Author Picture

চূড়ান্ত পর্যায় (১৯৫৩-১৯৫৬ সাল)

মুহাম্মদ আশরাফুল করিম

আগের পর্বে পড়ুন— বায়ান্নর ঘটনা প্রবাহ

একুশের আবেগ সংহত থাকে ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দেও। সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক আতাউর রহমান খান এক বিবৃতিতে ২১ শে ফেব্রুয়ারিকে শহিদ দিবস হিসেবে পালনের ঘোষণা দেন। আওয়ামি লীগের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমানও ২১ শে ফেব্রুয়ারিকে শহিদ দিবস হিসেবে পালনের আহ্বান জানান। ১৮ ফেব্রুয়ারি সংগ্রাম কমিটির সদস্য যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তাদেরক সচিবালয়ে ডেকে পাঠানো হয় এবং সরকারের সাথে উক্ত নেতৃবৃন্দের ২১ উদযাপন বিষয়ে সমঝোতা হয়। ২০ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার ঢাকার বিভিন্ন মসজিদে শহিদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে প্রার্থনা করা হয়। ভাষা আন্দোলনের এক বছর পূর্তিতে সারা দেশব্যাপী যথাযোগ্য মর্যাদায় শহিদ দিবস পালিত হয়। অধিকাংশ অফিস, ব্যাংক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। ২১ ফেব্রুয়ারি খুব ভোরেই আতাউর রহমান খান, শেখ মুজিবুর রহমান প্রমুখ নেতৃবৃন্দ বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আসেন। বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা মানুষ সূর্যহীন ভোরে নগ্নপদে আজিমপুরে শহিদদের কবর জিয়ারত ও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ছাত্ররা ভেঙে দেয়া শহিদ মিনারের স্থানে কালো কাপড় ও লাল কাগজ দিয়ে প্রতিকী শহিদ মিনার তৈরি করেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মিছিল শুরু হয় তা ঢাকা শহর প্রদক্ষিণ করে আরমানিটোলা মাঠে জমায়েত হয়। একুশের এই মিছিল ঢাকা শহরে এক আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি করে। অধিকাংশ বাড়িতে কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। কোথাও ছাদ থেকে মিছিলের ওপর ফুল ছিটানো হয়। আরমানিটোলা মাঠের সমাবেশে বক্তৃতা করেন শামসুল হক, শেখ মুজিবুর রহমান, কাজী গোলাম মাহবুব, আবদুস সামাদ, মাহমুদ আলী, সৈয়দ আবদুর রহিম প্রমুখ। সভায় বক্তারা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং রাষ্ট্রভাষা বাংলা, রাজবন্দিদের অবিলম্বে মুক্তি, নিরাপত্তা আইনসহ সকল কালাকানুন বাতিলের দাবি জানান। ভাষা আন্দোলনের পর ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দের কাউন্সিল সভায় ‘পূর্বপাকিস্তান মুসলিম ছাত্র লীগ’ থেকে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দিয়ে অসাম্প্রদায়িক সংগঠনে পরিণত করা হয়। একই ধারায় ১৯৫৫ সালে ‘আওয়ামী মুসলিম লীগ’ ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দিয়ে দলের নাম পরিবর্তন করা হয় ‘আওয়ামী লীগ’।

