Author Picture

ক্রিকেটের এপিটাফ

মেজবাহ উদদীন

কারো জন্য অংশগ্রহণ-ই বড় কথা। আবার কারো জন্য জয়লাভ-ই শেষ কথা। এই দুই পৃথিবীর ভেতরে দর্শনের যে ফারাক, তাই-ই আজ আমাদের ক্লান্ত করছে। আর আমরা সেই আমাদের ওয়ান ডে ক্রিকেটের চিরপরিচিত রূপকে ক্রমাগত ক্ষয়ে যেতে দেখে আহত, রক্তাক্ত হচ্ছি। খিদের আগুনই তো জীবনকে বাঁচিয়ে রাখে, ছুটিয়ে বেড়ায়। সে পেটের খিদে হোক কিংবা জয়ের খিদে। ক্রিকেটারদের যদিও সেই খিদের কথা ভাবতে হয় না। কিন্তু আমরা সেই খিদের ভেতরই বেঁচে থাকি। জীবনের খিদে, জয়ের খিদে। অথচ আমাদের ক্রিকেটাররা হেরে যাওয়ার গানেই গলা মেলালেন!

সে এক দিন ছিল বটে! ক্রিকেট পূর্ববর্তী দিন। তখনও মাঠে দর্শক আসত, গলা ফাটিয়ে চিৎকার হত, আবাহনী না মোহামেডান; জানতে চাওয়া হত, রাতের স্বপ্ন আসলাম সালাউদ্দিনরা রঙিন করে রাখত। সময়ের সেই মৌতাত কালের নিয়মে কবে বিদায় নিয়েছে। বাঙালির ফুটবলহীন জীবন হারিয়েছে রং। শেষে সেই বেরঙিন জীবনে বসন্ত-বাতাস হয়ে এল ক্রিকেট। জীবনে পিষ্ট হওয়া বাঙালি আবার প্রেমে পড়ল। শুরু হল তার উচাটন, ক্রিকেট বা ঝিঁঝিঁ পোকা নামের হাত ধরে।

সেই বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের দেড় মাসের বিশ্বকাপ যাত্রা শেষ হয়েছে। ২৭ সেপ্টেম্বর সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে বড় স্বপ্ন বুনে ভারতে গিয়েছিল দল। ১১ নভেম্বর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ৮ উইকেটে হেরে ৯ ম্যাচে দুই জয় নিয়ে দেশে ফেরে ক্রিকেট দল। অথচ-দলের কোচ, অধিনায়ক অথবা বোর্ড কর্তা-সবাই এই বিশ্বকাপকেই পাখির চোখ করেছিলেন। এই বিশ্বকাপে ভালো করার জন্যই আফগানিস্তান সিরিজ, এশিয়া কাপ, নিউজিল্যান্ড সিরিজে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়ে একের পর এক ম্যাচ হেরেছে। আর তার ব্যাখ্যায় বারবার বলা হয়েছে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি, রিয়েলিটি চেকিং। সবশেষ ২০ ম্যাচের মধ্যে ১৪ ম্যাচ হেরেছে, একটি পরিত্যক্ত হয়েছে আর জিত পাঁচ ম্যাচে। যার তিনটি আফগানিস্তানের বিপক্ষে। এসময় ১১ বার পঞ্চাশ ওভারের আগেই অল-আউট হয়েছে বাংলাদেশ; কখনো কখনো তারা ৪০ ওভারের আগেই অলআউট হয়ে গিয়েছে। এই পরিসংখ্যান মাথায় রেখে বাংলাদেশের খেলা দেখলে এটা মানতে কষ্ট হয়- দলটা টেস্ট খেলুরে দেশ!

