Author Picture

কৃষক মাহমুদের একগুচ্ছ কবিতা

কৃষক মাহমুদ

সেপ্টেপিন ফুলেরা জ্বেলে রাখে
.
শহর আর পাথরের মাঝে ঢুকে পড়লাম—কথা,

হাওয়ার দাঁতে জুয়েলারী ঘ্রাণ
সেপ্টেপিন ফুলেরা জ্বেলে রাখে আলো হত্যা

দশতালার বারান্দা হতে খশে পড়ে ওড়না সমেত—
তাতেই পাথর পথের মেথর—শুরু করে গান—রক্তের গল্প।
কতো কাল পারে বলো—কতো জনার ক্ষুধা—মরতে চাইনি

তবু—
রক্তের গল্প পাথরে এঁকে যায়—দিন দীর্ঘ সাক্ষাৎকার।

তবুও—
এখানে এসো—গল্প কিন্তে, অল্প কিন্তে,
একাকিত্বের জল ভরা জার কিন্তে—তবু চলে এসো

শহর আর পাথরের মাঝে ঢুকে পড়লাম—কথা

কথা বিক্রি হয়
সবুজ দামে, হলুদ দামে
সাত রঙ মেখে—বহুৎ দামে,

যখন রাত নামে—আর শব্দ হয় কথার
পাথর গরম রক্তের সাক্ষাৎকারে
অনেক কথা—আর বাদ থাক
দুধ-গুড়ে হারিয়ে ফেলেছে—বিশ্বাসের বিষ

হ্যাঁ—তার পর আর খুজবে না
মাধ্যমিক পাশ করা পাকা কলা—

আৎকে উঠি—মনে পড়ে শহর আর
সেপ্টেপিন ফুলেরা জ্বেলে রাখে আলো হত্যা।

 

মৃত্যু, না বোঝার মতো সুন্দর
.
লাশের মাথার কাছাকাছি যাই
কথা বলি—শোনে—সে বলে—শহরে যাও
ইটের বালিশে পাথর মুখোশ পরে—সিথানে জ্বেলে রাখ গান—

মৃত্যুর সংবাদ শোনে—মৃত মানুষ
কথা বলে না—এটা এ শহরে,
যেখানে মানুষ বসবাস করে—অভ্যাস হয়ে সয়ে জেগে জেগে থাকা—শুধু টাকা বিলাসীতা।

সে কি গভীর রাতের মতো কবিতার কাফন পরে না—তা না, তা না, ধুম তা না, তা না গান,
গান,গান কবিতার মতো এ লাশের শহর সমাবেশ
কবিতা না হাসাহাসি—সময় সময় এমনই জীবন
সব কিছুর—সব সময় অর্থ খুঁজতে যেওনা,
জানো না—

অর্থেরও অর্থ নেই
লাশের কাছে যাই—কথা শোনে
শুনিনে তার—তাই কবিতায় কথা হয়

মৃত্যু এক অদ্ভুত ছবি
কবিতা না বোঝার মতো মৃত্যু
মৃত্যু না বোঝার মতো কবিতা।

 

আত্মা, শিল্প সঙ্গিত খানা
.
কবিতা শুয়ে আছে বালিশের ঘ্রাণে
একাডেমিক আলোর তলে
কবিতা ইঁদুরের গন্ধে শাড়ি কাটে
সমুদ্রের তালুতে তালু ঘশে—পা শব্দ—শব্দের খশখশ

নিঃশ্বাসের পাশে কবিতার ফড়িং—বিশ্বাস লেখে হাওয়ার কলকব্জা—তার আরো কাছে যেখানে ছন্দ সমূহরা ধূপ জ্বালে—
সেখানে গান—দু’জনে গল্প ফেরী করে মানুষের।

রাত আর কবি আড্ডা মারে কুলাকুলি করে—একে অপরের হাওয়ার মাঝাঝি কবর তুলে যিকির করে।
সেখানে গান তর তর তরঙ্গায়ীত জোনাক—মৃত লাশ—
গান শোনো কবি—শরীর থেকে মনের আলাদা করে দুজন হও আর দুজনেই পাগল

গান—তাকে কবিতা নামে ডাকে
কবিতা—তাকে আত্মার খাদ্য ডাকে
একটা স্কুল খোঁজে—আত্মা শিল্প সঙ্গিত খানা।।

 

একের ভেতর দুই
.
হাফ ধরে এলো—ঘোড়াটাও মুতে দিলো
ইঁদুরের পায়ে পায়ে গন্ধ ছড়িয়ে গেল
হাওয়া প্যান্ট খুলে দেখিয়ে দিল
তারপর—প্লান মতো সব চলছিল
হ্যাঁ—আর ভাবা লাগবে না,

হোক—এটা ছিনেমাই হোক

শ্বাসরুদ্ধ—একতরফা বাতাস—তাও নাকী বাবার
আলোরুদ্ধ চোখ—একতরফা ওম—তাও নাকী বাবার
বাঁকরুদ্ধ ঠোঁট—একতরফা সোনাপুটে সুই।
কথা গুলো বর্শি বিদ্ধ বলে,মাছে কিল্লা করে