বায়ান্নর ভাষা আন্দোলকে কেন্দ্র করে বাঙালির প্রচন্ড আবেগ প্রকাশ পেলেও মুসলিম লীগ সরকারের দায়িত্বশীল ব্যাক্তিবর্গ সুযোগ পেলেই বাংলা বিরোধীতা প্রকাশ করেন। ২ মার্চ পাকিস্তানের শিক্ষামন্ত্রী ফজলুর রহমান বগুড়ায় একটি সমাবেশে বলেন, বাংলাকে যারা রাষ্ট্রভাষা করতে চায় তারা দেশদ্রোহী। সভায় উপস্থিত জনতা তাকে কালোব্যাজ দেখান। তার এ বক্তব্যে জনগণকে হতাশ করে। এদিকে পাকিস্তান সরকার ব্যবস্থাপনায় প্রাসাদ ষড়যন্ত্র চলতে থাকে। ১৮ এপ্রিল অনিয়মতান্ত্রিকভাবে প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমউদ্দিনকে বরখাস্ত করে বগুড়ার মোহাম্মদ আলীকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে পূর্বপাকিস্তানে প্রাদেশিক আইন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও ক্ষমতাসীন দল নানা অজুহাতে তা বিলম্বিত করতে থাকে। অবশেষে ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দের ৮ মার্চ পূর্বপাকিস্তান প্রাদেশিক আইন পরিষদের নির্বাচনের দিন ধার্য করে। পাকিস্তানের জন্মের কয়েক বছরের মধ্যেই জাতীয় রাজনৈতিক দলগুলোর, বিশেষ করে ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগের পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানভিত্তিক উপদলসমূহের মধ্যকার ভাষা ও আঞ্চলিক রাজনীতি, স্বাধিকারের প্রশ্নে অব্যাহত মতানৈক্য ও দ্বন্দ দেশটিতে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন আবশ্যক করে তোলে। পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ হওয়া সত্ত্বেও বাঙালিদের ওপর জোরপূর্বক উর্দু ভাষা চাপিয়ে, মুসলিম লীগের ক্রমবর্ধমান বৈষম্যনীতি ও নিপীড়ন পূর্বপাকিস্তানের আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল ও জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হতে বাধ্য করে। এহেন বাস্তবতায় মাওলানা ভাসানীর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী মুসলিম লীগ, ফজলুল হকের নেতৃত্বাধীন কৃষক-শ্রমিক পার্টি, মাওলানা আতাহার আলীর নেতৃত্বাধীন নিজাম-ই-ইসলামী এবং হাজী দানেশের নেতৃত্বাধীন বামপন্থী গণতন্ত্রী দলের সমন্বয়ে ৪ ডিসেম্বর ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দে গঠিত হয় যুক্তফ্রন্ট। একুশের চেতনার আলোকে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা ও পূর্বপাকিস্তানের আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনাধিকার দাবিসহ ২১ দফাভিত্তিক নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করে।

ছাত্ররা ভেঙে দেয়া শহিদ মিনারের স্থানে কালো কাপড় ও লাল কাগজ দিয়ে প্রতিকী শহিদ মিনার তৈরি করেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মিছিল শুরু হয় তা ঢাকা শহর প্রদক্ষিণ করে আরমানিটোলা মাঠে জমায়েত হয়। একুশের এই মিছিল ঢাকা শহরে এক আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি করে। অধিকাংশ বাড়িতে কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। কোথাও ছাদ থেকে মিছিলের ওপর ফুল ছিটানো হয়

১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দের ২১ ফেব্রুয়ারির কয়েক দিন পূর্বে পূর্ব-পাকিস্তান সরকার নির্বিচারে ধরপাকড় শুরু করে। এই ব্যাপক ধরপাকড় ২১ উদযাপনকে রুখতে পারেনি। গ্রেফতারের ফল হয় বিপরীত। যুক্তফ্রন্টের নেতৃত্বে এক বিশাল মিছিল এই দিন আজিমপুরের শহিদদের কবর জিয়ারত ও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। একুশের চেতনা লীগ বিরোধী প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে পশ্চিমা স্বৈরাচারী শাসনের ভিত নড়বড়ে করে দেয়। একুশের পূর্ববর্তী সরকারের দমনমূলক গ্রেফতার জনমনে যে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে তাই মুসলিম লীগের ভরাডুবির মূখ্য ভূমিকা পালন করে। নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট প্রাদেশিক মন্ত্রিসভা গঠনের যোগ্যতা অর্জন করে। যুক্তফ্রন্ট সরকার গঠন করেই নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ২১ ফেব্রুয়ারিকে সরকারি ছুটির দিন এবং পূর্ববর্তী মুসলিম লীগ সরকারের মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন ‘বর্ধমান হাউজ’-কে ভাষা আন্দোলনের স্মারক গবেষণাগার ঘোষণা দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরাগভাজন হয়। ৩০ মে ১৯৫৪, ৯২-ক ধারা প্রয়োগ করে যুক্তফ্রন্ট সরকার বরখাস্ত করে গভর্ণরের শাসন জারি করে। অবশ্য এর পূর্বে ১৯ এপ্রিল করাচিতে প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মুসলিম লীগ সংসদীয় সভায় ভাষার প্রশ্নটি তাদের পরাজয়ের কারণ মনে করে উর্দুর সাথে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাস্ট্রভাষা করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সেই সাথে ইংরেজিকে আগামি ২০ বছর সরকারি ভাষা হিসেবে চালু থাকবে বলে সিদ্ধান্ত গৃতীহ হয়। ২২ এপ্রিল বাংলাকে অন্যতম ভাষা হিসেবে গ্রহণের প্রতিবাদে এবং উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে করাচিতে মোহজেররা বিক্ষোভ করে।