বাংলাদেশের ক্রিকেট সত্যিই এক মন খারাপের বিজ্ঞাপন। তাইতো খেলা শেষ হওয়ার আগেই দর্শকদের টিভিসেট কিংবা গ্যালারি থেকে দলে দলে বেরিয়ে যেতে দেখা যায়। বাংলাদেশের ক্রিকেট এবং বাংলা সিনেমা অনেকটা যেন একই রকম- প্রথম পাঁচ-দশ ওভার বা পাঁচ-দশ মিনিট দেখেই পরের কাহিনী বলে দেওয়া যায়। পুরোটা দেখার প্রয়োজন হয় না। এতে অবশ্য সময় বাঁচে, মানতেই হবে।

বাংলাদেশের একটি ম্যাচ শেষে হতাশ সমর্থকরা নিজেদেরকে এই বলে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেন- আগামীতে বাংলাদেশের খেলা আর দেখবো না। কিন্তু বাংলাদেশের এই ক্রেজি সমর্থকরা আগামী ম্যাচ আসার আগেই সেই ম্যাচের জন্য একটু একটু করে প্রস্তুতি শুরু করে দেন। কষ্টের টাকায় কেনা এমবি বাঁচিয়ে রাখেন পরবর্তী ম্যাচ দেখার জন্য, অফিসের মিটিংকে একটু আগে-পরে করে দেন খেলার টাইমটা ফ্রি থাকার জন্য, ব্যাচেলর বাড়িগুলোতে চলে খেলা দেখার আয়োজন, টিভি শো-রুমের দোকানগুলোর সামনে জড়ো হতে থাকেন পথচলতি হাজার হাজার সমর্থক। গুলশান লেকের পাড়ে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন যে মানুষটা পথের কাছে বসে থাকে মানুষের সাহায্য চাইবে বলে—  তারও প্রস্তুতি থাকে কানে হেডফোন লাগিয়ে এফএম-এ ভারাভাষ্য শোনার।

বাংলাদেশের ক্রিকেট সত্যিই এক মন খারাপের বিজ্ঞাপন। তাইতো খেলা শেষ হওয়ার আগেই দর্শকদের টিভিসেট কিংবা গ্যালারি থেকে দলে দলে বেরিয়ে যেতে দেখা যায়। বাংলাদেশের ক্রিকেট এবং বাংলা সিনেমা অনেকটা যেন একই রকম- প্রথম পাঁচ-দশ ওভার বা পাঁচ-দশ মিনিট দেখেই পরের কাহিনী বলে দেওয়া যায়। পুরোটা দেখার প্রয়োজন হয় না

টিভি সেটের সামনে বা মোবাইল অ্যাপস-এর মাধ্যমে যারা খেলা দেখেন তাদের বাহিরেও এক শ্রেণীর পাগলা সমর্থক আছেন যারা অনেক কষ্ট করে পকেটের টাকা খরচ করে দিনের পর দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে ভিসা সংগ্রহ করে ইন্ডিয়ার বিভিন্ন শহর ঘুরে বেড়িয়ে ছিলেন বাংলাদেশের খেলা মাঠে বসে দেখার জন্য, বাংলাদেশের খেলোয়াড়দেরকে উৎসাহ দেওয়ার জন্য। খেলা শেষ হওয়ার আগেই স্টেডিয়াম থেকে তাদেরকে বের হয়ে আসতে হতো মন খারাপ করে। বিদেশের মাটিতে ভিনদেশী সমর্থকদের সামনে বারবার অপমানিত হতে হয়েছে তাদের।

দেশের জন্য এই ক্রিকেটারদের কোন নিবেদন বা কোন আবেগ কাজ করে বলে মনে হয় না। এটা অনেকটা আমাদের পাড়ার দলের হয়ে খেলতে আসা অন্য পাড়ার ক্রিকেটারদের মতো— আসবে, খাবে দাবে, আয়েশ করবে; আর যাওয়ার সময় সালামী নিয়ে যাবে। দলের জয় পরাজয় তাকে স্পর্শ করে না।

