
জলছবিতে সোনার বাংলা
.
কুয়াশার সেতু পড়েছে ভেঙ্গে
মূহুর্ত গিয়েছে ছিঁড়ে,
বদলে যাওয়া অবয়ব তোমার
খুঁজি মানুষের ভীড়ে।
নির্জনতার নিপীড়নে তাই
ছিঁড়েছে বীণার তার,
ভ্যানগগের আঁকা জলছবি
তুমি সরোদের ঝংকার।
গল্পের ছায়ায় উদাসী হাওয়ায়
তুমি রাখালীয়া বাঁশি,
বব ডিলানের কবিতা তুমি
আমার স্বপ্ন-চাষী।
চে গুয়েভারা, বিপ্লবী তুমি
ভালোবাসা প্রীতিলতা,
এজরা পাউন্ড যেন তোমারই
ছেঁড়া কবিতার খাতা।
জর্জ হ্যারিসন কবির সুমন
গায় তোমারই গান,
তুমি আমার সোনার বাংলা
আমার ‘কাব্য-স্নান’।
সব বলে দেবো
.
চোখের সমুখ দিয়ে হেটে যায় পৃথিবী,
হেটে যায় চেনা সুখ চেনা প্রিয় মুখ;
মানুষ যেন হায় একএকটি মুঠোফোন,
বুঝেনা সে পৃথিবীর হয়েছে অসুখ।
পৃথিবীর পথেপথে হেঁটেছি অনেক পথ,
তবু তার কিছু যেন রয়ে গেছে বাকি;
ছড়ানো ছিটানো সব স্মৃতির ধুলিকণা,
আজ কেন মনে হয় সবই ছিল ফাঁকি।
ঘোর অমানিশা আজ পৃথিবীর পরে,
বিদায়ী নিষাদ যেন ছেড়ে যাবে তীর;
তবুও মানুষ কিছু বোঝেনা তো হায়,
নিজ হাতে ভেঙ্গে ফেলে পৃথিবীর নীড়।
চোখের সমুখ দিয়ে হেঁটে যায় পৃথিবী,
সর্বদেহে রক্তস্রোত গ্রেনেড-বোমায়,
সুন্দর চলে যায় পৃথিবীর হাত ধরে,
প্রমোদে ব্যস্ত সব কে তাঁরে থামায়?
মানুষের রক্ত পান মানুষ করছে আজ,
বিপন্ন প্রকৃতি গায় বিদায়ের গান;
যে শিশুটি বলেছিলো ‘সব বলে দেবো’,
মানুষেরে দিতে হবে তারই প্রতিদান।
শুধু একবার হাত বাড়িয়ে দেখো
.
একবার শুধু তুমি হাত বাড়িয়ে দেখো
করতলে বন্দি করে দিয়ে যাবো
পৃথিবীর সমস্ত নিষিদ্ধ সময়
দিয়ে যাবো সুতপা’র গোপন ঠিকানা।
একবার শুধু তুমি হাত বাড়িয়ে দেখো
ক্যাস্পিয়ান আর বৈকাল একসাথে
হাতের তালুতে বসাবে মৈত্রীপ্রবাহ
জেরুজালেমে উড়বে শান্তির পায়রা।
একবার শুধু তুমি হাত বাড়িয়ে দেখো
ধর্মগ্রন্থেগ্রন্থে হবে কোলাকুলি আর
মসজিদ-মন্দিরে উড়বে শান্তির পতাকা
মোঘল সেনাপতি হয়ে যাবে বাহুবলী।
তুমি শুধু একবার হাত বাড়িয়ে দেখো
তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামা বাজবে না কভু
পরের বিশ্বযুদ্ধে বেদুইন আরব হবো আমি
লাঠি-তীরের যুদ্ধে হবো বেওয়ারিশ লাশ।