
উপায় অবলম্বন
কাঁটা থেকে, সুচালো কাঁকর থেকে পা রাখিও দূরে,
জায়গা না পাক চলন-বাঁকা চেতনায় উড়ে এসে বসতে জুড়ে;
এসবে খরগোশ কানে থাকবে রাতে, পড়ন্ত বেলায়, দ্বিপ্রহরে,
পূর্বাহ্নে বা কাক ডাকা ভোরে।
দুর্গন্ধ ছড়ানো মুখ ও পায়ের তৎপরতা থেকে
গ্রীষ্ম থেকে সমস্ত ঋতুতে একে একে
নেবে মুখটা ফিরিয়ে
তিলার্ধকালও না জিরিয়ে।
কেননা, এদের চরিত্রের শাখা-প্রশাখায় নেই পাখিরব,
খুঁজলে মিলবে ছোঁয়াচে অসুখ, পোকাদের উপদ্রব ;
শব্দেন্দ্রিয় পাবে মিছরি চুরি-কথা,
পা পেঁচিয়ে ধরবে অভ্যন্তর, যেমনি ধরে বনের রাক্ষুসে লতা।
কোথাওবা ভ্যা ভ্যা করা ছাগী বা শিকারী ফুল
হয়ে ধরবে বাঘ বা ফড়িং— তখন না ভাঙবে ভুল।
এভাবে ওদের ছোঁড়া সব ষড়যন্ত্র করবে জল
দেখিয়ে-বুঝিয়ে দেবে কে আসল, কে নকল।
আবাদ
ভালো-মন্দের আবাদ চলে অবিরাম।
মন্দ অঙ্কুরিত হয় অনুকূল পরিবেশ পেয়ে অগণিত ;
শলাপরামর্শে বড় হতে থাকা সংখ্যাটাও পুঁচকে নয়।
নানান মাধ্যম ধরে উড়ে এসে পড়া বীজেরাও
নিমরাজি-তলায় ফুটতে সময় খরচ করেনি তেমন।
এভাবে দখল নেয় রিপু একে একে।
আর ভালোর চারা বা কলমে বাধা বা বাহানার শেষ নেই –
রোদে থাকে ঘাটতি, বৃষ্টি-বাদলেরা চেপে বসে ঘাড়ে।
বাতাসের দেহ বেয়ে নেমে আসে বজ্রচেরা-সাপ— যা আগুন নিয়ে খেলে।
তা ছাড়া, জীবাণু, পোকারা লেগেই থাকে পায়ে পায়ে ;
বলা যায়, প্রতিকূলে থাকে আবহাওয়া।
ফুল-ফল তো দূরের কথা
চারাদের শৈশব কাটতেই এতো বাধা!
এইসব বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে যে বৃক্ষেরা ফলবান হয়
সে ফল এখানে নয়, মৃত্যুর পরেও জারি থাকবে বেহিসাবে।
ব্যাটারি দুর্বল, নষ্ট ঘড়ি
ওপরের নির্দেশিকা শোনা ও পালনে
মন যদি হয়ে যায় ব্যাটারি দুর্বল, নষ্ট ঘড়ি,
পড়তে হয় ঘেরাকলে, কাঁঠাল আঠায় ফড়িং ধরার ফাঁদে।
পা ফেলতেই দেহে ফোটে ঢিল খাওয়া মৌমাছির হুল।
বুঝা, না বুঝার পলকেরা পড়ে মৎস্য শিকারির বেড় জালে।
দুপুরে চোখকে কষতে হয় সর্ষেফুলের হিসাব।
সুঁই ছিদ্রে কুড়ুল প্রশ্নেই মূক হয়ে থাকতে হয়।
দেখা ঘটনার-বৃক্ষ হাত-পা ছেড়ে পড়লে বা মূলোৎপাটনেও
বেরোবে জবান থেকে অন্ধের আকুতি।
অন্ন বারণে বা অন্যপোষ্টের হাজারো চাউনির ঈশান কোণ দেখালেও
থাকবে নতজানু, মাটিমুখী।
কেটে পড়তে বললে মিনিটকে বানাবে পথের সঙ্গী।
চৌকাঠ না মাড়ানোর নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে
যতক্ষণ না দৃষ্টিতে পড়বে সবুজ সংকেত।
রাত আসার আগেই
নাকের ডগায় পূতিগন্ধময় কর্ম বা বাণিজ্য,
অথচ বাজের চোখেও পড়ে না ধরা কোনো ছিটেফোঁটা দোষ।
কারণ, সে পায় চাকু ছুঁড়ে মারা ভাগ।
হাত খোলা দানে বা খরচে
তালিকার শুরুতেই তার বা তাদের নাম নক্ষত্র-উজ্জ্বল।
শতো দৃষ্টিতে পড়ার মতো নিজে চলে,
সংস্থা, অনুষ্ঠান, উপাসনালয়ে
গলা চড়িয়ে বলার পানি গড়িয়ে গড়িয়ে যায় বহু দূর।
আবহাওয়া নির্ভর ছাতার নিচে থাকে নিরাপদে।
ঝড়-বৃষ্টি বুঝে বা সামলিয়ে এভাবেই
টেক্কা দিয়ে চলে শুয়োর বা কুকুরের জন্মহারে।
এমন অকর্ম যদি ফাঁসে কাঁঠাল আঠায়,
ঘুঘু শিকারীর ফাঁদে— গভীর জলের মাছেরাও
বৈদ্যুতিক জালের জাদুতে
তখন কী লাভ হবে হাত জোড় করে ক্ষমা-দৃষ্টি কামনায়?
