Author Picture

ফিলিস্তিন ও ইসলাম প্রসঙ্গে সাঈদ-বুভোয়া-সার্ত

ওয়াহিদ কায়সার

১৯৭৯ সালে জাঁ-পল সার্ত আর সিমঁ দ্য বুভোয়া এডওয়ার্ড সাঈদকে মধ্যপ্রাচ্যের উপর একটা শান্তি সম্মেলনে যোগ দেবার জন্য ফ্রান্সে আসার নিমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। সময়টা ছিল ক্যাম্প ডেভিড চুক্তি সম্পাদনের পর, যেটার মাধ্যমে ইজরায়েল আর মিশরের মধ্যেকার যুদ্ধ সমাপ্ত হয়েছিল। বিশ্ববিখ্যাত গ্রন্থ ওরিয়েন্টালিজম-এর লেখককে সে-শান্তি সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল যাতে মধ্যপ্রাচ্যে কীভাবে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা যায় সে ব্যাপারে তাঁর সাথে আলোচনা করা যায়, সাথে সাথে সমকালীন অন্য চিন্তকদের সাথে নিজের চিন্তা-ভাবনা নিয়ে আলোচনা করা সুযোগও ছিল আমন্ত্রিত সবার জন্য। সাঈদের বইটি মাত্র এক বছর আগে বের হলেও খুব তাড়াতাড়ি সারা বিশ্বের অ্যাকাডেমিশিয়ান আর বুদ্ধিজীবীদের মনোযোগ আকর্ষণ করেছিল, তাই সে-নিমন্ত্রণ পাওয়া তরুণ সাইদের জন্য সম্মানের না হয়ে প্রাপ্যই ছিল।

সার্তের ব্যাপারে সাইদের সবসময়-ই খুব উচ্চ ধারণা ছিল। সার্তের সাথে দেখা করার আগে লন্ডন রিভিউ অব বুকসে তাঁর ব্যাপারে সাঈদ লিখেছিলেন যে সার্ত উপনিবেশবাদী দেশের অধিবাসী হয়েও কখনও উপনিবেশবাদের প্রতি সহমর্মী হন নি অথবা নৈতিকতার প্রশ্নে আপোস করেন নি। আলজেরিয়া থেকে শুরু করে কিউবা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়া সামাজিক আন্দোলনে সার্তের প্রভাব ছিল অপরিসীম। বিউপনিবেশায়নের আন্দোলনে যুক্ত মধ্যেপ্রাচ্যের অনেক আরব ছিল অস্তিত্ববাদ ও মুক্তির উপর রচনা করা সার্তের দার্শনিক লেখার ভক্ত। তিনি যা লিখেছেন তার সবগুলোই বয়সে তরুণ সাইদের কাছে আকর্ষণীয় লেগেছিল কারণ সার্তের লেখার মধ্যে এক ধরনের দুঃসাহস দেখতে পেতেন তিনি। তাই আমন্ত্রণ পাবার পর তরুণ সাঈদ আর দ্বিতীয়বার ভাবেন নি, সম্মেলনে যোগ দেবার জন্য তিনি ফ্রান্সে গেলেন।

সার্ত আর বুভোয়ার প্রতি যথেষ্ট শ্রদ্ধা থাকলেও নিজের পছন্দের বুদ্ধিজীবীদের সাথে দেখা হবার পর সাঈদ খুব হতাশ হন। ফ্রান্সে আসার পর তাঁর কাছে পাঠানো একটা রহস্যময় নোটের মাধ্যমে সাঈদকে জানানো হয় যে বুদ্ধিজীবীদের সাথে তাঁর মোলাকাত সার্ত-বুভোয়ার ফ্ল্যাটে না, বরং মিশেল ফুকোর বাসায় হবে।

