Author Picture

জোকোভিচ ইজ দ্যা বেষ্ট ইন হিষ্ট্রি

মেজবাহ উদদীন

একবিংশ শতাব্দির আলো গায়ে মেখে তৈরি হচ্ছে এক নতুন প্রজন্ম। প্রযুক্তির রিতিনীতি বদলে দিচ্ছে যাদের মন। নিজেকে যেন একটু ভিন্নভাবেই পেতে চায় এ-প্রজন্ম। সেই বাসনার তলে ভিন্ন রং চড়িয়ে এই প্রজন্মকে আবেগী জীবনের পথে বেঁধে রাখেন যারা, টেনিস সার্কিটে রেকর্ড ২৪টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয় করা নোভাক জোকোভিচকে সেই দলে ফেলতে আপত্তি আছে সমালোচকদের। তবুও এই প্রজন্ম তাকে খুঁজে ফিরে আবেগের ভাষায়। বদলে দিতে জীবনের মেটাফোর!

খেলার পৃথিবীতে কতজনই বা হয়ে উঠতে পেরেছেন ভালবাসার বরপুত্র? ম্যারাডোনা, পেলে, মহম্মদ আলি, আন্দ্রে আগাসি, মাইকেল জর্ডান, টাইগার উডস, মাইক টাইসনদের মতো কেউ কেউ পেরেছেন। বাকি সব বিভাজিত ভালবাসা। বারুদ-বিধ্বস্ত শৈশব ঠেলে উঠে আসা জোকোভিচ যেনো সেই নিঃশর্ত ভালবাসার স্বর্গে স্থান পওয়ার দাবি জানিয়ে রাখলেন। যদিও এই সার্বিয়ান জানেন, মনুষ‌্য-মনের অধিকার পেতে তাঁকে লড়তে হবে চিরকাল, ট্রফি সংখ‌্যা দিয়ে যা জেতা যাবে না, হয়তো বা পাবেনও না শেষে, মেনে নিতে হবে শর্তাবলী প্রযোজ‌্যের জীবন।

সেই কোন ছেলেবেলা থেকে টেনিস নিয়ে বাঁচছেন জোকোভিচ। পিট সাম্প্রাস ছিলেন তাঁর আদর্শ। তাঁর কোচ রেডিওতে কান পেতে জেনে নিতেন যুদ্ধবিধ্বস্ত সার্বিয়ার কোন প্রান্তে বোমা পড়ছে। পরের দিন ছোট্ট জোকোভিচকে নিয়ে শহরের সেই প্রান্তে অনুশীলনে যেতেন। কারণ শহরের একই প্রান্তে শত্রুপক্ষ বারবার বোমা ফেলে না। ১২ বছর বয়সে পরিবারের সাথে তিন মাস বেজমেন্টে লুকিয়ে থাকতে হয়েছিল তাকে। সেই সময় দুধ এবং রুটির জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা লাগতো, জোকার বলেন সেই দাঁড়িয়ে থাকা আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছে, ছোট ছোট জিনিসে খুশি হতে শিখেছি, আমাকে মানসিকভাবে শক্তিশালী হতে সাহায্য করেছে।

রজার ফেডেরার, নাকি রাফায়েল নাদাল, নাকি নোভাক জোকোভিচ – কে সেরা? বিগত দু’দশক জুড়ে এই তর্কের স্রোতে গা ভাসাননি এমন টেনিসপ্রেমী পাওয়া দুষ্কর। সেই শ্রেষ্ঠত্বের দৌড়ে বাকি দুই টেনিস নক্ষত্রকে পেছনে ফেলে ২৪টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের নজির স্থাপন করে ফেললেন জোকোভিচ, ভক্তের ‘জোকার’। মার্গারেট কোর্টের ২৪তম গ্র্যান্ড স্লামের রেকর্ড ছোঁয়ার সুযোগ এর আগে এসেছিল কেবল সেরেনা উইলিয়ামসের সামনে। সেরেনা একাধিকবার চেষ্টা করেও পারেননি। কিন্তু সেরেনা না পারলেও পেরেছেন নোভাক জোকোভিচ। রাশিয়ার দানিল মেদভেদেভকে সরাসরি ৩-০ সেটে হারিয়ে জিতেছেন নিজের ২৪তম গ্র্যান্ড স্লাম। এর ফলে ৫০ বছর অক্ষত থাকার পর মার্গারেট কোর্টের এককভাবে সর্বোচ্চ গ্র্যান্ড স্লাম জয়ের রেকর্ডে ভাগ বসালেন কেউ।

