Author Picture

আবু সায়েম এর একগুচ্ছ কবিতা

আবু সায়েম

অস্পৃশ্য

অদৃশ্য এক ঘাতক
অকস্মাৎ কেড়ে নিয়েছে
সব স্পর্শের অধিকার-
শিশুর নরম গাল
বাগানের সুগন্ধি গোলাপ
পার্কের মসৃণ ঘাস
হাতলযুক্ত লোহার বেঞ্চি
বাস ট্রাম রেলগাড়ি
প্রিয় স্কুল উপাসনালয়
সবুজ মলাটে বাঁধা
ভালোবাসার কবিতাগুচ্ছ

… এমনকি তোমাকেও।

 

বুমেরাং

তোমাকে বিদীর্ণ করবো বলে
বাণে ভরেছি ধনুক
অবাধ্য তীর বুমেরাং হয়ে
ভেদ করে নিজ বুক।

 

সহজ শর্ত

সহজ শর্তে বাঁচতে চাই
নরম হাতে ছুঁতে চাই সকালের রোদ্দুর
বুক ভরে নিতে চাই কুয়াশার ঘ্রাণ
স্বপ্নগুলো ভেজাতে চাই বৃষ্টিতে।

সহজ শর্তে বাঁচতে চাই
নারীর ঠোঁটে আঁকতে চাই প্রেম
রাঙাতে চাই শিশুর টোলপড়া গাল।

সহজ শর্তে বাঁচতে চাই
শুন্যতায় ধরতে চাই মায়ের আঁচল
হৃদয়ে লিখতে চাই জীবনের গদ্য
মিথ্যেগুলো ভাসাতে চাই মস্ত ফানুসে।

সহজ শর্তে বাঁচতে চাই
রঙিন হাটে কিনতে চাই সাদাকালো মন।

 

বিদায়বেলা

বসন্তের শেষ বিকেলে
শহরের ব্যস্ত ফুটপাথে
হাঁটছিলাম দুজন।
তোমার রঙিন স্কার্ফ
বাতাসে এলোমেলো-
ছুঁয়ে দিচ্ছিল আমার গা।
অব্যক্ত বাসনা বুকে
শুষে নিচ্ছিলাম
শরীরের সবটুকু ঘ্রাণ।
কামনায় থমকে সময়
কেটে যায় সহস্র কাল
ফুরিয়ে আসে বিকেল।
বিদায়বেলা বিষন্ন কন্ঠে
বলেছিলে, ‘যাই দেব’
আমার প্রতীক্ষা
শুধু আরেক জন্মের।

 

ঋষি নই

উর্বশী প্রহর গুণে
ভাঙবে ঋষির ধ্যান।

অশোক বন উতলা
ছন্দময় নৃত্যের তান্ডবে
আদিগন্ত মর্ত্য জুড়ে
বহে সুরের মদিরা।

মানবীর বাঁকা ঠোঁটে
নিষিদ্ধ প্রেমের আমন্ত্রণ
নির্জলা যৌবন রসে
বাঁধতে সাধুর মন।

তবু ঋষি অবিচল
সাধনায় নিত্য তার বাস
টলাতে পারেনা তাকে
অপ্সরার হাতছানি।

আমিতো সাধক নই
তপস্যায় করবো পণ
তোমাতে বিলীন হয়ে
কাটাবো এক জীবন।।

আরো পড়তে পারেন

গাজী গিয়াস উদ্দিনের একগুচ্ছ কবিতা

বীভৎস খেলা নগরে বাতাসে মথিত জনস্রোতের কোলাহলে শুনতে পেয়েছি সারিগান গঞ্জের হাটে আকাঙ্খার গভীরে মন্দ্রিত অভিন্ন প্রাণ নীরব দর্শক ছিলাম ব্যর্থতার করুণ গান ফেরার মহড়ায় বঞ্চিত কুঁড়েঘরে সরাইখানার- শুঁড়িখানার মাছিরাও নেশায় বুদ্বুদ প্রকম্পিত কান্নার পর একদিন হাসির তিলকরেখা বিচ্ছুরিত শৈশবের ক্ষুধার্ত চিৎকার ক্রর হাসি চেপে মৃত্যু পরোয়ানা ঝুলে ভাগ্য প্রহসনে যুদ্ধের ব্যগ্র দামামা থেমে গেলো-….

তোফায়েল তফাজ্জলের একগুচ্ছ কবিতা

উপায় অবলম্বন কাঁটা থেকে,  সুচালো কাঁকর থেকে পা রাখিও দূরে, জায়গা না পাক চলন-বাঁকা চেতনায় উড়ে এসে বসতে জুড়ে; এসবে খরগোশ কানে থাকবে রাতে, পড়ন্ত বেলায়, দ্বিপ্রহরে, পূর্বাহ্নে বা কাক ডাকা ভোরে। দুর্গন্ধ ছড়ানো  মুখ ও পায়ের তৎপরতা থেকে গ্রীষ্ম থেকে সমস্ত ঋতুতে একে একে নেবে মুখটা ফিরিয়ে তিলার্ধকালও না জিরিয়ে। কেননা, এদের চরিত্রের শাখা-প্রশাখায়….

আহমেদ ফরিদের একগুচ্ছ কবিতা

তোমার সাথে দেখা হওয়া জরুরী নয় সেদিন তুমি আমাকের ডেকে বললে, ”আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টি ঝরছে এসো চা খেয়ে যাও ঝাল মুড়ি, পেঁয়াজ ভেজে দেবো সঙ্গে কাঁচালংকাও থাকবে। দুজনে চা খাব, মুড়ি খাব, আর গল্প করবো।’ আমি বললাম, ’না, আমি যাবো না । আমি আমার জানালায় বসে আকাশ দেখছি, বৃষ্টি দেখছি, আকাশের কান্না দেখছি, গাছেদের নুয়ে….

error: Content is protected !!