Author Picture

শ্বেতা শতাব্দী এষ-এর একগুচ্ছ কবিতা

শ্বেতা শতাব্দী এষ

ট্রমা

জ্বরের স্বভাবে নেমে আসে হাইপার স্পেস-
শহরের সবচেয়ে বিবশ বারান্দাটির কোণে
যেখান থেকে সামনে তাকালেই ফুটে ওঠে
মানুষের চলে যাওয়া…
এইখানে থেমে থাকে ট্রমা-
শ্বাসেদের কেটে যাওয়ার অনেক গোপনে…

 

নির্লিপ্ত

ভালোবাসা মরে যাবার মতো হাওয়া—
এ-গ্রীষ্মে বুকের ভেতর উত্তাপ নেই, চলো ফিরে যাই।
গলি থেকে বাড়ি বেশি দূরে নয়! শর্তবন্দি মন;
চলো ফিরে যাই, এ-হাওয়া মনের জন্য ক্ষতিকর।
আমাদের রক্তের নিথর প্রবাহ ধরে ফিরে যাওয়া ভালো—
মৃতদের আর্তনাদ মিশে যাক হাওয়ার হাসিতে…

 

কূট

অমোঘ শূন্যতার ভেতর
কোথায় হারিয়ে যাচ্ছে সাজানো প্রেম—
অর্থহীন অহঙ্কারে একটা কুকুরের চোখ
জ্বলজ্বল করে—
দূরের থেকে অন্ধ ফকিরের গান ভেসে এলে
হঠাৎ বিদীর্ণ হয়ে যায়
ভেবে রাখা সমস্ত দাবার কৌশল!

 

ত্রিস্তান

১.
শীতের সাময়িক বেশে তোমার জীবন যেন
প্লাস্টিক ফুলের বাগান
যেখানে প্রতিদিন সেল্ফিরা হেসে ওঠে খুব… তারপরও
কুয়াশা জানে দ্বিধার পরিনতি শেষে
বিচ্ছিন্নতা এক ‘নিজস্ব নদীর নাম!’

২.
রাত্রির দেয়ালে ঝুলে থাকে খঞ্জর
আয়না-বিহীন ঘর,
পাথরেরও মন থাকে জলের অতলে…
ভুলে যাই ‘ফেরা-পথ’
মুখোশে মুখোশে
ব্যক্তিগত অন্ধকারে আমরা পরস্পর!

৩.
প্রমান সাপেক্ষ অংকের সামনে ঝরে যাচ্ছে
অজস্র না-ফোটা ফুল—ঘোরগ্রস্ত সময়ে
ঢুকে যাই একটা শান্ত জলাশয়ে।
শহরে তখন বিদ্রূপ, অন্ধকার গিলে খাচ্ছে
আগলিয়ে রাখা মাস্তুল—

আরো পড়তে পারেন

গাজী গিয়াস উদ্দিনের একগুচ্ছ কবিতা

বীভৎস খেলা নগরে বাতাসে মথিত জনস্রোতের কোলাহলে শুনতে পেয়েছি সারিগান গঞ্জের হাটে আকাঙ্খার গভীরে মন্দ্রিত অভিন্ন প্রাণ নীরব দর্শক ছিলাম ব্যর্থতার করুণ গান ফেরার মহড়ায় বঞ্চিত কুঁড়েঘরে সরাইখানার- শুঁড়িখানার মাছিরাও নেশায় বুদ্বুদ প্রকম্পিত কান্নার পর একদিন হাসির তিলকরেখা বিচ্ছুরিত শৈশবের ক্ষুধার্ত চিৎকার ক্রর হাসি চেপে মৃত্যু পরোয়ানা ঝুলে ভাগ্য প্রহসনে যুদ্ধের ব্যগ্র দামামা থেমে গেলো-….

তোফায়েল তফাজ্জলের একগুচ্ছ কবিতা

উপায় অবলম্বন কাঁটা থেকে,  সুচালো কাঁকর থেকে পা রাখিও দূরে, জায়গা না পাক চলন-বাঁকা চেতনায় উড়ে এসে বসতে জুড়ে; এসবে খরগোশ কানে থাকবে রাতে, পড়ন্ত বেলায়, দ্বিপ্রহরে, পূর্বাহ্নে বা কাক ডাকা ভোরে। দুর্গন্ধ ছড়ানো  মুখ ও পায়ের তৎপরতা থেকে গ্রীষ্ম থেকে সমস্ত ঋতুতে একে একে নেবে মুখটা ফিরিয়ে তিলার্ধকালও না জিরিয়ে। কেননা, এদের চরিত্রের শাখা-প্রশাখায়….

আহমেদ ফরিদের একগুচ্ছ কবিতা

তোমার সাথে দেখা হওয়া জরুরী নয় সেদিন তুমি আমাকের ডেকে বললে, ”আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টি ঝরছে এসো চা খেয়ে যাও ঝাল মুড়ি, পেঁয়াজ ভেজে দেবো সঙ্গে কাঁচালংকাও থাকবে। দুজনে চা খাব, মুড়ি খাব, আর গল্প করবো।’ আমি বললাম, ’না, আমি যাবো না । আমি আমার জানালায় বসে আকাশ দেখছি, বৃষ্টি দেখছি, আকাশের কান্না দেখছি, গাছেদের নুয়ে….

error: Content is protected !!