শোকে ভেজা হাতের রেখা
মহাজাগতিক শোকগাথা পড়ে তোমার নিকটবর্তী অবস্থানে পা বাড়াই। আমার শোকে সন্তপ্ত হয়ে যায় তোমার হাতের রেখা, যেনো দুঃখবোধ তার জাল ছড়িয়ে যাচ্ছে তোমার জগত জুড়ে। এসব দেখে ব্যথায় কাঁদে চড়ুই, কলমিলতা, পদ্মপাতা।
পরিমাপের কালে অপরিমেয় ভাবনা দুলতে থাকে পরস্পরের চোখের ডগায়। সজনে পাতার ডাঁটা উনুন ছেড়ে প্রলাপের মাঝে এসে আটকায়। হরদম চোখের পানি ঝরে যায়।
তুমি এই আছো, এই নাই; ঝড়ের পূর্বাভাসে লাল দিগন্তের আকাশে বিজলি হঠাৎ চমকে আবার যেমন আঁধারে ছেপে যায়। এসব ঘটনায় শোকে ভিজে দুঃখ চুয়ে চুয়ে পড়ছে তোমার হাতের রেখায়।
নাভিশ্বাস
নানামুখী তৎপরতার প্রার্থনায় জাগে সুচিন্তা,
বীরোচিত প্রবচনের রঙে মাখা অগভীর অভিধা—
লাল প্রভাময় আগুনের আশ্রমে গলে যায় সব দ্বিধা।
তালপাতার সেপাইয়ে সিপাহী বিদ্রোহের ধ্বনি জাগে,
সংশ্লিষ্ট চিন্তা শীতের গুঞ্জনে কাঁপে অহেতুক অনুরাগে;
নির্বচনীয় রোদের তাপে ফুটে ওঠে নীরব আহ্লাদ,
মমতার হাত সরিয়ে খুঁজে পাই তিরস্কারের আবাদ।
না
তোমারে-
কতখানি চায় এ মন
কতখানি চায় এ জীবন
কইতে পারি না।
জানাইতে পারি না।
তুমি কি জানো?
জাইনাও কি না-জানা;
হইয়া থাকো?
তাও তো জানি না।
কইতে তো আর পারি না।
সারাটা দিন, সারাটা ক্ষণ
তোমার কাছেই থাকে মন
তুমি জানো না;
আমি জানাইতেও পারি না।
নাই
নাই আমি দুনিয়ায়
বিপ্রতীপ ছায়ায়—
লাগে বড়ো অসহায়।
তারুসের ভাবনায়
সহজিয়া মোহনায়
নির্বাসিত রেখায়—
মরে যাই। মরে যাই।
ডুমুর
জবারঙা সন্ধ্যায় ছড়িয়ে পড়েছে লবণের গুঁড়ো, আঙুলের ফাঁকে লেগে থাকা দিনগুলো আর ফিরে না অবসাদগ্রস্ত সন্ধ্যার খবর নিয়ে।
স্টেশনের বুকে লাল চৌকাঠ বসে আছে,
পাশে হেলান দিয়ে আছে কালো চাদর, মাঝেমধ্যে তা হেসে ওঠে এবং ভেসে ওঠে বাতাসে; ক্ষণিকের চেনা সেই ঘ্রাণে দোলে।
ঘুম আসে না, তবুও চোখের পাতা পড়ে।
কোনো ক্লান্তি নয়, কল্পনার জগতে অবগাহনের উন্মাদনা। পিঁপড়েরা আমার বুকের উপর দিয়ে হেঁটে যায় গোলকধাঁধা এঁকে, কেননা তাদের রুটিতে ছিল প্রশ্নবোধক চিহ্নের আলাপ।
তোমার অবসন্নতা ডুমুর পাখির পালক গুনছে, প্রতিটি গণনায় জন্ম নিচ্ছে অস্বস্তির ছায়া, মৃত হয়েও কী জীবন্ত! রাতের সময় মাঝে মাঝে থমকে যায়,
তখন বোঝা যায় না-এটা থেমে যাওয়ার অভিমান, না কী কেবল অবসাদের ক্লান্তি।এভাবে সময় চলে যায়, সময় হারিয়ে যায়; কোনো আখ্যান লেখা হয় না, কেবল প্রতিটি নিঃশ্বাসে জমে ওঠে তোমারে অদেখার জোয়ার।




