স্লো বাট স্টেডি
১.
অপেক্ষার সময় গড়ায়
অতি ধীর
কচ্ছপসম
ধুলোয় মুছে যাচ্ছে পদচিহ্ন
বিরুদ্ধ বাতাস সরগরম
অথচ কে না জানে
‘স্লো বাট স্টেডি উইনস্’!
২.
ঠোঁটের তৃষ্ণায় জন্মেছে
পুষ্প ও রেণু
শোনো,
কোনো চেনা পদধ্বনি স্পষ্টতর হচ্ছে;
কেবল উৎসবের পর্দা ওঠার অপেক্ষা!
বিমান
[মাইলস্টোন ট্রাজেডি স্মরণে]
‘একেকটি পুরনো বিমান
পাখি নয় ব্যাটা, আজরাইলের ডানা!’
লোকটি বললেন। ট্রেনের জানালা থেকে
চোখ ফেরাতেই হলো তাঁর ওপর।
ওসবে যান্ত্রিক ত্রুটি, ওদের সিস্টেমে গলদ ধরবার পর
তিনি স্লোগানেও ভুল ধরে বললেন, ‘আরে আকাশই সব;
এই মাটির ক্ষত, আমাদের ভাঙা বক্ষ ওদের আওতায় নয় রে!’
আমার সামনের মানুষটি যেন-
ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়া আয়না!
তাতে শত, হাজার, লক্ষ, কোটি আমি, আমরা!
ট্রেনের ঝক ঝকা ঝক ছাপিয়ে দূর থেকে
ভেসে আসছে ছুটির আগমুহূর্তের পড়া ‘বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়’
লোকটির চোখে পানি,
আমাদেরও চোখ ভিজে উঠছে বারবার!
মদিরাক্ষী
রক্তজবার মতো চোখ চেয়ে আছে!
বাগানে আলো, মৃদু দখিনা হাওয়া।
কুসুমের নিচে জমছে সমস্ত অভিমান
ঝরাপাতাদের ভেঙে পড়া।
বারবনিতার মুখে ক্লান্তি, চোখে ঘুম
রক্তজবার মতো চোখ চেয়ে আছে,
সভ্যজগতে যার নাম মদিরাক্ষী!
দূরত্ববিষাদ
দিগন্তে বসতি তোমার, এগোতেই যাও সরে
অথচ আকাশ উড়িয়ে মেঘ নামছে অষ্টপ্রহর!
হায়! শাওন থেকে ফাগুন কত কতটা দূরে?
অপেক্ষায় বৃক্ষ হয়েও হাওয়ায় পাই না খবর!
দূরত্ববিষাদ-২
দুটো ছায়ার মাঝে দূরত্ব বাড়তেই
অন্ধ হয়ে গেল আগুন পোহানোর দিনটি!
অথচ সে-ই থেকে
চোখে চোখে লেখা হচ্ছিল পঙক্তিমালা-
‘এই বিকেলটা এমনই আলোয় থাক
মনের উঠোনজুড়ে’
‘সন্ধ্যে নামুক অন্য কোনো গ্রহে,
অন্যখানে যাকে উড়ে
চোখ গেল- পাপিয়ার দল’
‘ওম ছড়াই চলো হিমে; প্রেমে ও দ্রোহে!’
নিয়রে ভিজতে ভিজতে
পা দুটোয় জমে গেছে না চলবার ছল।
এখন, তোমার দেওয়া
অনাকাঙ্ক্ষিত এই ‘দূরত্ব-বিষাদ-রঙ’
কীভাবে মুছে ফেলব, বলতে পারো?
সংসার বিজ্ঞান
একালের সংসার- সুখবিজ্ঞান মেনে চলে!
পুরুষ ‘দ্রব’, দ্রবীভূত হয়
সকাল থেকে রাত পর্যন্ত।
নারী ‘দ্রাবক’, দ্রবীভূত করে
শপিংমল থেকে ড্রইংরুম পর্যন্ত।
ছেড়ে দিন সেকালের কথা-
‘সংসার সুখের হয় রমণীর গুণে’
এখন বিজ্ঞানের যুগ
সুখী হতে একটু দ্রবণবিজ্ঞান জানতেই হবে।