২০০৫ থেকে ২০০৯, এই সময়ে ২০টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম এর মধ্যে ১৭ বার নাদাল বা ফেদেরারের কেউ একজন জিতেছেন। একবার এক ইন্টারভিউতে জোকোভিচ জানান, ২০১০ সালের মধ্যে র‌্যাংকিংয়ে ১০ এর মধ্যে চলে এলেন, কিন্তু শেষ দুই বছরে বড় কোন ট্রফি জিততে পারেননি বলে নিজের খেলা নিয়ে সে খুশি ছিল না। তবুও সে ভালোবাসা নিয়েই টেনিস খেলে যাচ্ছিল। এরপরের ৬ মাসে জোকোভিচ লাগাতার ৪৩ ম্যাচ জিতেছেন, যেখানে তিনটি গ্র্যান্ড স্ল্যামও ছিল। আর এভাবেই জোকার টেনিসের নাম্বার ওয়ান খেলোয়ার হয়ে ওঠেন, যেটা তিনি ৩২৫ সপ্তাহ ধরে রেখে ওয়ার্ল্ড রেকর্ড করেন।

খেলার পৃথিবীতে কতজনই বা হয়ে উঠতে পেরেছেন ভালবাসার বরপুত্র? ম্যারাডোনা, পেলে, মহম্মদ আলি, আন্দ্রে আগাসি, মাইকেল জর্ডান, টাইগার উডস, মাইক টাইসনদের মতো কেউ কেউ পেরেছেন। বাকি সব বিভাজিত ভালবাসা। বারুদ-বিধ্বস্ত শৈশব ঠেলে উঠে আসা জোকোভিচ যেনো সেই নিঃশর্ত ভালবাসার স্বর্গে স্থান পওয়ার দাবি জানিয়ে রাখলেন

২০০২ সালে উইম্বলডন জিতেছিলেন লেটন হিউইট। তারপর থেকেই ক্লে কোর্ট, গ্রাস কোর্ট, হার্ড কোর্ট এবং কার্পেট কোর্টের টেনিস দুনিয়ায় মহাত্রিভুজের রাজত্ব শুরু। ২০০৩ থেকেই টেনিসের মাঠ দখল নিয়েছিলেন সুদর্শন সুইস তরুণ রজার ফেডেরার। অনতিবিলম্বেই দুরন্ত আগ্রাসন আর ছেলেমানুষি নিয়ে উঠে এলেন রাফায়েল নাদাল। তারপরে কম্পিউটারের মতো নিখুঁত আর যুক্তিনির্ভর টেনিস নিয়ে জকোভিচের আগমন। ব্যস, আর কারও প্রবেশাধিকার মেলেনি এই সাম্রাজ্যে। ফেডেরারের ২০, নাদালের ২২ ও জকোভিচের দখলে এসেছে ২৪টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম। গত ২০ বছর ধরে টেনিস বিশ্বকে শাসন করছেন এই তিন মহারথী।

কিছুদিন আগে উইম্বলডনের ফাইনালে জোকারকে হারতে দেখে ভিন্ন গল্পই লেখা হয়েছিল ক্রিয়া প্রতিবেদকদের কলমে। মুখরোচক সেই গল্পগুলো অনেকটা এরকম-মাঠ থেকে বিদায় নিয়েছেন ফেডেরার। নাদালও যাওয়ার পথে। একা সেই সাম্রাজ্য রক্ষা করে চলেছিলেন জোকার। ২০১৭ সালের পর থেকে টানা ২৮ ম্যাচ। কেউ আঁচড় কাটতে পারেনি তাঁর সাম্রাজ্যে। ফেডেরারের কাব্যিক টেনিস, নাদালের আগ্রাসী লড়াই আর জকোভিচের রোবটপ্রতিম নির্ভুল সার্ভ দেখা চোখেরা এতদিন বিশ্বাস করতেই পারছিল না, এই তিন মহারথীর সঙ্গে এক সারিতে আর কেউ উঠে আসতে পারে। বিশ্বাসে পরিণত হওয়া সেই মিথকেই ২০২৩ উইম্বলডনে সপাট ব্যাকহ্যান্ডে মাঠের বাইরে ফেলে দিলেন স্প্যানিশ তরুণ কার্লোস আলকারাজ। আর ব্রিটেনের যুবরানির হাত থেকে স্বপ্নের উইম্বলডন ট্রফিটা তুলে নিয়ে কার্লোস আলকারাজ বুঝিয়ে দিলেন, কোর্ট শাসন করার জন্য হয়তো এসে গিয়েছেন নতুন রাজা।

