Author Picture

মফিজুল ইসলাম মান্টুর একগুচ্ছ কবিতা

মফিজুল ইসলাম মান্টু

শোকের অসমাপ্ত গল্প
.
গল্পটায় তো সোনালী সকালের কথা লেখা হয়নি,
নেই উজ্জ্বল আলোর কোন আলেখ্যগাঁথা,
গল্পটায় আনন্দের বদল বেদনার ক্ষত বয়ে যাচ্ছে,
রাত্রির দুঃস্বপ্নগুলো যেনো মিথ্যেই হয়,
যেনো স্মরণের পাতায় মুছে যায় যত মিথ্যে বেসাতি,

সদ্যজাত ভোরের জানালায় তাকিয়ে প্রতিদিন,
কোন চিঠির বারতা কি আসছে আজ?

কি কথা থাকে তাহলে-
শোকের গল্পটা
অসমাপ্তই রেখে যাচ্ছি, এখন এ প্রান্তেই…

 

গান-ঘরে জমে আছে বারুদ
.
বেহালা’র গান-ঘরে জমে আছে এতো বারুদ,
বারুদের ঘরে জমে আছে এতো এতো ক্রোধ।

ক্রোধের আগুনে পুড়ে অঙ্গার প্রার্থনা-মন্দির
নতজানু মানুষ ঘুমোতে পারেনি গতকাল-পরশু রাত।

কাহিনি-কাব্য ইথারে ঠাঁই পায়নি দুঃসময়-প্রপাত
নিপতিত মানুষের পরাজয় গ্লানি অভিসম্পাত।

ব্যর্থতার পদাবলী সাজিয়ে পথ হাঁটে কষ্টভূক স্বজন
বিষাক্ত নিঃশ্বাসে পথে-পথে মরণঘাতি মিছিল

নীল বেদনায় জর্জরিত এদিন, নাকি আগামীকাল-

অন্ধকারে অপেক্ষার মশাল হাতে-
আলো জাগানিয়া স্বপ্ন-স্বজন কেউ আসছে কি?

 

পাগল বলে আছি বেশ
.
ছাগল ছাগল ডাকে আয়
ছাগল গেছে ঐ পাড়ায়
“আয়রে ছাগল ঘরে আয়
নুন মাখা ভাত কাকে খায়”

আবার কেনো ক্ষিধে পায়
সবাই কেনো দুঃখ বায়

ছাগল পাগল ভরা দেশ
নামটা তার লাগছে বেশ
কেউবা ডাকে ছাগল-দেশ
পাগল বলে আছিই বেশ

 

মল্লার বিহীন বরষায়
.
মল্লারের সুরহীন চরাচরে
আষাঢ় শ্রাবণ নিরুদ্দেশ
রিমঝিম বৃষ্টিমেঘ
ফিরে গেছে দূর বহুদূর তল্লাটে
যুদ্ধ-নিমগ্ন মানবের বিরহ দৃষ্টিতে
মানুষের মৃত্যু মিছিল…

পন্য-সম্ভারে মুখোশপরা অচিন সময়
বিক্রি হচ্ছে- ভুবনডাঙা’র বিশ্ববিদ্যালয়,
নগরের খেলার মাঠ, বিজ্ঞানাগারের আবিষ্কার।

কবিতায় লেখা হিংসা-দ্বেষ-রুক্ষতা,
মৃত্যুশোকের মতো প্রতিদিন পড়ি ভাজপত্র-বিজ্ঞাপন
অপদার্থ পরজীবী আগাছার নৈবেদ্য-
সুগন্ধি পুষ্পতো নেই!
বর্ষাহীন গান নিরস নিরুত্তাপ…

একদিন একদিন তো প্রতিক্ষার সুর-
ভেসে আসবেই,
আসবেই মানুষের পূত-পবিত্র আঙিনায়

আরো পড়তে পারেন

বেওয়ারিশ প্রেমের কবিতা

১. জীবনকে বিজ্ঞাপনের মতো সেঁটে দিয়ে দেখেছি, আমাকে গ্রহণ করেনা কেউ। আমাকে ভালোবাসে না ঘুমগন্ধওয়ালা সকাল— আমাকে ভালোবাসে না বাজারের জনবহুল রোদ, আমাকে ভালোবাসে না কেউ, ভিক্ষুক, শ্রমিক, চাষী আমাকে ভালোবাসে না, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, ম্যাজিস্ট্রেট আমাকে ভালোবাসে না, শোষক কিংবা শোষিত, শাসক ও প্রজা কেউই ভালোবাসে না, আমাকে ভালোবাসে না তরুণ-তরুণী-বৃদ্ধ বা যুবা, পার্থিব কোনো….

আজাদুর রহমান-এর একগুচ্ছ কবিতা

সহজাত মানুষ তোমাকে অবহেলা করবে যে কোন দিন যে কোন সন্ধ্যায় তুমি কল্পনাও করতে পারবে না এমন ঘোরতর বর্ষার দূপুরে মানুষ তোমাকে অবহেলা করবে। পথের পাশে ওত পেতে থাকা শিকারির মত সন্তর্পনে উঠে আসা মানুষ পায়ে পা ঘষে তোমাকে অবহেলা করবে। কোথাও না কোথাও কোন এক বয়সে কোনও না কোনও ভাবে মানুষ তোমাকে অবহেলা করবে।….

হোসনে আরা শাপলা’র একগুচ্ছ কবিতা

আলতু ব্যথা কোন এক শুভ্র সময় আমাদেরও ছিল পাশাপাশি-মুখোমুখি বসে থাকা শুধু হিসেব-নিকেশ, দাবি-দাওয়া, চাওয়া-পাওয়া এসবের বালাই ছিলো না কোন শুধু কানায় কানায় পূর্ণ ছিলো ভালোবাসা। চোখের তারায় ডুবে গিয়ে অন্বেষণ শুধু শত জনমের সুখ। ওইসব স্বপ্নমাখা দিন কোন দরজা দিয়ে পালিয়ে গেল কোথায় তারই জন্য মনের মধ্যে কেমন আলতু ব্যথা।   তৃপ্তি ভরসার হাত….

error: Content is protected !!