Author Picture

চারটি অণুগল্প

শাইরা নোশিন রিশতা

১.
পৃথিবীর শেষ গাছটা হাতে নিয়ে ফিহান সমুদ্রের পাড়ে দাঁড়িয়ে আছে। চিরকাল দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভোগা ফিহান সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না, এই ছোট্ট চারাটা নিয়ে সমুদ্রে ঝাঁপিয়ে পড়বে, নাকি আরেকটা বিশ্বযুদ্ধের দামামা বাজতে দেবে?

 

২.
—আমার না প্রায়ই খুব মায়া হয় এদের জন্য
—কেন?!
—এই যে দেখো, সারারাত জেগে থাকার কথা আমাদের, আর জেগে থাকে ওরা।

হুলো বিড়াল আর পোষা কুকুরের দীর্ঘশ্বাস চিন্তার জগতে ডুবে থাকা মানুষের কান পর্যন্ত পৌঁছায় না।

 

৩.
—আজকে কই যাবা?
—গ্যানিমেড বা ইউরোপা। তোমার যেটা ভালো লাগে।
—আমার তো কোনো একটা এক্সোপ্ল্যানেটে যেতে ইচ্ছে করে।
—চলো যাই। কাল না হয় এগুলোর কোনোটাতে যাওয়া যাবে!
—আচ্ছা রেডি হও তাহলে।
—হ্যাঁ, আমি রেডি। ওয়ান টু থ্রি বলার সাথে সাথে চোখ বন্ধ করে ফেলবা।
—হুম। আমার না ইদানীং একটা জিনিস মনে হচ্ছে।
—কী?
—এই যে প্রতিদিন কল্পনায় কল্পনায় মহাকাশে ঘুরে বেড়াচ্ছি, কিন্তু বাস্তবতা তো এড়াতে পারছি না। চারপাশের সব মানুষের কত দুঃখ, কত কষ্ট!
—এগুলো ভুলে কিছুটা সময় ভালো থাকার জন্যই তো এই ছোট্ট নাটকটুকু করা। নাও, এবার চোখ বন্ধ করো।আজকে অনেক দূরের একটা গ্যালাক্সিতে যাবো।

 

৪.
তারা কেউ বুঝতে পারলো না হুট করে একটা সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ কীভাবে মরে গেলো! কেউ তাদের জানায়নি যে, আকাশটা না দেখতে পারার শোকে সে মরে গিয়েছিল। তার নিজের গ্রহে ফিরতে না পারার শোকে সে মরে গিয়েছিল। কেউ জানলো দূর গ্রহের এক আগন্তুক পৃথিবীটা দেখতে এসে মরে গিয়েছিল।

আরো পড়তে পারেন

স্বর্ণবোয়াল

মোবারক তার কন্যার পাতে তরকারি তুলে দেয় আর বলে, আইজ কয় পদের মাছ খাইতেছ সেইটা খাবা আর বলবা মা! দেখি তুমি কেমুন মাছ চিনো! ময়না তার গোলগাল তামাটে মুখে একটা মধুর হাসি ফুটিয়ে উল্লসিত হয়ে ওঠে এই প্রতিযোগিতায় নামার জন্য। যদিও পুরষ্কার ফুরষ্কারের কোন তোয়াক্কা নাই। খাবার সময় বাপবেটির এইসব ফুড়ুৎ-ফাড়ুৎ খেলা আজকাল নিয়মিত কারবার।….

error: Content is protected !!