
মেট্রোপলিশ ছবির পরিচালক ফ্রিৎস ল্যাঙকে জার্মান চলচ্চিত্রকার ও তার সব ছবিকে জার্মানির প্রথমার্ধের চলচ্চিত্রের অর্ন্তভুক্ত হিসাবে ধরলেও তিনি জন্ম নিয়েছিলেন অষ্ট্রিয়ায়। অস্থিরতাই বুঝি শিল্পীর নিয়তি ও স্বভাব। কারণ সব সময় একজন শিল্পীকে সৃজনবেদনা তাড়িয়ে বেড়ায়। নতুন কিছু করবার যন্ত্রণায় শিল্পী দগ্ধ হতে থাকে অহরহ। তেমনি অনেক ঘাটের জল খেয়েই তিনি থিতু হয়েছিলেন জার্মানিতে। মেট্রোপলিশ সম্পর্কে ফ্রিৎস ল্যাঙ বলেন ‘জাহাজের ডেক থেকে আলো ঝলমল রাতের নিউইয়র্ক শহরকে দেখে ‘মেট্রোপলিশ’ এর পরিকল্পনা মাথায় আসে’। ১৯২৬ সালে তিনি এমন একটা ছবি করলেন যে ছবির পটভুমি হচ্ছে ২০০০ সালের এমন এক মহানগরী, যার দুইটি অংশ। একটা মাটির তলায় অন্যটি উপরে। মাটির উপরের যে অংশ তাতে বাস করে বিত্তবানেরা, উচ্চ পদস্থ আমলাকুল, বিলাস আর ভোগে উন্মাতাল যুব সম্প্রদায়। আর মাটির নীচের যে অংশ সেখানে দিনের আলো পৌঁছায় না, টিমটিমে বিদ্যুতের আলো জ্বেলে কর্মরত শ্রমিক শ্রেণী। তাদের অন্য কোনো জগৎ নাই। দীর্ঘদিনের বন্দিত্ব ও শোষণে তারা দাসে পরিণত হয়েছে। উৎপাদনই তাদের জীবন। যে সব পণ্য তারা উৎপাদন করে সে সব ব্যবহার করবার অধিকারও তাদের নাই। শ্রমিকদের মধ্যে দিনের পর দিন অসন্তোষ বাড়তে থাকে। একসময় দেখা দেয় বিদ্রোহ। ধীরে ধীরে বিদ্রোহ দানা বাঁধে মারিয়া নামের এক মহিলা শ্রমিকের নেতৃত্বে। তাদের সাথে যুক্ত হয় শহরের এক বিত্তবান পরিবারের শ্রমিক দরদি ছেলে তরুণ ফ্রেডেরার। মারিয়া ও তরুণ ফ্রেডেরারের হৃদয় বদলের মধ্যে দিয়ে এটি একটি মিলনান্তক কাহিনির রূপ পরিগ্রহণ করে। ফলে মালিক-শ্রমিক সমঝোতা। তাদের ভাষায় এই সমঝোতা হৃদয়ের প্রভাবে বুদ্ধি ও শ্রমের সমঝোতা।
ছবিটি মুক্তি পাবার পর ভয়াবহ প্রতিবাদের ঝড় বয়ে যায় গোটা ইউরোপ মুলুকে। এখনোব্দি সেই তর্ক শেষ হয় নাই। ডাচ নির্মাতা ও সমালোচক জিগফ্রীড ক্রাকাউয়ার বলেন ‘ ছবির বক্তব্যে ধনতন্ত্র বিরোধীতা ও শ্রমিক শ্রেণীর জেগে উঠবার গল্প ফাদা হলেও ছবিটি বস্তুত অবৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি ও প্রতিক্রিয়াশীল জীবন দর্শনই প্রচার করেছে’। অবশ্য তিনি সাথে সাথে এটাও উল্লেখ করেছেন ছবির এই ত্রুটির জন্য ল্যাঙ এর চেয়ে অনেক বেশি দায়ি তার তৎকালিন স্ত্রী থিয়া ফন হারবু। যিনি আবার নাৎসি ছিলেন। অবশ্য পরে তাদের সংসার টিকে নাই।
এই বিতর্কে আরো অংশ নিয়েছিলেন বুনুয়েল, আর্থার কোনান ডয়েল, এইচ জি ওয়েলস প্রমূখ সাহিত্যিক ও চলচ্চিত্রকার। লুই বুনুয়েল বলেন ‘প্রতিটি ছবিরই দুইটা অংশ। একটা গল্প অন্যটা টেকনিক ও টেকনোলজি। গল্পের অংশটুকু খুবই দুর্বল আর আঙ্গিকের অংশটা অসাধারণ’।
