
সাহিত্যে সম্মাননা বেশিরভাগ সাহিত্যিকেরই প্রত্যাশিত এবং সাহিত্যিকদের জন্য সম্মাননাপ্রাপ্তি খুব বিরলও নয়। যেটি বিরল তা হলো, সম্মাননা প্রত্যাখ্যান, বিশেষ করে বাংলাদেশের সাহিত্য অঙ্গনে। কোনো সাহিত্যিকের সম্মাননা ফিরিয়ে দেয়ার ঘটনা উল্লেখ করতে গেলে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাইটহুড প্রত্যাখ্যানের ঘটনাই ঘুরে-ফিরে আসে। সেটিও কোনো গভীর দার্শনিক উপলব্ধিসঞ্জাত সিদ্ধান্ত ছিল না, ছিল নেহাতই রাজনৈতিক: ব্রিটিশদের জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে। ১০০ বছর আগের এই ঘটনা (১৯১৯ সালের ৩০ মে) এখনো বাঙালি সাহিত্যিকের সম্মাননা প্রত্যাখ্যানের উদাহরণ হিসেবে উদ্ধৃত হওয়াই প্রমাণ করে ঘটনাটি বাঙালির সাহিত্য চক্রে খুব একটা প্রচলিত চর্চা নয়।
আর যে ক’জন বাংলাভাষী সাহিত্যিকের পুরস্কার বা সম্মাননা প্রত্যাখ্যানের নজির পাওয়া যায়, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো পল্লীকবি জসীম উদ্দীনের ১৯৭৪ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার; প্রতিষ্ঠানবিরোধী সাহিত্যিক আহমদ ছফার ১৯৭৫ সালে লেখক শিবির পুরস্কার ও ১৯৯৩ সালে বাংলা একাডেমির সাদত আলী আখন্দ পুরস্কার; ন্যাপের সভাপতি অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের ২০১৫ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার; এবং অতি সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী কবি ওমর শামসের ২০১৯ সালে বাংলা একাডেমির ‘সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ পুরস্কার’ প্রত্যাখ্যান।
জসীম উদ্দীনের ১৯৭৪ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার; প্রতিষ্ঠানবিরোধী সাহিত্যিক আহমদ ছফার ১৯৭৫ সালে লেখক শিবির পুরস্কার ও ১৯৯৩ সালে বাংলা একাডেমির সাদত আলী আখন্দ পুরস্কার; ন্যাপের সভাপতি অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের ২০১৫ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার
তবে আন্তর্জাতিক সাহিত্য অঙ্গনে যে পুরস্কার প্রত্যাখ্যানের ঘটনা সবচেয়ে বেশি আলোচিত সেটি হলো— ১৯৬৪ সালে জাঁ পল সার্ত্রের সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার প্রত্যাখ্যান (এছাড়াও ১৯৫৮ সালে বরিস পাস্তারনাক সোভিয়েত কমিউনিস্ট পার্টির বিরোধিতার মুখে নোবেল পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করতে বাধ্য হন)। এর কারণ হিসেবে তিনি দুটি বিষয়ের উল্লেখ করেছিলেন, একটি ব্যক্তিগত, অপরটি নৈর্ব্যক্তিক। ব্যক্তিগত কারণটি হলো— তিনি পুরস্কার গ্রহণ পছন্দ করেন না এবং অতীতেও, ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরপর যখন তাঁকে লিজিওন অব অনার দেওয়া হয়েছিল, তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। যদিও তিনি সেই সরকারের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন। এ রকম আরো নানা সম্মাননা তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন।