বাংলাদেশের সমর্থকরা খেলা বাদ দিয়ে ফেসবুক জুড়ে মিম তৈরি আর মিম শেয়ার করে চলছে; অথচ তাদের তো খেলাটা উপভোগ করারই কথা ছিল। কিন্তু সেটা আর পারলো কই? এই সমালোচনার জায়গাটা ক্রিকেটাররা নিজেরাই তৈরি করেছেন। তাদের খেলা দেখলে মনে হয়— খেলার প্রতি তাদের না আছে নিবেদন, না আছে তাদের সেই যোগ্যতা। বাংলাদেশের খেলায় কয়েকটা জিনিস স্পষ্ট— বাংলাদেশ নিজেদের অদ্ভুতুড়ে প্ল্যান দিয়ে প্রতিপক্ষকে বিভ্রান্ত করতে চায়, কিন্তু দিনশেষে নিজেদের অদ্ভুতুড়ে প্ল্যানের কাছে নিজেরই বিভ্রান্ত হয়।

আমাদের ক্রিকেটারদের মেধা নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্ন আসে মনে। প্রতিপক্ষ বোলাররা বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানদের যেন বলে কয়ে আউট করছে। যার যে দুর্বলতা সে দুর্বলতা ধরে প্রতিটা ব্যাটসম্যানকে কি অংকের মতো হিসেব করে আউট করছে! কিন্তু বাংলাদেশী বোলাররা যখন বল করেন তখন মনে হয় চোখ বন্ধ করে বল করেন— কোন বিশেষ খেলোয়াড়ের জন্য বিশেষ কোনো পরিকল্পনা চোখেই পড়ে না।

সেই মুখস্ত বোলিং, গদবাধা ফিল্ডিং, সেই ক্যাচ মিস, ফিল্ডিংয়ে সেই রান লিক করে দেওয়া, প্রতিপক্ষকে বেঁধে রাখতে না পারা। বাংলাদেশ আসলে সেই ম্যাচগুলোই  জিতে যেই ম্যাচে প্রতিপক্ষরা অনেক অনেক বেশি খারাপ খেলে। যে দিনটা তাদের একটা বাজে দিন হয়। বাংলাদেশ নিজের কৃতিত্বে খুব কম  ‌ম্যাচই জিততে পেরেছে, যে ম্যাচগুলো একান্তভাবেই প্রতিপক্ষরা উপহার দেয়, সেগুলোই বাংলাদেশ নিজেদের জয় বলে চালিয়ে দেয়।

বাংলাদেশ তাদের ব্যাটিং ইনিংসে গড়ে ২২ থেকে ২৫ ওভার ডট বল খেলে। স্ট্রাইক রোটেট করার অ্যাবিলিটি তাদের খুবই সীমিত। আমাদের ব্যাটসম্যানরা এক রানের জন্যই দৌড়ায়, কখনো মনে হয় না তারা দুই রানের জন্য চেষ্টা করে। তাদের মধ্যে জয়ের ক্ষুধা, ভালো করার সুতিব্র ক্ষুধা দেখাই যায় না। কোনো মতে একটা পঞ্চাশ করতে পারলেই তাদের মধ্যে দারুন মানসিক এবং শারীরিক ক্লান্তি এসে যায়। অভ্যাস যে বড় একটা নেই।

সেই মুখস্ত বোলিং, গদবাধা ফিল্ডিং, সেই ক্যাচ মিস, ফিল্ডিংয়ে সেই রান লিক করে দেওয়া, প্রতিপক্ষকে বেঁধে রাখতে না পারা। বাংলাদেশ আসলে সেই ম্যাচগুলোই  জিতে যেই ম্যাচে প্রতিপক্ষরা অনেক অনেক বেশি খারাপ খেলে। যে দিনটা তাদের একটা বাজে দিন হয়। বাংলাদেশ নিজের কৃতিত্বে খুব কম  ‌ম্যাচই জিততে পেরেছে, যে ম্যাচগুলো একান্তভাবেই প্রতিপক্ষরা উপহার দেয়, সেগুলোই বাংলাদেশ নিজেদের জয় বলে চালিয়ে দেয়

