Author Picture

সুয়েজ করিম এর একগুচ্ছ কবিতা

সুয়েজ করিম

মহাশ্বেতা
.
মহাশ্বেতা-
তুমি আছো অনিন্দ্য চন্দ্রাবতীর দেশে
শরতের প্রমোদ রোদের নিবিড় আলিঙ্গনে ,
জ্যোৎস্নাবিলাস বিকিনি পরা রাতে
মহাকাশের হিলিয়ামে তারা ফোটা ধূলি পথে
আমার বেদনা থেকে আলোকবর্ষ দূরে…
ভুলতে পারি না তোমার মায়ার প্রীতির সমুদ্দুর;
ঢাকতে পারে না স্মৃতির রশ্মি শূন্যের কালো মেঘ,
বুকের ভেতরে সাত সাগরের বিদ্রোহী লাল ঢেউ
কাশের কাফনে সেলাই করা নির্ঘুম নীল রাত
তোমাকে পাওয়ার চক্রব্যূহ হাক,
হৃদমহলে সন্ধ্যা নামার ডাক।

আগুনভরা নদী 
.
পৃথিবীর মতো ঘুরি-
তোমার কোমল কক্ষপথে…
যে পথে ওড়ে না সন্ধ্যা বাতির ধূপ
কেবলি জ্বলে শিশুর মতো চাঁদ;
রাত পোহালে ধলপ্রহরের ডানায়
ভূতলে এসো শিশিরের জলযানে
তোমার জমিনে ছিটিয়ে দেব জল
খনন করেছি বুকের ভেতরে আগুনভরা নদী।

অনন্ত প্রতীক্ষায়
.
এসো- এই সবুজ ভেজা ঘাসে
আমার হৃদয়ের সরল দহলিজে
পরিযায়ী পাখির ডানায় অতিদূর থেকে
শিশিরের নহর ভেঙে ভেঙে
এসো- কুহেলির চাঁদোয়ায় নরম ভোরে
দুপুরের রোদ্দুরে ওমের উৎসবে
আবিষ্ট রাত্রির বিভোর ঘুমেরা অধীর-
চাঁদের স্নিগ্ধ বিছানায়
তোমার অনন্ত প্রতীক্ষায়…

ভাবনা
.
ভাবনা গুলো পাখি হয়ে ওড়ে
স্বপ্ন বুনে যাচ্ছি ঘুমের ঘোরে।
নিকষ রাতে তোমার দেহের ছবি
ঠিক যেন’গো ভর দুপুরের রবি।

কেমন করে জড়াও মায়ার ফ্রেমে
সূর্যের মত ঢলে পড়ি প্রেমে।
তাইতো তুমি আঁকাবাঁকা নদী
হৃদয় পানে বইছো নিরবধি।

নিঝুম রাতে তোমার কথার রসে
কক্ষ ভুলে তারা পড়ে খসে।
ক্লান্ত প্রাণে ঊষর বুকে তুমি
দুই ঠোঁটে দাও তপ্ত ললাট চুমি।

পূর্ণিমার পাণ্ডুলিপি
.
ছন্দসজ্জা বিভাবরীর পৃষ্ঠা জুড়ে
বিনিদ্র কবি মন বুনছে ফসলি কবিতা
প্রিয়ার সুগন্ধি ঢেউ তুলে কলমে
নীল রাত্রির ঝিম ধরা রোদে
নক্ষত্র ও জোনাকির প্রচ্ছদে
লিখে যান কবি পূর্ণিমার পাণ্ডুলিপি।

বিরাম চিহ্ন
.
হাঁটছি আদমের পদচিহ্ন ধরে…
পুণ্য ও পাপের মোড়কে জীবনের গিরিপথে;
শ্বাপদসংকুল বন কিংবা ফণা তোলা অর্ণব গর্জন
ক্রমশ দু’পায়ে দলে ছুটছি ঈপ্সিত সূর্য লক্ষ্যে।
জীবনবাহী কাচের সওয়ারে
চলছি পৃথিবীর মর্মরেখায়,
তারপর নতশিরে নিশ্চল জীবন
দীর্ঘ বিরাম চিহ্নে আদিম অন্ধকারে
থেমে যাবে একদিন-
শূন্যে তাক করা কবরের ইস্টিশনে।

আরো পড়তে পারেন

আহমেদ ফরিদের একগুচ্ছ কবিতা

তোমার সাথে দেখা হওয়া জরুরী নয় সেদিন তুমি আমাকের ডেকে বললে, ”আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টি ঝরছে এসো চা খেয়ে যাও ঝাল মুড়ি, পেঁয়াজ ভেজে দেবো সঙ্গে কাঁচালংকাও থাকবে। দুজনে চা খাব, মুড়ি খাব, আর গল্প করবো।’ আমি বললাম, ’না, আমি যাবো না । আমি আমার জানালায় বসে আকাশ দেখছি, বৃষ্টি দেখছি, আকাশের কান্না দেখছি, গাছেদের নুয়ে….

নিকোলাই রুবৎসভের কবিতা

নিকোলাই মিখাইলোভিচ রুবৎসভ (৩ জানুয়ারি ১৯৩৬ – ১৯ জানুয়ারি ১৯৭১) মাত্র পঁয়ত্রিশ বছরের জীবন পেয়েছেন রুশ কবি নিকোলাই রুবৎসভ। দুর্ভাগ্য তাঁকে তাড়া করেছে সারাজীবন। শৈশবে মায়ের মৃত্যু ও পিতার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ করার জন্য তাঁর স্থান হয় শিশু আশ্রমে। পড়াশোনা শেষ করার আগেই জীবিকার তাগিদে তাকে খনিতে, জাহাজে কাজ করতে হয়। সৈন্য বাহিনীতে যোগ দেওয়ার….

সোহরাব পাশা’র একগুচ্ছ কবিতা

নিদ্রিত ঘ্রাণের শব্দ দীর্ঘ যায় আশালতা ফিরে আসে বিষণ্ণ গোধূলি ফিরে আসে দুঃখিত সকাল, ক্ষয়ে যাওয়া এক দূরের উপনিবেশ পাখির চেয়ে মানুষের কোলাহল বেশি কোনো মৃত্যু মানুষকে অপরাধী করে না নিঃশ্বাসের রোদে আবছায়া নিদ্রিত মেঘ স্মৃতির অসুখ বাড়ে; দূরে নির্জন আধাঁরে জেগে ছিলো মানুষের কথা পুরনো সে বাড়ি সেই ছায়াপথ মায়াপথ জুড়ে কতো ভুল মানুষের….

error: Content is protected !!