকানা—
মাটির ঘ্রাণ, কোথায় বাসা বেঁধেছিলো
মনে রাখেনি।
কোন দূরে এক নাবিক
লাইটহাউস খুঁজে সারা
সাগর চিনে তার হয় না ফেরা।
নীড় হারায় পাখি, ফেরারি হয় নাবিক।