সেখানে যাবার পর সাঈদ দেখতে পান বুভোয়া চাদরের বিপক্ষে লেকচার দিচ্ছেন। চাদর এমন একটা পোশাক যেটা ইরানের ঐতিহ্যের সাথে যুক্ত ছিল। ইরানে ইসলামিক বিপ্লবের পর পাশ্চাত্যের প্রায় সব বুদ্ধিজীবী ভেবেছিলেন ইরানে নারীদের স্বাধীনতা সব দিক দিয়ে ক্ষুণ্ণ করা হবে। আর সেটার একটা মাধ্যম হবে এই চাদর। তবে বিপ্লবের আগে স্বাধীনতা পাবার বদলে ইরানের নারীরা যে নির্যাতন সহ্য করেছেন সেটার ব্যাপারে পাশ্চাত্যের মিডিয়া সবসময় চুপ থেকেছে। কওম থেকে তেহরান, পূর্ব আজারবাইজান থেকে ইসফাহান, ইরানে এমন কোন জায়গা ছিল না যেখানে শাহের সময়ে নারীদের উপর অত্যাচার করা হতো না। সাভাকের লোকেরা আয়াতুল্লাহদের দমানোর জন্য সবচেয়ে নিকৃষ্ট পন্থাও অবলম্বন করেছিল, আয়াতুল্লাহদের সামনেই তাদের কন্যাদের ধর্ষণ করা হয়েছিল। পোলিশ সাংবাদিক আর লেখক রিশার্ত কাপুসচিন্সকির বই শাহেদের শাহ (১৯৮২)-এ এমন অনেক নির্যাতনের বর্ণনা দেওয়া আছে। পাশ্চাত্য শাহের গোপন গোয়েন্দা পুলিশ বাহিনী সাভাকের এরকম নির্যাতনের কথা জানতো, কিন্তু তারপরও তারা চুপ ছিল কারণ ইরানে তখন নতুন নতুন তেলের খনি আবিষ্কৃত হয়ে চলছিল।

ইরানে ইসলামিক বিপ্লবের পর পাশ্চাত্যের প্রায় সব বুদ্ধিজীবী ভেবেছিলেন ইরানে নারীদের স্বাধীনতা সব দিক দিয়ে ক্ষুণ্ণ করা হবে। আর সেটার একটা মাধ্যম হবে এই চাদর। তবে বিপ্লবের আগে স্বাধীনতা পাবার বদলে ইরানের নারীরা যে নির্যাতন সহ্য করেছেন সেটার ব্যাপারে পাশ্চাত্যের মিডিয়া সবসময় চুপ থেকেছে

ইরানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মোসাদ্দেঘ ইরানের তেলের জাতীয়করণ করেছিলেন, যার জন্য তিনি কিছুদিনের মধ্যেই পাশ্চাত্যের দেশগুলোর চক্ষুশুল হয়ে পড়েন। শাহের মাধ্যমেই মোসাদ্দেঘকে ক্ষমতাচ্যুত করার প্রচেষ্টা ভেস্তে গেলে শাহ দেশ থেকে পালিয়ে যান। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত মোসাদ্দেঘকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে অনির্বাচিত রেজা শাহ পাহলভিকে সিংহাসনে আর দেশে ফেরত নিয়ে আসে সিআইএ। এরপর বিভিন্নভাবে শাহকে সন্তুষ্ট করে তেল থেকে অর্জিত অর্থ নিজেদের দেশে নিয়ে যাওয়ার একটা মরিয়া প্রচেষ্টা ছিল পাশ্চাত্যের দেশগুলোর। মধ্যেপ্রাচ্যের বাকি দেশগুলোতেও তেলের খনি আবিষ্কৃত হচ্ছিল, কিন্তু ইরানের মতো কোন দেশ-ই তখন এতটা উদার ছিল না; শাহের উদারতার ফাঁক গলে ইরানে প্রবেশ করা সহজ ছিল যে কোন পাশ্চাত্যের বহুজাতিক কোম্পানির কাছে।

যার সাথেই সেদিন বুভোয়ার কথা হচ্ছিল তাকেই কেইট মিলেটকে সাথে নিয়ে আসন্ন তেহরান ভ্রমণের কথা জানাচ্ছিলেন তিনি। কেইট মিলেট আর সিমঁ দ্য বুভোয়া দুজনেই চাচ্ছিলেন তেহরানে গিয়ে চাদরের বিপক্ষে একটা বিক্ষোভ করতে। বুভোয়ার এই চিন্তা সাইদের কাছে অর্থহীন বলে মনে হল। কিন্তু সাঈদ সেখানে তাঁর সাথে কোন প্রকারের বিরোধিতায় গেলেন না। এক ঘন্টা পর বুভোয়া সেখানে থেকে চলে গেলেন এবং তাঁর আর দেখা মিললো না।