এইচ জি ওয়েলস মনে করেন এটি একটি অতি নিম্নমানের চলচ্চিত্র। আর আর্থার কোনান ডয়েল বলেন এটি একটি সাড়া জাগানোর মত ছবিই বটে। গুনিরা যাহাই বলুক। ছবিটার যে দুর্দান্ত গতি সেটা শ্রমিক শ্রেণির যে কোন বিদ্রোহের ক্রমাগতি, আচরণ বা ধারাবাহিক প্রকাশভঙ্গির ভয়াবহ জীবন্ত চিত্রায়ন। আগের ও পরের শ্রমিক আন্দোলনগুলোকে মনে করিয়ে দেয়। আমাদের দেশে সম্প্রতি বস্ত্রশ্রমিকদের মধ্যেও বিদ্রোহ দেখা দিয়েছে। তাদের বিদ্রোহের যে রূপ তার সাথে ছবিটা অদৃশ্য যোগসূত্রের কারণে এক সাথে দেখার প্রচেষ্টা।
আইন দূরে থাকুক সরকার কারখানা মালিকদের মাথায় তুলে নাচছে। হাতিরঝিলে অবৈধ ভবন নির্মাণ করে তারা বিজিএমইএর অফিস থেকে বস্ত্রকারখানা ব্যবসার আধিপত্য করবার সুযোগ করে দিয়েছে। অথচ বস্ত্রব্যবসার মুল চালিকা শক্তি শ্রমিকরা তাদের মজুরি বাড়াতে বললে তাদের রাষ্ট্রের পেটোয়া বাহিনি দিয়ে মেরে জেলে দেয়া হচ্ছে। এই নৈরাষ্ট কখনোই সমতার বিধান করবে না কারন তারাইতো আবার রাষ্ট্র চালাবার তেল দেয়।
বাংলাদেশে সম্প্রতি জনসংখ্যা বিষ্ফোরণ ঘটেছে। ফলে জনশক্তির মূল্য সর্বনিম্নে পর্যবসিত হয়েছে। মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণির একটা বিশাল অংশ দারিদ্র সীমার নীচে চলে যাচ্ছে ক্রমাগত। তাদের দাঁড়ানোর জায়গা ক্রমাগত অস্থির। বাজার মূল্যের সাথে পা মিলিয়ে কখনোই তাদের চলা সম্ভব না। কারণ বাজার নিয়ন্ত্রণ করে ধনিক শ্রেণি। এই জনসংখ্যা বিষ্ফোরণ এত ভয়াবহ যে যা সব কিছুকেই ভাসিয়ে নিয়ে যাবার ক্ষমতা রাখে। ফলে বলা যায় সকল ক্ষেত্রেই একটা বিশৃংখলা দেখা দিয়েছে। আর সব ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পাতিবুর্জোয়া সরকারগুলো চরম ব্যর্থতার পরিচয়তো দিয়েছেই তদোপরি এই বিষ্ফোরিত জনসংখ্যাকে তারা গণ্য করছে গনিমতের মাল হিসাবে। জনজীবনের সুস্থ প্রবাহমানতা থেকে তারা মুখ ফিরিয়েছে এখন এই জনসাধারণকে গণিমতের মাল হিসাবে ধরে নিয়ে এদের দিয়ে কতরকমভাবে কাজ করিয়ে বা শোষণ বা শোধন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কত অর্থবিত্ত করা যায় সেটাই তাদের অন্যতম উদ্দেশ্য হয়ে দেখা দিয়েছে। এই বিশাল জনসংখ্যার কোনো নিয়ন্ত্রণ নাই, এদের কোন শিক্ষা নাই। ফলে এই বিষ্ফোরিত জনসংখ্যার বেশিরভাগই জনশক্তি হওয়ার বদলে প্রতিবন্ধী হয়ে আছে। এতে তাদের শ্রমের বাজারে যে নিম্নমুখিতা তারই সুযোগ নিয়েছে দেশি বিদেশি বস্ত্রকারখানার মালিক গোষ্ঠী। নিরক্ষর হলেও প্রাণী হিসাবে মনুষ্য চিন্তা করতে পারে। উদ্ভিদের সাথে মনুষ্যের এইখানেই তফাৎ। একটা গাছে আপনি সারাদিন ঝুলে থাকলেও গাছটা বলতে পারবেনা সরে দাঁড়া, হারামজাদা বড্ড ব্যাথা পাচ্ছি। কিন্তু একটা নিরক্ষর মনুষ্যকে দিয়েও যদি আপনি তার সহ্য ক্ষমতার বাইরে কোন কাজ করান তাহলে সে প্রতিবাদ করে উঠবে। এ জন্য তার কার্ল মার্কস পড়ার দরকার পড়বেনা। ধনীদের এতরকম জারিজুরি না বুঝলেও। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত হাড়ভাঙ্গা খাটুনি খেটে মাস শেষে বাসা ভাড়া দিতে না পারা আর খাবার খরচ দিতে না পারার যে জঙ্গমতা তা থেকে তারা রেহাই পায় না। এই চিন্তা ক্রমে বাড়বেই কারন নিজের অজান্তেই মনুষ্য জাতি সারভাইবাল।
বাংলাদেশি বাজারে একটা অদ্ভুত নিয়ম আছে। মাস শেষে যারা লাখ টাকা বেতন গুণে তাদের কাজকর্ম বলতে তেমন কিছু নাই। তারা অফিসে আসে অফিসের গাড়ীতে। দুপুরে বাসায় গিয়ে খেয়ে ঘুমিয়ে ফের বিকালে অফিসে আসে আর নিম্নতম কর্মচারিদের উপর হাকডাক করে সময় কাটায়। অন্যদিকে যার বেতন যত কম তার কাজ তত বেশি। অদ্ভুত বৈপরিত্যই বলতে হয়। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে এই বিশাল বস্ত্রশ্রমিকগোষ্ঠী যারা সকাল থেকে শুরু করে ৭/৮ টা বা গভীর রাত অবদি কাজ করে তাদের বেতন এক থেকে তিন হাজার টাকার বেশি না। অথচ বর্তমান বাজার ব্যবস্থায় এই টাকা দিয়ে দিনে একবেলা খাওয়াও সম্ভব না বাসা ভাড়া দূরের কথা। এই সস্তা শ্রমিকরাই বস্ত্রকারখানা ব্যবসার অভাবিত দ্রুত বিকাশের মুল উৎস। বস্ত্রকারখানা মালিকরা যে দ্রুত বিপুল ধনরাশির মালিক বনেছেন এটা প্রধানত অস্বাভাবিক কম মজুরিতে কাজ করা আত্মত্যাগী শ্রমিকদের রক্তে ও ঘামে। অথচ কর খেলাপি পুঁজিবাজারের ফড়িয়া দালালরা সি আই পির মেডেল পরে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
যাইহোক রাষ্ট্রনীতি অনুসারে নাগরিকদের আয় কম হলে আপনাকে নিত্যপ্রয়োজীয় ভোগ্যপণ্য ক্রয় ক্ষমতার আওতায় রাখতে হবে। আবার ভোগ্যপণ্যর দাম বাড়ালে নাগরিকদের আয়ও বাড়াতে হবে যাতে তারা তা ক্রয় করতে পারে বা জীবনধারন করতে পারে। প্রথমত এদেশে কোন নির্দিষ্ট শ্রমনীতি নাই আর যাও আছে তাও কেউ মানে না। সামন্তীয় মানষিকতার বস্ত্রকারখানার মালিকেরা প্রায় একতরফাভাবে অসহায়ত্বের ভেতর এই বিশাল শ্রমিকশ্রেণিকে আকণ্ঠ নিমজ্জিত রেখে কোন রকম ন্যায়নীতির তোয়াক্কা না করেই কোটি কোটি টাকা আয় করছে। এই শোষন ও বিদ্রোহ বিচ্ছিন্ন কোনো ঘঠনা নয়, সাম্রাজ্যবাদি পুজি এর সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। একদিকে বস্ত্রকারখানার মেশিন পত্র থেকে শুরু করে সুতা, কাপড়, বোতাম পর্যন্ত বিদেশি বিনিয়োগকারিদের কাছ থেকে কিনতে হয় আবার সব চাইতে সস্তায় তাদের কাছে সেই তৈরি পোশাক বিক্রি