
যে ছিল আমার স্বপনচারিনী
‘I had a dream the other night, when everything was still;
I thought I saw Susanna dear, coming down the hill.’
সুজান ছিল তার স্বপনচারিনী। সে যে কারো জায়া বা জননী, এমন সম্ভবনার কথা কেভিন স্বপ্নেও ভাবে নি। সুজানকে দেখে অল্পবয়েসী তরুণী মনে হয়েছিল। একটু আগে কেভিনের ফ্যাকাসে মুখের দিকে চেয়ে সুজান জানতে চেয়েছিলো কিছু খোয়া গেছে কি না! যে খোয়া গেছে সে-ই জিজ্ঞাসা করছে কি খোয়া গেছে। চুরি গেছে কেভিনের স্বপ্নের ভাণ্ডারে। স্বপ্নের জগতে সে কাঙাল হয়ে গেছে। কি নিয়ে স্বপ্ন দেখবে এখন? তবে আকাশ এখনো নীল, পৃথিবী অনেক সুন্দর, জীবনটা অনেক লম্বা। নিজের দুঃখকে কেন এতো বড় করে দেখা? যা গেছে তা যাক। না, কথাটা ঠিক হলো না। যে কোনোদিনই তার ছিল না তাকে হারানো যায় কি? কেভিন চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ালো, বুক ভরে নিশ্বাস নিলো। আবছা পৃথিবীটা আবার স্পষ্ট হয়ে আসছে। সূর্যটা আলো ছড়াচ্ছে, শিশুরা বেসবল হাতে ছুটোছুটি করছে, পাখির কলতানে আকাশ গেছে ভরে। সুজান এবং তার শিশু পুত্রটি উদ্বিগ্ন চোখে তার দিকে চেয়ে আছে।
কেভিনের ফ্যাকাসে মুখের দিকে চেয়ে সুজান জানতে চেয়েছিলো কিছু খোয়া গেছে কি না! যে খোয়া গেছে সে-ই জিজ্ঞাসা করছে কি খোয়া গেছে। চুরি গেছে কেভিনের স্বপ্নের ভাণ্ডারে। স্বপ্নের জগতে সে কাঙাল হয়ে গেছে। কি নিয়ে স্বপ্ন দেখবে এখন? তবে আকাশ এখনো নীল, পৃথিবী অনেক সুন্দর, জীবনটা অনেক লম্বা
‘আমি ভালো আছি, মাথাটা একটু ঘুরে গিয়েছিলো। তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে সকালে নাস্তা করার সুযোগ হয়নি। হয়তো তাই এমনটি হয়েছে।’ মিথ্যে কথাটা কেভিন সহজ ভাবেই বলে ফেললো।
‘ও মা, সে কি! আমার গাড়িতে কলা, বিস্কুট, ড্রিঙ্কস আছে, আমি এক দৌড়ে নিয়ে আসছি।’ ছেলেকে কেভিনের হেফাজতে রেখে সুজান ছুটলো তার গাড়ির উদ্দেশে। একটু পরে ফিরে এলো এক গাদা খাবার নিয়ে। ভরা পেটে কলা-বিস্কুট খেতে হলো, মিথ্যে কথা বলার শাস্তি।
খেতে খেতে সুজানের ছেলেটির সাথে কেভিন আলাপ শুরু করলো :
‘কি নাম তোমার?’
‘জেসি।’
‘তুমি কি হতে চাও, পিচার না ব্যাটার?’
‘দুটোই।’
‘তোমার প্রিয় দল কোনটি?’
‘শিকাগো কাবস।’
‘তোমার প্রিয় পিচার কে?’
‘নোলান রাইয়ান।’
‘বলো দেখি বেব রুথ কয়টা হোম-রান করেছিলেন?’
‘সাত শ চোদ্দ।’
‘কয়বার জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন?’
‘সাত বার।’
‘চমৎকার! তুমি তো সব জানো দেখছি। আজ থেকেই তোমাকে আমাদের বেসবল ক্যাম্পের সদস্য করে নেয়া হলো।’
‘আমার জেসি সব জানে, ‘ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে সুজান সদম্ভে ঘোষণা করলো। প্রতি রবিবার বিকালে বেসবল ক্যাম্পের প্রশিক্ষণ চলবে। ক্যাম্পের নিয়মাবলী নিয়ে লেখা একটি প্যামফ্লেট সুজানের হাতে দিয়ে কেভিন ধন্যবাদ জানালো, ‘এই ক্ষুধার্তকে কলা-বিস্কুট খাওনোর জন্যে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আশা করি জেসি একদিন মস্তবড় বেসবল খেলোয়াড় হবে। তবে নিয়মিত আসা চাই।’ একটি কাগজে নিজের ঠিকানা এবং ফোন নম্বর লিখে কেভিনের হাতে গুঁজে দিয়ে সুজান বললো, ‘আমরা এই এলাকার লোক, চার-পুরুষের ভিটে, সবকিছু চিনি, কোনো কিছু দরকার হলে ফোন করতে একটুও দ্বিধা করবেন না। খুব খুশি হবো। এবার তাহলে আসি, আবার দেখা হবে।’
বাড়ি ফিরে চোখ বুঁজে সোফার উপরে কেভিন উপুড় হয়ে শুয়ে পড়লো। মেয়েলি হাতে নাম-ঠিকানা লেখা সুজানের চিরকুটটা শুধুই জ্বালা দিচ্ছে। মানসপদ্মের দেবীকে দিনের আলোয় না দেখাই ভালো ছিল।