The New York Review of Books-এর ১৯৬৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর সংখ্যায় প্রকাশিত Sarte on the Nobel Prize নিবন্ধে তিনি এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন এভাবে, “এ আচরণটি লেখকের আমৃত্যু কর্মযজ্ঞ বিষয়ে আমার যে ধারণা, তার সঙ্গে সম্পর্কিত। সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক, সামাজিক অথবা সাহিত্যিক দৃষ্টিভঙ্গি ধারণ করেন এমন একজন লেখককে সবসময় নিজের উপার্জিত জীবিকা তথা নিজের লেখার ওপরই নির্ভরশীল হতে হবে। তিনি যদি কোনো সম্মাননা গ্রহণ করেন, সেটি তাঁর পাঠকদের এক ধরনের অনাকাঙ্খিত চাপের মুখে ফেলতে পারে। নাম স্বাক্ষর করার সময় ‘জাঁ পল সার্ত্রে’ আর ‘নোবেলজয়ী জাঁ পল সার্ত্রে’ একই অর্থ জ্ঞাপন করে না। এ ধরনের কোনো পুরস্কার গ্রহণ করলে সেই লেখককে পুরস্কার প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে এক ধরনের আদর্শিক সংশ্লিষ্টতা স্বীকার করে নিতে হয়।”
তিনি একটি সত্যিকার মুক্ত সমাজের স্বপ্ন দেখতেন, যেখানে মানুষ একটি শ্রেণিহীন ও রাষ্ট্রহীন রাজনৈতিক পরিমন্ডলে বসবাস করবে, যেখানে ব্যক্তিগত সম্পত্তি বলে কিছু থাকবে না এবং যেখানে ব্যক্তি তার আগ্রহ ও প্রতীভা অনুযায়ী আত্মবিকাশের সুযোগ পাবে। বলাই বাহুল্য, তাঁর এই দার্শনিক ও রাজনৈতিক অবস্থানই তাঁকে কোনো প্রকার সম্মাননা গ্রহণ থেকে নিবৃত্ত রেখেছে। কারণ সম্মাননা গ্রহণ করলে সম্মাননা প্রদানকারী গোষ্ঠীর নির্দিষ্ট সামাজিক শ্রেণির প্রতি তাঁর পরোক্ষ সমর্থন প্রকাশ পাবে। তিনি মৌলিকভাবে এ ধরনের সামাজিক হায়ারআর্কির বিরোধী ছিলেন।
এ তো গেল নোবেল প্রাইজ প্রত্যাখ্যানের পেছনে তার ব্যক্তিগত কারণগুলোর খতিয়ান। তাঁর নানা সময়ে উল্লেখিত নৈর্ব্যক্তিক কারণগুলোও কম আগ্রহোদ্দীপক নয়। নোবেল প্রাইজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব ও ইউরোকেন্দ্রিকতার অভিযোগ ছিল। সার্ত্রের মতে, অতীতে নোবেল প্রাইজপ্রাপ্তরা নানান মতাদর্শ ও জাতীয়তাকে সমানভাবে প্রতিনিধিত্ব করেন না। আবার অতীতে নোবেল প্রাইজপ্রাপ্ত অনেক সাহিত্যিকের ব্যাপারে তাঁর আপত্তিও ছিল (মজার ব্যাপার হলো, এই তালিকায় অপর নোবেল পুরস্কার প্রত্যাখ্যানকারী সাহিত্যিক বরিস পাস্তারনাকও ছিলেন)।
আচরণটি লেখকের আমৃত্যু কর্মযজ্ঞ বিষয়ে আমার যে ধারণা, তার সঙ্গে সম্পর্কিত। সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক, সামাজিক অথবা সাহিত্যিক দৃষ্টিভঙ্গি ধারণ করেন এমন একজন লেখককে সবসময় নিজের উপার্জিত জীবিকা তথা নিজের লেখার ওপরই নির্ভরশীল হতে হবে। তিনি যদি কোনো সম্মাননা গ্রহণ করেন, সেটি তাঁর পাঠকদের এক ধরনের অনাকাঙ্খিত চাপের মুখে ফেলতে পারে। নাম স্বাক্ষর করার সময় ‘জাঁ পল সার্ত্রে’ আর ‘নোবেলজয়ী জাঁ পল সার্ত্রে’ একই অর্থ জ্ঞাপন করে না। এ ধরনের কোনো পুরস্কার গ্রহণ করলে সেই লেখককে পুরস্কার প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে এক ধরনের আদর্শিক সংশ্লিষ্টতা স্বীকার করে নিতে হয়
এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘যেহেতু আমি রাজনীতিতে জড়িত, বুর্জোয়া প্রতিষ্ঠানগুলো আমার অতীতের ‘ভুল’গুলোকে মুছে ফেলার চেষ্টা করছিল। এখন তারা যেন একটা উপলক্ষ খুঁজে পেল; যেহেতু তাঁরা আমাকে নোবেল পুরস্কার দিতে যাচ্ছে। তারা যেন আমাকে ‘ক্ষমা’ করে দিল এবং বলা শুরু করল এ পুরস্কার আমারই প্রাপ্য ছিল। এটা উৎকট একটা ব্যাপার।”
অস্ট্রেলীয় লেখক রিচার্ড ফ্ল্যানাগান Sydney Morning Herald-এর ১৬ জুন ২০১২ সংখ্যায় ‘A loss for words’ শিরেনামের নিবন্ধে সাহিত্য পুরস্কারের তীব্র সমালোচনা করে লেখেন, ‘জাতীয় পুরস্কারগুলো হলো বুর্জোয়াদের নিন্ম রুচির ব্যারোমিটার’। তিনি উদাহরণ দিয়ে দেখান, এসব পুরস্কারের বিচারকরা অনেক সময় লোভ, ভয়-ভীতি, এমনকি অর্থের লেনদেনের কাছে বিক্রি হয়ে যান। ফ্ল্যানাগান লিখেছেন, ‘বেশিরভাগ বিচারকই ন্যায়নিষ্ঠ মানুষ। কিন্তু ঘৃণা, শঠতা, ঈর্ষা— এই বৈশিষ্ট্যগুলো প্রজ্ঞা, সুবিচার, বিদ্যা ইত্যাদির চেয়ে কোনো অংশে কম মানবিক নয়।’ পুরস্কার যারা দেয়, তারাও নিজেদের মধ্যে এক ধরনের প্রতিযোগিতায় মেতে ওঠে এবং এর ফলস্বরূপ তারা যোগ্যতম প্রার্থীর বদলে নিজেদের জন্য লাভজনক প্রার্থীকেই পুরস্কারের জন্য মনোনীত করতে পারে। দ্বিতীয়ত, এতসব সাহিত্য পুরস্কারের ভিড়ে সাহিত্য পুরস্কারের মর্যাদাও এখন অনেকটা হালকা হয়ে গেছে। ফ্ল্যানাগান নিজের অবস্থানকে আরেকটু স্পষ্ট করতে বলেছেন, তিনি সাহিত্য পুরস্কারের বিরোধী নন, কিন্তু তিনি মনে করেন এসব পুরস্কারকে একজন সাহিত্যিকের শ্রেষ্ঠত্বের মানদন্ড হিসেবে গ্রহণ করার আগে অনেক সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।
সাহিত্য পুরস্কারের আরেকটি সীমাবদ্ধতা তুলে ধরে ড্যানিয়েল মেনডেলসহন এবং জেনিফার সযালাই The New York Times-এ ‘Whom or what are literary prizes for?’ শিরোনামে একটি নিবন্ধ লেখেন ১৯ নভেম্বর ২০১৩ সংখ্যায়। খ্রিস্টপূর্ব ৫০০ অব্দের গ্রিক ট্র্যাজেডির জন্মলগ্ন থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক কালের নানা সাহিত্য পুরস্কারের অসংগতি তুলে ধরে তাঁরা দেখিয়েছেন, অনেক ক্ষেত্রেই সেই সময়ের শ্রেষ্ঠতম সাহিত্যকর্মটি বা সাহিত্যিকটি পুরস্কৃত হন না। যেকোনো পুরস্কারকে হতে হবে শ্রেষ্ঠত্বের স্বাক্ষরবাহী। অথচ সাহিত্য পুরস্কারের ক্ষেত্রে এ কথা যুগে যুগে প্রমাণিত হয়েছে যে, সাহিত্যের মতো একটি নন্দনশিল্পের কোনো অকাট্য মানদন্ড হতে পারে না। খেলাধুলার ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্বের মানদন্ড বেশ সহজ : সময়, দূরত্ব, উচ্চতা ইত্যাদি, যা সহজেই নিখুঁতভাবে মাপা যায়। কিন্তু সাহিত্যের শ্রেষ্ঠত্বের মানদন্ড তো সম্পূর্ণ মনঃকল্পিত (subjective); সেটা পাঠকের ক্ষেত্রে হোক, সমালোচকের ক্ষেত্রে হোক আর সাহিত্য পুরস্কারের বিচারকদের ক্ষেত্রেই হোক।
