
মধ্যাহ্নে
দুপুর হেঁটে চলে যাচ্ছে,
আমি তাকে থামাতে পারছি না।
আমি ভাত মেখে বসে আছি না খাওয়ার বাহানা মাথায়! হাত মুছে পালাব আমি?!
গাছের পাতারা হলুদ হচ্ছে, আমার অশ্রুরা তাদের সবুজ ফেরাতে পারছে না।
আকাশ ভেঙে পড়ছে একাকী কান্নায়।
আম্মা শিশু হয়ে যাচ্ছেন আর আমি বুড়ো!
(কি আশ্চর্য মধুর আমাদের মধ্যকার হাহাকার।)
ছাদে দাঁড়ালে একটা লোক দেখি প্রায় গোপনে দুঃখ মোছেন ডানার শোকে। কে তাকে কিনে দেবে দুঃখের বিদায়?!
বিকেলটা বিষণ্ন লাগে, বাগানে ফড়িঙের স্বচ্ছ ডানা। কয়েকটা পরিচিত বুড়ো ব্যাঙ। উন্মূল দাঁড়িয়ে দেখি এইসব।
কেউ ফিরবে ঘেমে স্যাঁতসেঁতে?!
আমি কিছুই বেঁধে রাখতে পারি না।
করতলে তুমি পুষ্প ফোটাও
জলের ছায়া তোমার গায়ে
তুমি টের পাচ্ছ না,
অথচ কি তীব্র মুষল বৃষ্টি
তবু
তুমি ভিজে যাচ্ছ না।
তোমার চোখে নদীর বিম্ব নেই?
আমাকে তুমি দেখতে পাচ্ছ না?
নৌকা হেঁটে যাচ্ছে রাস্তায়!
পারাপারের এমন পরিস্থিতি!
বরফ গলে জল হয়ে যাচ্ছে
তুমি বরফ আঁকড়ে বসে আছ
বিকল ঘড়ি তোমার হৃদয়।
রুয়েলিয়া শুকিয়ে গেছে এরমধ্যে!
তাকে থামাও!
তোমার চিবুকে রোদ
তুমি হা করে আছ;
ফটিক জল তো তুমি পাবে না।
তোমার পাঁজর বাক্সে— পাথর ঠোকাঠুকি।
বেদনাকে তুমি কুকুর তাড়া করো!
অথচ আমাকে নিয়ে বন্দি হয়ে আছো,
যেন এক বর্ষাকাল!
রেস্তোরাঁর টেবিল গুলোর পায়ে পায়ে ঝিন ধরে গেছে!!
আমি বসে থাকতে থাকতে গলে যাচ্ছি,
অথচ তুমি দেখতে পাচ্ছ না।
একটা সকাল মরে যাচ্ছে নিরবে
শিশুর পায়ের মতো তুলতুলে ভোর।
ঘুম ভেঙে দাঁড়িয়েছি আমি।
রক্তাক্ত হবার আগে দেখে নিতে চাই সবটুকু।
এই নিস্পন্দতা— যেন জায়নামাজে কারো সিজদায় পড়ে থাকা।
তোমার হাসি দেখলে মনে হয়—
. আমি কেন মরে যাবো?
দোয়েলের শিস চুরমার করে যায় আমাদের মধ্যকার নির্জনতাকে।
কি তীব্র সবুজে ঘেরা আমার আঙিনা।
আকাশে লেগেছে শরতের আলো।
বুকের মধ্যে উজ্জ্বল অস্থিরতা : টের পাচ্ছি তোমাকে দেখিনা বহুদিন!
হৃদয় আমার উন্মাদ ঘোড়া হয়ে যাচ্ছে বিকল।
তোমার মুখ মনে পড়লেই মনে হয়,
. আমি কেন মরে যাবো?!