কি ভেবে পাঠালে চিঠিখানি,
কি কথা ছিল যে মনে।
তুমি সে কি লিখে গেলে,
আমি বসে বসে পড়ি
নিয়ে কম্পিত হৃদয়খানি,
তুমি আছো দূর ভুবনে।

আমি তখন এক বিশ্ববিদ্যালয়ে লেকচারার হিসাবে চাকরি শুরু করেছি। রঙিন খামে একটা চিঠি পেলাম। খামের উপরে মেয়েলি হাতে আমার নাম-ঠিকানা লেখা। খামের ভিতরে আরেকটি রঙিন কাগজের চিঠি, সাথে গোলাপ ফুলের পাপড়ি। চিঠির চারিদিকে কয়েকটি হৃৎপিণ্ডের ছবি আঁকা। একটি হৃৎপিণ্ডে তীর বিঁধে আছে, ক্ষতস্থান থেকে লাল রঙের রক্ত ঝরেছে।

চিঠির চারিদিকে কয়েকটি হৃৎপিণ্ডের ছবি আঁকা। একটি হৃৎপিণ্ডে তীর বিঁধে আছে, ক্ষতস্থান থেকে লাল রঙের রক্ত ঝরেছে

চিটিজুড়ে উচ্ছ্বাস এবং বানানভুলের ছড়াছড়ি, বিষয়বস্তু চিরকালীন, তবে প্রেমের চিঠি হিসাবে চিঠির শুরু এবং সমাপ্তিটা ছিল অভিনব:
‘সবিনয় নিবেদন’ এবং ‘ইতি, আপনার একান্ত ব্যাধ্যগত ছাত্রী।’
চিঠিতে প্রেরকের কোনো নাম-ঠিকানা ছিল না, তাই এই ‘বাধ্যগত ছাত্রীটি’ কে তা চিরদিনের জন্যে অজানাই রয়ে গেল।

আরো পড়তে পারেন

কানু কাকা

আঁধার হারিয়ে গেলেও, সেভাবে ভোরের আলোর উপস্থিতি নেই, রোদ যেনো ফেরারি আসামি হয়ে পালিয়ে। মরুভূমির বালুকণা যেনো উড়ছে। কুয়াশা জানান দিচ্ছে, ক্ষমতাধর কোনো মন্ত্রীর মত। সাথে যুক্ত হয়েছে লাঠিয়াল বাহিনির মত কোনো শীতের তীব্র উপস্থিতি। কিন্তু এসব কিছু উপেক্ষা করে বিদ্রোহী কবিতার শ্লোকের মত রওনা হয়েছে কানু কাকা। হেমন্তের হেলে পড়া সূর্যের মত, তার শরীর….

চারটি অণুগল্প

১. পৃথিবীর শেষ গাছটা হাতে নিয়ে ফিহান সমুদ্রের পাড়ে দাঁড়িয়ে আছে। চিরকাল দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভোগা ফিহান সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না, এই ছোট্ট চারাটা নিয়ে সমুদ্রে ঝাঁপিয়ে পড়বে, নাকি আরেকটা বিশ্বযুদ্ধের দামামা বাজতে দেবে?   ২. —আমার না প্রায়ই খুব মায়া হয় এদের জন্য —কেন?! —এই যে দেখো, সারারাত জেগে থাকার কথা আমাদের, আর জেগে থাকে ওরা।….

বিবশ

এক. আমাদের আব্বা বড্ড নিশ্চুপ। চুপচাপ-চাপা স্বভাবের। সারাদিনে তিনটা শব্দও তার মুখ দিয়ে বের হয় না। অন্যদিকে আম্মা কথার খই ফোটান। তার সংসার, সংগ্রাম, সীমাহীন দুঃখ এসব। এক রথে একাকী বয়ে চলা জীবনের ঘানি। বাপের বাড়ির রকমারি কেচ্ছা, ছোটবেলায় মা-খালাদের সাথে করা হরেক কাহিনির গপসপ। আমাদের মামারা কেউ বোনের খবর নেয় না। এরপরও সন্ধ্যা করে,….

error: Content is protected !!