বুক রিভিউ

মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাপর

‘মুক্তিযুদ্ধ ব্যক্তিস্বার্থের হাতিয়ার ছিল না’ নামে একেএম শামসুদ্দিনের এই প্রবন্ধ সঙ্কলনটির কেন্দ্রস্থলে যে মুক্তিযুদ্ধ রয়েছে সে-সংবাদটি বইয়ের নামকরণেরই উপস্থিত। লেখক নিজে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য। তাঁর আপন দুই ভাই যুদ্ধে গেছেন, ভগ্নিপতি প্রাণ হারিয়েছেন পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর হাতে। যুদ্ধের সময়ে তাঁর বয়স ছিল অল্প, মাত্র ছয়-সাত বছর, নাহলে তিনিও যুদ্ধে যেতেন; সে-মনোভাব সঙ্কলনের প্রতিটি রচনায় প্রতিফলিত। যুদ্ধের সময় তিনি অনেক….

প্রেম, কাম ও আত্ম-অন্বেষার ব্যতিক্রমী আখ্যান

১. রুদেবিশ শেকাব এক ব্যতিক্রমী নাম ও অভিনব জীবন নিয়ে বাংলা উপন্যাসে আবির্ভূত—যার ভেতরে সুখী হওয়ার অদম্য আকাঙ্ক্ষা অথচ বাস্তবতার কশাঘাতে নিয়ত জর্জরিত রক্তক্ষত। ব্যক্তিগত প্রেম, কাম ও আত্ম-অন্বেষায় রুদেবিশ চরিত্র এক শিখরস্পর্শী উচ্চতায় অধিষ্ঠিত, যা বাংলা উপন্যাসের খুব কম চরিত্রের মধ্যে লক্ষযোগ্য। ব্যতিক্রমী পারিবারিক ও সামাজিক আবহে বেড়ে ওঠা রুদেবিশের বৈচিত্র্যময় জীবন খুব সহজেই….

মুক্তিযুদ্ধ : সাম্য প্রতিষ্ঠা বনাম ব্যক্তিস্বার্থ

একেএম শামসুদ্দিন বাংলাদেশের পাঠকদের কাছে একটি পরিচিত নাম। গত কয়েক বছর যারা সংবাদপত্রে চোখ রাখছেন একেএম শামসুদ্দিনের লেখা তাঁদের চেনা। সুনির্দিষ্ট তথ্যে, সুবিন্যস্ত কাঠামো এবং যৌক্তিক বিশ্লেষণের জন্যে অল্পদিনেই তিনি পাঠকের বিশ্বস্ত কলাম লেখক হয়ে উঠেছেন। সমসাময়িক বিষয় নিয়ে তাঁর সাহসী লেখার মুগ্ধ পাঠক অনেক। তাঁর লেখা পাঠক প্রিয় হবার কারণ তাঁর বিস্তর পড়াশোনা, পরিশ্রমী….

রুদেবিশ শেকাবের অবিনশ্বর ভালোবাসা

বিমূর্ত যে বাস্তবতাকে জীবন নাম দিয়ে কাছে টানার চেষ্টা, অমর হতে চাওয়ার মধ্যদিয়ে তার অতৃপ্তির শুরু। তারপর সেখানে যোগ হয় সুখী হতে চাওয়ার অসুখ। মানুষের সুখী হতে চাওয়ার মধ্যে কোনো দোষ নেই, আবার যেন সেটাই দোষের। মনের সুখ, দেহের সুখ, চোখের সুখ; হরেক রকম এই সুখের সন্ধান করতে গিয়ে মানুষ হাজার রকম দুঃখের কাছেই পৌঁছে….

বৈশ্বিক মোড়কে দেশজ কাহিনীর দ্বৈত আঙ্গিক

সমাজ, সংস্কৃতি, জন্মমৃত্যু, প্রেম, কামনা, অর্থসম্পদের অধিকার ও বিরোধ বিচিত্র মিথস্ক্রিয়ায় শিল্পিত হয় সাহিত্যে। স্মৃতিকথা, অভিজ্ঞতা, উপদেশ, প্রত্যাদেশ প্রকাশে প্রয়াসী হন শিল্পী। এ শিল্প ধারণার আলোকে ব্যতিক্রম একটি উপন্যাস পর্যালোচনায় নিতে চাই। লেখক কিছু বিশেষ বক্তব্য, দর্শনতত্ত্ব পাঠকের কাছে সরবরাহ করতে উদ্ব্যস্ত। বিষয়বস্তুর অনুসরণে নামকরণ লক্ষণীয়। ‘রুদেবিশ শেকাবের ব্যতিক্রমী জীবন’। আত্মজীবনের সাথে বিশেষ ব্যক্তিজীবন বর্ণনার….

