
নতুন কিছু হবার নেই
.
জন্মটা একঘেঁয়ে হয়ে গেছে;
মৃত্যুটা আরো বেশি সয়ে গেছে।
বেতন থেকে বেতনের দিনে ঘুরছে সংসার।
চুলোর হালকা দারুণ আঁচে পুড়ছে সংসার।
মানুষগুলো ধাপে ধাপে শিশু থেকে বুড়ো হচ্ছে;
ফানুশগুলো তাপে তাপে শূণ্য থেকে পুরো হচ্ছে।
পুরো হচ্ছে। পুরোটাই।
সিনেমায় যে নায়িকাকে দেখেছো কাল,
সে আজকের ইজিচেয়ারের ঐ বুড়োটাই।
এতকিছুর পরেও আমরা আছি গাছের মতো দাঁড়িয়ে।
পুরাতন গাছ;
নতুন কিছু কোনোমতেই হবার নেই।
কারো কারো আজ দিনটা পকেটে আছে।
সেটাও আবার সবার নেই।
পাতা আসে। পাতা যায়। ফুলগুলো শুকিয়েছে।
চুকিয়েছে রাজ্যপাট।
গাছগুলো?
করাতের আদর সয়ে সয়ে;
হয়ে গেছে ফুলশয্যার সাজানো খাট।
জানিস না!
.
তুই কি জানিস?
আমার মনে কখন কখন বৃষ্টি নামে?
তুমি কি মানিস?
তুই কাঁদলে আমার মনেও কান্না জমে।
তুই চাইলেই জানতে পারিস- আমার সে খোঁজ।
মেঘ জমিয়ে আনতে পারিস-বৃষ্টি যে রোজ!
তুই কি আনিস?
আনিস না। মানিস না।
জানতে চেয়েও জানিস না।
আদর করে কক্ষনো তো জলজ বুকে
টানিস না!
ক্রিকেটারের এপিটাফ
.
দেশের সেরা ক্রিকেটার যাচ্ছে অবসরে আজ…
কত কত লেন্স! কত কত ফুল।
কাল সব বাসি হবে।
ক্রিকেটারের মনের বয়স হুট করে আশি হবে।
কী যেনো লিখছে ক্রিকেটার…
চুক্তিপত্র?
চিঠি?
নাকি কোচ হবার অঙ্গীকার?
১১ জনের দলের ১০ জন তো রয়েই গেলো!
সে হবে তাহলে সঙ্গী কার?
সে কারো সঙ্গী হতে কলম তোলে নি আজ।
প্রচন্ড ভীড় চারপাশে রেখে লিখছে-
এপিটাফ; ভেঙ্গে জীবনের ভাঁজ।
“কাল থেকে কারো মুখে উচ্চারিত হবে না এ নাম;
স্কোরবোর্ডে উঠবে না কোনো সংখ্যা।
তবু আমি মাঠে থাকতে চাই।
যখন মরে যাই…
জ্বেলে দিও মাঠের সব আলো।
সবুজ মাঠ। আহা আমার মাঠ…
বাউন্ডারির দড়ি পেরিয়ে ত্রিশ গজে ঢুকে যেও সারাসরি।
চলে যেও একেবারে পিচের মাঝ বরাবর।
২২ গজ? অত জায়গার প্রয়োজন হবে না আমার।
পিচের ঠিক মাঝের সাড়ে তিন হাতে…
শেষবারের মতো শুইয়ে দিও আমায়।
মাঠের মানুষ বরং আমি মাঠেই রয়ে যাই।
একজন ক্রিকেটারের এটাই তো নির্মম এপিটাফ!
এর বেশি আর কী চাই?”
এইম ইন লাইফ
.
পরীক্ষায় এসেছিলো ‘এইম ইন লাইফ’,
আমি লিখলাম, “বড় হয়ে আমি মেশিন হবো”
আখের রস বানানোর মেশিন।
পৃথিবীর সব আখ; আমার ধাতব দাঁতে পিষে
-বানাবো মিষ্টি শরবত।
দশ টাকা গ্লাসের সে শরবত খেয়ে সবাই
মিষ্টি কথা বলবে;
দুনিয়াটা ভরে যাবে-ফুলের মতো মানুষে।
পরীক্ষার খাতা ছিঁড়ে বাস্তবে বের হয়ে দেখি;
আমি হয়ে গেছি আখ। বাকি সবাই মেশিন।