করতে হয়। ওয়ালমার্টয়ের মত নামকরা কোম্পানিগুলো এদেশ থেকে ৩ ডলারে শার্ট কিনে ইউরোপ আমেরিকার বাজারে ১০ ডলারে বিক্রি করে। এদেশ এই শ্রেণিটার ক্ষেতখামার। আর এই বিশাল শ্রমিক শ্রেণি খামারের গবাদি পশুর দল। এই টাকা তারা খরচ করে ইউরোপে বা উন্নত দেশে বিলাসে বা তাদের ক্ষমতায়নের কাজে। এই শ্রমিক শ্রেণির পিঠের ওপর ভিত্তি করে তারা অর্থের পাহাড় গড়ে বিলাসী জীবন যাপন করে নিজেদের সন্তান সন্তুতিকে বিদেশে পড়ালেখা করিয়ে একটা অভাবমুক্ত জীবন বাসনা করছে। ধনী হবার এইতো প্রক্রিয়া।
ইতিহাস বলে ধনতন্ত্রিরা কখনো মানবিক হতে পারেনা। পুঁজির ধর্মই অমানবিক। পুঁজি ছদ্মবেশি গুপ্তঘাতকের মত ক্ষণে ক্ষণে সে রূপ বদলায়। মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিনি হামলার পেচনে আমেরিকার মাফিয়া আর তেলকোম্পানিগুলোর ইন্ধন এখন একটা শিশুও জানে। কিন্তু পুঁজি তান্ত্রিক রাষ্ট্রে আলাদা সন্ত্রাসি বাহিনি লাগেনা রাষ্ট্রই সেখানে সন্ত্রাসি আর তাইতো জুনিয়র বুশরা এই সন্ত্রাসি হামলাকে নাম দেয় ধর্মযুদ্ধ বলে।
এই শ্রমিক শোষকের দলইতো আবার দেশের খাদ্যব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে এরাইতো আবার বাসাবাড়ির মালিক। সুতরাং আমরা এই সিদ্ধান্তে আসতে পারি যে শ্রমিক আর মালিকে সম্পর্ক শোষক আর শোষিতের সম্পর্ক। ধর্ষক আর ধর্ষিতের সম্পর্ক। কিন্তু এই অমানবিক ব্যবস্থার মধ্যস্থতা করবার কথা রাষ্ট্রের আইনের মাধ্যমে। আইন দূরে থাকুক সরকার কারখানা মালিকদের মাথায় তুলে নাচছে। হাতিরঝিলে অবৈধ ভবন নির্মাণ করে তারা বিজিএমইএর অফিস থেকে বস্ত্রকারখানা ব্যবসার আধিপত্য করবার সুযোগ করে দিয়েছে। অথচ বস্ত্রব্যবসার মুল চালিকা শক্তি শ্রমিকরা তাদের মজুরি বাড়াতে বললে তাদের রাষ্ট্রের পেটোয়া বাহিনি দিয়ে মেরে জেলে দেয়া হচ্ছে। এই নৈরাষ্ট কখনোই সমতার বিধান করবে না কারন তারাইতো আবার রাষ্ট্র চালাবার তেল দেয়। ফলে শ্রমিকদের আত্মহত্যা করতে হচ্ছে অথবা তাদের হত্যা করা হচ্ছে সেই হত্যাকে নীরবে সমর্থন করতে হবে তাদেরকেই চুপ করে থেকে অথবা এর বদলে আত্মমৃত্যু আর হত্যাকারিদের বিরুদ্ধে তুমুল প্রতিবাদ গড়ে তোলাই তাদের নিয়তি। এই বৈষম্যর পাহাড় ভেঙ্গে একাকার করে তোলা। ফ্রিৎস লাঙ এর মেট্রোপলিশে ধনী সম্প্রদায়ের লোক তাদের বিদ্রোহ সমর্থন করলে বাস্তবে এটা অবৈজ্ঞানিক। কারন ধনিক শ্রেণি কখনো তাদের শ্রেণি চেতনা বা সামাজিক স্ট্যাটাস বিসর্জন দিয়ে হঠাৎ করে দার্শনিক হয়ে উঠবে না। ফলে মেট্রোপলিশ ছবিতে মিলনান্তক সমাপনি দেখালেও এই বিষয়টা পুঁজির বিকাশের শুরু থেকেই প্রায় অমিমাংসত যে ধনিকশ্রেণি কখনোই তাদের স্বার্থ বিসর্জন দেয় না।