রুদেবিশ শেকাবের ব্যতিক্রমী জীবন: অদ্ভুত এক সাহিত্যনামা

কথাসাহিত্যিক ও অনুবাদক হারুন আল রশীদের ২ খণ্ড ৪০ অধ্যায়ের মোট ১৮২ পৃষ্ঠার অদ্ভুত এক সাহিত্যনামা পড়লাম। উপন্যাসের প্রধান চরিত্র- রুদেবিশ শেকাব, তাকে ঘিরে চরিত্র বিন্যাস, নারীদের প্রতি তার মোহ, প্রেমময় বিষাদে ভরা জীবন, কাঙ্ক্ষিত নারীকে পাবার জন্য অস্থিরতা, জ্যোতিষীর কাছে যাওয়া, উপন্যাসের শেষ পর্যন্ত টেনে নিয়ে যায়। উপন্যাসের নায়ক, কোন ভৌগোলিক সীমায় তার বেড়ে….

মুক্তিযুদ্ধ ব্যক্তিস্বার্থের হাতিয়ার ছিল না

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল দখলদার পাকিস্তানীদের সাথে। এই যুদ্ধে শামিল হয়েছিলেন বয়স এবং পেশানির্বিশেষে সকল স্তরের জনগণ। সেই সব ত্যাগীজনগণের অবদানে রচিত হয়েছে আজকের স্বাধীন এবং স্বার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশ। মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের এই অবদান কোনো ভাবেই অস্বীকার করার সুযোগ নাই। রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিক, প্রতিটি প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের এই অবদান সম্পর্কে সঠিকভাবে জানার প্রয়োজন আছে। তবে….

‘রুদেবিশ শেকাবের ব্যতিক্রমী জীবন’ নিয়ে কিছু কথা

উপন্যাসের সূচনায় ‘আমি সুখী হতে পারতাম।’ এক চমক দিয়ে লেখক বইয়ের বিশেষত্ব ঘোষণা করেছেন। নায়কের দুঃখী জীবনের ইঙ্গিত দিয়ে, নামকরণের মতো ব্যতিক্রমী প্রকাশের ইঙ্গিত। উপন্যাসটি আসলে এক মৃত মানুষের বিবৃতি, লেখক দ্বিতীয় অধ্যায়ের শুরুতেই তা স্পষ্ট জানিয়েছেন। রুদেবিশ নামক এক স্বপ্নে বাস করা ব্যক্তির কথা বলেছেন, যিনি সবসময় কল্পনায় ঘুরে বেড়াতেন। মাত্র তেত্রিশ বছর জীবনটি….

একটি ব্যতিক্রমধর্মী উপন্যাস

‘রুদেবিশ শেকাবের ব্যতিক্রমী জীবন’ কথাসাহিত্যিক ও অনুবাদক হারুন আল রশিদের লেখা চল্লিশটি অধ্যায়ের ১৮২ পৃষ্ঠার, প্রথম পুরুষে বিধৃত, ভিন্ন ধারার উপন্যাস। সমাজের সার্বিক চিত্রের পটে রচিত উপন্যাসটির মূল সূত্র হলো প্রেম। রং-রস-রূপক-চিন্তনের অনুঘটক না থাকলে কেবল জীবন বাস্তবতার আঙ্গিকে রচিত সাহিত্য নিঃসন্দেহে প্রাণহীন হতে বাধ্য। কিংবা হয়ে যেতে পারে কেস স্টাডি বা পত্রিকার প্রতিবেদন। এ-কারণে….

রুদেবিশ শেকাবের ব্যতিক্রমী জীবনঃ বাংলা উপন্যাসে নতুন আঙ্গিক

সব শিল্পেরই মহৎ একটি বিষয় হলো সঞ্চরণশীলতা। শিল্পীর যে কোনো সৃষ্টিই যদি পাঠক, দর্শক কিংবা শ্রোতার ভেতর শিল্পীর বেদনা, আনন্দ, প্রেম অথবা দ্রোহকে জাগিয়ে তুলতে না পারে, তাহলে সে শিল্পের মূল আবেদনটুকুই ব্যাহত হয়। ফলে নির্দিষ্ট করে একটি উপন্যাস কিংবা সাহিত্যের কোনো দীর্ঘ রচনার ক্ষেত্রেও একই কথা বলা যায়। বলা যায়, লেখকের উপলব্ধির প্রকাশ যদি….

error: Content is protected !!