সভ্যতার অনেক দায় আছে; আর সেটা বাংলাদেশের সমর্থকরা হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারছেন। মনে কত ধরনের শব্দ খেলা করছে, শুধু সভ্যতার দায়ের কারণেই সেগুলো প্রকাশ করতে পারছেন না। বাংলাদেশের খেলা দেখতে যাওয়া সমর্থকরা মাঠে বসে দুঃখে নিজের জামা ছিঁড়েছেন, কেউ পরের ম্যাচের টিকিট ছিঁড়েছেন, কেউ পায়ের জুতো দিয়ে নিজের গালে আঘাত করেছেন। বড় মর্মান্তিক এই দৃশ্যগুলোর মতোই বাংলাদেশের চিত্রনাট্যও একই, বিষাদময়।

ছোটবেলায় বাবার মুখে একটা গল্প শুনেছিলাম। এক দরিদ্র কাঠুরিয়া জঙ্গলে গিয়ে কাঠ কাটার সময় মানুষের একটা মাথার খুলি কুড়িয়ে পেয়ে বাড়িতে নিয়ে আসে। খুলিতে কিছু একটা লেখা আছে বুঝতে পেরে সে ভালো করে সেটা বোঝার চেষ্টা করে— তখন সে দেখতে পায় সেখানে লেখা ‘আছে আরো কিছু বাকি আছে’। লোকটি তখন চিন্তা করতে লাগলো; একটা মানুষ মারা গেল, তার স্বপ্ন মারা গেল, তার লাশ মাটির সাথে মিশে গেল— এরপর তার জন্য আর কি বাকি থাকতে পারে? কিন্তু এর কোন উত্তর সে খুঁজে পাচ্ছিল না, তাই কিছুক্ষণ পর পর খুলিটা হাতে নিয়ে তার দিকে তাকিয়ে চিন্তা করতে থাকে। লোকটির বউ ব্যাপারটা লক্ষ করে প্রচণ্ড রাগান্বিত হলো। লোকটির বউ ভাবতে লাগলো— এই খুলিটা নিশ্চয়ই তার প্রেমিকার মাথার খুলি, এজন্য সে বারবার সেটাকে হাতে নিয়ে সেটার দিকে তাকিয়ে থাকছে। এই ভাবনা তার ভেতরে এক ধরনের রাগ তৈরি করল। একদিন কাঠুরে যখন বাড়িতে ছিল না তখন সে খুলিটা নিয়ে ঢেঁকি দিয়ে গুরো গুরো করে ফেলল। কাঠুরে লোকটি বাড়িতে এসে খুলির এই অবস্থা দেখে সে তার উত্তর পেয়ে গেল- সে বুঝতে পারল; এটাই হয়তো বাকি ছিল।

আফগানিস্তান সিরিজ, এশিয়া কাপ, নিউজিল্যান্ড সিরিজের পর যারা ভেবেছিলেন এরচেয়ে খারাপ আর কিছু হতে পারে না; তাদের জন্য বিশ্বকাপটা বাকী ছিল। পদে পদে দিকভ্রষ্ট বাঙালির অন্তরে এ-প্রশ্ন যেন ক্ষণে ক্ষণে অট্টহাসির মতোই বেজে ওঠে আজকাল। আর ভাবে, এ পথের শেষ কোথায়!

আমাদের অধিনায়ক সাকিব দলকে দলীয় সাফল্যে অনুপ্রাণিত করতে না পারলেও ব্যক্তিগত সাফল্যের খোঁজে বিশ্বকাপের মাঝপথে নিজের ভুলগুলো শুধরে নেওয়ার জন্য দেশে আসলেন তার সাকিব হয়ে ওঠার পেছনের কারিগর নাজমুল আবেদীন ফাহিমের ক্লাসে। আর প্রশ্ন তুলে দিলেন লাখ লাখ টাকা দামের কোচদের ব্যাপারে। বিশ্বকাপের মঞ্চে দল যখন একের পর এক ম্যাচে মুখ থুবড়ে পড়ছে, বিনা প্রতিরোধে সারেন্ডার করছে প্রতিপক্ষের কাছে, ঠিক সেই মুহূর্তে দলনেতার দেশে ফিরে এসে ব্যক্তিগত অনুশীলনের এমন নজির পৃথিবীতে আর নেই।