হিজাব, নিকাব, বোরকাসহ মুসলিম নারীদের পোশাক নিয়ে পশ্চিমের আক্রমণ আর সমালোচনার মাঝখানে সাঈদ আর বুভোয়া এখনও আলোচনায় আছেন সে কথা না বললেই নয়। এসব পোশাকের পক্ষে সাবা মাহমুদ, লাইলা আবু-লুঘোদ নিয়মিত বলেছেন, লিখেছেন। তাঁরা নিজেরা সবসময় পশ্চিমের বর্ণবাদী ধারণার বিরুদ্ধে সাঈদের লেখা থেকে অনুপ্রেরণা নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।

বুভোয়া সম্পর্কে সাঈদ আরও লিখেছিলেন যে মুসলিম নারীদের পর্দা আর ইসলামের ব্যাপারে বুভোয়ার ধারণা একপেশে ছিল। তাই তিনি সেখান চলে যাওয়াতে সাঈদ খানিকটা স্বস্তি পাচ্ছিলেন। তবে সে-সম্মেলনে সার্তকে তিনি খুঁজে পেলেন বুভোয়ার একদম বিপরীত মানুষ হিশেবে: নিরুত্তর এবং আকর্ষণহীন। ঘন্টার পর ঘন্টা অতিবাহিত হয়ে গেল, কিন্তু তিনি প্রায় কিছুই বললেন না। একদম চুপ করেই ছিলেন। সাঈদ তাঁর সাথে কথা বলার চেষ্টা করলেন, কিন্তু তাদের মধ্যেকার আলোচনা আগালো না। সাঈদের মনে হলো সার্ত হয়তো কানে শোনেন না। কিন্তু সেরকম হয়ে থাকলে সেটা তাঁর আগে থেকেই জানার কথা ছিল।

ফুকোর সাথে নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করার ইচ্ছা ছিল সাঈদের। কিন্তু ফুকো তাঁকে বলেই ফেললেন যে সে-সেমিনারে যোগ করার মতো আর কিছু তাঁর জন্য নেই এবং তিনি বিবলিওতেক নাসিওনালে গবেষণা করতে যাবেন। এটা শুনে সাঈদ হতাশ হলেও তাঁর লেখা বিগিনিংস বইটি ফুকোর বুকশলফে দেখে খানিকটা খুশি হলেন।

তবে সাঈদের কাছে সবচেয়ে কষ্টকর ব্যাপার ছিল ইজরায়েলের প্রতি সার্ত, বুভোয়া এবং ফুকোর অটল সমর্থন। সাঈদ খুব অবাক হয়েছিলেন এটা দেখে, যে-সার্তের আলজেরিয়ার স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন ছিল, সেই সার্ত-ই ফিলিস্তিনিদের সমর্থন দিতে অস্বীকার করলেন। সাঈদের বর্ণনা অনুসারে সেদিন সার্ত আগে থেকে টাইপ করা দুই পৃষ্ঠার একটা লেখা নিয়ে পড়ে শুনিয়েছিলেন। ফিলিস্তিনের কথা সেখানে অল্প করে বলা হলেও ইজরায়েলের উপনিবেশবাদী আচরণের ব্যাপারে কিছুই ছিল না। সাংবাদিকরা যেভাবে কোন রাষ্ট্রনায়কের প্রশংসা করে সেভাবে আনোয়ার সাদাতের ব্যাপারে প্রশংসাই ছিল বেশি। পাঠ করা শেষ হলে সার্ত আগের মতোই চুপ করে রইলেন, সারাদিন কারও সাথে আর খুব বেশি কথা বললেন না। সাঈদের তখন ২০ বছর আগের একটা গল্পের কথা মনে আসলো, সার্ত একবার রোমে গিয়েছিলেন ফ্রঁৎস ফানোঁর সাথে দেখা করতে (ফানোঁর তখন লিউকোমিয়া ধরা পড়েছিল, তাঁর আয়ু আর খুব বেশি দিন ছিল না)। টানা ১৬ ঘণ্টা ধরে তাঁরা আলজেরিয়ার স্বাধিকারের ব্যাপারে আলাপ করেছিলেন, পরে সিমঁ দ্য বুভোয়ার হস্তক্ষেপে সেই আলাপে ছেদ পড়ে।