তবে আবদুল মজিদ সিন্ধির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ধিদের সভায় মোহাজেরদের এই বিক্ষোভের নিন্দা এবং পাকিস্তানের সবকটি প্রাদেশিক ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি জানানো হয়। আধা সামরিক স্বৈরাচারী সরকারের শাসনামলে ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে শহিদ দিবস উদ্যাপন মোটেই সহজ ছিলনা। দিবসের উদ্দীপনা মুছে দিতে স্বৈরাচারী সরকার ব্যাপক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। ১৯ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা জারি, গ্রেফতার লাঠিচার্জ ইত্যাদির মাধ্যমে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। ২১ ফেব্রুয়ারি উদ্যাপনে পুলিশি সরকার নিষেধাজ্ঞা প্রচার করে। ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে পরদিনের কর্মসূচির জন্য ছাত্ররা যে শহিদ মিনার নির্মাণী করে পুলিশ তা ভেঙে দেয়। ভোর হওয়ার পূর্বেই ছাত্রাবসসমূহে ছাত্ররা স্লোগান দিতে থাকেন ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ ‘শহিদ স্মৃতি অমর হোক’ ইত্যাদি। ছাত্রাবাসগুলোর শীর্ষে কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। পুলিশ ছাত্রাবাসগুলো ঘিরে ফেলে এবং ব্যাপক ধরপাকড় করে। পূর্ব সিদ্ধান্ত মোতাবেক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের আম তলায় সভা করার চেষ্টা করলে পুলিশ গ্রেফতার ও হামলা করে তা পন্ড করে দেয়। ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দের ৩ জুন ৯২(ক) ধারা রহিত করলে রাজনীতি আবার ভিন্ন দিকে মোড় নেয়। যুক্তফ্রন্টের শরিক দল কৃষক প্রজা পার্টির সদস্য ও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী আবু হোসেন সরকার পূর্ব বাংলায় যুক্তফ্রন্টের দ্বিতীয় মন্ত্রীসভা গঠন করেন। আওয়ামি লীগ এই সরকারের অংশ ছিল না। এই সরকার নির্বাচনী ইস্তেহার অনুযায়ী ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দের ৩ ডিসেম্বর বর্ধমান হাউসে বাংলা একাডেমি উদ্বোধন করেন এবং অধিকাংশ রাজবন্দীদের মুক্তি দেন। ৮ জানুয়ারি ১৯৫৬ কেন্দ্রীয় সরকার পাকিস্তানের খসড়া শাসনতন্ত্রে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার বিষয়টি পাশকাটিয়ে সরকারি ভাষা করার প্রস্তাব করে। যুক্তফ্রন্ট, আবুল হাশিম প্রমুখ এর প্রতিবাদ করে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি জানান। ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে প্রথমবারের মতো সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় ২১ ফেব্রুয়ারি শহিদ দিবস পালনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। ১৬ ফেব্রুয়ারি একুশে ফেব্রুয়ারিকে সরকারি ছুটির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই দিন গণপরিষদ অধিবেশনে ফরিদপুরের আদেল উদ্দীন আহমদের (১৯১৩-১৯৮১) প্রস্তাব অনুযায়ী বাংলা ও উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব গৃহীত হয়। ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকাসহ সমগ্র পূর্ব বঙ্গে ভাবগাম্ভীর্যের সাথে শহিদ দিবস পালন করা হয়। ভোরে চিরাচরিত নগ্নপদে প্রভাত ফেরি করে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এই দিন আবু হোসেন সরকার, মাওলানা ভাসানী ও শহিদ  বরকতের মা আনুষ্ঠানিকভাবে শহিদ মিনারের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। শহিদ দিবস উপলক্ষে বিকেলে দুটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। একটি মাওলানা ভাসানীর সভাপতিত্বে আরমানিটোলা মাঠে এবং অপরটি আবু হোসেন সরকারের সভাপতিত্বে পল্টন ময়দানে। ২৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে শাসনতন্ত্রে পাশের মাধ্যমে বাংলা রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা লাভ করে। এই সংবিধানে ২১৪ অনুচ্ছেদে বলা হয়-214-(I) The state language of Pakistan shall be Urdu and Bengali. ভাষা আন্দোলন শুরুর প্রায় দশ বছর পর বাংলা পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি লাভ করে। এভাবেই বাঙালির দীর্ঘ ভাষা সংগ্রাম পরিণতি লাভ করে।

