
কেউ দেখতে পায় না
বহুদূর থেকে আমি একটু বিন্দু দেখতে পাই,
বিন্দুটি একটু বড় হয়, হাঁটতে শুরু করে-
বহুদূর থেকে আমি ‘হাঁটা’ দেখতে পাই!
দেখতে পাই ‘হাঁটা’সহ কেউ একটি অবয়বে পরিণত হয়,
বহুদূর থেকে আমি একটি অবয়ব দেখতে পাই,
ক্রমেই আমার দিকে এগিয়ে আসে!
বহুদূর থেকে আমি আমাকেই দেখতে পাই-
দেখতে পাই অবয়বটি আমার ভেতর ঢুকে যাচ্ছে,
বহুদূর থেকে দেখতে পাই অবয়বটি ছিলাম আমি,
দেখতে পাই দাঁড়ানো আমিটা ছিলে তুমি!
বহূ দূর থেকে দেখতে পাই –
তুমিও বহূ দূর থেকে অবয়বগুলো একইভাবেই দেখে চলেছো!
বহুদূর থেকে কেউই দেখতে পায় না –
দুটি পরিবর্তিত অবয়ব কিভাবে মিলে যায়-
তুমি আর আমি কি দেখে চলেছি
কাল কাঁপন
অগ্রিম আগুনের ধোঁয়া হৃদয়ে টক্সিন তৈরি করে-
বোঝোনি , কোনো ক্ষণ!
ছুঁয়েও দেখিনি!
মায়া-পল ইন্দ্রজালে তোমারি অস্তিত্বের চির সবুজ উপত্যকা!
সে নিশ্চয়ই আমি!
বুঝেও বুঝলে না!
জীবন বৃক্ষের বদৌলে- যমুনার মলিন জল হয়ে বইতে থাকি!
কেউ কখনো বলেছে ? তুমি নার্ভাস নদী!
হাইব্রিড জলের স্বাদের মতো!
কেউ বলে- আমিও শুনি-
সোনা-ডানার অতিকায় স্বর্গের পাখি!
কুহক ডাকুয়া আমার-
ঈগলের প্রচ্ছায়াও হতে পারো!
তাই কী ভেবেছিলাম?
নিশ্চয়ই দেখেছি-
অচেনা রঙের পায়রার মতো-
বাকুম বাকুম ভিন্ন উপস্বরে সময়ের বিভাজক তুমি!
শুনেছি- অনিবার্য সব কলরব!
অর্থহীন সব শব্দ এবং অক্ষরের দল-
যে বাক্যটি প্রসব করেছিল-
নৈরাজ্যের জ্বলন কালিতে- আগুনের নাম হয়েছে!
মৃতদের কাল কাঁপণে এমনি করে নাম লিখে দিলে!!
রাত নিশ্চয়ই ফুরোবে
আঁধার ও তোমার মেহনতে,
রাত নিশ্চয়ই ফুরোবে!
দলছুট ঐ তারার আলেয়ায়-
ফিরে ফিরে দেখি,
বিষণ্ন সমুদ্র আর ধূমকেতু –
আমার বুকের পাঁজরে আরও নির্জন হয়েছে!
ধুতুরার স্পর্শ
একটি মৌসুমে
ভালোবাসার বীজ ভেঙ্গে ঘৃণার মেঘ তৈরি হয়!
একটি মৌসুমে
ঘৃণার মেঘ গলনে অনুভূতির বৃষ্টি গড়িয়ে পড়ে!
তোমার মৌসুমে আমি কখনো লাল রঙা জবা,
কখনোবা ধুতুরার স্পর্শ!
আমার কোন মৌসুম নেই।
পূর্ব-পশ্চিমে সূর্যের বলয়ে বিরাগের ওই একটি পোশাক-
বার বার খুলে ফেলি- সব দিকে দিকে,
অনুরাগের আবাদে, বুকের ছাতির ভিতর-
ঝলমলে তোমার অভিসার!
ওহ !
আমি শুধু তোমারি!
অন্তিম শয়ানের খাট ও কবরের মাটিও জানে সে কথা!
মানুষের কসাইগুলো
দোয়েলের ডানা আর চোখ আমার নিজের গায়ে জুড়ে দিই-
উড়ে চলি অতীতের পূর্ব পাঁচিল হতে কালোয় টানা বর্তমান টার্মিনালে!
আমার উড্ডয়ন-টেক অফ, সাদার দুয়ারে নিষ্ফল প্রার্থনার মতো!
কালো মেঘ সব ধুয়ে দেয়-
অমল হাতগুলো ছায়ার মতো দেখেছি!
মানুষের কসাইগুলো মানুষের পোশাক পরেছে!
স্বীয় অশ্রুজলে, দোয়েলের ডানা ভিজে যায়!
মানুষের পশ্চিম পাঁচিলে,
সব মানুষের দল- দোয়েল ভুলে যায়!