
চুরি
দিনেদুপুরে হারিয়ে যাচ্ছে সব।
উঠোনে ফেলে রাখা সাইকেলও
হারিয়ে গেলো এমন জোয়ারে৷
রোদে দেওয়া আচার—
শুকোতে দেওয়া কাপড়
হচ্ছে গায়েব চোখের পলকে।
বাড়িতে জম্বির মতো ঘুরছি আমরা
মায়ের হাত-কান-গলা খালি।
পুলিশরা সব করে কি?— দাদু বলে।
রোদমাথায় বাবা গেছেন ভোটাভুটিতে
চুরি না-কি হয়েছে সেখানেও।
বানরনাচন
ঐতিহ্যবাহী বানরখেলা হালে পানি পেয়েছে।
রসিক মহাজন গদিতে আসীন
এক হাতে ডুগডুগি, এক হাতে লাঠি
বানর শ্বশুরবাড়ি যায় বগলে নিয়ে ছাতি।
বানর বসনে ভদ্দর জামা
দূর থেকে অবিকল কোনো সাহেব।
বানর ঘোল বেচতে যায় হাটে
বানর নায়কের পাট করে,
লাঠি বাগিয়ে মুঠোয়—বক্তৃতার ভান ধরে
বানর চোর-পুলিশ খেলে ভালো;
বানরমনিব কালো কৌতুকে পটু।
কলা খাওয়ার আগে বানর শেষ খেলা দেখায়—
নেতার মতো হাত নেড়ে গণসংযোগ চালায়।
পেঁচা
ঘুমগুলো এক কার্তিকে গুম হয়ে গেলে
মানুষ আশ্রয় নেয় নিরপেক্ষ ডালে।
বছরজুড়ে চলে অবিশ্বাস্য অফার—
‘ডিড নাথিং, বি ওয়ান’।
অ-দৃশ্যত কোনো গোলযোগ নেই
তবু হারিয়ে যাচ্ছে জীবনদাসের পেঁচা।
অশ্বত্থের ডালে বসে নেই আর
শিশির করেনি শিকার।
জেগে পার করে দিবস শঙ্কায়
জেনে গেছে গোপন সংবাদে—
অস্ত্রউদ্ধারে যেতে হবে যেকোনো সময়।
ছায়াযুদ্ধ
এবেলা তুমিও করে নাও বউনি
এইতো এপাশে ধর্মযুদ্ধ চলছে
জন্ম কতোটা সহি? রেফারেন্স নেই।
প্রাগৈতিহাসিক কোনো মেরুকরণ
হাওয়া বড়ো বেগতিক, সুনসান
মুখোশই এখন সবচাইতে মূল্যবান।
বাজেটে আবারও বাড়তে পারে সম্পর্কের দাম
খেলাপির খামারে কবিদের ভিড় ;
তোমার মাথা গোঁজার ছাদ—ছদ্মবেশী কোনো যুদ্ধশিবির।
আমেরিকা
কেমন আছো, স্বপ্নের দেশ?
বেশকিছুদিন হলো তোমাকে নিয়ে দুঃস্বপ্নের সিরিজ দেখছি।
টিভি খুললেই একজন বন্দুকধারী
ঢুকে পড়ছে বাচ্চাদের স্কুলে—
দুইজন আততায়ী ঢুকে পড়ছে শপিংমলে
কেউ একজন মাঝরাস্তায় দাঁড়িয়ে
জনপ্রিয় খেলার মতোন
যাকে দেখছে গুলি করছে।
জনৈক ভদ্রলোক ঠাণ্ডামাথায়
গাড়ি উঠিয়ে দিচ্ছে মানুষের মিছিলে।
তোমার অবাধ সামরিকস্বর্গে
একজন কিশোরও আজ পকেটে
মৃত্যু নিয়ে ঘোরে।
তোমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু বন্দুক
চেয়ে দেখো গাদ্দারি করছে।