রাত আসার আগেই চিনতে শেখো দিন আসলে কী!
চোখে ঠুলি
ধানীলঙ্কার গুঁড়োর ঝাঁজ মাখা প্রশ্ন, বেকারেরা
অন্ন ধ্বংস ছাড়া কী করে সংসারে?
হেঁটে হেঁটে নষ্ট করে জুতোর যৌবন।
টু টু করে ঘুরে-ফিরে মাটিরূপ দেয় অষ্টপ্রহরের আপাদমস্তক,
ঘুমিয়ে থাকার কথা রাতগুলো না ঘুম পাড়িয়ে
কাঁঠালের মতো ভেঙে কোয়া কোয়া করে
ছুঁড়ে ফেলে পাশের পগারে।
কখনোবা দিবা খোয়াবে বিভোর নতুন ভোরের,
এমন ভোর কি এলো?— গুড়ে বালি।
সমাজের চক্ষুশূল এরা; ছাই ফেলা কুলোর চেয়েও
দামে কম এদের হাজিরা!
নিয়মিত বাড়িমুখী না হলেও জিজ্ঞাসার স্রোত ভাটিমুখী,
সেতু থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ার হুমকিতেও তেমন নড়ে না কেউ।
উপার্জনে ইয়া বড় পচা ডিম থাকায়— এ দশা।
অথচ যাদের হাতে সুযোগের চেরাগ, তাদের চোখে ঠুলি।
আগাছা বা পরজীবী হয়ে আর কতোদিন বাঁচা যায়?
পা দেয় বাঁকের দিকে, ঘন অন্ধকারে— হিল্লা হতে
অপুষ্টিজনিত রোগে পাওয়া সংসারের।
কিন্তু তার আকাশে উঠবে কি রবি রঙিন বেলুন
ফুসের আগেই?
কেলেহাঁড়ি-অন্তর
ভুল আর চিতি কি সম্বন্ধে সহোদর?
মুহূর্তে, মিনিটে বা ঘণ্টায় পড়া দাগ ধরে রাখে পরিচ্ছদ।
পরিষ্কার জায়গাটুকু গিলে খেতে থাকে ধীরে ধীরে।
পাপ চিহ্ন রেখে দেয় অন্তর তেমন।
বাঁকা পথে পা দেয়ায় প্রথম প্রথম
ঝড়ের কবলে পড়া কলাপাতা হয়ে কেঁপে উঠতো অভ্যন্তর।
একাকী হলেই আক্ষেপের মেঘে ছেয়ে যেতো মন।
ইদানিং নেই সেই ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ;
বোধহয় পাষাণ চরিত্রে বেড়ে উঠছে দিন।
কেননা, সরল রেখা ধরে চলাটা এখন ভীষণ ভয়ের,
তিতার দখলে রুচিবোধ।
অন্ধ গলির ঘোরেই পা স্বাচ্ছদ্যবোধে।
যে দু’য়ের হাত ধরে দেখলো দুনিয়ার আলো
তাদের বোলকে, কাছে টানাকেই ভাবে
তেড়ে আসা শঙ্খচূড়; নাগালে পেলেই
বসাবে ছোবল, ঢালবে রক্তজল-বল।
এমন অকাম্য কেলেহাঁড়ি-অন্তর যাদের— অনুশোচনার
ছাই-সাবান লাগিয়ে ঘষেমেজে সাফ হওয়া চাই।
কেননা, সাফের পর বুঝতে পারবে কালো ও ধলোর ভেদাভেদ,
যেমন, রসনা বোঝে স্বাদের স্বরূপ।