
সাধারণ মানুষ
আমি খুব সাধারণ মানুষ
এবং ভীত।
দুই’শ বছরের ‘সভ্যতার’ শোষণে
আর চব্বিশ বছরের ‘ধর্মের’ শাসনে
আমি খুব ভীত।
আমি খুব সাধারণ মানুষ
যার কাছে মেজর পদবি অনেক বড়
জেনারেলের চেয়ে,
যে কিনা ম্যাজিস্ট্রেটকে বড় ভাবে
ডিসির চাইতে।
আমি সেই সাধারণ মানুষ।
‘লাপাং’ নামের সৈনিক
যে কিনা দাঁড়িয়ে ছিল ঘন্টার পর ঘন্টা
আপনার নিরাপত্তার খাতিরে
তার কষ্টের জন্য আপনি দুঃখিত হন
আপনার মহানুভবতায় আমার চোখে জল আসে,
‘ফানি গাই’ বলে যখন আপনি ছাত্রদের
স্বপ্ন দেখান
আপনার দর্শনে আমি মুগ্ধ হই।
পত্রিকা বিক্রি আর বৃত্তি’র টাকায়
কষ্টে আপনার লেখাপড়া
আপনার অধ্যাবসায় আমাদের পথ দেখায়,
অবলীলায় আপনি ছুঁড়ে ফেলেন
উন্নত বিশ্বের বৃত্তি
আপনার ‘দেশ প্রেম’
হ্যাঁ আপনার নির্ভেজাল ‘দেশপ্রেম’
আমাকে অনুপ্রেরণা দেয়।
কিন্তু আমি খুব সাধারণ মানুষ
এবং ভীত।
আর তাই হিরোশিমার চেয়ে বিশগুণ শক্তিশালী
‘এ্যাটম’ যখন বিস্ফোরিত হয় পোখরানে
এবং তা আপনারই তত্ত্বাবধায়নে
তখন প্রতিবেশী হিসেবে আমি ভীত হয়ে পড়ি
‘অগ্নি’ সিরিজের মিসাইল গুলো যখন উৎক্ষেপিত হয়
আপনি হন ‘মিসাইল ম্যান’
আর আমার কড়ে আঙ্গুল ধরে পরম নির্ভরতায়
যখন আমার মেয়েটি আমার দিকে তাকায়
আপনার মিসাইলের কব্জায় থাকা
আমি আতঙ্কিত হয়ে পড়ি।
আমি আগেই বলেছি
আমি খুব সাধারণ মানুষ
এবং ভীত।
আমার কথায় কি ‘আপনি’ এবং ‘আপনারা’
রাগ করলেন!
কিন্তু আমি বিব্রত অথবা ক্ষমাপ্রার্থী নই।
‘নিউটনে’র তৃতীয় সুত্র না জানলেও
আমি আমার সন্তানের জন্য সব করতে পারি সব।
এ ব্যাপারে আপনি কি সতর্ক?
তবে সতর্ক থাকাই আপনার জন্য মঙ্গলজনক।
সময়
নিজের পকেটে হাত দিয়ে
দেশের পকেটে খোঁজ
‘সময়’ আজ থমকে গ্যাছে
বুঝি আমি হররোজ
বাতাস যদি থমকে যায়
ঝড় আসতে দেরি কি ভাই!
অপেক্ষা কিংবা প্রতীক্ষা
না ঘুমানো রাত গুলো জমা রাখতেই
শেষ হলো ‘মায়ান ক্যালেন্ডার’
অথচ ‘হারকিউলিসের’ চেয়ে
একটা কাজ বেশি করেছিলাম আমি।
‘সুপারম্যানের মতো তোমাকে ধরতেই
তুমি বললে ‘ইমাম মেহেদী’র কথা।
যাদুর দেশে চল
টরে টক্কা বল
যাদুর দেশে চল
গরুর মাথা
ব্যাঙের ছাতা
ন্যাড়া ঝাটা
কুলের কাটা
লাগবে নতুন বল
যাদুর দেশে চল
কালো জামা
লম্বা টুপি
আমের আঁটি
বাশের লাঠি
লাগবে থালা
রুপার বালা
মাথা মুড়ে
পান্তা খেয়ে
গায়ে করে বল
যাদুর দেশে চল
কাঁজল ফোটা
চন্দন বাটা
শশ্মান ঘাটে
একা একা
করতে হবে
কালী’র দেখা
চৌরাস্তায় গভীর রাতে
তাবিজগুলো পুততে হবে
বুকে নিয়ে বল
যাদুর দেশে চল।
কবি
সূর্য আবারো রাহুগ্রস্থ
ওদের সংজ্ঞায় আর চালনায়
সূর্যের আলো শুধুই
‘মাইক্রোসফট’ ‘লিভার ব্রার্দাস’ আর ‘লক্ষী মিত্তালদের’ দখলে।
আর তাই কবি সারারাত জেগে নক্ষত্রের আলো সেচন করেন।
অত:পর বিলিয়ে দেন
‘ইউনুসে’র সুত্রে লোক থেকে লোকান্তরে
কিন্তু বিনা সুদে!
যে স্বপ্ন দেখেছিলো ‘মার্কস’ ‘লেলিন’ ‘চে’ কিংবা ‘ক্যাস্ত্রো’।
উন্নয়ন ও প্রগতি
এক সময়ের প্রবল প্রতিপক্ষ
‘উন্নতির’ ভলভো বাসে ‘প্রগতি’
এখন হেলপার।
সুখের সহবাসে চলমান আধুনিকতায়
তারা শুধু হাসছে আর হাসছে
আমাদেরকে ডাকছে আর ডাকছে।
আর আমরা বরাবরের মতো
‘সুকান্তের ঝলসানো চাঁদের রুটিকে’
কাটছি আর কাটছি
ভাগ করছি আর করছি।