
আলতু ব্যথা
কোন এক শুভ্র সময় আমাদেরও ছিল
পাশাপাশি-মুখোমুখি বসে থাকা শুধু
হিসেব-নিকেশ, দাবি-দাওয়া, চাওয়া-পাওয়া
এসবের বালাই ছিলো না কোন
শুধু কানায় কানায় পূর্ণ ছিলো ভালোবাসা।
চোখের তারায় ডুবে গিয়ে অন্বেষণ শুধু
শত জনমের সুখ।
ওইসব স্বপ্নমাখা দিন
কোন দরজা দিয়ে পালিয়ে গেল কোথায়
তারই জন্য মনের মধ্যে কেমন আলতু ব্যথা।
তৃপ্তি
ভরসার হাত একটিই যথেষ্ট
যার হাতে হাত রেখে
স্বপ্ন বুনন অগণন
যাকে পেলে
আন্ধারেও চাঁদ দেখা যায়।
অতৃপ্ত চোখ
চোখ রাখে বহু চোখে
তৃষ্ণার জল খুঁজে ফেরে শুধু।
আমার ভুবন আমার মহল
আমার সুখ-দুখ,
আমার স্বপ্ন আমার মতোন।
আমি ভালো আছি
আমার সবটুকু নিয়ে।
প্রতিবিম্ব
ধু ধু কুয়াশার পথ
অস্পষ্ট গন্তব্য
তবুও তো পথ চলি তুমি আমি
গাঁজার নেশার ঘোরের মতো
তন্দ্রালো হলে
ভালো লাগে সব
জানি আমি দিনশেষে একা
তবুও তো ভরসার হাত খুঁজি কোনো
দুর্বোধ্য আয়নায়
প্রতিচ্ছবি দেখি আমারই,
ভীষণ অচেনা
নদীর ওপারের বালুচরের মতো।
মরীচিকা ফুরিয়ে গেলে
পথচলা থেমে যাবে আমারও
কষ্টকে ঘৃণা করা বৃথাই
দূর্বা ডগায় যে বিশ্বকে দেখি
আমারই হৃদয়ের প্রতিবিম্ব তা।
যদি দলছুট হই বুঝে নিও
ফুরিয়ে গেছে ভালোবাসা আমার
মৃত্যুর কাছাকাছি বসে
জীবনকে দেখেছি আমি
দুঃখরা গভীর শিকল হয়ে
লেগে আছে পায়ে।
এখানে নদীর চরের পাড়ে
সূর্যাস্তের দিকে তাকিয়ে
আমারই জীবনের অস্তায়ন দেখি।
তবুও তো দুচোখ মেলে
দেখি চেয়ে চেয়ে
আমার ভালোবাসার মতো সুন্দর তুমি।
ধর্ষিত সময়
পুরনো কাপড় থেকে গন্ধ ভেসে আসে
ঘাতক প্রবৃত্তিগুলো
পুরাতন চিহ্ন গায়ে মেখে মূর্তমান হয়
রক্তের চিহ্নগুলো বহুদূর অতীতের সাথে
কোনো এক সংযোগ এঁকে দেয়
যখন চুপসানো রাত্রি
কুয়াশার পেটের ভেতর ঢুকে পড়ে সন্তর্পণে
বরফের পাথরের মতো চোখে
তখন আমার বড্ড ভীষণ একা লাগে।
ধর্ষিত গণতন্ত্রের যুবতীর পোয়াতি শরীর
নির্জন পথের মতো কেমন ফ্যাকাসে পড়ে রয়
সোল্লাস পাশবিকতার ঢেউ তবু
কানে এসে লাগে
অধিকার এনে দেবার গল্পের মতো।
তুষের অনল
ধীরে ধীরে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিনকে দিন
মুখে তুলে দিব অন্ন
কেমন করে
যতন করে রাখা সন্তানদের মুখে।
ঘরদোর চারিদিকে হায়েনার ছোবল
যেখানে রয়েছে তোমারই মৌনতা।
মাঝে মাঝে মনে হয় এই বুঝি চিনেছি
এই বুঝি চিনি না তোমায়
কী এমন আড়ালে রাখো
খুঁজে ফিরি বারবার।
এই বুঝি মনে হয় তুমি নও আমার
সারাবেলা সারাক্ষণ
বেলা অবেলায় সেই হতাশায়
শূন্য হই আমি বার বার।