Author Picture

সিদ্ধার্থ হকের একগুচ্ছ অন্ধকার

সিদ্ধার্থ হক

অন্ধকার ১—বৃষ্টি
.
অন্ধকার দিন, সম্ভাবনার মধ্যে থেকে কোকিল ও ঠাটার ডাক বহু উঁচু থেকে একসাথে
শোনা যায়; তারপর শোনা যায় নিকটের দালানের পাজরের নিঃশ্বাসের মত;
যখন ঠাটার ডাক কমে আসে, তখন কোকিলকে শোনা যায় বেশি; আকাশের
আর্টিলারির ড্রাম বাদকেরা, ঢাকা, কুমিল্লা, বরিশাল ও ময়মনসিংহের আকাশে আকাশে
একসাথে ছড়িয়ে রয়েছে; মসুর ও বিবিধ ডাল ভাঙ্গাবার চাকাগুলি ঘুরছে উপরে;
ভয়ঙ্কর শব্দের মধ্যে নীরবতার তৃষ্ণা আসে বকে; ক্লান্ত ইথার, যাও, আমার বন্ধুদের বল,
আজ বৃষ্টি হবে, আজ আমি নীরব থাকব; আমাকে ডাকার কোন প্রয়োজন নেই
আকাশে অনেক নৌকা; প্রসব বেদনার মত বৈঠার গুড়ুম গুড়ুম শোনা যায়।
উলটে যাওয়া অনেক পানসি উড়ছে শূন্যে; কারা যেন ভাড়ী ভাড়ী খালগুলো,
তীরবর্তি গাছসহ টেনে টেনে অনেক উপরে তুলছে; যান বাহনেরা ভেসে উঠছে
ট্র্যাফিকের অনেক উপরে; গাছগুলো টিএনটির টাওয়ারের চেয়েও লম্বা;
হে বাতাস সকলকে জানাও আমি আজ মানসিক লুলা, যে কোন কার্যে অক্ষম

