Author Picture

এরশাদ জাহানের একগুচ্ছ কবিতা

এরশাদ জাহান

অপেক্ষার অবসান

অপেক্ষা একটি কাঠ চেরাই কল
আমি সেখানে পড়ে থাকা
গোলাই কাঠ
বৃষ্টিতে ভিজছি…
রোদে শুকোচ্ছি…
চিরে ফেড়ে না তুমি ঘর বানালে
না তুমি সাজালে ঘর

উইপোকার দখলে
এখন আমার বাহির-ভেতর।

 

ব্যাধ

পৃথিবীর সমস্ত পাখি শিকারির
সমষ্টি নাম বলা যেতে পারে তুমি

আমি সাদা বক হতে চাইলে
তোমার মাংসের লোভ বাড়ে
শালিক কিংবা ময়না হতে চাইলে
খাঁচায় পুষে তোমার পছন্দের বুলি শেখাবার
চলে বেহায়া পায়তারা
জলময়ূর হতে চাইলেও
পেছনে পেছনে ছোটে তোমার অনুগত ক্যামেরার চোখ

আমি বরং
তোমার ইচ্ছের উত্তর গোলার্ধে দাঁড়কাক হব
ঠোঁটে তুলে তোমার দিন খাব রাত খাব।

 

কাঠের পুতুল

তোমরা যা চিরকালীন বলে জানো
হতে পারে তা কবেই হয়ে গেছে কাঠের পুতুল
আর সেইসব দায়হীন দয়াহীন জড়গুলো
এমনভাবে আঁকড়ে ধরে আছো
যেভাবে মৃত স্বামীর নাম ধরে
বেঁচে থাকে কোনো সুন্দরী বিধবা।

 

রন্ধনশিল্পী

সংসারে হাঁপিয়ে উঠলেই কেবল তুমি
স্মৃতির চাল ডাল নুন-লঙ্কায়
রন্ধনশিল্পে মনযোগী হও;
ওপ্রান্তে সুইচ চাপো
এপ্রান্তে জ্বলে ওঠে আগুন—

আগুনে আগুনে স্মৃতির
রান্নাবান্না শেষে—
তোমার ফেরার কী যে তাড়া
কলেমা ও কাবিনের দেশে!

রসিক রন্ধনশিল্পী তুমি
ঘর বুঝো, বর বুঝো, রসে কষে রান্না বুঝো
শুধু আগুনের কান্না বুঝো না।

 

অথৈ সমুদ্র

হাঁটতে হাঁটতে
আমরা এমন এক
রাস্তায় এসে দাঁড়িয়েছি
যেখানে
পেছনে বাঘ
সামনে সমুদ্র
আর তার দুইপাশে
দুই ঘন অরণ্য
যা নিন্দের কাঁটায় ভরা!

আমরা বরং—
পরিণতি হিসেবে
বেছে নিই অথৈ সমুদ্র

সামনে একমাত্র সমুদ্রই যেন
বিপদে বুকে নেয়া মায়ের পেটের ভাই।

আরো পড়তে পারেন

গাজী গিয়াস উদ্দিনের একগুচ্ছ কবিতা

বীভৎস খেলা নগরে বাতাসে মথিত জনস্রোতের কোলাহলে শুনতে পেয়েছি সারিগান গঞ্জের হাটে আকাঙ্খার গভীরে মন্দ্রিত অভিন্ন প্রাণ নীরব দর্শক ছিলাম ব্যর্থতার করুণ গান ফেরার মহড়ায় বঞ্চিত কুঁড়েঘরে সরাইখানার- শুঁড়িখানার মাছিরাও নেশায় বুদ্বুদ প্রকম্পিত কান্নার পর একদিন হাসির তিলকরেখা বিচ্ছুরিত শৈশবের ক্ষুধার্ত চিৎকার ক্রর হাসি চেপে মৃত্যু পরোয়ানা ঝুলে ভাগ্য প্রহসনে যুদ্ধের ব্যগ্র দামামা থেমে গেলো-….

তোফায়েল তফাজ্জলের একগুচ্ছ কবিতা

উপায় অবলম্বন কাঁটা থেকে,  সুচালো কাঁকর থেকে পা রাখিও দূরে, জায়গা না পাক চলন-বাঁকা চেতনায় উড়ে এসে বসতে জুড়ে; এসবে খরগোশ কানে থাকবে রাতে, পড়ন্ত বেলায়, দ্বিপ্রহরে, পূর্বাহ্নে বা কাক ডাকা ভোরে। দুর্গন্ধ ছড়ানো  মুখ ও পায়ের তৎপরতা থেকে গ্রীষ্ম থেকে সমস্ত ঋতুতে একে একে নেবে মুখটা ফিরিয়ে তিলার্ধকালও না জিরিয়ে। কেননা, এদের চরিত্রের শাখা-প্রশাখায়….

আহমেদ ফরিদের একগুচ্ছ কবিতা

তোমার সাথে দেখা হওয়া জরুরী নয় সেদিন তুমি আমাকের ডেকে বললে, ”আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টি ঝরছে এসো চা খেয়ে যাও ঝাল মুড়ি, পেঁয়াজ ভেজে দেবো সঙ্গে কাঁচালংকাও থাকবে। দুজনে চা খাব, মুড়ি খাব, আর গল্প করবো।’ আমি বললাম, ’না, আমি যাবো না । আমি আমার জানালায় বসে আকাশ দেখছি, বৃষ্টি দেখছি, আকাশের কান্না দেখছি, গাছেদের নুয়ে….

error: Content is protected !!