
স্বয়ম্ভু
নারায়ণ তো সত্য। আবার সত্যনারায়ণ ! এই-ই বুঝি শব্দের শ্রী ৷ সন্ধ্যায় চলেছি দ্বিচক্রযানে, জানমান একাকার। পুজোর সওদা না করলেই নয় অথচ স্বয়ম্ভু, তুমি জান সত্যনারায়ণ। গৃহে ফিরে মুখপুথি—
সে এক বিষম নেশা, শান দিলে তুমিও অগাধ। সেই যে অপেক্ষমাণ— একটি মূর্ধন্যের দিকে চিরায়ত হরিণ, হরিণ… কেন যে নিয়মবিধি, বানান গড়িয়ে যায় দিকচক্রবালে অথচ স্বয়ংসৃষ্ট, একাকিনী আমাকে ভাবিয়ে তোলে কাকচক্ষু, অতল আঁধার।
আমিও সাজাতে পারি অন্যমন বনের শরীর। স্বয়ম্ভুব, আমি কি চিনেছি মন, কবিতার ধ্রুব…
দূরে থেকে
দূরে থেকেই তুমি দুরন্তপনায় মাতো। আমি দেখছি
শিমুল স্নাতক।
আমন্ত্রণ ব্যতীত ব্যত্যয় যুযুধান দুই পক্ষ।
কতদিন ঘুঘুডাক দেখি নাই — শুনি নাই বিষণ্ন দুপুর
তবে কি রুপোর বালা দিনে দিনে স্মৃতিধার্য ?
এমত বাক্যবন্ধে সায় দেন দিনমানে পদ্মঠাকুর
আমিও মজাসে লিখি ততোধিক, দূরে থেকে দুরন্তপনা…
সফলতা
ফসলে অসফল থাকে না। মাঠময় পরিশ্রম সবুজের ঘ্রাণে এখনও অঘ্রান খুঁজে পাই। ধুলো থেকে ধূলার অর্জন সহজে কি মেলে ? নদী খরতর — তাকে তুমি
একাকিনী ভেবে কাকজ্যোৎস্নায় ভেসে গেলে শুধু !
তবে যে দিগন্ত ছুঁয়ে ধানখেতে নেমে এল হাওয়া… সেকি নয় সফলতা, ফসলের বহুজন্ম আগে ?
আলাপ
কথা তো নিমিত্তমাত্র। ভাসমান। ব্যক্তিগত, জনসাধারণে… মননে এমত চিন্তা— আসমান আনখশিখর।
লেখা পড়ে থাকে একা ৷ তাকে, পাঠক যতক্ষণ না কোলে নেয় ততক্ষণ উধাও নিমিষ…
সীমিত আলাপ। আহা ! আল্লাহ্, সে তোমার মন।
নৈঃশব্দ্য
নৈঃশব্দ্য শব্দ হয়। কান পেতে শুনি।
অলক্ষে হয়ত কেউ মুনিবর ডাকে।
ডাকিনি-যোগিনী বিদ্যা শিখি নাই
উপরন্তু শিখিপাখা অর্থবহ শ্রাবণের মেঘে…
ওইদিকে দৃষ্টি যায়—বৃষ্টিধারা মনে-মনে,
এসবই আরোগ্য। তুমি ‘যোগ্য’ বলে বিবেচনা করো।
হয়ত-বা সন্ধেরঙে সন্দেহ ঘনিয়ে এলে, দ্যাখো,
সর্বোপরি চক্ষুদ্বয়ে কী অপূর্ব অদ্বয়, বোধোদয়
নৈঃশব্দ্যে মেতেছে চরাচর …
জানালা
দু-একটি শব্দ বদলে দিয়ে এক অন্যরকম নিসর্গ
স্বগের্র অভিমুখে, কবিমুখে… ভুসুকু, কাহ্ন
চর্যাপদে তখন কি চলছিল হরিদ্রা-অপরাহ্ণ ?
