
পাখিরা কী গন্ধমফল খেয়েছে কখনো
.
পাখিরা কী গন্ধমফল খেয়েছে কখনো?
এই ধরাধামে তাদের বসবাসের কারণ লেখা হয়নি
পাখি তার নীল ডানা মেরামত করে খাবার সংগ্রহ করে
তার সংসার নীরব ঘাতকের দলে নামে না কখনো।
তুমি কী কখনো পাখি, কখনো পালকের উদাস দুপুর!
তার গভীর পিপাসার গান, করুণ চোখ?
পাখির মতো বুকে নিয়ে তীর, শিকারীর লাল চোখে হিম?
তুমি কী দেখেছো কখনো কথাবলা পাখির খাঁচার জীবন?
কবর
.
কবর খুলেছে বুক, নেমে যায় মাটি
শেষবার পোশাকের আগে দেখা হয় যদি
ঘাট থেকে দাঁড়িয়ে দূরে সবুজের বনে
আয়, পৃথিবীর মায়া-জলে পুনরায় ডুবি।
কাউকে দেখি না, হাত থেকে সরে যায় হাত
প্রহর বিনিদ্র হয়ে লিখে রাখে জখমের রাত
কাউকে ডাকি না আজ, শুনি গোপন চিৎকার
কারা যায় দূরে, ফিরবে না আর।
জানালায় কার বাবা ফেলে যায় মুখ
গোপনে চেয়েছিলো কিছু ফেরিওয়ালা সুখ
কে জানে এই ক্ষত কতকাল রবে
কতকাল, বুকের বামপাশ কবরে ঘুমাবে।
সব জল আঙুলে মোছে না
.
মৃত্যুও ছিনিয়ে নিতে পারে না
সহস্র অভিমান, ভেজা অন্ধকার ডাকলে
সাড়া দেয় কেউ।
বোকামি বলতে কিছু নেই
একজন বোকাই চিনে নিতে পারে অপার আলিঙ্গন
তার কাছে ফিরে আসে দিনশেষে শ্রেষ্ঠ পথিক
পথ হারায় বলে হারাতে পারে না
জল ডুবে যাবার আগে কখনো এক জীবনসুধা
আঙুলে মোছে না…
মানুষ পালাতে চায়
.
ছিঁড়ে কতটুকু বাতিল করবে?
দিনলিপি বদলে দিলে কতটা আড়াল হয় মন?
মানুষ পালাতে পারেনা নিজের কাছে
জমা থাকে নিজস্ব দাঁতের বিষ…
বাড়ি হলো আকাশের শরৎকাল
.
বাড়ি হচ্ছে সেই রূপকথার লাল ডাকবাক্স
যেখানে নীল খামে বৃষ্টি আসে, রোদ ধুয়ে যায়
সেখানে দারুণ সুগন্ধ আশার কলমে লেখা গান
ঝোলায় ভরা পিয়নের চিঠি, সাইকেলের টুংটাং
বাড়ি হলো আকাশের শরৎকাল, সাদায় মিতালি
কতজনমের অপেক্ষা, ভোর থেকে রাতের স্বপন
বাড়ি হলো গাঁদা ফুলের কাছে মাটির দেয়াল
বাড়ি হলো মা। বাড়ি হলো বাবার ভেজা গামছা।
অরণ্য যা যা ভুলে যেতে চায়
.
চায়ের দোকান শেখায় কবিরাজ, শিকারি আর কাঠুরের গল্প
কবিরাজ সংগ্রহ করে ভেষজ, হাত পেতে থাকে কয়েকজন
শিকারি চোখ শানিয়ে কয়েকটি পাখির কাছে যায়
কাঠুরিয়া ঠক ঠকিয়ে উজার শব্দটি শেখায়
অরণ্য ভুলে যেতে চায় এই পরিচিত মুখের ছবি।
চেনা মানুষকে বারবার চিনতে হয়
কবিরাজ ঔষধে লেখে দুঃখ
শিকারি লেখে না পাওয়া
কাঠুরিয়া লেখে অবিচার…