সমস্ত ছবি জুড়ে দর্শকেরা দারুণ অভিনয় করলো—শেষে চোখ ধরে এলো।
এভাবে মোড় ঘুরে যাবে নায়ক, নায়কা, ভিলেন, কো-আর্টিষ্ট কেউ বোঝে না।
দেখ, দেখি এখানে কবিতা শেষ হয়ে গেল।
কবি ঝিম ধরে ভাবলো—কলম কালি দিতে নতি স্বীকার করলো না। কবি—প্রতারক, ভন্ড, কথাগুলো আরো বেশি নারীখোর।

কবিতা কবিরা গোনা—হুজুর ফেলে গেল।
ভয়ে ভয়ে কেবলা দিকে নুনু করলাম—মুতে দিলাম তাতে কী!! এই অপরাধে রাষ্ট্র আমার ফাঁশি দিলো।
মারা গেলাম।
আল্লা বললো—ওরা বোকা—ভুল করেছে, মেহেরবানি করে ক্ষমা করে দাও…

তারপর—

ফিরে এলাম, হোক ওদের ভুল—ওরা অবাক হলো। রহস্য হোল অবমুক্ত—গরু, ছাগল, উট, ভেড়া আমার কবরের পাশে আসে—কি সব ছিন্নি করে।

কবরে বেহেস্তের খুশবু ওড়ে—কেবলা দিকে পা করে আড্ডা দিই ঈশ্বরের সাথে।

 

শেষ সংলাপের পর
.
ছিনেমা দেখার পর খুব করে কাঁদি—এ অভিনয় আর কেউ দেখলো না।
রহস্যের হাওয়া বইলেও সত্য—আমাকে দেখতে হবে আরোও একবার—মৃত্যু হোক—অভিসাপ করলাম এই ছিনেমা অভিনেতার…

একশ হাজার রাস্তা—উড়ে ওঠে চোখের ভেতর। মাথার গোলি বেয়ে শরীরের কষ নামে—আকাশ পঙ্গপালের মতো—গাড়ী চলে—সাইরেন আঘাত করে হাওয়া ঘরে।
তাতে ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসে বাতাসের—

কেচ করেছে বিড়ালের ম্যাউ ডাক।
বেলার স্তনে মানুষের উস্ খুস্ হাত খেলে ক্রিড়া
সবুজ গুলি বিদ্ধ হয় মাটির থালায়—
বুকে জমা রাখি এ হাওয়া ব্যথা—তবুও ছিনেমা শেষ করলাম সারা কাল অবহেলায়।

আরো পড়তে পারেন

গাজী গিয়াস উদ্দিনের একগুচ্ছ কবিতা

বীভৎস খেলা নগরে বাতাসে মথিত জনস্রোতের কোলাহলে শুনতে পেয়েছি সারিগান গঞ্জের হাটে আকাঙ্খার গভীরে মন্দ্রিত অভিন্ন প্রাণ নীরব দর্শক ছিলাম ব্যর্থতার করুণ গান ফেরার মহড়ায় বঞ্চিত কুঁড়েঘরে সরাইখানার- শুঁড়িখানার মাছিরাও নেশায় বুদ্বুদ প্রকম্পিত কান্নার পর একদিন হাসির তিলকরেখা বিচ্ছুরিত শৈশবের ক্ষুধার্ত চিৎকার ক্রর হাসি চেপে মৃত্যু পরোয়ানা ঝুলে ভাগ্য প্রহসনে যুদ্ধের ব্যগ্র দামামা থেমে গেলো-….

তোফায়েল তফাজ্জলের একগুচ্ছ কবিতা

উপায় অবলম্বন কাঁটা থেকে,  সুচালো কাঁকর থেকে পা রাখিও দূরে, জায়গা না পাক চলন-বাঁকা চেতনায় উড়ে এসে বসতে জুড়ে; এসবে খরগোশ কানে থাকবে রাতে, পড়ন্ত বেলায়, দ্বিপ্রহরে, পূর্বাহ্নে বা কাক ডাকা ভোরে। দুর্গন্ধ ছড়ানো  মুখ ও পায়ের তৎপরতা থেকে গ্রীষ্ম থেকে সমস্ত ঋতুতে একে একে নেবে মুখটা ফিরিয়ে তিলার্ধকালও না জিরিয়ে। কেননা, এদের চরিত্রের শাখা-প্রশাখায়….

আহমেদ ফরিদের একগুচ্ছ কবিতা

তোমার সাথে দেখা হওয়া জরুরী নয় সেদিন তুমি আমাকের ডেকে বললে, ”আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টি ঝরছে এসো চা খেয়ে যাও ঝাল মুড়ি, পেঁয়াজ ভেজে দেবো সঙ্গে কাঁচালংকাও থাকবে। দুজনে চা খাব, মুড়ি খাব, আর গল্প করবো।’ আমি বললাম, ’না, আমি যাবো না । আমি আমার জানালায় বসে আকাশ দেখছি, বৃষ্টি দেখছি, আকাশের কান্না দেখছি, গাছেদের নুয়ে….

error: Content is protected !!