~~
অন্ধকার ২— দিনের অন্ধকার
.
দিনের অন্ধকারের মধ্যে, অনেক চাঁদের আলো, যেমন বিমর্ষতা, দেখা যায়।
দেখা যায় তার হাত পা মুখ আছে, শীর্ণ এক শরীরের চারদিকে,
কিন্তু কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গই শরীরের একস্থানে স্থির নেই;
কখনো হঠাৎ দেখি মানুষের শরীরের মত বসে আছে শুধু এক মুখ;
পাখির দেহের মত উড়ে যায়, ডানা স্থির আর ছটফটে;
খুব ভাল করে লক্ষ করলে দিনের অন্ধকারের মধ্যে নাড়া ছাওয়া
নিড়ানো জমির মতন বিমর্ষতাকে দেখা যায়,
বহু আগে চলে যাওয়া কোন জীবনের মত,
বাতাসের বেগে হেঁটে যাচ্ছে জোছনার রাতে; কিন্তু টের পাই,
এখন রাত্রি নয়, দিন, মূলত রাত্রির অন্ধকারের চেতনা সম্পন্ন এক দিন;
বিহ্বল সূর্যের আলো একদিনের ক্যাজুয়াল ছুটি নিয়ে বসে
আছে কোনো ক্যাফের কোনায়; সে জানে স্থায়ীত্ব অন্ধকারের। আলো আর
সূর্যের ক্ষণকাল— এইসব দিনের অন্ধকারের মধ্যেই শুধু স্পষ্ট হয়ে ওঠে। আর
দেখা কষ্টকর এরকম অস্পষ্ট বহুকিছু আবিরাম ঘটে; কালো জামা পরা
ভিখারি শাদা জামা পরা, গাড়ি দেখে অকস্মাৎ নেমে আসা, সাহেবের সাথে
হাতাহাতি করে বা করেনা; সাহেব চাইলে তাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিতে পারে,
তার শক্তি বেশি; কিন্তু দিনের অন্ধকারে সে তা না করে,
গাড়ির অন্ধকারে ফিরে আসে; দিনের অন্ধকার মাল্টিপ্লাইড হতে হতে
গাছ আর মানুষের মধ্যে এক ব্যখ্যাহীন সংলগ্নতা তৈরি করে দিলে
একটি দিনের অন্ধকারের মধ্যে হাজার জীবনের অবচেতনার গভীরতা
ঘাসের মতন জাগতে থাকে; বহু বিপরীত দৃষ্টিভঙ্গি মানুষের মধ্যে এসে ঢোকে;
টের পাই, বহু দ্বন্দ্ব একসাথে যার চেতনায় খেলা করে, সে সৌন্দর্য, অন্ধকার,
আর বিমর্ষতা। বহু বিপরীত মুদ্রাদোষ একসাথে একটি মনের মধ্যে অবস্থান করছে এখন।
আর জানা হয়ে যাচ্ছে যে একটি মনে বলে কিছু নেই, যে কোনো মনই বহু মন।
সারাদিন শুয়ে বসে বাঁশঝাড় দেখতে ইচ্ছা করে; কিন্তু দীর্ঘ মুদ্রাদোষে কফিসপে
চলে যাই; হেঁটে হেঁটে ঢুকে যাই পাখির ডাকের ভিতরে; কোকিল অনেক ডাকে;
হয়তো সে সঙ্গিনীকে পায় নাই খুঁজে; এবার হবেনা খেলা তার;
কোকিলের বিষন্ন ডাকের মধ্যে ব্রহ্মাণ্ডের রূপ; হয়ত সে ডেকে ডেকে মাটির ঢেলার মত
ঝুপ করে পড়ে যাবে নিচে; কোনো সারা পাবেনা তার কাছ থেকে।
দিনের অন্ধকারের মধ্যে আমার ভীষন রকম ক্লান্তি লাগে;
রাত্রির অন্ধকারের মধ্যে যথেষ্ট বিশ্রাম নেয়া কোনোদিনও হয়নি আমার।
তবু মন দিয়ে শুনি পরাজিত কোকিলের গলা দিয়ে রক্ত ওঠা অবিরাম ডাক
উঁচু গাছ ওদের পছন্দ; মানুষের পছন্দ সমান্তরাল রাস্তার অবিশেষ ভীড়;
এক বুলবুলি এসে দুএক মুহূর্ত আমার জানালার সামনে বসে ছটফট করতে করতে
উড়ে গেলে, সে অন্য কোনো পাখিও হতে পারে, টের পাই, পাখিরাই মানুষের আত্মা,
অথবা মানুষ পাখির; ঘাস মানুষের আত্মা, অথবা মানুষ ঘাসের

~~
অন্ধকার ৩—অপেক্ষা
.
অন্ধকার চাইনিজ বাঁশির হাত ধরে কোন এক অদ্ভুত পিয়ানো
নিঃসীম নীরব অপেক্ষার মত বেজে যাচ্ছে ভোর থেকে তাই
সকাল হয়েছে বলে মনে হলেও সকাল হয়েছে কিনা
কিম্বা হবে কিনা আদৌ আমি তা জানিনা ফলে ভাবি হয়তবা আজ এমন
এক দিন যে দিন সকাল না হয়েই দিন হয়ে যায় বা গেছে কেননা কোনো
কোন দিন হয়ত পর্যায়ক্রমিক নয় দিন না হয়েই রাত্রি হয়ে যায়
অপেক্ষার নিরর্থক মুহূর্তের ভিতরে সকাল না হয়েই সন্ধ্যা হয় আর
দুপুরের আগে কিম্বা পরে বিকাল হারিয়ে যায় সময়ের ঘূর্ণিচক্রে
তেমন একটি দিন হয়তবা আজ টিভি একা ফুটবল খেলে
ধ্যানের বিষণ্ণ বাজনা সমাপ্ত হয়না হলুদাভ প্রজাপতি কাঁচের বাইরে উড়তে
উড়তে ধাক্কা খায় কাঁচে আর ডানা ভেঙে পড়ে যায় মৃত গাড়িদের মাটিতে
ডাবতে থাকা দেহের উপরে কে তাকে শুশ্রুসা করবে আর তাই আমি
হলুদাভ জামা গায় দিয়ে বসে থাকি ধাক্কা খাওয়া হলুদাভ প্রজাপতি হয়ে
ওর নম্রভাব টের পাই চুপ করে থেকে চুপ করে থেকে চুপ করে দেখে
বহু কিছু পর্যায়বিহীন দিনে টের পাওয়া যায় বুঝে প্রজাপতি
আবার উড়তে শুরু করে উপরে অনেক গাছ কোথাও লুকানো
আছে হয়তবা সেই ফুল যার একটি স্পর্শেই সে আবার সম্পূর্ন হয়ে যাবে
তার সাথে মাঝে মাঝে দেখা হয় আর তার দিকে নীরবে তাকিয়ে ভাবতে থাকি
তার সাথে সত্য দেখা কোনোদিনও হবে কি আমার অপেক্ষায় অপেক্ষায়
দিন চলে যায় অথচ কে যেন আমাকে বলে বের হয়ে আস বের হয়ে আস
অপেক্ষাও বেঁচে থাকা যদি তুমি অপেক্ষা না কর কিন্তু আমি অপেক্ষায়
এতো পারদর্শি ওই অন্ধকার চাইনিজ বাঁশির মতন যার হাত ধরে অদ্ভুদ পিয়ানো
বসে আছে চাইনিজ বাগানের অনেক ভিতরের বাঁশবাগানের মতন এখনো আর বলছে
অপেক্ষা যে গাঢ় অন্ধকার দিন রাত্রির যে কোনো সময়ে
সে কথা তো তুমিও জানো ভালোভাবে

