চিরপূণ্যের বৃষ্টির আয়োজন
অগ্রহায়ণের ঠান্ডা মেঘের ছন্দে নেমে আসা শীতের বৃষ্টি
তোমার চোখের ফ্রেমে চলে যাচ্ছে— ফলের দোকানে ঝুলে থাকা কলার কাঁদি।
আবাসিক হোটেলের মুছে যাওয়া নাম, অসামাজিক কার্যকলাপ মুক্ত পরিবেশ, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত
জুম্মায় বিপ্লবী মুসলীমদের হুংকার নেমে এসেছে— বিরিয়ানী, গোস্তের ঘ্রাণে বাড়ি ফেরার আয়োজন।
বাংলাবাজারের ভিজে থাকা আকাশটা আমরা মাথায় তুলে নিয়ে
তোমার গোলাপি লিপষ্টিকের ঢেউয়ে আমরা চা খাচ্ছি উল্লাসে—
মৎস্য ব্যাপারিরা হাঁক তুলে, বৃষ্টিতে নেমে এসেছে নতুন মাছ
তাজা মাছ নিয়ে বাড়ি ফেরে কেউ কেউ, ব্যাপারির ছন্দের টোপে।
আমি তো এদের দলে নই, আমি এইসব ছেড়ে অনেক রাতে বাড়ি ফিরি একা
প্রোডিউসারকে সিনেমার স্ক্রিপ্ট শোনাবো বলে— লিখি-কাটি, আবার লিখি
পরদিন ঠিক তাকে বলে ফেলি— রিক্সার ঠান্ডা বাতাসে মেঘের দোলনায়
তোমাকে ছুয়েছে যে জল, আমি তো তাদের সিনেমা বানাই
আদতে আমি তাদের চিত্রকর।
কোয়ালা
কোয়ালা, একদিন নাম না জানা কোন শান্ত নদীর পারে একটা ছোট ঘর তুলবো
. একটা ঘাসের বিছানা আর এক ফালি সাদা নীল আকাশ
. মাঝে মাঝে মেঘ যেতে পারে তোমার চুল স্নান শেষে, আমি দেখবো—
. তবে বৃষ্টির আসা বারণ। কেউ তোমাকে ছুলে আমার ঈর্ষা হবে;
. আমি খুব সাধারণ তাই।
কোয়ালা, তোমার স্ট্রেট না করা চুলের গুহায় একটা পাখির প্রাসাদ করলে কেমন হয়?
. আমাদের একটা রাজা-রানী ভাব হলো—
. শাসক না হয়ে দুনিয়াটা ভালোবাসায় আঁকলাম, একটা যাযাবর সাম্রাজ্য হল আমাদের
. বন্ধ করে দিলাম অস্ত্র কারবার, বিষের উপকরণ করলাম বাজেয়াপ্ত।
কোয়ালা, নাভীর বৃত্তাকার সীমানায় একটা প্রাচীন ঘোড়াশাল করে ফেললে কেমন হয়?
. ঘোড়ায় চড়াবার বাহানায় তোমার নাভীর আদরে ঘুমিয়ে পড়লাম দাঁড়িয়ে
. আবার তোমাকে ঘোড়ায় উঠাবার কায়দায় বড় নিঃশ্বাস ফেললাম গায়ে—
. কোমরে হাত রাখলাম মাতাল যুদ্ধাহতের মত।
কোয়ালা, আমাকে গণিতশূন্য একটা বুদ্ধি দাও তো, একটা জীবন
. তোমার ঘাম গন্ধ, সাত-পাঁচ, ভালো-মন্দ, স্বপ্ন-বাস্তবতা বেবাক বুকপকেটে নিয়ে
. পরাজয় শূন্য, হারাবার শূন্য একক খেলা হতে পরি—
. এমন একটা খেলার নাম দাও তো, মাঠ আবিষ্কার করে নিব নিজস্ব মহিমায়।
শবযাত্রা
জাত্যভিমান এক সিংহের জীবনকালেই শবযাত্রার ঘোষণা হলো বনের মাঠে
সিংহ বাবুতো এতকাল ছিল— জয়পত্র পাঠের অভিধানে
কিন্তু তার কেশরী বৃত্তে থাকা শক্তিমান কান মেনে নিতে চায় না। হুংকার তোলে—
জাত্যভিমান সিংহ, শরীর-মনহীন দৃষ্টিতে আবিষ্কার করে
আবছা কাছে আসতে থাকা প্রেমিকার চোখ।