তীব্র সমালোচনা করে লেখেন, ‘জাতীয় পুরস্কারগুলো হলো বুর্জোয়াদের নিন্ম রুচির ব্যারোমিটার’। তিনি উদাহরণ দিয়ে দেখান, এসব পুরস্কারের বিচারকরা অনেক সময় লোভ, ভয়-ভীতি, এমনকি অর্থের লেনদেনের কাছে বিক্রি হয়ে যান। ফ্ল্যানাগান লিখেছেন, ‘বেশিরভাগ বিচারকই ন্যায়নিষ্ঠ মানুষ। কিন্তু ঘৃণা, শঠতা, ঈর্ষা— এই বৈশিষ্ট্যগুলো প্রজ্ঞা, সুবিচার, বিদ্যা ইত্যাদির চেয়ে কোনো অংশে কম মানবিক নয়।’ পুরস্কার যারা দেয়, তারাও নিজেদের মধ্যে এক ধরনের প্রতিযোগিতায় মেতে ওঠে এবং এর ফলস্বরূপ তারা যোগ্যতম প্রার্থীর বদলে নিজেদের জন্য লাভজনক প্রার্থীকেই পুরস্কারের জন্য মনোনীত করতে পারে। দ্বিতীয়ত, এতসব সাহিত্য পুরস্কারের ভিড়ে সাহিত্য পুরস্কারের মর্যাদাও এখন অনেকটা হালকা হয়ে গেছে
সাহিত্য পুরস্কারের রাজনীতিকীকরণ আমরা অনেকটা সহজেই শনাক্ত করতে পারি। কিন্তু সাহিত্য পুরস্কারের নিজেরই একটি রাজনৈতিকতা আছে; যা বোঝাটাও জরুরি। Finacial Times-এর ৪ নভেম্বর ২০১৬ সংখ্যায় জোনাথন ডার্বিশায়ার ‘The politics of literary prize-giving’ শিরোনামে একটি নিবন্ধ লেখেন। ইংল্যান্ডের বিখ্যাত বেইলি গিফোর্ড প্রাইজের একজন বিচারক ডার্বিশায়ার নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে লেখেন, এই পুরস্কারগুলো শহুরে অভিজাতদের ‘কার সঙ্গে কার পরিচয় আছে, কে কার সঙ্গে শুয়েছে, কে কার কাছে মাদক সরবরাহ করেছে, কাকে সে বিয়ে করেছে এবং সর্বোপরি এবার কার পুরস্কার পাওয়ার পালা’— এসব বিবেচনার ওপর দারুণভাবে নির্ভরশীল। এর সঙ্গে সাহিত্য সংস্কৃতির গতিধারাকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে মূলত মানুষের চিন্তাশীলতাকে নিয়ন্ত্রণের প্রকল্প যেমন আছে, তেমনই আছে বিপুল অর্থনৈতিক বিবেচনা। আরো আছে বিচারকের বিচার করার যোগ্যতা সম্পর্কে প্রশ্ন। কে, কিসের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেবে সাহিত্য পুরস্কারের বিচারক হবেন কারা?
পুরস্কার মানুষকে তাঁর কাজের স্বীকৃতি এনে দেয়, যা তাঁর অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করে— এ বিষয়ে সন্দেহ নেই। কিন্তু সাহিত্যের ক্ষেত্রে এ হিসাবটি অতটা সহজ নয়। আমরা দেখলাম, বহুবিধ জটিলতার আবর্তে সাহিত্যের ক্ষেত্রে পুরস্কার প্রদান আদৌ গ্রহণযোগ্য কিনা সেই প্রশ্নটি উঠে আসছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন সাহিত্য পুরস্কার প্রদানে রাজনৈতিক বিবেচনার অভিযোগ অশ্রুতপূর্ব নয়। কিন্তু আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও সাহিত্য পুরস্কারের ধারণাটি নিদারুণভাবে প্রশ্নসাপেক্ষ। এ ধরনের প্রশ্নের জবাব দিতে জাঁ পল সার্ত্রের মতো প্রবাদপ্রতিম সাহিত্যিককে আমরা পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করতে দেখি; কিন্তু বাংলাদেশের সাহিত্যিকদের কোন দার্শনিক অথবা রাজনৈতিক অবস্থান থেকে নোবেল পুরস্কারের তুলনায় অকিঞ্চিৎকর পুরস্কারও প্রত্যাখ্যান করতে খুব একটা দেখা যায় না। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এমন প্রশ্ন উত্থাপনের সুযোগ কি আসলেই নেই, নাকি আমাদের সাহিত্যিকদের মধ্যে নেই তেমন দার্শনিক উপলব্ধি আর রাজনৈতিক প্রজ্ঞার আলোকবর্তিকা?