বেস লাইন থেকে দুর্দান্ত গতির রিটার্ন, ফোরহ্যান্ড আর ব্যাকহ্যান্ডের কিছু অবিশ্বাস্য ক্রসকোর্ট শট, সব মিলিয়ে জোকারকে আনফোর্সড এরর করতে বাধ্য করিয়েছেন আলকারাজ। চিরকালের নির্লিপ্ত জোকারকে তিনি বিরক্ত হতে, অধৈর্য হতে বাধ্য করলেন। অতিমানব জোকারের মধ্যে থেকে বের করে আনলেন সেই আবেগ, যে আবেগ টেনিসের হাড়ে মজ্জায় জড়িয়ে আছে। যে আবেগে নাদালের কাছে মুকুট হারিয়ে কেঁদে ফেলেন ফেডেরার। যে আবেগে শেষ ম্যাচে আগাসির চোখ জলে ভরে আসে। নোভাক জকোভিচের নিরাসক্ত স্কিল আর রোবোটিক গেমের আগ্রাসনে গত কয়েকটা বছর সেই আবেগ তার ধারা হারিয়েছিল। আলকারাজের কাছে উইম্বলডন হারিয়ে জকোভিচের সেই আবেগহীনতার পাথর ভেঙে গেল, আর হয়তো প্রথমবার জোকারের চোখে জল দেখল টেনিসবিশ্ব।

এ জীবন অসম্ভব ক্ষতপ্রবণ। এ জীবন ভিশন বাস্তব, চোখের জলে নোনতা। এ জীবনে হেরে যাওয়া দিন নেমে আসে হঠাৎ করে। আলকারাজ, মেডভেদেভ, রুনদের পৃথিবীতে এবার হয়তো জোকারও বৃদ্ধ হলেন। তখনই প্রজন্মের পরিধি পেরিয়ে আবারও দৃষ্যপটে দাপুটে জোকার!

জোকোভিচ ইউএস ওপেনের ফাইনাল খেলতে নেমেছিলেন জুতোয় ২৩ নম্বর লিখে। তাঁর গ্র্যান্ড স্ল্যামের সংখ্যা ২৩। মেদভেদেভকে ফাইনালে ৬-৩, ৭-৬ (৭-৫), ৬-৩ গেমে হারিয়ে জোকোভিচ পরলেন পিঠে ২৪ লেখা টিশার্ট। সামনে জোকোভিচ এবং প্রয়াত বাস্কেটবল খেলোয়াড় কোবি ব্রায়ান্টের ছবি। আমেরিকার বাস্কেটবল খেলোয়াড়ের ছিল ২৪ নম্বর জার্সি। আমেরিকার মাটিতে গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতে জোকোভিচ স্মরণ করলেন তাঁর বন্ধুকে। রেকর্ড গড়া এই জয়ের পর উচ্ছ্বসিত জোকোভিচ বলেছেন, ‘এটা আমার কাছে পৃথিবীর সবকিছু। আমি সত্যিই আমার শৈশবের স্বপ্নের ভেতর আছি। যখন আমি স্বপ্ন দেখেছিলাম এই খেলাটির সর্বোচ্চ চূড়ায় ওঠার লড়াই করার। এ জন্য আমাকে ও আমার পরিবারকে অনেক কঠিন সময় পার করতে হয়েছিল।’

একটা সময় মনে হচ্ছিল ক্লান্তি গ্রাস করছে জোকোভিচকে। কিন্তু তাতেও কখনও ভেঙে পড়েননি তিনি। ফাইনাল জয়ের কাজটা সম্পূর্ণ করেন। চতুর্থ বার ইউএস ওপেন জেতেন। হার্ড কোর্টে এটি তাঁর ১৪তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়। ১০ বার অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতেছেন তিনি। এ ছাড়াও ঘাসের কোর্টে উইম্বলডন জিতেছেন সাত বার। লাল সুরকির কোর্টে ফরাসি ওপেন জিতেছেন তিন বার। আগামী বছর তাঁর গ্র্যান্ড স্ল্যাম সংখ্যা আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে

ইউএস ওপেন জিতে নানা আবেগে ধরা দিলেন জোকোভিচ। জয়ের পরেই ছুটে গেলেন গ্যালারিতে। সেখানে তাঁকে চেয়ারে বসিয়ে তোয়ালে দিয়ে ঘাম মুছিয়ে দিলেন, হাওয়া করলেন মা। টেনিস কোর্টে বয়স ক্রমশ কমতে থাকা ৩৬ বছরের জোকোভিচ তখন আক্ষরিক অর্থেই যেন শিশু। কখনও আপনজনদের জড়িয়ে ধরলেন, কখনও চিৎকার করলেন। পুরস্কারের মঞ্চে উঠে প্রতিপক্ষকে হারানোর জন্য আবার ক্ষমাও চাইলেন। ২৪তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতে দুঃখিত জোকার, কারণ প্রতিপক্ষ দানিল মেদভেদেভকে হারতে হয়েছে বিবাহবার্ষিকীর দিনে।

২৪তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতে মার্গারেট কোর্টকে ছুঁয়ে তিনি বলেন, “টেনিসে ইতিহাস গড়ে ভাল লাগছে। এই মুহূর্তটা আমার কাছে খুবই স্পেশাল। যখন আমার সাত বছর বয়স, তখন ভাবতাম বড় হয়ে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় হব। উইম্বলডন জিতব। সেটাই ছিল আমার এক মাত্র স্বপ্ন। পরে যদিও অনেক কিছু বুঝতে শিখি। তখন আমার লক্ষ্য পাল্টে যায়। নতুন স্বপ্ন দেখতে শুরু করি। কখনও ভাবিনি এখানে দাঁড়িয়ে ২৪টা গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয় নিয়ে কথা বলব।” এ মৌসুমে ছুঁয়ে ফেললেন পুরুষ, মহিলা নির্বিশেষে সব থেকে বেশি সিঙ্গলসে গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিক মার্গারেটকে। পরের মৌসুমে তাঁকেও টপকে জেতে পারেন জোকোভিচ।

একটা সময় মনে হচ্ছিল ক্লান্তি গ্রাস করছে জোকোভিচকে। কিন্তু তাতেও কখনও ভেঙে পড়েননি তিনি। ফাইনাল জয়ের কাজটা সম্পূর্ণ করেন। চতুর্থ বার ইউএস ওপেন জেতেন। হার্ড কোর্টে এটি তাঁর ১৪তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়। ১০ বার অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতেছেন তিনি। এ ছাড়াও ঘাসের কোর্টে উইম্বলডন জিতেছেন সাত বার। লাল সুরকির কোর্টে ফরাসি ওপেন জিতেছেন তিন বার। আগামী বছর তাঁর গ্র্যান্ড স্ল্যাম সংখ্যা আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। যে প্রতিপক্ষকে ইউএস ওপেনের ফাইনালে হারালেন সেই মেদভেদেভ বলেন, “আমার মনে হয় আরও অনেক বার তোমার সঙ্গে ফাইনালে দেখা হবে। কারণ তুমি তো এখনই থামবে না। তোমার গতি কমবে না। আরও অনেক ফাইনাল খেলবে তুমি।”

জোকারের বাবা সার্জান মনে করেন, টেনিস তার ছেলের জীবনের একটি অংশ কিন্তু সারাজীবন জুড়ে টেনিস জড়িয়ে থাকতে পারে না কারওর জীবনে। তিনি বলেন, “আর হয়তো দেড় বছর। তার পরেই এই দারুণ কঠিন কাজ ছেড়ে দেবে নোভাক। বাবা হিসেবে এটাই আমার আশা। শারীরিক ও মানসিক দিক থেকে খুব চ্যালেঞ্জিং এই খেলা। ওর সঙ্গে তিরিশ বছর ধরে রয়েছি আমি। ঘাস থেকে পা তুলতে দিইনি একমুহূর্তের জন্য। জীবনের অন্যান্য কাজগুলো করার মতো সময় কিন্তু আর হাতে নেই।”