~~
অন্ধকার ৪—‍‍অর্থ
.
তোমার মার্জিনে আমি ক্লান্ত এক দাগ; চিহ্নও হতে পারি;
অভিজ্ঞতার মধ্যে সবই আছে; তাই, হয়ত
এই দুইয়ের ভিতরে আমি মনোবেদনার অন্য কিছু; কেননা সন্ধ্যায়
পাখিদের উড়ে যাওয়া দেখে বুঝতে পারি,
অসম সময়ে প্রেম মরুভূমি ভেদ করে প্রবল বৃষ্টির মত আসে
ঢুকে যায় মরুর অনেক ভিতরে, আর দেখা যায়, মরুও যে ভূমি
সেই সত্য তার অভ্যন্তরে, নিঃশব্দে ঘুমিয়ে ছিল, কিন্তু এখন জাগছে,
কত সহস্র বীজ বালুর মহাতলে অপেক্ষায় ছিল, কত চিহ্ন
ফুঁটে ওঠার প্রতীক্ষা করছিল, কত দাগ ধুঁয়ে যেতে যেতে আবার গোলাপ
হয়ে গেল; তোমার মার্জিনে আমি মাঠের একাকী গাছ হয়ে ফিরলাম আবার;
আমাদের চারপাশে ঘাস তার সংসার সাজালো; তৃণ ফুটে উঠল আকাশে
পাখিরা সান্ধ্য সভা শেষ করে রাত্রির আশ্রয় নিল আমাদের বাড়ির নিবিড় মার্জিনে
এখন একটা কক্ষে একা বসে আছ; এই বসে থাকা
মহাবিশ্বের অন্য সব কিছুর মতই স্রেফ একটা কিছু, এলোমেলো,
লক্ষ্যহীন যদৃচ্ছ-ঘটনা, কত লোক বসে আছে এইভাবে একা, পৃথিবীর
এখানে ওখানে, ঘরের ভিতরে, পথে, জঙলে, মরুভূমিতে, তুমি স্রেফ তাদের একজন;
তারপরও ভাবো তুমি তোমার অভিজ্ঞতার বিশেষ অর্থ কি, কোথা থেকে এসেছে সে, কোথায়
যাচ্ছে, তোমাকেই বা নিয়ে যাচ্ছে কোন অবশেষে, বড় কোন আলো কিম্বা অন্ধকারের সাথে
এর সংযোগ আছে নাকি নাই; কি যে ব্যতিব্যস্ত তুমি, নিজ অভিজ্ঞতার অর্থ জানতে এখনো
একই রুমে বসে আমি তোমাকে দেখছি; ভাবছি, মিথ আর কল্পনা নিয়ে;
কোটি কোটি বছর ধরে আমি বাস্তবতার সাথে কল্পনার রঙ মিশিয়ে বানিয়েছি বহু মিথ;
যেমন স্বর্গ, ডেমোক্রেসি, সমান অধিকার, আমার পিতার আত্মা গাছের উপরে বসে
আমাকে দেখাচ্ছে পথ রাতে, অন্ধকারে, আছে অধিষ্ঠাতা দেবদূত, মানবতা,
আর হ্যাঁ আমার জিহবা মোচড়ানো, ঠোঁট পুড়ে যাওয়া,
অভিজ্ঞতার উঁচু অর্থ খুঁজি, যাতে আমি আমার বেদনার অন্ধকার থেকে
বের হয়ে, অন্য কোথাও যেতে পারি
কিন্তু দেখো বেদনাই মূল অভিজ্ঞতা; কল্পনাও অভিজ্ঞতা,
যেমন লুকিয়ে থাকা, অস্বীকার করা, অনুভব করা যে বেঁচে আছি;
কপালে অনিদ্রার ব্যথা হাত দিয়ে টেপা, এসব; এর চেয়ে বেশি কিছু নেই;
তোমার চেতনা গঠিত হতে থাকে; মিলিয়ন বছরেরা
চলে যায়; আলো অন্ধকার হয়ে যায়; এই রুমে তুমি বসে থাকো;
কর্তিত ঘাসের ঘ্রাণ মনে পড়ে; মূহূর্তের মধ্যে কোটি কোটি বছরেরা হাঁটে;
টের পাও তুমি এক স্লো লার্ণার; তাই বলি, মিথে ভুলনা;
গভীর বেদনায় বারবার ভুলে যেওনা, বিশেষ অর্থ বলে কোনো কিছু নেই

