Author Picture

আরিফুর রহমানের একগুচ্ছ কবিতা

আরিফুর রহমান

ভ্রুকুটি

তার
প্রতিবার ভ্রুকুটিতে আমি প্রায় মরে যাই,
অথচ, নীরব ঘাতক হিসেবে
লোকে কেবল ক্যান্সারকেই চেনে!

 

ক্যান্ডেল লাইট ডিনার

আমি ওকে চাই, মালিক,
ও নিত্য জপে তোমার নাম!
অসাধ্য সাধন আমার কম্ম নয় ভেবে ফিরছি,
হায় ঈশ্বর, কার ঈর্ষার আগুনে মোমবাতি জ্বালিয়ে
ওরা রাতের খাবার নিচ্ছে?

 

নিম্ন মধ্যবিত্ত

রোজ দুতিনবেলা জীবন ঘষে উনুনে আগুন জ্বাললেও
লোকে ভাবে বেঁচে-বর্তে আছে ঠিকঠাক,
কিন্তু ক্ষয়ে যাওয়াটা চোখের আড়ালেই রয়ে যায়।

 

দুর্নিবার

শারদ আকাশ জুড়ে
বরষার স্মৃতি হয়ে
জমছে বর্ষণসম্ভবা মেঘ,
তাই আলো নেই
চারপাশে মন কেমন করা আঁধার।
যেন প্রেমসম্ভবা তুমি
মুখ ঘুরিয়ে আছো
মনো-অন্ধকারে
আমি পেরুচ্ছি অকূল পাথার!
আড়ালে বিকেলটা দ্রুত যাচ্ছে সরে।
আলো আসবে
জানি পৃথিবী তৃপ্ত হবে;
আমার আলোর জন্য তবে
আমি কি আরেকটা পৃথিবীই হয়ে উঠব, প্রিয়?

 

ভালোবাসার ঘর

দুজনে ভালোবেসে বেঁধেছি ঘর।

তুমি দিয়েছ সবুজে আঁচল পেতে পরম মমতায়
আমি গেয়েছি দুঃখ ভোলানিয়া গান,

তারপর থেকে হেঁটে চলেছে সময়
গুটি গুটি চার পায়ে।

 

কারিগর

জানালা থেকে জানালায় কথা বলে আসা
হাওয়াদের ভেতর জেগে ওঠে তোমার স্পর্শ,
সাথে জেগে ওঠো তুমি, আমার মনের মহল জুড়ে।

দিন বয়ে যায়, সকাল থেকে দুপুর হয়ে বিকেল;
আমি কেবলই একটা যুতসই সময়ের অপেক্ষায়,
যখন তোমাকে গড়ে তোলা দক্ষ কারিগর হিসেবে
আমার পুনর্জন্ম সুনিশ্চিত!

তারপর মহাকালের পথ আমাদের যুগল পদচিহ্নে
পবিত্র হয়ে উঠবে। নিশ্চয়ই!

আরো পড়তে পারেন

তরুন ইউসুফের একগুচ্ছ কবিতা

বহ্ন্যুৎসব কত কিছু পুড়ল! গাড়ি পুড়ল বাড়ি পুড়ল দম্ভের দালান পুড়ে ক্ষার জলপাই সবুজ ট্যাংক নামল পুড়ল বই গল্প রূপকথার বেলুন হাতে পুড়তে পুড়তে ফানুস হয়ে উড়ে গেল বালক মায়ের আঁচল পুড়ল পুড়ল বুকের কাছের লোক যুবকের বুক পোড়াতে পোড়াতে পুড়ে গেল বন্দুক, থানার সেপাই কারো কারো স্বপ্ন পুড়ল আমিও পোড়ার গন্ধ পাই- আমার পুড়ল….

আজাদুর রহমান-এর একগুচ্ছ কবিতা

বাবা আপনার ব্যর্থ শরীর জানত নিরাময় উড়ে গেছে আসমানে, আপনার মৃত্যু হবে। শেষবেলায় আপনি বড় নিঃস্ব, ঈশ্বরের মত নিদারুন, একমাত্র একা। সেকারনেই আপনি লুকিয়ে লুকিয়ে ভেন্টোলিন সিরাপ খেতেন, অ্যাসমা’র বড়ি গিলে সারা রাত কাঁশতেন। আপনার কফ গলানো কাঁশির শব্দে কোন কোন রাতে আমাদের কাঁচা ঘুম ছিঁড়ে যেত, আমরা বিরক্ত হতাম। তারপর, আপনার জবুথবু মুখের দিকে….

মাহমুদ দারবিশের ডায়েরি ‘নদী মরে যায় পিপাসায়’— (পর্ব: ২)

মেয়েটি আর তার চিৎকার সমুদ্রতীরের মেয়েটি, যার একটি পরিবার আছে আর সেই পরিবারটির একটি বাড়িও আছে। বাড়িটির মধ্যে দুটি জানালা আর একটি দরজা আছে। সমুদ্রে একটি যুদ্ধজাহাজ মজার ছলে তীরে হাটাহাটি করতে থাকা লোকদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে: চার, পাঁচ, সাত জন বালির উপর পড়ে যায়। একটি অস্পষ্ট ঐশ্বরিক হাতের সাহায্যে মেয়েটি কিছুক্ষণের জন্য কোন প্রকারে….

error: Content is protected !!