এই নিষ্পেষিত শ্রমিক শ্রেণিটার পাশে রাষ্ট্র নাই। তাদের কথা বলার মত কোন লোক নাই। তারা কিছু বললেও তা শোনার মত কোন মানুষ নাই। তারা যখন প্রতিরোধের আশায় রাস্তায় এসে দাঁড়ায় তখন রাষ্ট্রের বা ভদ্র সমাজের রাস্তায় চলাচল করতে সমস্যা হয়। আর তাই রাষ্ট্র দাঙ্গা পুলিশ নামায় রাস্তায়। তাদের প্রতিরোধ দুমড়ে মুচড়ে দেয়। তাদের দিকে টিয়ার গ্যাস ছুড়ে রাবার বুলেট ছুড়ে তাতে ও কাজ না হলে তাদের হত্যা ও দলে দলে জেলে ঢুকানোর মাধ্যমে তাদের প্রতিবাদের ভাষাকে স্তব্দ করে দেয়া হয়। এই কাহিনি একেবারেই গতবাধা, পুরানা।
মেট্রোপলিশ ছবিটাতে ধনিক শ্রেণিকে যেভাবে মানবিক করে তোলা হয়েছে তা দেখে হিটলার নাকি খুব মজা পেয়েছিলেন। তিনি ছবিটার গুণগ্রাহি ছিলেন। সমতার স্বাদ পেয়েছিলেন তাতে। কিন্তু ইতিহাস বলে ধনতন্ত্রিরা কখনো মানবিক হতে পারেনা। পুঁজির ধর্মই অমানবিক। পুঁজি ছদ্মবেশি গুপ্তঘাতকের মত ক্ষণে ক্ষণে সে রূপ বদলায়। মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিনি হামলার পেচনে আমেরিকার মাফিয়া আর তেলকোম্পানিগুলোর ইন্ধন এখন একটা শিশুও জানে। কিন্তু পুঁজি তান্ত্রিক রাষ্ট্রে আলাদা সন্ত্রাসি বাহিনি লাগেনা রাষ্ট্রই সেখানে সন্ত্রাসি আর তাইতো জুনিয়র বুশরা এই সন্ত্রাসি হামলাকে নাম দেয় ধর্মযুদ্ধ বলে। অর্থাৎ পুঁজিকে বাড়ানোর জন্য তারা যতরকম হাছামিছা আছে সবগুলোকেই জায়েজ করবে। আবার পুঁজি ছাড়া ক্ষমতা, সাম্রাজ্য, লাভ, যুদ্ধ, বাণিজ্য ইত্যাকার শব্দগুলোরও কোন অর্থ নাই। তাহলে কে নেবে এই ধনতন্ত্রিদের মানবিক অথবা নিয়ন্ত্রন করবার দায়িত্ব। কে নেবে এই বঞ্চিত মানবেতর জীবন যাপন করা গবাদি পশুর ঝাকের বেচে থাকবার নিরাপত্তা। হাসিনা সরকার তিন হাজার টাকা ন্যুনতম মজুরি ঘোষনা করে নিজেকে সাম্রাজ্যবাদের দোসর ও স্বদেশের মানুষের জীবনযাত্রা সম্পর্কে অজ্ঞতার পরিচয় দিয়েছে। তার সরকার নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য কমাতে পারেনা, বাসা ভাড়া কমাতে পারেনা, বিদ্যুৎ বিল কমাতে পারেনা, গাড়ীভাড়া কমাতে পারেনা, ডাক্তারের ফি ঔষধের দাম কমাতে পারেনা। দেশের ৪০ লক্ষ বস্ত্রশ্রমিককে তিনহাজার টাকা বেতনে তিনি আত্মহত্যার পথ দেখাচ্ছেন। তাদের সারাদিন পারিশ্রমিক ধরতে গেলে ৫ হাজার টাকা মজুরিও অমানবিক। তবুও এই তাদের দাবি। সরকারকে বুঝতে হবে এই শ্রমিকরাই বস্ত্রব্যবসার মুল শক্তি আর মালিকরা হচ্চে মধ্যসত্বভোগি। সরকারের উচিত এই লাখ লাখ মানবেতর জীবন যাপন করা শ্রমিকদের স্বার্থ দেখা। পাঁচ পুরুষের নিশ্চিত ভবিষ্যৎ করা বিদেশে বাড়ী গাড়ী করা শ্রম আইনে অপরাধি কারখানা মালিকদের নয়।