~~
অন্ধকার ৫—আলমারি
.
নিয়ত বিস্তৃত আঁধারের গভীর আলমারির ভিতরে, অনেক এতিমের
কাপড়ের সাথে, আমার মা’র ভাজ করা, ভাজে ভাজে ছিঁড়ে যাওয়া
শাড়িগুলো বসে আছে; প্রতিটি মানুষ এক ফোঁটা লবনাক্ত অন্ধকার;
ব্রহ্মাণ্ডকে বিস্তৃত করে; কবে যে আমার মা
পৃথিবীর এতিমদের সাথে এক হয়ে অন্ধকার হয়ে গেল, আমি তা দেখিনি;
বহু দূরে ছিলাম তখন; স্বপ্নে এসে আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল
কাল থেকে আমার এতিম ছেলেটিকে কে দেখবে বাবা; চমকে উঠে
প্রগাঢ় বিহ্বল হয়ে, স্বপ্ন থেকে জেগে উঠেও, স্বপ্নের দিকেই আমি
তাকিয়ে ছিলাম আর টের পেয়েছিলাম সময় হয়েছে, মা চলে যাবে
শুয়ে আছে শিশুদের, মৃতদের জামাগুলি আলমারির অনেক ভিতরে;
এবং অনেক আমি একমনে, একাধিক আয়নার দিকে, আমার ও সকলের হয়ে,
একা, তাকিয়ে রয়েছি; সবার বয়স হচ্ছে, মরে যাবে, টের পাচ্ছি শুয়ে, বসে;
যদি কোনো ক্রমে শুয়ে থাকা যেত সমুদ্রের বহু নিচে
মা’র জরায়ুর ভিতরে, প্রেগনেন্ট তিমিদের মত কিম্বা স্তব্দ বহু জাহাজের মত,
হয়ত বয়স বাড়তো না আর আমাদের কারও;
কিন্তু তা হয়না; দেখছি অতল শান্ত জলে,
শুয়ে আছে নিঃসীম পৃথিবী ঘুমহীন; শুয়ে থাকবার সাথে ঘুমহীনতার স্বচ্ছ
যোগাযোগগুলি টের পাচ্ছি, কাঁপছে ওরা ব্যস্ততাহীন মাছদের মত
সব অতলের স্রোতে;
বিলিয়ন বছরের বিবর্তন খেলা করে জলে স্থলে, অসীম আকাশে;
পৃথিবীর শিশুদের, মাতাদের কত জামা মৃতদের জামার সহিত
সামুদ্রিক জেলী ফিস খেলা করছে লক্ষ সময়ের ডাইমেনশনে;
ডিম পেড়ে, হ্যাচিং সমাপ্ত করে মরে যাচ্ছে শাদা জামা হয়ে;
জেলী ফিস সংঘটিত হয়ে যাচ্ছে, আমার মায়ের মত, বিলিয়ন বছরের দিকে
সমুদ্রের তলদেশে আলমারি শুয়ে আছে বহু বেদনায়,
আলমারির আলমারি শুয়ে থেকে—হ্যাচিং করছে আরো আলমারিদের;
বিলিয়ন বছরের আলমারি হাসছে আঁধারে— আমি একা একাধিকভাবে,
আমার ও সকলের হয়ে আমি দেখে যাচ্ছি প্রতিরাতে শুয়ে
টের পাচ্ছি আমিও রয়েছি শুয়ে ঐ অদ্ভুত আলমারিতে,
আমাকে হ্যাচিং করছে একাধিক ওম,
কখনো শিশুর জামা, কখনো মায়ের জামা গায়ে দিয়ে আমি
সি-বিচের মত ক্রমে হামাগুড়ি দিয়ে যাচ্ছি; থাকছি অনেক;
দেখছি আমার দিকে বিলিয়ন বছরের জেলী ফিস, তাকিয়ে রয়েছে তার
সামুদ্রিক সাঁতার থামিয়ে