জোকোভিচকে বলা হয় মাস্টার অফ ল্যাঙ্গুয়েজেস। ফ্রেন্স, জার্মান, স্প্যানিশ, ইংলিশ, ইটালিয়ান সার্বিয়ান ভাষায় তার দখল রয়েছে। এর বাইরেও অ্যারাবিক, জাপানিজ এবং চাইনিজ ভাষায়ও তার আছে যোগাযোগের সক্ষমতা। আর এই অসাধারণ প্রতিভার কারণে জোকোভিচ খুব সহজেই বিশ্বের বিভিন্ন ভাষাভাষী অনুসারীদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। জোকোভিচকে যখন আপনি কোন প্রশ্ন করবেন তখন আপনার প্রশ্ন শেষ হওয়ার আগেই সে একই সাথে পাঁচ ভাষায় তার উত্তর দেওয়া শেষ করে ফেলবে।

তার আছে একটি নির্দিষ্ট প্রি-ম্যাচ রুটিন। যেমন সার্ভ করার আগে বলকে অতিরিক্ত বাউন্স করানো। অধিকাংশ সময়ে সে ১৪ বারের মতো বল বাউন্স করে, যেটা অনেক ক্ষেত্রে প্রতিপক্ষকে বিরক্ত করে। তবুও সে তার এই রুটিন থেকে বের হয় না, তার মতে এটা তাকে ম্যাচে অনেক বেশি ফোকাস করতে সাহায্য করে। কম্পিউটারের মতো নির্ভুল সার্ভিসের কারণে অনেকেই তাকে ‘শিল্পের খুনী’ বলে থাকেন। বিশ্বব্যাপী চর্চা আছে তার আনপ্রেডিক্টেবল ন্যাচারের। তবুও সে মাঝে মাঝে তার চরিত্রের সাথে মেলে না এমন কিছু ভুল করে প্রতিপক্ষকে বিভ্রান্ত করে। অনেক ক্ষেত্রে মনে করা হয় এই ইচ্ছাকৃত ভুলগুলোই তার জয়ের গোপন রহস্য।

আরো পড়তে পারেন

ক্রিকেটের এপিটাফ

কারো জন্য অংশগ্রহণ-ই বড় কথা। আবার কারো জন্য জয়লাভ-ই শেষ কথা। এই দুই পৃথিবীর ভেতরে দর্শনের যে ফারাক, তাই-ই আজ আমাদের ক্লান্ত করছে। আর আমরা সেই আমাদের ওয়ান ডে ক্রিকেটের চিরপরিচিত রূপকে ক্রমাগত ক্ষয়ে যেতে দেখে আহত, রক্তাক্ত হচ্ছি। খিদের আগুনই তো জীবনকে বাঁচিয়ে রাখে, ছুটিয়ে বেড়ায়। সে পেটের খিদে হোক কিংবা জয়ের খিদে। ক্রিকেটারদের….

ক্রিকেটে আমাদের গন্তব্য কোথায়!

যুবক হতে চলা সকালের গায়ে বার্ধক্যের ক্লান্ত আলো যে হতাশার কথা মনে করিয়ে দেয়। তেমনি হতাশা আর পুরো শরীরে ব্যথা নিয়ে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের চেম্বারে বসে আছে এক রোগী। রোগী: ডাক্তার সাহেব আমার সারা শরীরে ব্যথা, যেখানে ধরি সেখানেই ব্যথা। আমাকে এই ব্যথা থেকে বাঁচান ডাক্তার সাহেব। ডাক্তার: পুরো শরীরে ব্যথা তো অনেক ভয়ের কথা। আচ্ছা….

ক্রিকেট বিশ্বকাপ: দুঃখ-সুখের জামদানি

কাব্য করার এই অবেলায় গোধূলি নেমেছে সুরের বারান্দায়। মনখারাপের মেঘ তাই কয়েক প্রজন্মের আকাশ জুড়ে। সমস্যার সাগরে ডুবে থাকা বাঙালির নাকের ওপর আক্ষরিক অর্থেই নয় হাত পানি। আপাদমস্তক হতাশায় মোড়া বাঙালির জীবনে যেটুকু আলো আসে সেটা ক্রিকেটের জানালা গলেই। বাঙালির একান্ত সেই যায়গাতেও‌ এখন বিভক্তির সুর। ফুটবল বিশ্বকাপে বাঙালি সমর্থকরা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে পড়ে—….

error: Content is protected !!