সাঈদের কাছে সবচেয়ে কষ্টকর ব্যাপার ছিল ইজরায়েলের প্রতি সার্ত, বুভোয়া এবং ফুকোর অটল সমর্থন। সাঈদ খুব অবাক হয়েছিলেন এটা দেখে, যে-সার্তের আলজেরিয়ার স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন ছিল, সেই সার্ত-ই ফিলিস্তিনিদের সমর্থন দিতে অস্বীকার করলেন

ফানোঁ সার্ত আর সিমঁ দ্য বুভোয়া - দুজনের-ই বন্ধু ছিলেন। এমনকি সার্ত ফানোঁর দ্য রেচেড অব দ্য আর্থ -এর ভুমিকাও লিখে দিয়েছিলেন। সাঈদের বারবার এই গল্পটার কথাই মনে পড়ছিল তখন। আলজেরিয়ার স্বাধিকার আন্দোলনের পক্ষের মানুষ ফিলিস্তিন প্রসঙ্গে এতটা নির্লিপ্ত থাকতে পারেন কীভাবে!

অন্যদিকে, বিংশ শতাব্দীতে আরব বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই সার্তের দিকে ঝুঁকে পড়েছিলেন। সার্তের অস্তিত্ববাদী লেখা থেকে উদ্দীপ্ত হয়ে তাঁরা নিয়েছিলেন এমন এক নীতিবিদ্যা যেটা তাদেরকে নিজের ক্রিয়ার মাধ্যমে রাজনৈতিক দায়িত্ব পালন করতে সচেষ্ট করেছিল। তাদের উদ্দেশ্য ছিল সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক প্রয়োজনকে চিহ্নিত করা, যেটা বিউপনিবেশায়নে এবং উত্তর-উপনিবেশিক সময়ে নিজেদের পুনরায় আবিষ্কার করতে সহায়তা করেছিল।

আরবের এই বুদ্ধিজীবীদের সাথে সার্তের সম্পর্ক ইতিবাচক-ই ছিল। তবে বিশেষ করে ১৯৬৭ সালের ছয়-দিনের যুদ্ধের পর সার্ত ফিলিস্তিন-ইজরায়েল প্রসঙ্গে নিজের অবস্থানকে খুব বেশি নিরপেক্ষ করে তোলেন। ১৯৬৭ সালের ছয়-দিনের যুদ্ধ হয়েছিল জুনের ৫ তারিখ থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত। ইজরায়েলের সমর্থকরা পাশ্চাত্য মিডিয়ার এই বলে বিশ্বকে বুঝিয়েছিল যে ইজরায়েলের আরব প্রতিবেশীরা, মিসর, জর্ডান ও সিরিয়া, যে পরিমাণ সৈন্য ইজরায়েলের আশেপাশে মোতায়েন করেছিল তাতে বোঝাই যায় যে তাদের উদ্দেশ্য ছিল পৃথিবীর মানচিত্র থেকে ইজরায়েলকে মুছে ফেলা। নিজেদের অস্তিত্বের ব্যাপারে শঙ্কায় ইজরায়েল নিজেদের সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিবেশীদের মোকাবেলা করে আর ছয় দিনের ভেতর যুদ্ধটি জিতে যায়। যুদ্ধ জয়ের পর ইজরায়েলী আগ্রাসন বহুগুনে বৃদ্ধি পায় ফিলিস্তিনিদের উপর যেটা এখনও চলমান।

