প্রেম
ডলারের কথা রাখো,
সোজাসুজি ‘ভালোবাসি’ বলে দিতে পারো…
এ দেশের নারী এতটাই অপার উদার
সামান্য পুতির মালা পেলে
খুলে দিতে রাজি তার মন ও বনের দুয়ার!
যেখানে বাতাস থেমে যায় আঙুলের ফাঁকে
সেখানেই প্রেম এসে চিৎ হয়ে থাকে।
বিপরীত সূত্র
বাবা বলেছিলেন, ‘মানুষ হও’
কারণ, আমি তখন শিশুটি ছিলাম…
চল্লিশ বছর সাধনার পর
পেছনে তাকিয়ে দেখি, তখনই মানুষ ছিলাম।
এখন আমি পেছনে ফিরে যাচ্ছি…
বাবার মুখ রক্ষার্থে, তবুও যদি মানুষ হওয়া যায়!
নির্লিপ্ততা
আমাদের ঘরে অনেক ইঁদুর ছিল
মানে, পুরো ঘরটাই ইঁদুরের জমিদারি হয়ে উঠেছিল।
ইঁদুর ধরার জন্য আমরা বিড়াল ভাড়া করি…
ভাড়াটে বিড়াল শুধু ফোঁসফাঁস করে
ইঁদুর ধরে না!
ইদানীং ইঁদুরগুলো প্রায়শই এখানে ওখানে উঁকি দেয়…
বিড়ালের নির্লিপ্ততা দেখে ভেংচি কাটে
সহসা গায়েব হয়ে যায়!
বিড়াল আগে, ইঁদুর পিছে নানা কথা বলে
আমাদের ঘরে এখন ইঁদুর বিড়াল খেলা চলে।
আমরা গন্ধম খাই
কথা ছিল…
শহিদের রক্তের বুদ্বুদ ফুঁড়ে অঙ্কুরিত হবে একটা বাদামের গাছ
চির সবুজ এ বাদামের ছায়াতলে আমি তুমি ও সে
আমরা বেড়ে উঠবো নিশ্চিন্তে নির্বিঘ্নে…
অথচ মধ্য দুপুরে
শহিদের রক্তের ওপর হেঁটে গেলো কিছু খিধে
এবং কতিপয় লোভ
কেউ কিচ্ছুটি বলল না!
রাজপথে শহিদের দলাদলা রক্তের যে স্তুপ জমে ছিল
তাও মোটামুটি চেটে নিচ্ছে অপবিত্র লোলুপ জিহবা
দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে চিলেকোঠার সেপাই…
তবে কি আমরা আবারও সে নিষিদ্ধ গন্ধম গাছের
কাছে যাব!
আবারও কি নিক্ষিপ্ত হবো অভিশপ্ত কোনো জনপদে!
দুর্ভাগ্য আমাকে বারবার গন্ধমের কাছে নিয়ে যায়
বারবার ভুল করি
বারবার আমরা গন্ধম খাই…
পাথরের চাঁদ
আমি একবার
ঈশ্বরের কাছে পূর্ণিমা চেয়েছিলাম।
ঈশ্বর আমাকে নিরাশ করেনি
পুরো চাঁদটাই তুলে দিয়েছিলেন আমার হাতে
ওটা চাঁদ ছিল বটে, তাতে পূর্ণিমা ছিল না
এখন আমি পূর্ণিমা দেখতে যাই না…
এখন আমি পাথর কোয়ারিতে নিয়ম করে পাথর টানি।
ফাগুনের আগুন
শীতের শেষে ফাগুন আসবার কথা ছিল
আমি দক্ষিণের জানলার সবটুকু খুলে রেখেছিলাম
কেউ আসবে বলে…
এসেও ছিল ঠিকই
ফাগুন আসেনি…
ফাগুনের মতো দেখতে আগুন এসেছিল।
এখন আমি ফাগুনে পুড়ি, আগুনেও পুড়ি।
এ তল্লাটে আমার কোন অধিকার নেই
কেউ চাচ্ছে এখানে মন্দির হবে
শুধুই মন্দির
ভগবানের এ তল্লাটে কেবলই নাম-কীর্তন চলবে
অন্যকিছু নয়;
কেউ চাচ্ছে এখানে মসজিদ হোক
শুধুই মসজিদ
আল্লাহর এ জমিনে কেবলই ইবাদত হবে
অন্যকিছু নয়;
কেউ বলছে, কিসের মসজিদ কিসের মন্দির
এখানে শুধু দোকান হবে… শপিংমল
অন্যকিছু নয়;
আমিও এ তল্লাটের বৈধ ওয়ারিশ
আমারও যে মাথাগোঁজার একটা ঠাঁই দরকার!
মাননীয় প্রভু
সবটুকুই যদি তিনারা দখল করে,
তবে, আমার কী হবে!
এ তল্লাটে আমার কি কোনো অধিকার নেই!