সাকিব বিশ্বকাপে যাওয়ার আগে একান্ত সাক্ষাৎকারে যে অহংকার, যে অহমিকা, যে আত্মতৃপ্তি নিয়ে কথা বলেছিলেন— বিশ্বকাপের মাঝামাঝিতেই তা ভুমেরাং হয়ে ফিরে এসেছে। তাই তো দেশবাশীর কাছে দোয়া ভিক্ষা চাইতে দেখা গিয়েছে-অর্থাৎ, নিজেদের পারফরমেন্সে বা নিজেদের প্রতি আর কোন আত্মবিশ্বাস অবশিষ্ট নেই তাদের। আর এভাবেই দেশের ক্রিকেটের সমাধি ফলকটা প্রস্তুত করা হয়েছে।

এখানে শুয়ে আছে বাংলাদেশের ক্রিকেট। সুন্দরবনের বাঘ নাম দেয়া হয়েছিল যাদের। বাঘ প্রজাতি বিলুপ্ত হওয়ার পথে, আর এদেশের সোনার ছেলেরা টাইগার নাম নিয়ে বিলুপ্ত হওয়ার পথে। দেশের ক্রিকেট কি পারবে রূপকথার ফিনিক্স পাখির মত ছাই থেকে মাথা তুলে দাঁড়াতে, নাকি সমুদ্রের ফিরতি ঢেউ-এ ছাইটুকুও মুছে এগিয়ে যাবে নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে!

আরো পড়তে পারেন

বৈভব সূর্যবংশীর উত্থানের রূপকথা

ভারতীয় ক্রিকেটে আইপিএল-এর ভূমিকা অস্বীকার করার উপায় নেই। সেখানে আইপিএল-এর অবদান নিয়ে নিশ্চিয়ই আলাদা একখানা অধ্যায় লেখা হবে। তাতে ক্ষতি আর সমৃদ্ধি দুই দিকের আলোচনাই হবে নিক্তি মেপে। তবে এই পাদটীকা একদিকে সরিয়ে রেখে একটা কথা বলাই যায় যে, ভারতবর্ষে আইপিএল আর শুধুমাত্র একটি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট নয়, এটি একটি সংস্কৃতি এবং অর্থনীতির অংশ। এর সামগ্রিক….

বিদায় রূপকথার দেবদূত

যে পরিবেশে জলছবি আর রংমশালের গল্প ছিল না। না ছিল রূপকথার পরীদের গল্পও। কেবল ছিল অভাবের গল্প, আর একটা বল ছিল। যতবার সেই বলকে দূরে ছুড়ে দিত রোগা পা, ততবার, একবেলা খেতে না পাওয়ার কথা ভুলে যেতেন অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া। ভুলে যেতেন, তাঁদের জীবনটা অভাব অন্ধকার আর না-পাওয়ার সবটুকু রংহীনতা মেখে নিচ্ছে রোজ। ফুটবলের সঙ্গে….

বিশ্বকাপের মার্কশিট

‘পরের জন্মে আমি এর প্রতিশোধ নেব। নেবই। মোহনবাগানের ফুটবলার হয়ে জন্ম নিয়ে…।’ অনেক বছর আগে এক ভারতিয় পত্রিকায় পড়া এক চিঠি। যে চিঠি হয়তো লেখা হয়েছিল কোনও এক অনির্বাণ দহনের রাতে। লিখে আর ভাবেনি, লেখক চলে গিয়েছিল সব ছেড়েছুড়ে। প্রতিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে। প্রায় পাঁচ দশক আগে পঁচাত্তরে ইস্টবেঙ্গলের কাছে পাঁচ গোলের অনলে দগ্ধ এক মোহনবাগান….

error: Content is protected !!