ফিলিস্তিনকে সমর্থন করার ব্যাপারে কি সার্তের মনোভাব আগে ইতিবাচক ছিল, পরে সে-ইতিবাচক মনোভাব পাল্টে যায়, নাকি ইজরায়েলের প্রসঙ্গে তিনি নিরপেক্ষ থেকে আরও বেশি নিরপেক্ষ হবার ভান করে গেছেন সেটা এখন এই মুহূর্তে বলা কঠিন। তবে ইজরায়েলী ইতিহাসবিদ ইয়োভ দি-কাপুয়া’র নো এক্সিট: আরাব এক্সিসটেনশিয়ালিজম, জাঁ-পল সার্ত অ্যান্ড ডিকলোনাইজেশন (২০১৮) বইয়ে তিনি বলেছেন যে ইজরায়েলের সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কিছু বলার বদলে সার্ত আশ্চর্যজনকভাবে চুপ হয়ে গিয়েছিলেন। আরবের বুদ্ধিজীবিরা এই বিষয়টা সাথে সাথে বুঝে উঠতে পারেন নি, কারণ তাঁরা সার্তকে দারুণ শ্রদ্ধা করতেন। ফিলিস্তিনি ”আদার”-এর চেয়ে সার্তের কাছে তখনও ইহুদি ”আদার” বেশি গ্রহনযোগ্য হয়ে ঠেকেছিল, যদিও ইহুদিদেরকে ”আদার” করার পেছনে দায়ী হলোকস্ট হয়েছিল ২২ বছর আগে, আর সে-হলোকস্ট ঘটার জন্য ফিলিস্তিনিরা কোনভাবেই দায়ী ছিল না।

দুই সময়ে নিপীড়িত মানুষদের পক্ষেই বলতে পারতেন সার্ত। কিন্তু তিনি ১৯৬৭ সালে ফিলিস্তিনিদের উপর ইজরায়েলী আগ্রাসনের ব্যাপারে যেমন নিশ্চুপ ছিলেন, নিশ্চুপ ছিলেন পরবর্তী সময়েও, আর তাই বয়সে যুবক সাঈদের আশা সেদিন দুরাশায় পরিনত হয়েছিল।

আরো পড়তে পারেন

আওরঙ্গজেব ও শম্ভাজির মিথ বনাম ইতিহাস: প্রসঙ্গ ছাবা চলচ্চিত্র

বর্তমানে বিজেপির সংঘ পরিবার প্রায় তিন’শ বছর আগের ভারতের এমন এক সম্রাটের কবর মহারাষ্ট্রের খুলদাবাদ থেকে সরিয়ে দেয়ার আন্দোলন করছেন- যিনি ইতিহাসে ভারতকে সর্বকালের সবচেয়ে বড় রাষ্ট্রের মানচিত্র ও সংহতি উপহার দিয়েছিলেন, যার আয়তন ছিল চল্লিশ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার- যা ছিল বর্তমান ভারতের চেয়ে আট লক্ষ বর্গ কিলোমিটার বড়, তাঁর অধীকৃত রাষ্ট্রটিই ভারত এখনো তারা….

মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা: বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে যা জানা গিয়েছে, যা জানা সম্ভব

এক মহান যুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমাদের দেশটি স্বাধীন হয়েছে। এর পেছনে রয়েছে অসংখ্য মানুষের অপরিসীম আত্মত্যাগ। নানা সূত্র থেকে আমরা শুনে এসেছি ৩০ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে আমাদের এ স্বাধীনতা। অনেকেই আবার ৩০ লক্ষ শহীদের সংখ্যাটি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এমন প্রশ্ন ওঠার মূলে রয়েছে বিষয়টি নিষ্পত্তি করার ব্যাপারে ৭১-পরবর্তী শাসকদের উদাসীনতা। তারা এত বছরেও শহীদের সংখ্যা….

জর্জ অরওয়েলের নৌকাডুবি

১৯৪৪ সালের কথা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ মুহূর্তে হিটলার যেন মরিয়া হয়ে উঠেছে যুদ্ধে জয় পেতে। তার মরণকামড়ের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে নানা দেশের নানা শহর ও জনপদ। জার্মান বাহিনীর ভি-ওয়ান নামক উড়ন্ত যুদ্ধজাহাজগুলো মুহুর্মুহু বোমাবর্ষণ করেছে লন্ডন শহরে। বিমানবাহিনীর এমন দুর্দৈব তাণ্ডবে আতঙ্কগ্রস্ত মানুষজন সব আশ্রয় নিচ্ছে মাটির তলার বাঙ্কারে ও পাতাল রেলের সুড়ঙ্গে। এমনই একদিন….

error: Content is protected !!