 

পরের পর্বে পড়ুন— ভাষা আন্দোলনে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী চেতনা

আরো পড়তে পারেন

আওরঙ্গজেব ও শম্ভাজির মিথ বনাম ইতিহাস: প্রসঙ্গ ছাবা চলচ্চিত্র

বর্তমানে বিজেপির সংঘ পরিবার প্রায় তিন’শ বছর আগের ভারতের এমন এক সম্রাটের কবর মহারাষ্ট্রের খুলদাবাদ থেকে সরিয়ে দেয়ার আন্দোলন করছেন- যিনি ইতিহাসে ভারতকে সর্বকালের সবচেয়ে বড় রাষ্ট্রের মানচিত্র ও সংহতি উপহার দিয়েছিলেন, যার আয়তন ছিল চল্লিশ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার- যা ছিল বর্তমান ভারতের চেয়ে আট লক্ষ বর্গ কিলোমিটার বড়, তাঁর অধীকৃত রাষ্ট্রটিই ভারত এখনো তারা….

মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা: বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে যা জানা গিয়েছে, যা জানা সম্ভব

এক মহান যুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমাদের দেশটি স্বাধীন হয়েছে। এর পেছনে রয়েছে অসংখ্য মানুষের অপরিসীম আত্মত্যাগ। নানা সূত্র থেকে আমরা শুনে এসেছি ৩০ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে আমাদের এ স্বাধীনতা। অনেকেই আবার ৩০ লক্ষ শহীদের সংখ্যাটি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এমন প্রশ্ন ওঠার মূলে রয়েছে বিষয়টি নিষ্পত্তি করার ব্যাপারে ৭১-পরবর্তী শাসকদের উদাসীনতা। তারা এত বছরেও শহীদের সংখ্যা….

জর্জ অরওয়েলের নৌকাডুবি

১৯৪৪ সালের কথা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ মুহূর্তে হিটলার যেন মরিয়া হয়ে উঠেছে যুদ্ধে জয় পেতে। তার মরণকামড়ের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে নানা দেশের নানা শহর ও জনপদ। জার্মান বাহিনীর ভি-ওয়ান নামক উড়ন্ত যুদ্ধজাহাজগুলো মুহুর্মুহু বোমাবর্ষণ করেছে লন্ডন শহরে। বিমানবাহিনীর এমন দুর্দৈব তাণ্ডবে আতঙ্কগ্রস্ত মানুষজন সব আশ্রয় নিচ্ছে মাটির তলার বাঙ্কারে ও পাতাল রেলের সুড়ঙ্গে। এমনই একদিন….

error: Content is protected !!