দরিদ্রবেশে আমি সে-সহজসিদ্ধি বিস্মৃতপ্রায়
বালকোচিত নৈকট্যে হাত বাড়াই ৷
পাঠ্যসূচি বজ্রডাকে নিভন্ত সূয্যির কাছে নত…
জানালা তো খোলাই আছে। কৃষ্ণমেঘ।
কে বলেছে বহিরাগত ?
রাত্রিময়ূর
রাত্রির সঙ্গে ময়ূরের কী সম্পর্ক থাকতে পারে চন্দ্র?
শোণিত, স্তনিত নয় অন্য এক স্তব। অর্জুনসারথি, জয়ী ৷
কালেভদ্রে কুরুক্ষেত্র। স্বপ্নে বিরহব্যথাতুর।
গদ্যপদ্যপ্রবন্ধের মতোই সে সজিনাসুজন।
আসলে অংশুমালী, দোষেগুণে ভরা এক করবী-আঁধার।
প্রত্যাখানে কিছু তো আখ্যান থাকে। রেকাবে মলয়ানিল নীলকান্তমণি।
রূপকথা, ছোটদের মনোরাজ্যে দুইচক্ষু বিস্ফারিত দিঘি।
ডিঙিটি ভাসিয়া যায়… নাইওরি…শরদিন্দু অমনিবাসে…
রুচি
ছড়ানো-ছিটানো পাতা ভবিতব্য। পার্থের তুলনা।
শারদীয় দৃশ্যাবলি। প্রাপ্তি বার্তা, অসম্পূর্ণ সূচি…
সংশোধন আঁখিপাতে, মুখপুথি, একে ভুলোমনা।
কথাকার। নামহীন। প্রশ্নে এত সনির্বন্ধ রুচি
আমাকে সাহস দেয়, সহসা আরামবাগিচায়
আশীর্বাদী ফুল, শ্যামা, দূর্বাদল, প্রেমময় কুশ
সবই আছে। মহালয়া, তাল-লয়, মিলের সহায়
এইভাবে রূপকথা… ওইভাবে স্নেহের পীযূষ…
কাহিনি এগিয়ে যায়, অক্ষৌহিণী সেনা তার পাশে।
আমি কি বুঝিব রুচি ? সূচিপত্রে মাতাল, বেহুঁশ…
সরস্বতী ঢেউ
এক-একটি শব্দের দিকে যাই।
অত্যাগসহন
নিজেরই খেয়ালে। কেউ লেখা নয়, খেলাপ্রেমী।
খেয়াতেই ভেসে গেল। বকেয়া কবিতা, কেয়াবাসে
এখনও শ্রাবণধারা অবিরল…
নীরবে সে এসেছিল। রবাহূত — আমিও রবাবে, রৌরবে।
লিখেছি পাঠক, শ্রোতা, স্রোতোবহা সরস্বতী ঢেউ…
একা
শুভদীপ, আমি সে আলোয় আজ মনে-মনে লেখা…
বিনীত ঘোষণা, ওই শূন্যস্থান… কবিতার ছায়া
আস্থাবলে মায়া জাগে। অশ্বত্থ, আসক্তি,
সীমারেখা পেরিয়ে কোথায় তুমি ? অনাহূত, চরম বেহায়া।
বলেছ অন্তরদ্বীপ, সমমনা, শান্ত, সমাহীত।
অতঃপর অশ্বডিম্ব, ভস্মপ্রায়, অলৌকিক ধ্যানে
নিবাত, নিঃষ্কম্প বাতি — অন্ধকারে প্রায় প্রশমিত…
মন্ত্রহীন আমন্ত্রণে ভেসে যাই অভাবিত জ্ঞানে।
এত কী সহজ শুভ ? দীপশিখা ? শীর্ষদেশ, আলো…
সবই পরিমিত বোধে অন্যরোদ, বন্যছায়াতল
ধূলায় বসেছ। পথ, তোমাকে কি সমীহ জানালো ?
লেখাটিকে আজও তুমি মনে করো মায়ের আঁচল !
তবে তো অভয় এই। নীরবে সে জেগে থাকে, লেখা।
সময়ে সে আসে, হাসে। পাশে চেয়ে দ্যাখো, তুমি একা…