আরো পড়তে পারেন

তরুন ইউসুফের একগুচ্ছ কবিতা

বহ্ন্যুৎসব কত কিছু পুড়ল! গাড়ি পুড়ল বাড়ি পুড়ল দম্ভের দালান পুড়ে ক্ষার জলপাই সবুজ ট্যাংক নামল পুড়ল বই গল্প রূপকথার বেলুন হাতে পুড়তে পুড়তে ফানুস হয়ে উড়ে গেল বালক মায়ের আঁচল পুড়ল পুড়ল বুকের কাছের লোক যুবকের বুক পোড়াতে পোড়াতে পুড়ে গেল বন্দুক, থানার সেপাই কারো কারো স্বপ্ন পুড়ল আমিও পোড়ার গন্ধ পাই- আমার পুড়ল….

আজাদুর রহমান-এর একগুচ্ছ কবিতা

বাবা আপনার ব্যর্থ শরীর জানত নিরাময় উড়ে গেছে আসমানে, আপনার মৃত্যু হবে। শেষবেলায় আপনি বড় নিঃস্ব, ঈশ্বরের মত নিদারুন, একমাত্র একা। সেকারনেই আপনি লুকিয়ে লুকিয়ে ভেন্টোলিন সিরাপ খেতেন, অ্যাসমা’র বড়ি গিলে সারা রাত কাঁশতেন। আপনার কফ গলানো কাঁশির শব্দে কোন কোন রাতে আমাদের কাঁচা ঘুম ছিঁড়ে যেত, আমরা বিরক্ত হতাম। তারপর, আপনার জবুথবু মুখের দিকে….

মাহমুদ দারবিশের ডায়েরি ‘নদী মরে যায় পিপাসায়’— (পর্ব: ২)

মেয়েটি আর তার চিৎকার সমুদ্রতীরের মেয়েটি, যার একটি পরিবার আছে আর সেই পরিবারটির একটি বাড়িও আছে। বাড়িটির মধ্যে দুটি জানালা আর একটি দরজা আছে। সমুদ্রে একটি যুদ্ধজাহাজ মজার ছলে তীরে হাটাহাটি করতে থাকা লোকদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে: চার, পাঁচ, সাত জন বালির উপর পড়ে যায়। একটি অস্পষ্ট ঐশ্বরিক হাতের সাহায্যে মেয়েটি কিছুক্ষণের জন্য কোন প্রকারে….

error: Content is protected !!